আজ পদ্মা সেতু বিষয়ে সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরবেন অর্থমন্ত্রী

আজ বৃহস্পতিবার পদ্মা সেতুর সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অর্থ মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি ব্যাখ্যা করবেন। এজন্য দুপুর ২টায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন অর্থমন্ত্রী।


এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী সংবাদ সংস্থাকে বিশ্বব্যাংক যাতে পদ্মা সেতুতে ফিরে আসে সে বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। সেজন্য এডিবি, জাইকা ও আইডিবিকে তাদের তরফ থেকে তৎপরতা চালাতে অনুরোধ জানানো হয়। জাইকা প্রেসিডেন্ট জুলাইয়ে ওয়াশিংটন সফরকালে পদ্মা সেতুর বিষয়টি নিয়ে বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।
দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক গত ২৯ জুন এ প্রকল্পে ঋণ দেয়ার চুক্তি বাতিল করার পর সংবাদ সম্মেলন করে অর্থমন্ত্রী দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান। পদ্মা সেতু নিয়ে জাতীয় সংসদে দেয়া বিবৃতিতেও তিনি একই আহ্বান জানিয়েছিলেন।
২৯০ কোটি ডলারের পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক ১২০ কোটি ডলার দেয়ার চুক্তি করেছিল। এছাড়া এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ৬১ কোটি ৫০ লাখ, জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) ৪০ কোটি ডলার এবং ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি) ১৪ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার জন্য চুক্তি করে।
বিশ্বব্যাংক ঋণচুক্তি বাতিল করার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন, কেউ না এলে নিজস্ব অর্থায়নেই পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হবে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ প্রকল্পের জন্য অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সম্পদ সংগ্রহেরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
অন্যদিকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বিশ্বব্যাংককে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনায় রাজি করানোর চেষ্টা চালিয়ে যান। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে এডিবি, জাইকা ও আইডিবিকে এ প্রকল্পে অর্থায়নের অনুরোধ জানিয়ে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেয়া হয়।
বিশ্বব্যাংক ঋণচুক্তি বাতিল করার পর ৯ জুলাই মুহিত বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থার স্থানীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসেন। বিশ্বব্যাংকের কোন প্রতিনিধি ওই বৈঠকে উপস্থিত না থাকলেও এডিবি, জাইকা, আইডিবি প্রতিনিধিসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পদ্মা সেতু নিয়ে টানাপোড়েন অবসানে বিশ্বব্যাংক আগে যে শর্ত দিয়েছিল, তা পূরণে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন ইতোমধ্যে মন্ত্রিত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এছাড়া সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেন ভূইয়াকেও ছুটিতে পাঠিয়েছে সরকার।
এদিকে পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের বিষয়টি ঝুলে যাওয়ার পর চলতি বছরের শুরুতে মালয়েশিয়া এ ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করে।
যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গত এপ্রিলে কুয়ালালামপুরে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের উপস্থিতিতে একটি সমঝোতা স্মারকে সই করেন এবং গত ২৮ জুন পদ্মা সেতু নির্মাণে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্যে মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে একটি খসড়া প্রস্তাব সরাকারকে দেয়া হয়।
মালয়েশিয়ার সরকারী সংবাদ সংস্থা বারনামা মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানায়, পদ্মা সেতু প্রকল্পের খুঁটিনাটি চূড়ান্ত করতে আগামী সপ্তাহে ঢাকা-কুয়ালালামপুর পুনরায় আলোচনায় বসতে যাচ্ছে।
বারনামার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ঢাকায় ৪-৬ আগস্ট যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করবেন মালয়েশিয়া সরকারের দক্ষিণ এশিয়ার অবকাঠামো বিষয়ক বিশেষ দূত সামি ভেলু। তিনি পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করবেন এবং আগস্টের মাঝামাঝি সময়েই বাংলাদেশকে চূড়ান্ত প্রস্তাব দেয়া হবে।

No comments

Powered by Blogger.