পবিত্র কোরআনের আলো-মানুষ নিজেরা নিজেদের ওপর অত্যাচার করে, আল্লাহ অত্যাচার করেন না
১১৪. ইউ'মিনূনা বিল্লাহি ওয়ালইয়াওমিল আ-খিরি ওয়া ইয়া'মুরূনা বিলমা'রূফি ওয়া ইয়ানহাওনা আ'নিল মুনকারি ওয়া ইউছা-রিঊ'না ফিল খাইরা-তি ওয়া উলা-ইকা মিনাস্ সা-লিহীন। ১১৫. ওয়ামা- ইয়াফ্আ'লূ মিন্ খাইরিন ফালাইঁউক্ফারূহু; ওয়াল্লাহু আ'লীমুম্ বিলমুত্তাক্বীন।
১১৬. ইন্নাল্লাযীনা কাফারূ লান তুগনিয়া আ'নহুম আমওয়া-লুহুম ওয়ালা- আওলাদুহুম্ মিনাল্লাহি শাইয়ান ওয়া উলা-ইকা আসহাবুন না-রি হুম ফীহা- খা-লিদূন।
১১৭. মাছালু মা- ইউনফাক্বূনা ফী হা-যিহিল হাইয়া-তিদ্ দুনিয়া- কামাছালি রীহিন ফীহা সির্রুন আসা-বাত হারছা ক্বাওমিন যালামূ আনফুছাহুম ফাআহ্লাকাত্হূ; ওয়ামা- যালামুহুমুল্লা-হু ওয়া-লা-কিন আনফুছাহুম ইয়ায্লিমূন। [সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১১৪-১১৭]
অনুবাদ : ১১৪. তারা আল্লাহ ও শেষ বিচারের দিনের ওপর ইমান রাখে এবং সত্য ও ন্যায়ের আদেশ দেয়, আর অসত্য ও অন্যায়ের প্রতি বারণ করে; এরা সত্য কাজে প্রতিযোগিতা করে_এসব লোকই সৎ লোকদের অন্তর্ভুক্ত।
১১৫. তারা যা কিছু ভালো কাজ করবে, তা কখনোই অস্বীকার করা হবে না প্রতিদান দেওয়ার ক্ষেত্রে; আল্লাহ তায়ালা দায়িত্বনিষ্ঠ লোকদের ব্যাপারে অবগত।
১১৬. যারা আল্লাহর আনুগত্য অস্বীকার করে তাদের ধনসম্পদ, সন্তান-সন্ততি কোনো কিছুই আল্লাহর দরবারে কোনো উপকারে আসবে না। তারা হবে জাহান্নামের অধিবাসী, সেখানে তারা অনন্তকাল পড়ে থাকবে।
১১৭. এসব লোক এই দুনিয়াতে যা ব্যয় বা অপব্যয় করে এর উদাহরণ হচ্ছে যারা নিজেদের ওপর অবিচার করছে, এদের সেই শস্যক্ষেতের মতো, যার ওপর দিয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গিয়ে ফসল ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। আল্লাহ এদের ওপর কোনো অবিচার করেননি; বরং এরা নিজেরাই নিজেদের ওপর অত্যাচার করেছে।
ব্যাখ্যা : এই আয়াতগুলো আগের আয়াতের ধারাবাহিকতায়ই এসেছে। ১১৪ ও ১১৫ নম্বর আয়াতে আহলে কিতাবের প্রসঙ্গ ধরেই বলা হয়েছে, তাদের মধ্যে যারা সৎ, যারা আল্লাহর প্রভুত্ব ও শেষ বিচারের দিনে বিশ্বাস করে, যারা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে এবং অসত্য ও অন্যায়ের বিপক্ষে এবং যারা সৎ কাজে প্রতিযোগিতা করে তারা ইহুদি বা খ্রিস্টান হলেও তারা দায়িত্বনিষ্ঠদের অন্তর্ভুক্ত। তারা যা কিছু ভালো কাজ করে তা কখনো অস্বীকার করা হবে না প্রতিদান দেওয়ার ক্ষেত্রে। অর্থাৎ তাদের ভালো কাজের প্রতিদান অবশ্যই দেওয়া হবে। কাফেরদের মতো তাদের প্রতিদান থেকে বঞ্চিত করা হবে না। উল্লেখ করা প্রয়োজন, আল্লাহর আনুগত্যে অস্বীকারকারী কাফেররা বিচ্ছিন্নভাবে কিছু ভালো কাজ করলেও, ইমান না থাকার কারণে বা কাফের হওয়ার