রাঙামাটি-বান্দরবান সড়কের ৪২ কিলোমিটারে মরণফাঁদ by মীর আসলাম ও ইব্রাহিম খলিল
কোথাও দেবে গেছে। কোথাও সেচনালার মতো বড় খাদের সৃষ্টি হয়েছে। ইট-সুরকি উঠে গিয়ে কোথাও বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রক্ষা-দেয়াল না থাকায় তলার মাটি সরে গিয়ে জমির সঙ্গে মিশে গেছে সড়ক। রাঙামাটি-বান্দরবান সড়কের প্রায় ৪২ কিলোমিটারে সৃষ্টি হয়েছে এ রকম মরণফাঁদ।
যাত্রী ও যানবাহন চালকেরা জানান, আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা শহর থেকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান ও পদুয়া ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বান্দরবান পার্বত্য জেলা শহরে যানবাহন চলাচলে সড়কটি নির্মিত হয়। সরু হলেও যানবাহন চলাচলে সড়কটিতে তেমন অসুবিধা হতো না। কিন্তু এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সড়কটি পর্যায়ক্রমে ভেঙে যাওয়ায় যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে।
সড়কে চলাচলকারী মনীষা বাস সার্ভিসের চালক সামশু মিয়া (৪৫) জানান, সড়কটির চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান থেকে পদুয়া ইউনিয়নের দুধপুকুরিয়া পর্যন্ত প্রায় ২৮ কিলোমিটার রাঙ্গুনিয়া অংশে এবং দুধপুকুরিয়া থেকে রোয়াংছড়ি বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত প্রায় ১৪ কিলোমিটার বান্দরবান পার্বত্য জেলার আওতায় রয়েছে। এই সড়ক পাড়ি দিতে এখন তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় লাগে।
আশার আলো সার্ভিসের বাস শ্রমিক কাজল সিংহ (৩৮) জানান, সড়কের বান্দরবান পার্বত্য জেলার পুলিশ ক্যাম্প, আমতলি, ব্রিজঘাটা, খেয়ানোলং, গলাচিপা ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দুধপুকুরিয়া, উদলবুনিয়া, দশমাইল, বাঙালহালিয়া এলাকা খুবই বিপজ্জনক। এসব এলাকায় সড়কের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে কাদামাটিতে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, ২৮ মে বান্দরবান পার্বত্য জেলার গলাচিপা এলাকায় বাস উল্টে গিয়ে গভীর খাদে পড়ে। এতে প্রায় ১৭-১৮ জন যাত্রী গুরুতর আহত হয়। চলতি বছরের গত ছয় মাসে এ সড়কের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৩২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে।
বান্দরবান শহরের রোয়াংছড়ি বাসস্ট্যান্ডের লাইনম্যান সাহাবুদ্দিন জানান, শুরুর দিকে এ সড়কে প্রতি ঘণ্টায় একটি বাস যাতায়াত করত। কিন্তু বর্তমানে সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় চালকেরা বাস চালাতে চান না। তার পরও যাত্রী সাধারণের কথা চিন্তা করে অনেক কষ্টে দিনে রাঙামাটি শহর থেকে দুটি বাস বান্দরবান শহরে এবং বান্দরবান শহর থেকে দুটি বাস রাঙামাটি শহরে যাতায়াত করছে।
বান্দরবান সদর উপজেলার গোয়ালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান থানুপ্রু মারমা জানান, এই সড়ক দিয়ে বান্দরবানের আদিবাসীরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য রাঙামাটি ও চট্টগ্রাম জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করত। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা এসে বান্দরবান থেকে কৃষিপণ্য কিনে নিয়ে যেত। কিন্তু সড়কটি খারাপ হয়ে যাওয়ায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে পণ্য পরিবহন বন্ধ রয়েছে। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আদিবাসী কৃষিজীবী ও ব্যবসায়ীরা।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পদুয়া ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সেলিম জানান, চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান থেকে দুধপুকুরিয়া পর্যন্ত সড়কটি মেরামতের জন্য রাঙামাটি পার্বত্য জেলা সওজ বিভাগকে একাধিকবার প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সড়ক মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
যোগাযোগ করা হলে বান্দরবান সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়েজুল হক বলেন, বর্তমানে সড়কটি সংরক্ষণ ও সংস্কারের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে সেনাবহিনীর ১৯ (আগে ছিল ১৭) ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন। তার পরও সড়কটির বেহাল অবস্থা নিয়ে সওজ বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিবেদন পাঠায়। রাঙামাটি সওজ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী কালোবরণ চাকমা জানান, সড়কটির লিচুবাগান থেকে পদুয়া ইউনিয়নের দুধপুকুরিয়া পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ ছিল রাঙামাটি সওজ বিভাগের। নব্বইয়ের দশকের পর থেকে এ নিয়ন্ত্রণ চলে যায় সেনাবাহিনীর হাতে।
