উপজেলা পরিষদ প্রসঙ্গে by রিফাত রিয়াদুল ইসলাম
গণতন্ত্রকে শক্তিশালী ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে প্রয়োজন ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ। আর এ ভাবনা থেকে বাংলাদেশে চালু করা হয় উপজেলা পরিষদ। এক সরকারের সিদ্ধান্তহীনতা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং সঙ্গে সঙ্গে বর্তমানে উপজেলা পরিষদের কিছুসংখ্যক চেয়ারম্যানের কার্যকলাপে তা সরকারের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে।
নির্বাচনের পর থেকেই উপজেলা চেয়ারম্যানরা বলে আসছেন, তাদের হাতে পর্যাপ্ত ক্ষমতা নেই এবং তারা নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত। তারা তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মানববন্ধন থেকে শুরু করে আমরণ অনশনের মতো কর্মসূচি পালন করেছেন। কিন্তু তাদের হাতে সামান্য ক্ষমতা দিয়ে দেখা গেল, তারা ক্ষমতা ব্যবহার না করে অপব্যবহারই বেশি করছেন। উপজেলা চেয়ারম্যানদের চলাচল করার জন্য সরকার থেকে দেওয়া হয়েছে একটি করে গাড়ি। বলা হয়েছিল, তারা এই গাড়ি কেবল তাদের উপজেলায় ব্যবহার করবেন। তবে যদি বিশেষ প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে তারা অন্যত্র (সর্বোচ্চ জেলা শহর) এ গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন। এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকের অনুমতির প্রয়োজন হবে। ঢাকার রাস্তায় মাঝেমধ্যেই দেখা যায় বিভিন্ন উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়ি। অল্প কিছুদিন আগেই রাজধানীর পান্থপথের অভিজাত শপিং সেন্টারের প্রবেশপথে দেখলাম এ রকম একটি গাড়ি। রাষ্ট্রের একজন নাগরিক হিসেবে জানার ইচ্ছা হয়, উপজেলা পরিষদের এমন কী কাজ থাকে ঢাকার মার্কেটে?
সরকারের নানা রকম উন্নয়ন প্রকল্প যেমন টিআর, জিআর, কাবিখা ইত্যাদি কাজের নামে অনেক উপজেলা চেয়ারম্যান নানাভাবে টাকা আত্মসাৎ করছেন_ এ রকম খবর প্রায়ই পত্রিকায় দেখা যায়। কাজে স্বচ্ছতা আনতে অতিরিক্ত দুই জন করে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। অনেক চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যানরা সমঝোতার ভিত্তিতে কাজ করেন। আবার এমন কথাও শোনা যায়, চেয়ারম্যান একাই সব কাজ করেন অন্য দু'জনকে কোনোভাবে সম্পৃৃক্ত না করে। ১৫ জুন ২০১০-এ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক অনুষ্ঠানে উপজেলা চেয়ারম্যানদের কাছে ই-মেইলের মাধ্যমে কাজের হিসাব চেয়েছেন। উপজেলা চেয়ারম্যানদের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ল্যাপটপ দেওয়া হয়েছিল গত বছর। আমার প্রশ্ন, আদৌ কি উপজেলার কোনো কাজে ল্যাপটপটি ব্যবহার করা হয়েছে? মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলতে চাই, শুধু চেয়ারম্যানদের জন্য সুযোগ করে দিলে হবে না, ভাইস চেয়ারম্যানদেরও আপনার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দেওয়া উচিত। সবার জন্যই সমান সুযোগ, কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
আমরা তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশে বাস করি। গরিব দেশ হিসেবে দেশে দুর্নীতি থাকতেই পারে। জনপ্রতিনিধিরা দুর্নীতি রোধে ভূমিকা পালন করবেন। কিন্তু তা না করে যদি এ ধরনের কাজ করেন তাহলে আপনারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বেন। জনপ্রতিনিধিরা জনগণের বাইরের কোনো অংশ নয়। আপনারাই যদি নিজেদের ক্ষতি করেন তাহলে এর ফল কখনই সুখকর হবে না। আমরা সেদিনের প্রতীক্ষায় রইলাম, যেদিন পৃথিবীতে 'স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার মডেল' হিসেবে ভারত, জাপান, মালয়েশিয়ার পাশে শোভা পাবে বাংলাদেশের নাম।
refatreadulislam@yahoo.com
সরকারের নানা রকম উন্নয়ন প্রকল্প যেমন টিআর, জিআর, কাবিখা ইত্যাদি কাজের নামে অনেক উপজেলা চেয়ারম্যান নানাভাবে টাকা আত্মসাৎ করছেন_ এ রকম খবর প্রায়ই পত্রিকায় দেখা যায়। কাজে স্বচ্ছতা আনতে অতিরিক্ত দুই জন করে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। অনেক চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যানরা সমঝোতার ভিত্তিতে কাজ করেন। আবার এমন কথাও শোনা যায়, চেয়ারম্যান একাই সব কাজ করেন অন্য দু'জনকে কোনোভাবে সম্পৃৃক্ত না করে। ১৫ জুন ২০১০-এ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক অনুষ্ঠানে উপজেলা চেয়ারম্যানদের কাছে ই-মেইলের মাধ্যমে কাজের হিসাব চেয়েছেন। উপজেলা চেয়ারম্যানদের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ল্যাপটপ দেওয়া হয়েছিল গত বছর। আমার প্রশ্ন, আদৌ কি উপজেলার কোনো কাজে ল্যাপটপটি ব্যবহার করা হয়েছে? মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলতে চাই, শুধু চেয়ারম্যানদের জন্য সুযোগ করে দিলে হবে না, ভাইস চেয়ারম্যানদেরও আপনার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দেওয়া উচিত। সবার জন্যই সমান সুযোগ, কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
আমরা তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশে বাস করি। গরিব দেশ হিসেবে দেশে দুর্নীতি থাকতেই পারে। জনপ্রতিনিধিরা দুর্নীতি রোধে ভূমিকা পালন করবেন। কিন্তু তা না করে যদি এ ধরনের কাজ করেন তাহলে আপনারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বেন। জনপ্রতিনিধিরা জনগণের বাইরের কোনো অংশ নয়। আপনারাই যদি নিজেদের ক্ষতি করেন তাহলে এর ফল কখনই সুখকর হবে না। আমরা সেদিনের প্রতীক্ষায় রইলাম, যেদিন পৃথিবীতে 'স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার মডেল' হিসেবে ভারত, জাপান, মালয়েশিয়ার পাশে শোভা পাবে বাংলাদেশের নাম।
refatreadulislam@yahoo.com
No comments