ভুয়া মাস্টাররোল-রংপুরের দৃষ্টান্ত সামনে থাকুক
কর্মসংস্থান কর্মসূচির মাস্টাররোল তদারকির কারণে প্রায় দুই কোটি টাকা বেঁচে গেছে। প্রশাসনের এই উদ্যোগ সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। শুক্রবার সমকালের লোকালয় পাতায় প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, রংপুরে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের প্রায় দুই কোটি টাকা বেঁচে গেছে।
৪০ কর্মদিবসের মধ্যে অনেক শ্রমিক কাজে অনুপস্থিত ও অসুস্থ থাকে এবং তাদের পক্ষে কেউ ভুয়া মাস্টাররোল দেখিয়ে টাকা ওঠাতে পারেনি। ভুয়া মাস্টাররোলের দৌরাত্ম্যের কারণে সরকারের কোটি কোটি টাকা নষ্ট হচ্ছে। সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদপত্রে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ভুয়া মাস্টাররোল দেখিয়ে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার সরুলিয়া ইউনিয়নে ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচির সাড়ে ১৫ লাখ টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে ভুয়া মাস্টাররোল তৈরি করে লালমনিরহাট সদর উপজেলায় টেস্ট রিলিফ (টিআর) প্রকল্পের নামে ৮৭ লাখ টাকা লোপাট করা হয়েছে। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায়ও কর্মসৃজন প্রকল্পের টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া কক্সবাজারের মহেশখালীতেও অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির ৫৬টি প্রকল্পের কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুয়া মাস্টাররোল তৈরি করে অর্থ লোপাটের অভিযোগ এর মধ্যে অন্যতম। বিভিন্ন উপজেলার কর্মসংস্থান প্রকল্পের এই যখন অবস্থা, তখন রংপুরের অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির টাকা বেঁচে যাওয়ার ঘটনা আমাদের আশান্বিত করে। ঘটনাটি একই সঙ্গে দুটি বিষয়ের দিকে আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। প্রথমত, কর্মসংস্থান প্রকল্পগুলোতে ভুয়া মাস্টাররোল দেখিয়ে সরকারি অর্থ নষ্ট করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, প্রশাসনের কঠোর তদারকি থাকলে ভুয়া মাস্টাররোল দেখিয়ে টাকা উত্তোলন অনেকটাই অসম্ভব। তবে কিছু কিছু উপজেলায় অভিযোগ উঠেছে, ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতারা প্রভাব খাটানোর মাধ্যমে ভুয়া মাস্টাররোল দেখিয়ে কর্মসংস্থান প্রকল্পের টাকা তুলছে। সেক্ষেত্রে সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায় থেকে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ভুয়া মাস্টাররোলের দৌরাত্ম্য বন্ধ না হলে সরকারের কোটি কোটি টাকা নষ্ট হবে। স্থানীয় প্রশাসন কাজের তদারকি ঠিকমতো করলেই এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। রংপুরের ঘটনা সে ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে সামনে থাকবে।
No comments