বিদ্যুৎ নিয়ে 'ভৌতিক' প্রচার-রেন্টাল বিদ্যুতের যৌক্তিকতা ও সাফল্য প্রমাণ করতে বিজ্ঞাপনে অসত্য তথ্য by রেজা রায়হান
'বিদ্যুৎ নিয়ে যত কথা : পর্ব-১ - রেন্টাল বিদ্যুৎ সরকারের গলার কাঁটা?' শিরোনামে গত ৫ ও ৭ জুলাই এবং গতকাল ৯ জুলাই 'বিদ্যুৎ নিয়ে যত কথা : পর্ব-২ - এত বিদ্যুৎ গেল কোথায়?' শিরোনামে দুটি ধারাবাহিক বিজ্ঞাপন বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞাপনদাতার পরিচয় গোপন রেখে বিদ্যুৎ খাতে সরকারের সাফল্য প্রচারের জন্য এ 'ভৌতিক বিজ্ঞাপন' যে অত্যুৎসাহী কোনো মহলের কাজ তা সহজে অনুমেয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন 'পাওয়ার সেল' সরকারি অর্থ ব্যয়ে সরকারের সাফল্য প্রচারের জন্য এ বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে। পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মাহবুবে সারওয়ারে কায়েনাত কালের কণ্ঠকে জানান, আরো বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হবে।
বিদ্যমান বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে পূর্ণ ক্ষমতায় পরিচালনার উদ্যোগ না নিয়ে ব্যক্তিস্বার্থে রেন্টাল (ভাড়াভিত্তিক) ও কুইক (দ্রুত) রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের নামে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া করার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের কর্তাব্যক্তিরা এখন ব্যাপকভাবে সমালোচিত। এ সমালোচনার দায় এখন সরকারকেই বহন করতে হচ্ছে। মানুষ এখনো লোডশেডিংয়ের দুর্বিষহ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পায়নি। সংসদে ও দলীয় ফোরামে সংসদ সদস্য ও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, বিদ্যুৎ সংকট আগামী নির্বাচনে সরকারি দলের জন্য বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করবে। এ অবস্থায় বিজ্ঞাপনদাতার পরিচয় গোপন রেখে সংবাদপত্রে সরকারের 'রেন্টাল নীতি' ও লোডশেডিংয়ের পক্ষে এ বিজ্ঞাপন দেখে মনে হয়, রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে লাভবান হওয়া বিদ্যুৎ বিভাগের স্বার্থান্বেষী মহলটিই প্রধানমন্ত্রীকে বিভ্রান্ত করতে নিম্নমানের এ প্রচারণা কৌশল নিয়েছে। অবাধ ও উন্মুক্ত তথ্যপ্রবাহের এ যুগে একটি নির্বাচিত সরকারের জন্য এ ধরনের অপকৌশল কেবল বেমানানই নয়, আত্মঘাতী বলেও অনেকে মনে করছেন। এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের জন্য অবমাননাকর এবং বিদ্যুৎ বিভাগের কর্তাব্যক্তিদের নৈতিক দেউলিয়াপনার বহিঃপ্রকাশ বলেও মনে করছে অভিজ্ঞমহল।
সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রে দেখা যায়, বিদ্যুৎ বিভাগ রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের আগে বিদ্যমান বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে পূর্ণ ক্ষমতায় চালানোর বিষয়টি একদমই বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। এমনও শোনা যায়, ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট বন্ধ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সেখানে কয়েকটি গ্যাসভিত্তিক কুইক রেন্টাল স্থাপনের যোগসূত্র রয়েছে। এ কারণেই ঘোড়াশালে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন নানা ছলছুতায় পুনঃ দরপত্রের নামে তিন বছর যাবৎ বিলম্বিত করা হয়েছে।
