যৌন পেশায় নিযুক্তি নিয়ে উত্তাল ব্রিটেন
ছলে-বলে-কৌশলে কিশোরীদের যৌন পেশায় নিয়োগ করা হচ্ছে। কম বয়সের নারীরা প্রেমের ছলনায় ভুলছে। প্রেমিকরূপী দালালদের হাতে পড়ে শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণায় কতর হয়ে যাচ্ছে মেয়েরা। গত কয়েক বছরে শত শত মেয়ে ব্রিটেনের ম্যানচেস্টার কাউন্টির রোসডেল শহরে জড়িয়ে পড়েছে এক চক্রের ভেতরে।
অথচ সবকিছু ছাড়িয়ে সামনে চলে আসছে বর্ণবাদ, ধর্ম ও জাতীয়তাবাদ। কারণ, অপরাধীরা পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত মুসলমান আর নিপীড়নের শিকার নারীরা ব্রিটিশ খিস্টান।
সম্প্রতি ব্রিটেনের এক আদালত কম বয়সী মেয়েদের ফুসলিয়ে যৌন পেশায় নিয়োগ করার অপরাধে নয়জনকে দোষী সাব্যস্ত করলে এ নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক আর হট্টোগোল। টাইমস অব ইন্ডিয়ার অনলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আজ সোমবার বলা হয়েছে, ‘আজকের ব্রিটেন সহনশীল ও সহমতের উপরে প্রতিষ্ঠিত—এমন দাবি করা হয় গর্বের সাথে। ব্রিটেনের সমাজের ভেতরে পঁচে যাওয়া এক ফোঁড়াকে উন্মোচন করে দিয়েছে এই মামলা। দেশটির এশীয় মুসলমান সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভের আগুনে ঘি ঢেলেছে এই মামলার রায়। উগ্র ডানপন্থী দলগুলো বর্তমান অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যেও মুখিয়ে উঠেছে ঘটনার বিচার নিয়ে।’
উগ্র ডানপন্থীদের দাবি, এশীয় সংখ্যালঘুরা দেশটিতে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। মেয়েদের প্রতি মুসলমান কোন সম্মানবোধ নেই। মেয়েদের তারা দেখে কেবল ভোগের সামগ্রী হিসেবে। খ্রিস্টান ও শিখ মেয়েদের গাড়িতে তুলে পৌঁছে দেওয়ার নাম করে গোপন জায়গায় নিয়ে যায়, তারপর ধর্ষণ করে। কারণ, মুসলমানরা ‘খ্রিস্টান ও শিখদের’ ঘৃণা করে।
মুসলমানরা এই বিবরণের বিরোধীতা করছে। বলছে, ইসলামে ধর্ষণ অন্যায়। কিন্তু যখন অভিযুক্তরা নিজেই স্বীকার করছে, শ্বেতাঙ্গ খ্রিস্টানরা তাদের মেয়েদের ভোগ্যপণ্য বানিয়েছে বলেই তারা সেসব মেয়েদের অন্যায় কাজে ব্যবহার করেছে, তখন ধর্ম ও বর্ণবাদ বিতর্কের মাঝে না এসে পারে না। অভিযুক্ত সাবের আহমেদ (৫৯) আদালতে বলেছে, ‘শ্বেতাঙ্গ মানুষেরা তাদের যৌনকর্ম ও মদপানে অভ্যস্ত করে তোলে। তাই এসব মেয়েরা পুরো তৈরি হয়ে আমাদের কাছে আসে।’ সাবের মনে করে, শ্বেতাঙ্গ চামড়ার মেয়েরা নাক-উঁচু, ছোটলোক ও অর্থ লোভী। সে মনে করে, সাদা মানুষেরা মেয়েদের অবজ্ঞার চোখে দেখে আর তাদের সাথে বাজে কাজ করলে চোখ বুজে থাকে। সাবেরের দাবি, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে, কারণ তারা কালো।
এই অভিযোগ তুলে সাবের পার পাননি। তার বিরুদ্ধে মুসলমানরাই সাক্ষী দিয়েছে। ধর্ম-বর্ণ জড়িয়ে অপরাধীরা মামলাকে জটিল করার চেষ্টা চালিয়েছিল, অথচ শেষে ফেঁসে গেছে নিজেদের জালেই। তাদের শাস্তি বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে ব্রিটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি। তারা দাবি তুলেছে, এ ধরনের এশীয় ও মুসলমানদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দিতে হবে। কঠোর করতে হবে অভিবাসী আইন।
