বিশ্বভারতীতে ছাত্রী নির্যাতন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে তোলপাড়

পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী পুনিতা সিং থাকে হোস্টেলে। আর দশটা শিশুর মতো ঘুমের মধ্যে মাঝেমধ্যেই বিছানা ভেজায় সে। গত শনিবার রাতেও একই ঘটনা ঘটে। এ জন্য তাকে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হয়। হোস্টেলের ওয়ার্ডেন উমা পোদ্দার পুনিতাকে তার নিজের প্রস্রাব পান করতে বাধ্য করেন। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে।


কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত স্বনামধন্য বিশ্বভারতীতে এমন ঘটনা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
এ ঘটনায় পুনিতার মা-বাবা ওয়ার্ডেন উমার বিরুদ্ধে বোলপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিপরীতে উমাও পুনিতার মা-বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। পুলিশ উভয় পক্ষকেই গ্রেপ্তার করে। গতকাল সোমবার আদালত থেকে পুনিতার মা-বাবা নিঃশর্তে এবং উমা ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পেয়েছেন। ঘটনা খতিয়ে দেখতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
বিশ্বভারতীর পথ ভবনের করবী ছাত্রীনিবাসে থাকে পুনিতা। বাড়ি বোলপুরের মকরমপুর এলাকায়। গত শনিবার রাতে সে বিছানা ভেজালে ওয়ার্ডেন উমা তাকে ওই প্রস্রাব পান করতে বাধ্য করেন। পরদিন পুনিতার মা পুনম মিস্ত্রি হোস্টেলে ফোন করে তার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ঘটনাটি জানতে পারেন। তিনি স্বামী মনোজ মিস্ত্রিকে নিয়ে সেদিনই বিশ্বভারতীতে যান মেয়েকে আনতে। এ ব্যাপারে পুনম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি বলেন, 'ঘটনাটি বীভৎস ও অমানবিক। অপরাধীকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। এ ঘটনার ধাক্কা আমার মেয়ে কোনো দিনই সামলে উঠতে পারবে না।'
অভিযুক্ত উমা প্রথমে গাঢাকা দিলেও পরে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। পুলিশ গতকাল তাঁকে আদালতে হাজির করে। এ সময় বিচারক তাঁর মন্তব্যে বলেন, এ ধরনের ঘটনা জঘন্য ও নিন্দনীয়। তিনি জানান, ওই ছাত্রীর চিকিৎসার জন্য সব খরচ বহন করতে হবে বিশ্বভারতীকে এবং তা ওয়ার্ডেনের বেতন থেকে কেটে নেওয়া হবে।
ওয়ার্ডেন উমাও পুনিতার মা-বাবার বিরুদ্ধে বিশৃঙ্খলা ও পরিবেশ 'নষ্ট' করার অভিযোগ এনেছেন। তবে তাঁদের গ্রেপ্তারের ঘটনাকে ভালো চোখে দেখছে না কেউই। ধারণা করা হচ্ছে, মূল বিষয় থেকে মনোযোগ সরানোর জন্যই এটা করা হয়েছে। এরই মধ্যে শিশু অধিকার রক্ষাবিষয়ক জাতীয় কমিশন (এনসিপিসিআর) এ ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে।সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস, আনন্দবাজার পত্রিকা।

No comments

Powered by Blogger.