কুইক রেন্টালের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কোনো ধরনের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা কিংবা অর্থনীতির ওপর এর সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব, এমনকি ১৮টির মধ্যে ১২টি জ্বালানি তেলভিত্তিক 'কুইক রেন্টাল' চুক্তির আগে অস্থিতিশীল আন্তর্জাতিক বাজার থেকে তেল আমদানির সুদূরপ্রসারী আর্থিক ও অর্থনৈতিক ফলাফলও বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। এ খাতের বিপুল বিনিয়োগ ও বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা এবং মুনাফা ও বিনিয়োগ প্রত্যাবাসনে প্রয়োজনীয় স্থানীয় ও বৈদেশিক মুদ্রার জোগানজনিত চাপ দেশের দুর্বল ব্যাংকিং ব্যবস্থা বহন করতে পারবে কি না, তাও মূল্যায়ন করা হয়নি। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্তাব্যক্তিরা নিজের লোকদেরকে বিদ্যুৎ ব্যবসায়ী বানানোর ও লুটপাটের জন্যই যে রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন- এ নিয়ে আলোচনা এখন মানুষের মুখে মুখে। বিভিন্ন সেমিনার ও টকশোর আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা সরকারি নীতির সমালোচনা করে বলছেন, উচ্চ দরে রেন্টাল বিদ্যুৎ কিনে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি জাতীয় অর্থনীতি ও ব্যাংকিং খাতকে দেউলিয়া করে দিয়েছে। অথচ অনেক কম ব্যয়ে বিদ্যমান কেন্দ্রগুলোকে ভারী মেরামতের (ওভারহলিং) মাধ্যমে পূর্ণ ক্ষমতায় উৎপাদনের উপযোগীকরণ ও ক্ষেত্রমতো জ্বালানিসাশ্রয়ী কম্বাইন্ড সাইকেলে (যেখানে মূল সিম্পল সাইকেল ইউনিটের তাপ/বাষ্প জ্বালানিতে পরিণত হয়) রূপান্তরের মাধ্যমে জ্বালানির জন্য বাড়তি ব্যয় ছাড়াই অর্ধেকেরও বেশি বিদ্যুৎ পাওয়া যেত। উচ্চদামের জ্বালানি তেল ও রেন্টাল কেন্দ্রের যন্ত্রপাতি আমদানিতে ব্যাপক বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়েরও প্রয়োজন হতো না।
প্রথম পর্বের বিজ্ঞাপনের শুরুতে 'কেন ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র? কেন টেন্ডার ছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হলো? কতটা পুরাতন যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে?' শীর্ষক উপশিরোনামে বাংলাদেশে ১৯১২ সালে প্রথম গ্রিড সংযুক্ত বিদ্যুতের যাত্রার কাহিনী; ১৯৭০, '৮০, '৯০, ২০১০, '১১ ও ২০১২ সালের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও লোডশেডিং পরিস্থিতি এবং মাথাপিছু বিদ্যুৎ ব্যবহারের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার সময় বিদ্যুৎ সংকট চরম পর্যায়ে পৌঁছায়।
বিজ্ঞাপনে প্রদত্ত তথ্যে দেখা যায়, ২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ৫০০ (প্রকৃতপক্ষে ৫৩০) মেগাওয়াট ভাড়াভিত্তিক (রেন্টাল) আটটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রদত্ত ছকে দেখা যায়, চারটি রেন্টাল কেন্দ্রের চুক্তি হলেও তিনটি নির্ধারিত তারিখের অনেক পরে উৎপাদনে গেছে। ভেড়ামারায় কোয়ান্টাম পাওয়ার প্রায় সাত মাস, নোয়াপাড়ায় একই উদ্যোক্তা প্রায় ১৪ মাস এবং ঠাকুরগাঁওয়ে আরজেড পাওয়ার ছয় মাস পরে উৎপাদনে যায়। আর বরিশাল পাওয়ার কেন্দ্র নির্মিত হয়নি।
দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে রেন্টাল কেন্দ্র স্থাপনের এ ব্যর্থতাকে বিজ্ঞাপনে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্তাব্যক্তিদের নিজের লোকদেরকে বিদ্যুৎ ব্যবসায়ী বানানোর জন্য দরপত্র ছাড়াই 'কুইক রেন্টাল' চুক্তির যৌক্তিতা হিসেবে দেখানো হয়েছে। এর সঙ্গে প্রদত্ত ছকে যে ১৮টি 'কুইক রেন্টাল' চুক্তির বিবরণ দেওয়া হয়েছে তাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আশুগঞ্জ, ঘোড়াশাল ও খুলনায় ব্রিটিশ কম্পানি এগ্রিকোর ৩৫০ মেগাওয়াট, পাগলায় সেনাবাহিনীর যৌথ উদ্যোগ ডিপিএর ৫০ মেগাওয়াট এবং ঘোড়াশালে ম্যাঙ্ পাওয়ারের ৭৮.৫ মেগাওয়াট ছাড়া আর কোনোটিই নির্ধারিত সময় উৎপাদনে যেতে পারেনি। তবে চুক্তিতে সবার জন্য অভিন্ন সময়ও নির্ধারিত ছিল না। আর মেঘনাঘাটে হাইপেরিয়ান পাওয়ার বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ব্যর্থ হয়েছে। অন্য কেন্দ্রগুলো ১ থেকে ১৩ মাস পর্যন্ত বিলম্বে উৎপাদনে গেছে। অথচ বিজ্ঞাপনে 'এ তালিকার বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো নির্ধারিত সময়ের কাছাকাছি সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে'- এমন অসত্য দাবি করা হয়েছে।
