কাজল থেকে হুমায়ূন
ছোটবেলায় প্রথমে হুমায়ূন আহমেদের নাম রাখা হয়েছিল শামসুর রহমান; ডাকনাম কাজল। বাবা ফয়জুর রহমান নিজের নামের সঙ্গে মিল রেখে ছেলের এই নাম রাখেন। কিন্তু পরে তিনি নিজেই নাম বদলে দেন। এবার রাখেন হুমায়ূন আহমেদ। এই হুমায়ূন আহমেদই হয়ে উঠেছেন কিংবদন্তি। বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও নন্দিত লেখক।
জনপ্রিয়তায় ছাড়িয়ে গেছেন 'হুমায়ূন' নামের অন্যদের। হুমায়ূন আহমেদ একবার বলেছিলেন, তাঁর বাবা ছেলেমেয়েদের নাম পরিবর্তন করতে পছন্দ করতেন। তাঁর ছোট ভাই মুহম্মদ জাফর ইকবালের প্রথম নাম ছিল বাবুল এবং ছোটবোন সুফিয়ার নাম ছিল শেফালি। হুমায়ূন আহমেদের মতে, তাঁর বাবা যদি আরো কিছুদিন বেঁচে থাকতেন, তা হলে তাঁদের নাম আরো কয়েক দফা পরিবর্তন করতেন।
হুমায়ূন আহমেদ নিজের নাম নিয়ে ছোটবেলায় বিব্রত হতেন। তাঁর ভাষায়, "আমার নিজের নাম হুমায়ূন হওয়ায় ক্লাস সিক্স-সেভেনে আমার মধ্যে শুধু নামের কারণে এক ধরনের হীনম্মন্যতা সৃষ্টি হয়। সেই সময়ের পাঠ্য তালিকায় মোগল ইতিহাস খানিকটা ছিল, তাতে শের শাহ্ হাতে হুমায়ুনের একের পর এক পরাজয়ের কাহিনী ছিল। হুমায়ুনের পরাজয়ের দায়ভার খানিকটা আমাকে নিতে হয়েছিল। ক্লাসে আমাকে ডাকা হতো 'হারু হুমায়ূন'। কারণ আমি শুধু হারি। আমি কার কাছে হারি? মহান সম্রাট শের শাহ্ হাতে, যিনি ঘোড়ার ডাকের প্রচলন করেন, গ্রান্ডট্রাংক রোড বানান। আমি শুধু পালিয়ে বেড়াই। হায়রে শৈশব!"
২০১১ সালের বইমেলায় প্রকাশিত হয় মোগল সম্রাট হুমায়ুনকে নিয়ে তাঁর লেখা অনবদ্য উপন্যাস 'বাদশাহ নামদার'।
'এমন হওয়া অসম্ভব না যে, শৈশবের নাম নিয়ে হীনম্মন্যতাও 'বাদশাহ নামদার' লিখতে খানিকটা ভূমিকা রেখেছে।'- লিখেছেন হুমায়ূন।
বাংলাদেশের খ্যাতিমান 'হুমায়ূন' নামধারীদের নিয়ে একটা লেখা তৈরির কথা চিন্তা করেছিলেন সাংবাদিক সালেহ চৌধুরী। অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি সম্পর্কে লিখতে গিয়ে সে কথা জানান লেখক হুমায়ূন আহমেদ। তিনি লিখেছেন, "দৈনিক বাংলার সহসম্পাদক সালেহ চৌধুরীর মাথায় অদ্ভুত অদ্ভুত আইডিয়া ভর করত। একদিন এ রকম আইডিয়া ভর করল। তিনি আমার শহীদুল্লাহ হলের বাসায় উপস্থিত হয়ে বললেন, বাংলাদেশে পাঁচজন হুমায়ুন আছেন। দৈনিক বাংলায় তাদের ছবি একসঙ্গে ছাপা হবে। আমি একটা ফিচার লিখব, নাম 'পঞ্চ হুমায়ুন'।
আমি বললাম, পাঁচজন কারা?"