ঘটনার শিকার নারীরা বলছে, তারা কখনো ভাবেননি মুসলমানরা এমন ব্যবসায় তাদের জড়িয়ে ফেলতে পারে। ২০০৮ সালে একজন নারী প্রথম অভিযোগ এনেছিল। কিন্তু, অভিযোগ দাখিলের সময় সে মাতাল ছিল বলে, পুলিশ ঘটনা আমলে নেয়নি। এরপরের বছরে তার মতো অভিযোগকারীর সংখ্যা কয়েক শ ছাড়িয়ে যায়। ফলে টনক নড়ে পুলিশের। এ বছর তারা অভিযোগ দাখিল করে ১১ জনের বিরুদ্ধে। রায়ে খালাস পায় দুই জন, শাস্তি হয় নয় জনের। কিন্তু, এখনেই কি শেষ? নাকি প্রতিশোধের আগুন ধিকিধিকি করে জ্বলবে আরও অনেক দিন।
প্রথম অভিযোগকারী নারী প্রচার মাধ্যমকে বলেছে, ‘এখন এটা সবদিকেই চলছে। আপনারা মনে করেন মুসলামান পুরুষরা ধার্মিক, সংসারী ও ভালো মানুষ। কিন্তু, আপনারা ভাবতেও পারবেন না, তারা কি করছে, কি করতে পারে।’
এই অভিযোগকারী মাত্র ১৪ বছর বয়সে নিপীড়নের শিকার হয়। বয়স্ক এক ব্যক্তি তাকে কিছু উপহার দেয়। গয়না কিনে দেয়, পানশালায় নিয়ে মদ পান করায়। কয়েকদিন পরে সেই লোক তার কাছে বিনিময়ে কিছু চায়। কি ধরনের বিনিময়, জানতে চায় মেয়েটি। লোকটি জানায়, মেয়েটিকে তার ও তার বন্ধুদের সাথে যৌনকর্মে লিপ্ত হতে হবে। মেয়েটি রাজি না হলে, ভয় দেখানো হয়, বাধ্য করা হয় পাঁচ জনের সাথে যৌন কর্মে লিপ্ত হতে। মেয়েটি পুলিশে অভিযোগ করে, সে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। কিন্তু, পুলিশ পরে বিভিন্ন কারণে মামলা স্থগিত করে। এরপরে অপরাধীরা সেই মেয়ের সাথে আবার যোগাযোগ করে। এক পর্যায়ে তাকে ভয় দেখিয়ে বাধ্য করে আরও বেশি অন্যায় কাজ করতে। মেয়েটি কাজ করতে থাকে টোপ হিসেবে। অপরাধীরা এভাবে এক বিরাট চক্র গড়ে তোলে। অনেক মেয়েদের টেনে নিয়ে আসে যৌন কর্মে।
বর্তমানে ১৯ বছর বয়সী মেয়েটি প্রচারমাধ্যমকে আরও বলে, ‘শুরুতে প্রচণ্ড রাগ আর লজ্জা হতো। এরপর পুলিশ যখন কিছু করলো না, তখন সব বাদ দিলাম। শেষে অনুভূতিহীন হয়ে পড়লাম। এক সময়ে আমি আর আমি থাকলাম না। শুধু কোন রকমে বেঁচে থাকলাম। আমি শুধু ভাবতাম, ওরা আমার সাথে যা করেছে তা কত জঘণ্য।’
উগ্র ডানপন্থীদের দাবি, এশীয় সংখ্যালঘুরা দেশটিতে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। মেয়েদের প্রতি মুসলমান কোন সম্মানবোধ নেই। মেয়েদের তারা দেখে কেবল ভোগের সামগ্রী হিসেবে। খ্রিস্টান ও শিখ মেয়েদের গাড়িতে তুলে পৌঁছে দেওয়ার নাম করে গোপন জায়গায় নিয়ে যায়, তারপর ধর্ষণ করে। কারণ, মুসলমানরা ‘খ্রিস্টান ও শিখদের’ ঘৃণা করে।