কারণে প্রতিদান থেকে বঞ্চিত হবে। কিন্তু আহলে কিতাবের মধ্যে যারা সৎ তারা মুসলমান না হওয়ার কারণে সৎ কাজের প্রতিদান থেকে বঞ্চিত হবে না। এখানে আল্লাহ তায়ালা বলছেন, তিনি দায়িত্বনিষ্ঠদের ব্যাপারে অবগত। অর্থাৎ কে প্রকৃত মুত্তাকি, কে ইমানদার তা আল্লাহই ভালো জানেন। ১১৬ নম্বর আয়াতে এর বিপরীত চরিত্রের লোকদের কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ যারা কাফের বা আল্লাহর আনুগত্য অস্বীকারকারী তাদের ধন-জন শেষ বিচারের দিন কোনো উপকারেই আসবে না। দুনিয়ায় এত কিছু সুযোগ-সুবিধা পাওয়া সত্ত্বেও তাদের স্থায়ী ঠিকানা হবে জাহান্নাম। ১১৭ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, এসব লোক এই দুনিয়ায় যা কিছু ব্যয় করে তা অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়। তারা ভোগ-বিলাসের মধ্যে ডুবে থেকে নিজেদের অন্ধ ও বিভ্রান্ত করে রাখার অবলম্বন সৃষ্টি করে মাত্র। এভাবে তারা প্রকৃত অর্থে নিজেদের ওপরই অত্যাচার করে। নিজেদের ওপর অত্যাচার করার এই গভীরতর মর্মকথাটা বোঝানোর জন্য এই আয়াতে খুব সাদা-মাটা একটা উদাহরণ ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন_শৈত্যপ্রবাহ এসে কোনো এক অত্যাচারী জনগোষ্ঠীর ক্ষেতের ফসল ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। বলা যায় না এ অত্যাচার আল্লাহর কাছ থেকে আসা বরং অত্যাচারীরা নিজেরাই নিজেদের ওপর অত্যাচার করছে। মানুষ এই পৃথিবীতে যা যা উপার্জন করবে তার ফলই সে পাবে। নিজে খারাপ কাজ করে অন্যের ওপর দোষ চাপালে চলবে না যে আমার ওপর অত্যাচার করা হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
১১৭. মাছালু মা- ইউনফাক্বূনা ফী হা-যিহিল হাইয়া-তিদ্ দুনিয়া- কামাছালি রীহিন ফীহা সির্রুন আসা-বাত হারছা ক্বাওমিন যালামূ আনফুছাহুম ফাআহ্লাকাত্হূ; ওয়ামা- যালামুহুমুল্লা-হু ওয়া-লা-কিন আনফুছাহুম ইয়ায্লিমূন। [সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১১৪-১১৭]
অনুবাদ : ১১৪. তারা আল্লাহ ও শেষ বিচারের দিনের ওপর ইমান রাখে এবং সত্য ও ন্যায়ের আদেশ দেয়, আর অসত্য ও অন্যায়ের প্রতি বারণ করে; এরা সত্য কাজে প্রতিযোগিতা করে_এসব লোকই সৎ লোকদের অন্তর্ভুক্ত।
১১৫. তারা যা কিছু ভালো কাজ করবে, তা কখনোই অস্বীকার করা হবে না প্রতিদান দেওয়ার ক্ষেত্রে; আল্লাহ তায়ালা দায়িত্বনিষ্ঠ লোকদের ব্যাপারে অবগত।
১১৬. যারা আল্লাহর আনুগত্য অস্বীকার করে তাদের ধনসম্পদ, সন্তান-সন্ততি কোনো কিছুই আল্লাহর দরবারে কোনো উপকারে আসবে না। তারা হবে জাহান্নামের অধিবাসী, সেখানে তারা অনন্তকাল পড়ে থাকবে।