রেন্টালের বিকল্প পুরনো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো মেরামত
পুরনো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো মেরামত করে বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ সম্পর্কে বিজ্ঞাপনে ৩২টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্থাপিত ক্ষমতা, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি এবং ২০১২ সালের ২২ মার্চ ও ২৬ জুনের প্রকৃত উৎপাদনের তথ্য দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞাপনে পুরনো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি ৩,২৬৭.৫ মেগাওয়াট এবং ২০১২ সালের ২২ মার্চ ৩,৫২১ মেগাওয়াট ও ২৬ জুন ৩,৮৬০ মেগাওয়াট প্রকৃত বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। বিজ্ঞাপনে পুরনো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মোট স্থাপিত ক্ষমতা উল্লেখ করা হয়নি। তবে তথ্য যোগ করে দেখা গেছে, এ কেন্দ্রগুলোর মোট স্থাপিত ক্ষমতা ৫,৩৪০ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ খাতের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী বিদ্যুৎ বিভাগ রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের আত্মঘাতী পথে না গিয়ে ভারী মেরামতের মাধ্যমে পুরনো এ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে স্থাপিত পূর্ণ ক্ষমতায় পরিচালনা করলে এ জন্য খুব একটা অর্থ ব্যয় ছাড়াই বাড়তি ১৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়ার সুযোগ ছিল। আর এর মধ্যে যেগুলো কম্বাইন্ড সাইকেল নয়, সেগুলোকে জ্বালানিসাশ্রয়ী কম্বাইন্ড সাইকেলে রূপান্তর করলে আরো ৫০০ মেগাওয়াটেরও বেশি বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব হতো। জ্বালানি তেল কেনার জন্য যেখানে টাকার অভাবে রেন্টাল ও কুইক রেন্টালগুলোকে বন্ধ রেখে সরকার চুক্তির বাধ্যবাধকতায় বৈদেশিক মুদ্রায় ভাড়া দিতে বাধ্য হচ্ছে, সেখানে পুরনো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ভারী মেরামত ও জ্বালানিসাশ্রয়ী কম্বাইন্ড সাইকেলের রূপান্তরের বিষয়টিকে উপেক্ষার জন্য দায়ী বিদ্যুৎ বিভাগের নীতিনির্ধারকদেরকে চিহ্নিত করার সময় এসেছে এবং তা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীই করতে পারেন।
এদিকে গতকাল প্রকাশিত 'বিদ্যুৎ নিয়ে যত কথা : পর্ব-২ - এত বিদ্যুৎ গেল কোথায়?' শিরোনামের বিজ্ঞাপনে বর্তমান সরকারের আমলে বিদ্যুতের সংযোগ ও ব্যবহার বৃদ্ধির বিশদ তথ্য রয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ ২৫ লাখ বৃদ্ধি এবং দেশে লাখ লাখ এয়ার কুলার, ফ্রিজ, মাইক্রোওভেন, ওয়াশিং মেশিন, হিটার ও ইন্ডাকশন চুল্লি এবং মোবাইল ও ব্যাটারিচালিত তিন চাকার ইজি বাইকের চার্জের কারণে বিদ্যুতের বিপুল পরিমাণ চাহিদা বেড়েছে বলে দেখানো হয়েছে। নতুন গ্রাহকদের ১৫০০ মেগাওয়াট, নতুন ইলেকট্রনিঙ্ সামগ্রীতে ৭৪০ মেগাওয়াট এবং ইজি বাইকের জন্য ২৪০ মেগাওয়াটসহ মোট চাহিদা ২,৮৮৮ মেগাওয়াট বেড়েছে বলে দেখানো হয়েছে। আর বৈদ্যুতিক চুল্লি ব্যবহারে মাস ও বছরভিত্তিক বিদ্যুতের বর্ধিত চাহিদা দেখানো হয়েছে যথাক্রমে ২৪০ ও ২,৯২০ মেগাওয়াট। শিল্প খাতের ১২ শতাংশ প্রবৃদ্ধিকে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে।