মুসলমানরা এই বিবরণের বিরোধীতা করছে। বলছে, ইসলামে ধর্ষণ অন্যায়। কিন্তু যখন অভিযুক্তরা নিজেই স্বীকার করছে, শ্বেতাঙ্গ খ্রিস্টানরা তাদের মেয়েদের ভোগ্যপণ্য বানিয়েছে বলেই তারা সেসব মেয়েদের অন্যায় কাজে ব্যবহার করেছে, তখন ধর্ম ও বর্ণবাদ বিতর্কের মাঝে না এসে পারে না। অভিযুক্ত সাবের আহমেদ (৫৯) আদালতে বলেছে, ‘শ্বেতাঙ্গ মানুষেরা তাদের যৌনকর্ম ও মদপানে অভ্যস্ত করে তোলে। তাই এসব মেয়েরা পুরো তৈরি হয়ে আমাদের কাছে আসে।’ সাবের মনে করে, শ্বেতাঙ্গ চামড়ার মেয়েরা নাক-উঁচু, ছোটলোক ও অর্থ লোভী। সে মনে করে, সাদা মানুষেরা মেয়েদের অবজ্ঞার চোখে দেখে আর তাদের সাথে বাজে কাজ করলে চোখ বুজে থাকে। সাবেরের দাবি, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে, কারণ তারা কালো।
এই অভিযোগ তুলে সাবের পার পাননি। তার বিরুদ্ধে মুসলমানরাই সাক্ষী দিয়েছে। ধর্ম-বর্ণ জড়িয়ে অপরাধীরা মামলাকে জটিল করার চেষ্টা চালিয়েছিল, অথচ শেষে ফেঁসে গেছে নিজেদের জালেই। তাদের শাস্তি বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে ব্রিটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি। তারা দাবি তুলেছে, এ ধরনের এশীয় ও মুসলমানদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দিতে হবে। কঠোর করতে হবে অভিবাসী আইন।
ঘটনার শিকার নারীরা বলছে, তারা কখনো ভাবেননি মুসলমানরা এমন ব্যবসায় তাদের জড়িয়ে ফেলতে পারে। ২০০৮ সালে একজন নারী প্রথম অভিযোগ এনেছিল। কিন্তু, অভিযোগ দাখিলের সময় সে মাতাল ছিল বলে, পুলিশ ঘটনা আমলে নেয়নি। এরপরের বছরে তার মতো অভিযোগকারীর সংখ্যা কয়েক শ ছাড়িয়ে যায়। ফলে টনক নড়ে পুলিশের। এ বছর তারা অভিযোগ দাখিল করে ১১ জনের বিরুদ্ধে। রায়ে খালাস পায় দুই জন, শাস্তি হয় নয় জনের। কিন্তু, এখনেই কি শেষ? নাকি প্রতিশোধের আগুন ধিকিধিকি করে জ্বলবে আরও অনেক দিন।
প্রথম অভিযোগকারী নারী প্রচার মাধ্যমকে বলেছে, ‘এখন এটা সবদিকেই চলছে। আপনারা মনে করেন মুসলামান পুরুষরা ধার্মিক, সংসারী ও ভালো মানুষ। কিন্তু, আপনারা ভাবতেও পারবেন না, তারা কি করছে, কি করতে পারে।’
এই অভিযোগকারী মাত্র ১৪ বছর বয়সে নিপীড়নের শিকার হয়। বয়স্ক এক ব্যক্তি তাকে কিছু উপহার দেয়। গয়না কিনে দেয়, পানশালায় নিয়ে মদ পান করায়। কয়েকদিন পরে সেই লোক তার কাছে বিনিময়ে কিছু চায়। কি ধরনের বিনিময়, জানতে চায় মেয়েটি। লোকটি জানায়, মেয়েটিকে তার ও তার বন্ধুদের সাথে যৌনকর্মে লিপ্ত হতে হবে। মেয়েটি রাজি না হলে, ভয় দেখানো হয়, বাধ্য করা হয় পাঁচ জনের সাথে যৌন কর্মে লিপ্ত হতে। মেয়েটি পুলিশে অভিযোগ করে, সে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। কিন্তু, পুলিশ পরে বিভিন্ন কারণে মামলা স্থগিত করে। এরপরে অপরাধীরা সেই মেয়ের সাথে আবার যোগাযোগ করে। এক পর্যায়ে তাকে ভয় দেখিয়ে বাধ্য করে আরও বেশি অন্যায় কাজ করতে। মেয়েটি কাজ করতে থাকে টোপ হিসেবে। অপরাধীরা এভাবে এক বিরাট চক্র গড়ে তোলে। অনেক মেয়েদের টেনে নিয়ে আসে যৌন কর্মে।
বর্তমানে ১৯ বছর বয়সী মেয়েটি প্রচারমাধ্যমকে আরও বলে, ‘শুরুতে প্রচণ্ড রাগ আর লজ্জা হতো। এরপর পুলিশ যখন কিছু করলো না, তখন সব বাদ দিলাম। শেষে অনুভূতিহীন হয়ে পড়লাম। এক সময়ে আমি আর আমি থাকলাম না। শুধু কোন রকমে বেঁচে থাকলাম। আমি শুধু ভাবতাম, ওরা আমার সাথে যা করেছে তা কত জঘণ্য।’
No comments