১১৭. এসব লোক এই দুনিয়াতে যা ব্যয় বা অপব্যয় করে এর উদাহরণ হচ্ছে যারা নিজেদের ওপর অবিচার করছে, এদের সেই শস্যক্ষেতের মতো, যার ওপর দিয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গিয়ে ফসল ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। আল্লাহ এদের ওপর কোনো অবিচার করেননি; বরং এরা নিজেরাই নিজেদের ওপর অত্যাচার করেছে।
ব্যাখ্যা : এই আয়াতগুলো আগের আয়াতের ধারাবাহিকতায়ই এসেছে। ১১৪ ও ১১৫ নম্বর আয়াতে আহলে কিতাবের প্রসঙ্গ ধরেই বলা হয়েছে, তাদের মধ্যে যারা সৎ, যারা আল্লাহর প্রভুত্ব ও শেষ বিচারের দিনে বিশ্বাস করে, যারা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে এবং অসত্য ও অন্যায়ের বিপক্ষে এবং যারা সৎ কাজে প্রতিযোগিতা করে তারা ইহুদি বা খ্রিস্টান হলেও তারা দায়িত্বনিষ্ঠদের অন্তর্ভুক্ত। তারা যা কিছু ভালো কাজ করে তা কখনো অস্বীকার করা হবে না প্রতিদান দেওয়ার ক্ষেত্রে। অর্থাৎ তাদের ভালো কাজের প্রতিদান অবশ্যই দেওয়া হবে। কাফেরদের মতো তাদের প্রতিদান থেকে বঞ্চিত করা হবে না। উল্লেখ করা প্রয়োজন, আল্লাহর আনুগত্যে অস্বীকারকারী কাফেররা বিচ্ছিন্নভাবে কিছু ভালো কাজ করলেও, ইমান না থাকার কারণে বা কাফের হওয়ার কারণে প্রতিদান থেকে বঞ্চিত হবে। কিন্তু আহলে কিতাবের মধ্যে যারা সৎ তারা মুসলমান না হওয়ার কারণে সৎ কাজের প্রতিদান থেকে বঞ্চিত হবে না। এখানে আল্লাহ তায়ালা বলছেন, তিনি দায়িত্বনিষ্ঠদের ব্যাপারে অবগত। অর্থাৎ কে প্রকৃত মুত্তাকি, কে ইমানদার তা আল্লাহই ভালো জানেন। ১১৬ নম্বর আয়াতে এর বিপরীত চরিত্রের লোকদের কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ যারা কাফের বা আল্লাহর আনুগত্য অস্বীকারকারী তাদের ধন-জন শেষ বিচারের দিন কোনো উপকারেই আসবে না। দুনিয়ায় এত কিছু সুযোগ-সুবিধা পাওয়া সত্ত্বেও তাদের স্থায়ী ঠিকানা হবে জাহান্নাম। ১১৭ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, এসব লোক এই দুনিয়ায় যা কিছু ব্যয় করে তা অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়। তারা ভোগ-বিলাসের মধ্যে ডুবে থেকে নিজেদের অন্ধ ও বিভ্রান্ত করে রাখার অবলম্বন সৃষ্টি করে মাত্র। এভাবে তারা প্রকৃত অর্থে নিজেদের ওপরই অত্যাচার করে। নিজেদের ওপর অত্যাচার করার এই গভীরতর মর্মকথাটা বোঝানোর জন্য এই আয়াতে খুব সাদা-মাটা একটা উদাহরণ ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন_শৈত্যপ্রবাহ এসে কোনো এক অত্যাচারী জনগোষ্ঠীর ক্ষেতের ফসল ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। বলা যায় না এ অত্যাচার আল্লাহর কাছ থেকে আসা বরং অত্যাচারীরা নিজেরাই নিজেদের ওপর অত্যাচার করছে। মানুষ এই পৃথিবীতে যা যা উপার্জন করবে তার ফলই সে পাবে। নিজে খারাপ কাজ করে অন্যের ওপর দোষ চাপালে চলবে না যে আমার ওপর অত্যাচার করা হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments