ঢাকা আর্ট সেন্টার-চৈতন্যে বেজে ওঠে প্রাণভৈরব by মোবাশ্বির আলম মজুমদার
ঘন নীল ভেদ করে ফুলকলি ছুটছে ঊর্ধ্বাকাশে। পত্রপল্লবে জড়ানো নারীদেহ ডানা মেলে উড়ছে। গাঢ় রঙের জমিন ভেদ করে অসংখ্য বিন্দু আর বৃত্ত। এ রকমই মৃণাল কান্তি দাসের ক্যানভাস। নারী, প্রকৃতি, ফুল, পাতা, প্রজাপতির ডানা মৃণালের ছবির বিষয়। তিনটি মাধ্যমে তিনি ছবি এঁকেছেন—তেলরং, অ্যাক্রিলিক, কালি-কলম।
১৮ মে ঢাকা আর্ট সেন্টারে শিল্পী মৃণাল কান্তি দাসের একক প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। মোট ১০০টি প্রদর্শিত কাজে প্রকৃতি ও নারীই প্রধান, রঙের ক্ষেত্রে বেছে নিয়েছেন গাঢ় উজ্জ্বল লাল, আকাশ নীল, উজ্জ্বল হলুদ। কোনো কোনো কাজে অনেক বেশি উচ্চ রঙের ব্যবহার দেখা যায়। মৃণালের কাজ এক দেখাতে সন্তুষ্টি আসে না। প্রকৃতির লতাগুল্ম, ফুল-পাতা, পাখির ডানাকে এমন বিস্তৃত রূপে উপস্থাপন করেছেন, তাতে প্রকৃতির প্রকৃত ছন্দ ও বর্ণ সাবলীলভাবে ধরা পড়ে। প্রকৃতি অনুধাবন নিয়ে শিল্পী ভাবেন এমন করে—প্রকৃতি ও নারী এক ও অবিচ্ছিন্ন সত্তা। নারীকে তিনি প্রকৃতির অংশ হিসেবে দেখতে পান।
‘ইচ্ছেডানা’ শিরোনামের এ ছবিগুলোর বিষয়ে উড়ে যাওয়া দুরন্ত পাখির আচরণ দেখা যায় নারীদেহের ভঙ্গিতে। প্রকৃতির নানা অনুষঙ্গ পাতা ও ফুলের সখ্য তৈরি করেছেন নারীদেহের সঙ্গে। প্রদর্শনীর মূল শিরোনাম ‘ইচ্ছেডানা’ হলেও প্রতিটি কাজের ভিন্ন নামকরণ রয়েছে। বৃক্ষের কাণ্ডের ভেতরে গঠিত কোষের সমন্বয় ও তা থেকে একটি গাছ যেভাবে বেড়ে উঠে, নারীও সেভাবে সমাজ-সংসার আঁকড়ে ধরে। শিল্পী নারীকে তাঁর ছবিতে উর্বরা ও মায়াবী প্রকৃতির অংশ হিসেবে দেখান। কালি-কলমে আঁকা মৃণালের কাজগুলো প্রতিদিনের চর্চার ফল। প্রতিদিন কোনো না কোনো সময়ে তিনি কালি-কলমের কাজ করে থাকেন। রঙিন ক্যানভাসগুলোতে বিষয় হিসেবে কালি-কলমে আঁকা রেখাচিত্রের সন্নিবেশ করেন। বিষয় প্রসঙ্গে মৃণাল নারীর দশভুজা রূপকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করেছেন। নারীর বৃক্ষের মতো ছায়াদাত্রী রূপ সংসারের স্থিতি ধরে রাখে। মৃণালের ছবির নারী চরিত্র ইচ্ছেডানায় ভর করে আকাশ ছুঁতে পারে। প্রদর্শিত ৪১টি অ্যাক্রিলিক মাধ্যমের কাজে উজ্জ্বল লাল রঙের বিপরীতে জমিনে ব্যবহূত হয়েছে গাঢ় নীল রং। সূর্যপ্রিয়া ছবিতে ছন্দিত নারীদেহ অবয়বের হাত দুটি পাখির ডানায় রূপ নিয়েছে, মুখমণ্ডলের স্থানে আশ্রয় নিয়েছে সূর্যমুখী। দুটি পা জড়িয়ে আছে সবুজ লতাপাতা। জমিন থেকে ঊর্ধ্বাকাশে এ মানব অবয়ব মুজিবের আকাঙ্ক্ষাকে নির্দেশনা করে। ফুল ভ্রমরা অ্যাক্রিলিকের আরেকটি উল্লেখযোগ্য ছবি। নানা স্তরে সবুজের বিন্যাসের মাঝে লাল-হলুদ ফুলের সমাহার ছন্দোবদ্ধ ঐক্য তৈরি করেছে বর্ণিল রেখায়। কোনো স্পেস শূন্য বা চিত্রতলে স্থান-ব্যবস্থাপনা মৃণালের ছবিতে অনুপস্থিত। সে দৃঢ় সিদ্ধান্তে শিল্পী এখনো পৌঁছাতে পারেননি। এ প্রসঙ্গে শিল্পী বলেন, ‘কালি-কলমের কাজগুলোতে রেখা ও আলোছায়ার সঙ্গে চিত্রতলে স্থান বিবেচনায় এনেছি। তেল ও অ্যাক্রিলিক রঙের কাজে স্থানিক ব্যবস্থাপনায় এখনো দক্ষতা অর্জন করতে পারিনি।’
তেলরঙে আঁকা ১৬টি আর কালি-কলমে আঁকা ৪৩টি কাজে রেখা প্রয়োগের দিক থেকে ঐক্য খুঁজে পাওয়া যায়। এ প্রদর্শনী মৃণালের শিল্পিত যাত্রার প্রথম ধাপ, ইচ্ছেডানায় ভর করে মৃণাল ছুঁয়ে যাক অসীম আকাশ। প্রদর্শনী শেষ হবে ২৬ মে।