সড়কটির দুরবস্থার কথা স্বীকার করে ১৯ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল জামিল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, বরাদ্দ না থাকায় সড়কটি মেরামত করা যায়নি। তবে চলতি অর্থবছরে মেরামত করার চেষ্টা করা হবে। তার মতে, সড়কটির মূল নকশায় ত্রুটি থাকায় এটি নতুন করে নির্মান করা দরকার।
সড়কে চলাচলকারী মনীষা বাস সার্ভিসের চালক সামশু মিয়া (৪৫) জানান, সড়কটির চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান থেকে পদুয়া ইউনিয়নের দুধপুকুরিয়া পর্যন্ত প্রায় ২৮ কিলোমিটার রাঙ্গুনিয়া অংশে এবং দুধপুকুরিয়া থেকে রোয়াংছড়ি বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত প্রায় ১৪ কিলোমিটার বান্দরবান পার্বত্য জেলার আওতায় রয়েছে। এই সড়ক পাড়ি দিতে এখন তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় লাগে।
আশার আলো সার্ভিসের বাস শ্রমিক কাজল সিংহ (৩৮) জানান, সড়কের বান্দরবান পার্বত্য জেলার পুলিশ ক্যাম্প, আমতলি, ব্রিজঘাটা, খেয়ানোলং, গলাচিপা ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দুধপুকুরিয়া, উদলবুনিয়া, দশমাইল, বাঙালহালিয়া এলাকা খুবই বিপজ্জনক। এসব এলাকায় সড়কের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে কাদামাটিতে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, ২৮ মে বান্দরবান পার্বত্য জেলার গলাচিপা এলাকায় বাস উল্টে গিয়ে গভীর খাদে পড়ে। এতে প্রায় ১৭-১৮ জন যাত্রী গুরুতর আহত হয়। চলতি বছরের গত ছয় মাসে এ সড়কের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৩২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে।
বান্দরবান শহরের রোয়াংছড়ি বাসস্ট্যান্ডের লাইনম্যান সাহাবুদ্দিন জানান, শুরুর দিকে এ সড়কে প্রতি ঘণ্টায় একটি বাস যাতায়াত করত। কিন্তু বর্তমানে সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় চালকেরা বাস চালাতে চান না। তার পরও যাত্রী সাধারণের কথা চিন্তা করে অনেক কষ্টে দিনে রাঙামাটি শহর থেকে দুটি বাস বান্দরবান শহরে এবং বান্দরবান শহর থেকে দুটি বাস রাঙামাটি শহরে যাতায়াত করছে।
বান্দরবান সদর উপজেলার গোয়ালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান থানুপ্রু মারমা জানান, এই সড়ক দিয়ে বান্দরবানের আদিবাসীরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য রাঙামাটি ও চট্টগ্রাম জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করত। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা এসে বান্দরবান থেকে কৃষিপণ্য কিনে নিয়ে যেত। কিন্তু সড়কটি খারাপ হয়ে যাওয়ায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে পণ্য পরিবহন বন্ধ রয়েছে। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আদিবাসী কৃষিজীবী ও ব্যবসায়ীরা।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পদুয়া ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সেলিম জানান, চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান থেকে দুধপুকুরিয়া পর্যন্ত সড়কটি মেরামতের জন্য রাঙামাটি পার্বত্য জেলা সওজ বিভাগকে একাধিকবার প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সড়ক মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
যোগাযোগ করা হলে বান্দরবান সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়েজুল হক বলেন, বর্তমানে সড়কটি সংরক্ষণ ও সংস্কারের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে সেনাবহিনীর ১৯ (আগে ছিল ১৭) ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন। তার পরও সড়কটির বেহাল অবস্থা নিয়ে সওজ বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিবেদন পাঠায়। রাঙামাটি সওজ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী কালোবরণ চাকমা জানান, সড়কটির লিচুবাগান থেকে পদুয়া ইউনিয়নের দুধপুকুরিয়া পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ ছিল রাঙামাটি সওজ বিভাগের। নব্বইয়ের দশকের পর থেকে এ নিয়ন্ত্রণ চলে যায় সেনাবাহিনীর হাতে।
সড়কটির দুরবস্থার কথা স্বীকার করে ১৯ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল জামিল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, বরাদ্দ না থাকায় সড়কটি মেরামত করা যায়নি। তবে চলতি অর্থবছরে মেরামত করার চেষ্টা করা হবে। তার মতে, সড়কটির মূল নকশায় ত্রুটি থাকায় এটি নতুন করে নির্মান করা দরকার।
No comments