সিলেটে সংঘর্ষ-বিবেকের দংশন আর ক্ষোভের আগুনে পুড়ছে সিলেটবাসী
সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এমসি (মুরারী চাঁদ) কলেজের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, 'স্বদেশের পুঞ্জীভূত লজ্জা দূর করবার ভার তোমাদের ওপর। তোমরা আকাঙ্ক্ষাকে বড় করবে, সাধনাকে সত্য করবে।' ৯৩ বছর আগে রবীন্দ্রনাথ যাদের ওপর লজ্জা দূর করার ভার দিয়েছিলেন, তাদের উত্তরসূরিরা গোটা সিলেটবাসীকে লজ্জায় ডুবিয়ে ঐতিহ্যের স্মারক এ কলেজের ছাত্রাবাসটি জ্বালিয়ে দিয়েছে।
ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে গত রবিবার রাতে ছাত্রাবাসটি পুড়িয়ে দেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। দাউ দাউ আগুনে পুড়ে যায় প্রাচীন ও ঐতিহ্যমণ্ডিত এ স্থাপনা। এ ঘটনায় সিলেটের সর্বত্র চলছে ধিক্কার, ক্ষোভ, নিন্দা আর প্রতিবাদের ঝড়। সিলেট এমসি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৯২ সালে। এ কলেজের ভূপ্রাকৃতিক গঠন স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। ছোট ছোট টিলা ও অজস্র দুর্লভ গাছগাছালিতে ঘেরা কলেজের সৌন্দর্য মনোমুঙ্কর। প্রায় ১২৪ একর জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত এ কলেজের ছাত্রাবাসটি বর্তমান স্থানে স্থানান্তরিত হয় ১৯২৫ সালে। প্রায় ছয় একর ভূমির ওপর নির্মিত ছাত্রাবাসটির স্থাপত্যশৈলী যে কারো দৃষ্টি কাড়ত। ছাত্রাবাসের সামনে সুবিশাল মাঠ, ছয়টি ব্লকে ভাগ করা ছাত্রাবাসের এক ব্লক থেকে অন্য ব্লকের দূরত্ব অনেক। স্থপতি শাকুর মজিদ জানান, যে স্থাপত্যকলায় ছাত্রাবাসের ভবনগুলো নির্মিত হয়েছিল, তা এখন বিশ্বে বিরল। স্থাপত্যকলার ভাষায় এ ভবনগুলোর নাম 'সেমি পাক্কা আসাম টাইপ'। তিনি বলেন, সম্ভবত বিশ্বের বুকে সবচেয়ে বড় সেমি পাক্কা আসাম টাইপ স্থাপনা সিলেটের এমসি কলেজের এ ছাত্রাবাসটি।
কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও বর্তমানে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবদুল আজিজ বলেন, 'ছাত্রাবাসটি ছিল আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্যের অংশ। সেটি আজ ধ্বংস হয়ে গেল। এ ঘটনায় এত কষ্ট পেয়েছি যে ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। নিন্দা জানানোর ভাষাও খুঁজে পাচ্ছি না।'
আরেক সাবেক অধ্যক্ষ আ ন আ আ মাহবুব আহমেদ বলেন, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা কখনো ছাত্র হতে পারে না। কলেজটিতে ২৭ বছর অধ্যাপনা করা এই শিক্ষক বলেন, 'সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে আবেগ সামলে রাখতে পারিনি। এ ঘটনার সুবিচার হওয়া জরুরি। আমাদের দীর্ঘদিনের লালিত ঐতিহ্য এভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে, তা ভাবতে কষ্ট হচ্ছে।'
সাবেক অধ্যক্ষ শ্রীনিবাস দে বলেন, 'ছাত্রদের এত অধঃপতন হয়েছে, তা কল্পনাও করতে পারিনি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থাকতে পারে; তাই বলে আমাদের ঐতিহ্যের, গৌরবের এ নিদর্শন এভাবে শেষ করে দেওয়া হবে, তা ভাবতেও কান্না পাচ্ছে। কোনো শুভ বোধসম্পন্ন মানুষ এটা করতে পারে না।'
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক আবদুজ জহির চৌধুরী ছুফিয়ান বলেন, 'ছাত্রলীগ কিংবা শিবির যে-ই এ ঘটনা করুক, তার বিচার হওয়া উচিত। এ ধরনের ঐতিহ্যবাহী ভবন পুড়ে যাওয়ায় আমাদের খুব খারাপ লাগছে।'
সিলেট জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য দিলদার হোসেন সেলিম ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন, সরকার যদি এদের বিচার না করে তাহলে সিলেটের ঐতিহ্যের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। মহানগর বিএনপির সভাপতি এম এ হক বলেন, কিছুদিন আগে সরকারি দলের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ সরকারি কলেজ ছাত্রাবাসে আগুন দেয়। এবার তারা ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজ ছাত্রাবাস পুড়িয়ে দিল। অবিলম্বে জড়িতদের শাস্তি দেওয়া না হলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবির জেলা সভাপতি বেদানন্দ ভট্টাচার্য বলেন, এটি কোনো রাজনৈতিক সংঘর্ষ নয়। এটি মূলত বেপরোয়া দুর্বৃত্তপনা। রাজনৈতিক দলের ছত্রচ্ছায়ায় দুর্বৃত্তদের দুটি দল ভয়াবহ এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদের পাহারা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব নয়। এদের বিচারের মাধ্যমে সরকারকে প্রমাণ করতে হবে, তারা দুর্বৃত্তদের পাহারা দেয় না।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সিলেট জেলা শাখার সভাপতি কলন্দর আলী বলেন, সরকারের দায়িত্ব কে বা কারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া। যে স্থাপনা ধ্বংস করা হয়েছে এ ধরনের স্থাপনা আর কেউ করতে পারবে না।
গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক আরিফ মিয়া বলেন, সিলেটের একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেওয়া সিলেটবাসীর জন্য কলঙ্কজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে। দুষ্কৃতকারীরা যে দলেরই হোক, তাদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত।
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সিলেট জেলার আহ্বায়ক উজ্জ্বল রায় বলেন, এটি মূলত দখলদারিত্বের অপরাজনীতির ন্যক্কারজনক ঘটনা। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত। ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় বিকল্প সদস্য সিকান্দার আলী বলেন, দুটি ছাত্র সংগঠনের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটতেই পারে। এ জন্য ছাত্রাবাস জ্বালিয়ে দেওয়া রাজনৈতিক শিষ্টাচার বিবর্জিত। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তদন্তক্রমে তাদের বিচার হওয়া উচিত।
কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও বর্তমানে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবদুল আজিজ বলেন, 'ছাত্রাবাসটি ছিল আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্যের অংশ। সেটি আজ ধ্বংস হয়ে গেল। এ ঘটনায় এত কষ্ট পেয়েছি যে ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। নিন্দা জানানোর ভাষাও খুঁজে পাচ্ছি না।'
আরেক সাবেক অধ্যক্ষ আ ন আ আ মাহবুব আহমেদ বলেন, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা কখনো ছাত্র হতে পারে না। কলেজটিতে ২৭ বছর অধ্যাপনা করা এই শিক্ষক বলেন, 'সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে আবেগ সামলে রাখতে পারিনি। এ ঘটনার সুবিচার হওয়া জরুরি। আমাদের দীর্ঘদিনের লালিত ঐতিহ্য এভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে, তা ভাবতে কষ্ট হচ্ছে।'
সাবেক অধ্যক্ষ শ্রীনিবাস দে বলেন, 'ছাত্রদের এত অধঃপতন হয়েছে, তা কল্পনাও করতে পারিনি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থাকতে পারে; তাই বলে আমাদের ঐতিহ্যের, গৌরবের এ নিদর্শন এভাবে শেষ করে দেওয়া হবে, তা ভাবতেও কান্না পাচ্ছে। কোনো শুভ বোধসম্পন্ন মানুষ এটা করতে পারে না।'
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক আবদুজ জহির চৌধুরী ছুফিয়ান বলেন, 'ছাত্রলীগ কিংবা শিবির যে-ই এ ঘটনা করুক, তার বিচার হওয়া উচিত। এ ধরনের ঐতিহ্যবাহী ভবন পুড়ে যাওয়ায় আমাদের খুব খারাপ লাগছে।'
সিলেট জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য দিলদার হোসেন সেলিম ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন, সরকার যদি এদের বিচার না করে তাহলে সিলেটের ঐতিহ্যের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। মহানগর বিএনপির সভাপতি এম এ হক বলেন, কিছুদিন আগে সরকারি দলের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ সরকারি কলেজ ছাত্রাবাসে আগুন দেয়। এবার তারা ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজ ছাত্রাবাস পুড়িয়ে দিল। অবিলম্বে জড়িতদের শাস্তি দেওয়া না হলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবির জেলা সভাপতি বেদানন্দ ভট্টাচার্য বলেন, এটি কোনো রাজনৈতিক সংঘর্ষ নয়। এটি মূলত বেপরোয়া দুর্বৃত্তপনা। রাজনৈতিক দলের ছত্রচ্ছায়ায় দুর্বৃত্তদের দুটি দল ভয়াবহ এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদের পাহারা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব নয়। এদের বিচারের মাধ্যমে সরকারকে প্রমাণ করতে হবে, তারা দুর্বৃত্তদের পাহারা দেয় না।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সিলেট জেলা শাখার সভাপতি কলন্দর আলী বলেন, সরকারের দায়িত্ব কে বা কারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া। যে স্থাপনা ধ্বংস করা হয়েছে এ ধরনের স্থাপনা আর কেউ করতে পারবে না।
গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক আরিফ মিয়া বলেন, সিলেটের একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেওয়া সিলেটবাসীর জন্য কলঙ্কজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে। দুষ্কৃতকারীরা যে দলেরই হোক, তাদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত।
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সিলেট জেলার আহ্বায়ক উজ্জ্বল রায় বলেন, এটি মূলত দখলদারিত্বের অপরাজনীতির ন্যক্কারজনক ঘটনা। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত। ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় বিকল্প সদস্য সিকান্দার আলী বলেন, দুটি ছাত্র সংগঠনের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটতেই পারে। এ জন্য ছাত্রাবাস জ্বালিয়ে দেওয়া রাজনৈতিক শিষ্টাচার বিবর্জিত। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তদন্তক্রমে তাদের বিচার হওয়া উচিত।
No comments