গরমের সময় বৈদ্যুতিক পাখা ও এয়ার কুলারের ব্যবহার বৃদ্ধিতেও বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে- এ দাবি যৌক্তিক হলেও শীতের তীব্রতার কারণে হিটারের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ার যে দাবি করা হয়েছে তা আসলেই একটি কুযুক্তি। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল ছাড়া দেশের বাকি অঞ্চলে শীতের তীব্রতা নেই বললেই চলে। পুরো শীতে মাত্র কয়েক দিনই শীত থাকে। আর উত্তরাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের শীতের সময় হিটার ব্যবহারের তথ্য বাস্তবসম্মত নয়। সর্বোপরি শীতে সার্বিকভাবে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকে। তাই বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের গল্প লিখতে গিয়ে শীতকে টেনে আনা স্কুলে 'নদীর ওপর রচনা লিখতে গিয়ে গরুর রচনা লেখা'র কথাই মনে করিয়ে দিয়েছে।
উন্নয়নের চালিকা শক্তি বিদ্যুৎ এ সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এবং অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গীকারও। অগ্রাধিকার বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিজের কাছে রেখেছেন। কিন্তু যেসব মতলববাজ এ বিষয়ে নীতিনির্ধারণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন, যাঁরা নিজের লোকদেরকে বিদ্যুৎ ব্যবসায়ী বানানোর জন্য আত্মঘাতী রেন্টাল কেন্দ্রের চুক্তি পাইয়ে দিয়েছেন- সেসব স্বার্থান্বেষী মহলকে অবিলম্বে চিহ্নিত করা প্রয়োজন। নির্বাচনের আর মাত্র দেড় বছর বাকি, ভৌতিক প্রচারণার পথে না গিয়ে বিদ্যুৎ খাতের কুচক্রী মহলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার পাশাপাশি বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এখনো বিদ্যুৎ খাতকে পুনরুজ্জীবিত ও সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে পারেন। এটা সময়ের দাবি, মানুষেরও দাবি।
বিদ্যুৎ বিভাগের ভূতপ্রেতরা 'বিদ্যুৎ নিয়ে যত কথা'র পরবর্তী পর্বসমূহে দেশবাসীর সামনে নতুন আর কি আজগুবি তথ্য ও তত্ত্ব হাজির করেন- তা দেখার অপেক্ষায় থাকছি!
বিদ্যমান বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে পূর্ণ ক্ষমতায় পরিচালনার উদ্যোগ না নিয়ে ব্যক্তিস্বার্থে রেন্টাল (ভাড়াভিত্তিক) ও কুইক (দ্রুত) রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের নামে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া করার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের কর্তাব্যক্তিরা এখন ব্যাপকভাবে সমালোচিত। এ সমালোচনার দায় এখন সরকারকেই বহন করতে হচ্ছে। মানুষ এখনো লোডশেডিংয়ের দুর্বিষহ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পায়নি। সংসদে ও দলীয় ফোরামে সংসদ সদস্য ও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, বিদ্যুৎ সংকট আগামী নির্বাচনে সরকারি দলের জন্য বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করবে। এ অবস্থায় বিজ্ঞাপনদাতার পরিচয় গোপন রেখে সংবাদপত্রে সরকারের 'রেন্টাল নীতি' ও লোডশেডিংয়ের পক্ষে এ বিজ্ঞাপন দেখে মনে হয়, রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে লাভবান হওয়া বিদ্যুৎ বিভাগের স্বার্থান্বেষী মহলটিই প্রধানমন্ত্রীকে বিভ্রান্ত করতে নিম্নমানের এ প্রচারণা কৌশল নিয়েছে। অবাধ ও উন্মুক্ত তথ্যপ্রবাহের এ যুগে একটি নির্বাচিত সরকারের জন্য এ ধরনের অপকৌশল কেবল বেমানানই নয়, আত্মঘাতী বলেও অনেকে মনে করছেন। এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের জন্য অবমাননাকর এবং বিদ্যুৎ বিভাগের কর্তাব্যক্তিদের নৈতিক দেউলিয়াপনার বহিঃপ্রকাশ বলেও মনে করছে অভিজ্ঞমহল।
সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রে দেখা যায়, বিদ্যুৎ বিভাগ রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের আগে বিদ্যমান বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে পূর্ণ ক্ষমতায় চালানোর বিষয়টি একদমই বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। এমনও শোনা যায়, ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট বন্ধ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সেখানে কয়েকটি গ্যাসভিত্তিক কুইক রেন্টাল স্থাপনের যোগসূত্র রয়েছে। এ কারণেই ঘোড়াশালে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন নানা ছলছুতায় পুনঃ দরপত্রের নামে তিন বছর যাবৎ বিলম্বিত করা হয়েছে।
কুইক রেন্টালের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কোনো ধরনের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা কিংবা অর্থনীতির ওপর এর সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব, এমনকি ১৮টির মধ্যে ১২টি জ্বালানি তেলভিত্তিক 'কুইক রেন্টাল' চুক্তির আগে অস্থিতিশীল আন্তর্জাতিক বাজার থেকে তেল আমদানির সুদূরপ্রসারী আর্থিক ও অর্থনৈতিক ফলাফলও বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। এ খাতের বিপুল বিনিয়োগ ও বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা এবং মুনাফা ও বিনিয়োগ প্রত্যাবাসনে প্রয়োজনীয় স্থানীয় ও বৈদেশিক মুদ্রার জোগানজনিত চাপ দেশের দুর্বল ব্যাংকিং ব্যবস্থা বহন করতে পারবে কি না, তাও মূল্যায়ন করা হয়নি। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্তাব্যক্তিরা নিজের লোকদেরকে বিদ্যুৎ ব্যবসায়ী বানানোর ও লুটপাটের জন্যই যে রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন- এ নিয়ে আলোচনা এখন মানুষের মুখে মুখে। বিভিন্ন সেমিনার ও টকশোর আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা সরকারি নীতির সমালোচনা করে বলছেন, উচ্চ দরে রেন্টাল বিদ্যুৎ কিনে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি জাতীয় অর্থনীতি ও ব্যাংকিং খাতকে দেউলিয়া করে দিয়েছে। অথচ অনেক কম ব্যয়ে বিদ্যমান কেন্দ্রগুলোকে ভারী মেরামতের (ওভারহলিং) মাধ্যমে পূর্ণ ক্ষমতায় উৎপাদনের উপযোগীকরণ ও ক্ষেত্রমতো জ্বালানিসাশ্রয়ী কম্বাইন্ড সাইকেলে (যেখানে মূল সিম্পল সাইকেল ইউনিটের তাপ/বাষ্প জ্বালানিতে পরিণত হয়) রূপান্তরের মাধ্যমে জ্বালানির জন্য বাড়তি ব্যয় ছাড়াই অর্ধেকেরও বেশি বিদ্যুৎ পাওয়া যেত। উচ্চদামের জ্বালানি তেল ও রেন্টাল কেন্দ্রের যন্ত্রপাতি আমদানিতে ব্যাপক বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়েরও প্রয়োজন হতো না।
প্রথম পর্বের বিজ্ঞাপনের শুরুতে 'কেন ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র? কেন টেন্ডার ছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হলো? কতটা পুরাতন যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে?' শীর্ষক উপশিরোনামে বাংলাদেশে ১৯১২ সালে প্রথম গ্রিড সংযুক্ত বিদ্যুতের যাত্রার কাহিনী; ১৯৭০, '৮০, '৯০, ২০১০, '১১ ও ২০১২ সালের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও লোডশেডিং পরিস্থিতি এবং মাথাপিছু বিদ্যুৎ ব্যবহারের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার সময় বিদ্যুৎ সংকট চরম পর্যায়ে পৌঁছায়।