মৃণাল কান্তি দাস: জন্ম ১৯৭৩ সালে, চাঁঁদপুরে। ১৯৯৫ ও ১৯৯৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগ থেকে অঙ্কন এবং চিত্রায়ণে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৩টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দলীয় প্রদর্শনীতে তিনি অংশ নেন। তিনি ষষ্ঠ বার্জার তরুণ শিল্পী চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় পুরস্কার পান। বর্তমানে বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক জেডব্লিউটিতে জ্যেষ্ঠ শিল্পনির্দেশক হিসেবে কাজ করছেন।
‘ইচ্ছেডানা’ শিরোনামের এ ছবিগুলোর বিষয়ে উড়ে যাওয়া দুরন্ত পাখির আচরণ দেখা যায় নারীদেহের ভঙ্গিতে। প্রকৃতির নানা অনুষঙ্গ পাতা ও ফুলের সখ্য তৈরি করেছেন নারীদেহের সঙ্গে। প্রদর্শনীর মূল শিরোনাম ‘ইচ্ছেডানা’ হলেও প্রতিটি কাজের ভিন্ন নামকরণ রয়েছে। বৃক্ষের কাণ্ডের ভেতরে গঠিত কোষের সমন্বয় ও তা থেকে একটি গাছ যেভাবে বেড়ে উঠে, নারীও সেভাবে সমাজ-সংসার আঁকড়ে ধরে। শিল্পী নারীকে তাঁর ছবিতে উর্বরা ও মায়াবী প্রকৃতির অংশ হিসেবে দেখান। কালি-কলমে আঁকা মৃণালের কাজগুলো প্রতিদিনের চর্চার ফল। প্রতিদিন কোনো না কোনো সময়ে তিনি কালি-কলমের কাজ করে থাকেন। রঙিন ক্যানভাসগুলোতে বিষয় হিসেবে কালি-কলমে আঁকা রেখাচিত্রের সন্নিবেশ করেন। বিষয় প্রসঙ্গে মৃণাল নারীর দশভুজা রূপকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করেছেন। নারীর বৃক্ষের মতো ছায়াদাত্রী রূপ সংসারের স্থিতি ধরে রাখে। মৃণালের ছবির নারী চরিত্র ইচ্ছেডানায় ভর করে আকাশ ছুঁতে পারে। প্রদর্শিত ৪১টি অ্যাক্রিলিক মাধ্যমের কাজে উজ্জ্বল লাল রঙের বিপরীতে জমিনে ব্যবহূত হয়েছে গাঢ় নীল রং। সূর্যপ্রিয়া ছবিতে ছন্দিত নারীদেহ অবয়বের হাত দুটি পাখির ডানায় রূপ নিয়েছে, মুখমণ্ডলের স্থানে আশ্রয় নিয়েছে সূর্যমুখী। দুটি পা জড়িয়ে আছে সবুজ লতাপাতা। জমিন থেকে ঊর্ধ্বাকাশে এ মানব অবয়ব মুজিবের আকাঙ্ক্ষাকে নির্দেশনা করে। ফুল ভ্রমরা অ্যাক্রিলিকের আরেকটি উল্লেখযোগ্য ছবি। নানা স্তরে সবুজের বিন্যাসের মাঝে লাল-হলুদ ফুলের সমাহার ছন্দোবদ্ধ ঐক্য তৈরি করেছে বর্ণিল রেখায়। কোনো স্পেস শূন্য বা চিত্রতলে স্থান-ব্যবস্থাপনা মৃণালের ছবিতে অনুপস্থিত। সে দৃঢ় সিদ্ধান্তে শিল্পী এখনো পৌঁছাতে পারেননি। এ প্রসঙ্গে শিল্পী বলেন, ‘কালি-কলমের কাজগুলোতে রেখা ও আলোছায়ার সঙ্গে চিত্রতলে স্থান বিবেচনায় এনেছি। তেল ও অ্যাক্রিলিক রঙের কাজে স্থানিক ব্যবস্থাপনায় এখনো দক্ষতা অর্জন করতে পারিনি।’
তেলরঙে আঁকা ১৬টি আর কালি-কলমে আঁকা ৪৩টি কাজে রেখা প্রয়োগের দিক থেকে ঐক্য খুঁজে পাওয়া যায়। এ প্রদর্শনী মৃণালের শিল্পিত যাত্রার প্রথম ধাপ, ইচ্ছেডানায় ভর করে মৃণাল ছুঁয়ে যাক অসীম আকাশ। প্রদর্শনী শেষ হবে ২৬ মে।
মৃণাল কান্তি দাস: জন্ম ১৯৭৩ সালে, চাঁঁদপুরে। ১৯৯৫ ও ১৯৯৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগ থেকে অঙ্কন এবং চিত্রায়ণে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৩টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দলীয় প্রদর্শনীতে তিনি অংশ নেন। তিনি ষষ্ঠ বার্জার তরুণ শিল্পী চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় পুরস্কার পান। বর্তমানে বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিক জেডব্লিউটিতে জ্যেষ্ঠ শিল্পনির্দেশক হিসেবে কাজ করছেন।
No comments