বেঁচে থাকবেন অগণিত ভক্ত-পাঠকের মাঝে-বিদায় হুমায়ূন আহমেদ
অবশেষে চলেই গেলেন প্রিয় হুমায়ূন আহমেদ। দীর্ঘ নয় মাস দুরারোগ্য ক্যানসারের সঙ্গে প্রাণান্তকর লড়াই করে অবশেষে তাঁকে চলে যেতে হলো। অগণিত ভক্ত-পাঠক, টিভি-চলচ্চিত্রের দর্শক, অজস্র বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন আজ তাঁকে হারানোর শোকে মুহ্যমান। আমরা সবাই তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।
বাংলাদেশের সাহিত্যের ইতিহাসে হুমায়ূন আহমেদ নিঃসন্দেহে জনপ্রিয়তম লেখক। প্রায় তিন দশক ধরে তাঁকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে বিরাট এক পাঠকসমাজ। বাংলাদেশে সৃজনশীল সাহিত্য পাঠের ক্ষীয়মাণ অভ্যাস ফিরে এসেছে, সৃজনশীল পুস্তক প্রকাশনাশিল্পের ম্রিয়মাণ দশা কেটে গেছে প্রধানত তাঁরই কল্যাণে। বহুলপ্রজ এই লেখক মূলত একাই কয়েক ডজন পুস্তক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ভিত্তির কারণ হয়েছিলেন। বলা বাহুল্য, প্রতিবছর একুশের গ্রন্থমেলায় মোট বিক্রীত সৃজনশীল গ্রন্থের সিংহভাগ হুমায়ূন আহমেদের। জনপ্রিয়তায় তিনি প্রায় আকাশস্পর্শী।
হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয়তার পেছনে রয়েছে সহজ-সাবলীল ভাষায় সরস ভঙ্গিতে কাহিনি বর্ণনায় তাঁর অনায়াস দক্ষতা। মধ্যবিত্ত জীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার গল্প বলার মধ্য দিয়ে তিনি প্রবেশ করেছেন পাঠকের অন্তরের গভীরে, যেখানে পাঠক-লেখক দূরত্ব ঘুচে গিয়ে সৃষ্টি হয় একাত্মতা। লেখককে পাঠকের মনে হয় অত্যন্ত কাছের, আপনার লোক—দূরবর্তী নির্লিপ্ত শিল্পস্রষ্টা নয়। নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার প্রভৃতি এমনই ধারার আখ্যান, যা তাঁকে বাঙালি মধ্যবিত্ত পাঠকের মনে নিবিড় স্থান করে দিয়েছে।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হুমায়ূন আহমেদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা গল্প-উপন্যাসগুলোতে বাবাকে হারানোর ব্যক্তিগত-পারিবারিক আবেগের সীমা ছাড়িয়ে গোটা জাতির দুঃখ, বেদনা, সংগ্রাম ও সংকল্পের ছবি ফুটে উঠেছে। তিনি কিছু ছোটগল্পও লিখেছেন, যেগুলো সাহিত্যের এই গুরুত্বপূর্ণ শাখায় স্থায়ী আসন পাবে।
হুমায়ূন ছিলেন বিজ্ঞানমনস্ক একজন আধুনিক মানুষ। বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন, বিজ্ঞানে উচ্চতর পড়াশোনা করেছেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ সময় রসায়নশাস্ত্র পড়িয়েছেন। বিজ্ঞানে তাঁর আগ্রহের ফসল ফলেছে তাঁর রচিত সাহিত্যকর্মেও। তিনি এমন কিছু বিজ্ঞান কল্পকাহিনি লিখেছেন, যা প্রচলিত ‘সায়েন্স ফিকশন’ ঘরানা থেকে আলাদা, যেমনটি বাংলাদেশের সাহিত্যে এর আগে দেখা যায়নি। তাঁর সৃষ্টি মিসির আলী চরিত্রটিকে কেন্দ্র করে তিনি যেসব মনস্তাত্ত্বিক নাটকীয়তাপূর্ণ কাহিনি রচনা করেছেন, সেগুলোও একান্তই তাঁর স্বকীয় কল্পনাশক্তির ফল।