বিজ্ঞাপনে প্রদত্ত তথ্যে দেখা যায়, ২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ৫০০ (প্রকৃতপক্ষে ৫৩০) মেগাওয়াট ভাড়াভিত্তিক (রেন্টাল) আটটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রদত্ত ছকে দেখা যায়, চারটি রেন্টাল কেন্দ্রের চুক্তি হলেও তিনটি নির্ধারিত তারিখের অনেক পরে উৎপাদনে গেছে। ভেড়ামারায় কোয়ান্টাম পাওয়ার প্রায় সাত মাস, নোয়াপাড়ায় একই উদ্যোক্তা প্রায় ১৪ মাস এবং ঠাকুরগাঁওয়ে আরজেড পাওয়ার ছয় মাস পরে উৎপাদনে যায়। আর বরিশাল পাওয়ার কেন্দ্র নির্মিত হয়নি।
দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে রেন্টাল কেন্দ্র স্থাপনের এ ব্যর্থতাকে বিজ্ঞাপনে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্তাব্যক্তিদের নিজের লোকদেরকে বিদ্যুৎ ব্যবসায়ী বানানোর জন্য দরপত্র ছাড়াই 'কুইক রেন্টাল' চুক্তির যৌক্তিতা হিসেবে দেখানো হয়েছে। এর সঙ্গে প্রদত্ত ছকে যে ১৮টি 'কুইক রেন্টাল' চুক্তির বিবরণ দেওয়া হয়েছে তাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আশুগঞ্জ, ঘোড়াশাল ও খুলনায় ব্রিটিশ কম্পানি এগ্রিকোর ৩৫০ মেগাওয়াট, পাগলায় সেনাবাহিনীর যৌথ উদ্যোগ ডিপিএর ৫০ মেগাওয়াট এবং ঘোড়াশালে ম্যাঙ্ পাওয়ারের ৭৮.৫ মেগাওয়াট ছাড়া আর কোনোটিই নির্ধারিত সময় উৎপাদনে যেতে পারেনি। তবে চুক্তিতে সবার জন্য অভিন্ন সময়ও নির্ধারিত ছিল না। আর মেঘনাঘাটে হাইপেরিয়ান পাওয়ার বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ব্যর্থ হয়েছে। অন্য কেন্দ্রগুলো ১ থেকে ১৩ মাস পর্যন্ত বিলম্বে উৎপাদনে গেছে। অথচ বিজ্ঞাপনে 'এ তালিকার বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো নির্ধারিত সময়ের কাছাকাছি সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে'- এমন অসত্য দাবি করা হয়েছে।
রেন্টালের বিকল্প পুরনো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো মেরামত
পুরনো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো মেরামত করে বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ সম্পর্কে বিজ্ঞাপনে ৩২টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্থাপিত ক্ষমতা, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি এবং ২০১২ সালের ২২ মার্চ ও ২৬ জুনের প্রকৃত উৎপাদনের তথ্য দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞাপনে পুরনো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি ৩,২৬৭.৫ মেগাওয়াট এবং ২০১২ সালের ২২ মার্চ ৩,৫২১ মেগাওয়াট ও ২৬ জুন ৩,৮৬০ মেগাওয়াট প্রকৃত বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। বিজ্ঞাপনে পুরনো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মোট স্থাপিত ক্ষমতা উল্লেখ করা হয়নি। তবে তথ্য যোগ করে দেখা গেছে, এ কেন্দ্রগুলোর মোট স্থাপিত ক্ষমতা ৫,৩৪০ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎ খাতের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী বিদ্যুৎ বিভাগ রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের আত্মঘাতী পথে না গিয়ে ভারী মেরামতের মাধ্যমে পুরনো এ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে স্থাপিত পূর্ণ ক্ষমতায় পরিচালনা করলে এ জন্য খুব একটা অর্থ ব্যয় ছাড়াই বাড়তি ১৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়ার সুযোগ ছিল। আর এর মধ্যে যেগুলো কম্বাইন্ড সাইকেল নয়, সেগুলোকে জ্বালানিসাশ্রয়ী কম্বাইন্ড সাইকেলে রূপান্তর করলে আরো ৫০০ মেগাওয়াটেরও বেশি বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব হতো। জ্বালানি তেল কেনার জন্য যেখানে টাকার অভাবে রেন্টাল ও কুইক রেন্টালগুলোকে বন্ধ রেখে সরকার চুক্তির বাধ্যবাধকতায় বৈদেশিক মুদ্রায় ভাড়া দিতে বাধ্য হচ্ছে, সেখানে পুরনো বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ভারী মেরামত ও জ্বালানিসাশ্রয়ী কম্বাইন্ড সাইকেলের রূপান্তরের বিষয়টিকে উপেক্ষার জন্য দায়ী বিদ্যুৎ বিভাগের নীতিনির্ধারকদেরকে চিহ্নিত করার সময় এসেছে এবং তা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীই করতে পারেন।