সালেহ চৌধুরী বললেন, 'রাজনীতিবিদ হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী, দৈনিক বাংলার সম্পাদক আহমেদ হুমায়ুন, অধ্যাপক এবং কবি হুমায়ুন আজাদ, অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি এবং তুমি (লেখক হুমায়ূন আহমেদ)।'
'আমি বললাম, উত্তম প্রস্তাব। তবে এখন না। আরো কিছুদিন যাক। সময় যেতে থাকল, হুমায়ুনরা ঝরে গেলেন। হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী গেলেন, আহমেদ হুমায়ুন গেলেন, হুমায়ুন আজাদ গেলেন। হারাধনের পাঁচটি ছেলের মধ্যে রইল বাকি দুই। দুজনের মধ্যে কে আগে ঝরবেন কে জানে! সবার শেষ হওয়ার আগেই হুমায়ুন ফরীদি বিষয়ে কিছু গল্প বলে ফেলতে চাচ্ছি।'
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি অসুস্থ হয়ে অকালে মারা যান শক্তিমান অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি। সবশেষে গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) শেষ বিদায় নিলেন 'পঞ্চ হুমায়ুন'-এর শেষ হুমায়ূন- কিংবদন্তি লেখক হুমায়ূন আহমেদ।
পুনশ্চ, সম্রাট হুমায়ুন থেকে লেখক হুমায়ূন আহমেদ- সবারই মৃত্যু হয়েছে আকস্মিকভাবে, কর্মক্ষম অবস্থায়। প্রতিটি মৃত্যুই হাহাকার জাগিয়েছে ভক্ত-অনুরাগীদের মধ্যে।
হুমায়ূন আহমেদ নিজের নাম নিয়ে ছোটবেলায় বিব্রত হতেন। তাঁর ভাষায়, "আমার নিজের নাম হুমায়ূন হওয়ায় ক্লাস সিক্স-সেভেনে আমার মধ্যে শুধু নামের কারণে এক ধরনের হীনম্মন্যতা সৃষ্টি হয়। সেই সময়ের পাঠ্য তালিকায় মোগল ইতিহাস খানিকটা ছিল, তাতে শের শাহ্ হাতে হুমায়ুনের একের পর এক পরাজয়ের কাহিনী ছিল। হুমায়ুনের পরাজয়ের দায়ভার খানিকটা আমাকে নিতে হয়েছিল। ক্লাসে আমাকে ডাকা হতো 'হারু হুমায়ূন'। কারণ আমি শুধু হারি। আমি কার কাছে হারি? মহান সম্রাট শের শাহ্ হাতে, যিনি ঘোড়ার ডাকের প্রচলন করেন, গ্রান্ডট্রাংক রোড বানান। আমি শুধু পালিয়ে বেড়াই। হায়রে শৈশব!"
২০১১ সালের বইমেলায় প্রকাশিত হয় মোগল সম্রাট হুমায়ুনকে নিয়ে তাঁর লেখা অনবদ্য উপন্যাস 'বাদশাহ নামদার'।
'এমন হওয়া অসম্ভব না যে, শৈশবের নাম নিয়ে হীনম্মন্যতাও 'বাদশাহ নামদার' লিখতে খানিকটা ভূমিকা রেখেছে।'- লিখেছেন হুমায়ূন।
বাংলাদেশের খ্যাতিমান 'হুমায়ূন' নামধারীদের নিয়ে একটা লেখা তৈরির কথা চিন্তা করেছিলেন সাংবাদিক সালেহ চৌধুরী। অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি সম্পর্কে লিখতে গিয়ে সে কথা জানান লেখক হুমায়ূন আহমেদ। তিনি লিখেছেন, "দৈনিক বাংলার সহসম্পাদক সালেহ চৌধুরীর মাথায় অদ্ভুত অদ্ভুত আইডিয়া ভর করত। একদিন এ রকম আইডিয়া ভর করল। তিনি আমার শহীদুল্লাহ হলের বাসায় উপস্থিত হয়ে বললেন, বাংলাদেশে পাঁচজন হুমায়ুন আছেন। দৈনিক বাংলায় তাদের ছবি একসঙ্গে ছাপা হবে। আমি একটা ফিচার লিখব, নাম 'পঞ্চ হুমায়ুন'।
আমি বললাম, পাঁচজন কারা?"
সালেহ চৌধুরী বললেন, 'রাজনীতিবিদ হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী, দৈনিক বাংলার সম্পাদক আহমেদ হুমায়ুন, অধ্যাপক এবং কবি হুমায়ুন আজাদ, অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি এবং তুমি (লেখক হুমায়ূন আহমেদ)।'
'আমি বললাম, উত্তম প্রস্তাব। তবে এখন না। আরো কিছুদিন যাক। সময় যেতে থাকল, হুমায়ুনরা ঝরে গেলেন। হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী গেলেন, আহমেদ হুমায়ুন গেলেন, হুমায়ুন আজাদ গেলেন। হারাধনের পাঁচটি ছেলের মধ্যে রইল বাকি দুই। দুজনের মধ্যে কে আগে ঝরবেন কে জানে! সবার শেষ হওয়ার আগেই হুমায়ুন ফরীদি বিষয়ে কিছু গল্প বলে ফেলতে চাচ্ছি।'
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি অসুস্থ হয়ে অকালে মারা যান শক্তিমান অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি। সবশেষে গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) শেষ বিদায় নিলেন 'পঞ্চ হুমায়ুন'-এর শেষ হুমায়ূন- কিংবদন্তি লেখক হুমায়ূন আহমেদ।
পুনশ্চ, সম্রাট হুমায়ুন থেকে লেখক হুমায়ূন আহমেদ- সবারই মৃত্যু হয়েছে আকস্মিকভাবে, কর্মক্ষম অবস্থায়। প্রতিটি মৃত্যুই হাহাকার জাগিয়েছে ভক্ত-অনুরাগীদের মধ্যে।
No comments