সাহিত্যের মতো টেলিভিশন মাধ্যমেও অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। বিটিভিতে ধারাবাহিক নাটক জনপ্রিয়তার চূড়া স্পর্শ করেছিল তাঁরই রচিত কয়েকটি ধারাবাহিকের মাধ্যমে। এই সব দিনরাত্রি, কোথাও কেউ নেই, অয়োময় ইত্যাদি ধারাবাহিক নাটক, বিশেষত কোথাও কেউ নেই-এর বাকের ভাই নামের চরিত্রটি কিংবদন্তির মতো আজও অনেকের স্মৃতিতে রয়ে গেছে। শেষের দিকে তিনি কিছু চলচ্চিত্রও নির্মাণ করেছেন; আগুনের পরশমণিসহ কয়েকটি চলচ্চিত্র বেশ জনপ্রিয়তাও পেয়েছে। প্রতিভাবান হুমায়ূন ছবিও আঁকতেন।
শিল্পের বিভিন্ন শাখায় বিচরণ করেছেন হুমায়ূন; তবে তাঁর প্রকৃত স্বভাব ছিল খাঁটি লেখকের। লেখক হিসেবেই হুমায়ূন আহমেদ তাঁর অগণিত ভক্ত-পাঠকের মনে বেঁচে থাকবেন।
হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয়তার পেছনে রয়েছে সহজ-সাবলীল ভাষায় সরস ভঙ্গিতে কাহিনি বর্ণনায় তাঁর অনায়াস দক্ষতা। মধ্যবিত্ত জীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার গল্প বলার মধ্য দিয়ে তিনি প্রবেশ করেছেন পাঠকের অন্তরের গভীরে, যেখানে পাঠক-লেখক দূরত্ব ঘুচে গিয়ে সৃষ্টি হয় একাত্মতা। লেখককে পাঠকের মনে হয় অত্যন্ত কাছের, আপনার লোক—দূরবর্তী নির্লিপ্ত শিল্পস্রষ্টা নয়। নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার প্রভৃতি এমনই ধারার আখ্যান, যা তাঁকে বাঙালি মধ্যবিত্ত পাঠকের মনে নিবিড় স্থান করে দিয়েছে।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হুমায়ূন আহমেদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা গল্প-উপন্যাসগুলোতে বাবাকে হারানোর ব্যক্তিগত-পারিবারিক আবেগের সীমা ছাড়িয়ে গোটা জাতির দুঃখ, বেদনা, সংগ্রাম ও সংকল্পের ছবি ফুটে উঠেছে। তিনি কিছু ছোটগল্পও লিখেছেন, যেগুলো সাহিত্যের এই গুরুত্বপূর্ণ শাখায় স্থায়ী আসন পাবে।
হুমায়ূন ছিলেন বিজ্ঞানমনস্ক একজন আধুনিক মানুষ। বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন, বিজ্ঞানে উচ্চতর পড়াশোনা করেছেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ সময় রসায়নশাস্ত্র পড়িয়েছেন। বিজ্ঞানে তাঁর আগ্রহের ফসল ফলেছে তাঁর রচিত সাহিত্যকর্মেও। তিনি এমন কিছু বিজ্ঞান কল্পকাহিনি লিখেছেন, যা প্রচলিত ‘সায়েন্স ফিকশন’ ঘরানা থেকে আলাদা, যেমনটি বাংলাদেশের সাহিত্যে এর আগে দেখা যায়নি। তাঁর সৃষ্টি মিসির আলী চরিত্রটিকে কেন্দ্র করে তিনি যেসব মনস্তাত্ত্বিক নাটকীয়তাপূর্ণ কাহিনি রচনা করেছেন, সেগুলোও একান্তই তাঁর স্বকীয় কল্পনাশক্তির ফল।
সাহিত্যের মতো টেলিভিশন মাধ্যমেও অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। বিটিভিতে ধারাবাহিক নাটক জনপ্রিয়তার চূড়া স্পর্শ করেছিল তাঁরই রচিত কয়েকটি ধারাবাহিকের মাধ্যমে। এই সব দিনরাত্রি, কোথাও কেউ নেই, অয়োময় ইত্যাদি ধারাবাহিক নাটক, বিশেষত কোথাও কেউ নেই-এর বাকের ভাই নামের চরিত্রটি কিংবদন্তির মতো আজও অনেকের স্মৃতিতে রয়ে গেছে। শেষের দিকে তিনি কিছু চলচ্চিত্রও নির্মাণ করেছেন; আগুনের পরশমণিসহ কয়েকটি চলচ্চিত্র বেশ জনপ্রিয়তাও পেয়েছে। প্রতিভাবান হুমায়ূন ছবিও আঁকতেন।
শিল্পের বিভিন্ন শাখায় বিচরণ করেছেন হুমায়ূন; তবে তাঁর প্রকৃত স্বভাব ছিল খাঁটি লেখকের। লেখক হিসেবেই হুমায়ূন আহমেদ তাঁর অগণিত ভক্ত-পাঠকের মনে বেঁচে থাকবেন।
No comments