এদিকে গতকাল প্রকাশিত 'বিদ্যুৎ নিয়ে যত কথা : পর্ব-২ - এত বিদ্যুৎ গেল কোথায়?' শিরোনামের বিজ্ঞাপনে বর্তমান সরকারের আমলে বিদ্যুতের সংযোগ ও ব্যবহার বৃদ্ধির বিশদ তথ্য রয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ ২৫ লাখ বৃদ্ধি এবং দেশে লাখ লাখ এয়ার কুলার, ফ্রিজ, মাইক্রোওভেন, ওয়াশিং মেশিন, হিটার ও ইন্ডাকশন চুল্লি এবং মোবাইল ও ব্যাটারিচালিত তিন চাকার ইজি বাইকের চার্জের কারণে বিদ্যুতের বিপুল পরিমাণ চাহিদা বেড়েছে বলে দেখানো হয়েছে। নতুন গ্রাহকদের ১৫০০ মেগাওয়াট, নতুন ইলেকট্রনিঙ্ সামগ্রীতে ৭৪০ মেগাওয়াট এবং ইজি বাইকের জন্য ২৪০ মেগাওয়াটসহ মোট চাহিদা ২,৮৮৮ মেগাওয়াট বেড়েছে বলে দেখানো হয়েছে। আর বৈদ্যুতিক চুল্লি ব্যবহারে মাস ও বছরভিত্তিক বিদ্যুতের বর্ধিত চাহিদা দেখানো হয়েছে যথাক্রমে ২৪০ ও ২,৯২০ মেগাওয়াট। শিল্প খাতের ১২ শতাংশ প্রবৃদ্ধিকে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে।
গরমের সময় বৈদ্যুতিক পাখা ও এয়ার কুলারের ব্যবহার বৃদ্ধিতেও বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে- এ দাবি যৌক্তিক হলেও শীতের তীব্রতার কারণে হিটারের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ার যে দাবি করা হয়েছে তা আসলেই একটি কুযুক্তি। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল ছাড়া দেশের বাকি অঞ্চলে শীতের তীব্রতা নেই বললেই চলে। পুরো শীতে মাত্র কয়েক দিনই শীত থাকে। আর উত্তরাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের শীতের সময় হিটার ব্যবহারের তথ্য বাস্তবসম্মত নয়। সর্বোপরি শীতে সার্বিকভাবে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকে। তাই বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের গল্প লিখতে গিয়ে শীতকে টেনে আনা স্কুলে 'নদীর ওপর রচনা লিখতে গিয়ে গরুর রচনা লেখা'র কথাই মনে করিয়ে দিয়েছে।
উন্নয়নের চালিকা শক্তি বিদ্যুৎ এ সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এবং অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গীকারও। অগ্রাধিকার বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিজের কাছে রেখেছেন। কিন্তু যেসব মতলববাজ এ বিষয়ে নীতিনির্ধারণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন, যাঁরা নিজের লোকদেরকে বিদ্যুৎ ব্যবসায়ী বানানোর জন্য আত্মঘাতী রেন্টাল কেন্দ্রের চুক্তি পাইয়ে দিয়েছেন- সেসব স্বার্থান্বেষী মহলকে অবিলম্বে চিহ্নিত করা প্রয়োজন। নির্বাচনের আর মাত্র দেড় বছর বাকি, ভৌতিক প্রচারণার পথে না গিয়ে বিদ্যুৎ খাতের কুচক্রী মহলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার পাশাপাশি বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এখনো বিদ্যুৎ খাতকে পুনরুজ্জীবিত ও সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে পারেন। এটা সময়ের দাবি, মানুষেরও দাবি।
বিদ্যুৎ বিভাগের ভূতপ্রেতরা 'বিদ্যুৎ নিয়ে যত কথা'র পরবর্তী পর্বসমূহে দেশবাসীর সামনে নতুন আর কি আজগুবি তথ্য ও তত্ত্ব হাজির করেন- তা দেখার অপেক্ষায় থাকছি!
No comments