নাট্যোৎসবের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী-যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে সাংস্কৃতিক আন্দোলন জোরদার করতে হবে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে জোর সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘আমরা বিচারের জন্য যুদ্ধাপরাধীদের আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছি এবং তরুণ-প্রজন্মসহ গোটা জাতি তাদের বিচারের জন্য ঐক্যবদ্ধ। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এই বিচারে জনমত তৈরিতে সহায়ক হতে পারে।’


গতকাল সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে একাডেমী আয়োজিত মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক জাতীয় নাট্যোৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয়েছে এবং এই বিচার বানচালের কোনো ষড়যন্ত্রই কাজে আসবে না। খবর বাসসের।
গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সহযোগিতায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী ১৩ দিনব্যাপী এই উৎসবের আয়োজন করেছে। উৎসবের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে শিল্প-সংস্কৃতির আলোকে ‘স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ৪০ বছর’।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্য এবং সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ। অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন, সংস্কৃতিসচিব সুরাইয়া বেগম, ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সভাপতি রামেন্দু মজুমদার ও একাডেমীর মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে ‘উত্তরীয়’ পরিয়ে দেন বিশিষ্ট অভিনেত্রী ফেরদৌসী মজুমদার। আর উৎসব স্মারক প্রদান করেন লিয়াকত আলী লাকী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও তাঁর সরকার শিক্ষা ও ক্রীড়াঙ্গনের মতোই প্রতিভাবান সাংস্কৃতিককর্মীদের প্রতিভা বিকাশে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে।
শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ সমগ্র জাতির জন্য একটি গর্ব। অথচ মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি এবং তাদের সমর্থকেরা জাতির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস ধ্বংস করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
এই নাট্যোৎসব মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস, মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব এবং স্বাধীনতার জন্য জাতির বিশেষ করে নারীদের আত্মত্যাগের ঘটনা নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে সক্ষম হবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে প্রত্যেককে উদ্যোগ নিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতীয় সংস্কৃতিতে শিশু, তরুণ ও যুবকদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। তিনি এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে শিল্পকলা একাডেমীসহ সব প্রতিষ্ঠানকে শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিকাশে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেন, শিল্পকলা একাডেমী ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ করবে। যাতে তারা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনে অনুপ্রাণিত হয়। তিনি বলেন, দেশের নাটক ও শিল্পকলা বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছে—বিশেষত ছোটদের নাটক যথেষ্ট সুখ্যাতি অর্জন করেছে।

No comments

Powered by Blogger.