শেকড়ের ডাক-সাংবাদিক নির্যাতন বেড়েই চলেছে by ফরহাদ মাহমুদ
সাংবাদিকদের বলা হয় সমাজের বিবেক। সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমকে বলা হয় বিকল্প পার্লামেন্ট। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ অনেকেই সাংবাদিকদের আরো সাহসী ও নির্ভীক হওয়ার তাগিদ দেন। কিন্তু বাস্তবতা কী? সাংবাদিকরা এখন খুনিদের সবচেয়ে সহজ টার্গেটে পরিণত হয়েছেন।
পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাংবাদিকরা ক্রমেই বেশি করে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। সাম্প্রতিক ইতিহাস এই রকমই সাক্ষ্য দেয়। যেমন এক যুগেও সাতক্ষীরার পত্রদূত পত্রিকার সম্পাদক শ ম আলাউদ্দীনের হত্যাকারীরা শাস্তি পায়নি। শাস্তি পায়নি যশোরের দৈনিক রানার পত্রিকার সম্পাদক সাইফুল আলম মুকুল, দৈনিক জনকণ্ঠের যশোর প্রতিনিধি শামছুর রহমান কেবল, খুলনা থেকে প্রকাশিত দৈনিক পূর্বাঞ্চলের সিনিয়র রিপোর্টার হারুন অর রশিদ, দৈনিক সংবাদের খুলনা ব্যুরো প্রধান মানিক সাহা, খুলনার দৈনিক জন্মভূমি সম্পাদক হুমায়ূন কবির বালু, বগুড়ার দৈনিক দুর্জয় বাংলার নির্বাহী সম্পাদক দীপংকর চক্রবর্তী, দৈনিক সংগ্রামের খুলনা প্রতিনিধি বেলাল হোসেন, নিউ এজের সাংবাদিক আবদুল লতিফ পাপ্পু, কুমিল্লায় দৈনিক মুক্তকণ্ঠের রিপোর্টার গোলাম মাহমুদ কিংবা দৈনিক সমকালের ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান গৌতম দাসসহ আরো অনেক সাংবাদিকের খুনিরা। তাঁরা সবাই বিগত আওয়ামী লীগ সরকার (১৯৯৬-২০০১) কিংবা চারদলীয় জোট সরকারের (২০০১-২০০৬) আমলে নিহত হয়েছেন। তার আগের বিএনপি সরকারের আমলে নিহত সাংবাদিকদের খুনিদেরও বিচার হয়নি। বর্তমান মহাজোট সরকারের আমলে, অর্থাৎ গত তিন বছরে, এক ডজনের বেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে নিহত হলেন সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি। তাঁদের খুনিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে সাংবাদিকরা মানববন্ধন, ঘেরাও-ধর্মঘটসহ নানা কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন। কিন্তু তিন মাসেও সাংবাদিক দম্পতি হত্যার কোনো কিনারা হয়নি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, কি বিএনপি, কি আওয়ামী লীগ- সব সরকারই সাংবাদিকদের খুনিদের প্রতি এক ধরনের অঘোষিত ইমিউনিটি বহাল রেখে চলেছে। এই যদি হয় বাস্তবতা, তাহলে বাক-স্বাধীনতা, তথ্য অধিকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, ইত্যাকার শব্দগুলোর কোনো অর্থ থাকে কি?
পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর হামলা-নির্যাতনের ঘটনা দিন দিন আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে। গত তিন বছরে প্রায় ৩৫০ জন সাংবাদিক হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এসব হামলায় সরকারদলীয় সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজ চক্র যেমন জড়িত, তেমনি জড়িত আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত বাহিনীগুলোর কতিপয় স্বেচ্ছাচারী সদস্য। এ মাসেই পাবনায় দুজন সাংবাদিককে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। আরেক সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর স্বজনদের টেন্ডার সন্ত্রাস নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছিলেন (কালের কণ্ঠ, ১১ মে, পৃষ্ঠা-১৪) কালের কণ্ঠের পাবনা আঞ্চলিক প্রতিনিধি আবদুল্লাহ আল মামুন। আর তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ভাতিজা আমিনুল ইসলাম ৮-১০ জন সন্ত্রাসী নিয়ে দিনদুপুরে হামলা চালায় মামুনের ওপর এবং লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তাঁকে গুরুতর আহত করে। পাবনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। ঘটনার পর ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও গত বুধবার পর্যন্ত পুলিশ আমিনুল কিংবা অন্য সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। উল্টো মামুনের নামে তারা চাঁদাবাজির মামলা করেছে। এখন বলা হচ্ছে আপোস করার জন্য। অর্থাৎ আমিনুল চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা তুলে নেবে এবং মামুনকেও নির্যাতনের মামলা তুলে নিতে হবে। এই কি আমাদের আইনের শাসন? খবরে প্রকাশ, মামুনের পক্ষে আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় দৈনিক ইনকিলাবের বেড়া সংবাদদাতা এবং স্থানীয় যুগের দীপ পত্রিকার সম্পাদক সরকার আরিফুর রহমানকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে অকথ্য গালিগালাজ করেছে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ভাতিজা আমিনুল। এদিকে পাবনায় দৈনিক সমকাল ও এনটিভির প্রতিনিধি এবিএম ফজলুর রহমান এখনো পাবনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁকেও সন্ত্রাসীরা গুরুতর আহত করেছে। এর আগে কক্সবাজারে সন্ত্রাসীরা একটি স্থানীয় দৈনিকের অফিসে হামলা চালিয়ে সাংবাদিকদের মারধর করছে। প্রতিনিয়তই ঘটছে এ ধরনের হামলার ঘটনা। অথচ প্রশাসন নির্বিকার। এ অবস্থায় সাংবাদিকদের পক্ষে সঠিকভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করা সম্ভব কি?
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব হচ্ছে সারা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করা। দুঃখজনক হলেও সত্য, দেশের সাধারণ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিন দিন অবনতিই হচ্ছে। এর একটি প্রধান কারণ, একচোখা নীতি এবং অপরাধীদের অপরাধ করেও পার পেয়ে যাওয়া। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী যদি দুর্নীতিবাজ ও ফৌজদারি অপরাধকারী স্বজনদের ক্ষেত্রে কঠোর না হতে পারেন, তাহলে অন্যদের ব্যাপারে কঠোর হবেন কিভাবে? দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিরই-বা উন্নতি হবে কিভাবে? দিনের পর দিন মানুষ গুম হয়েই চলেছে। বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীকে এখনো উদ্ধার করা যায়নি। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির খুনিদের এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি। খুন-রাহাজানি চরম পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে। এই অবস্থায়ও কি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কেবল দলীয় ক্যাডার আর আত্মীয়-স্বজনকে রক্ষার চেষ্টা করবেন? তাহলে এই দেশের বিপদগ্রস্ত সাধারণ মানুষ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, কার কাছে প্রতিকার চাইবে?
এর আগে দেশের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের বৈঠকেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। তাঁরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন টেন্ডার-সন্ত্রাসকে। চাঁদাবাজিকেও তাঁরা একটি বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। নাম প্রকাশ না করে আকারে-ইঙ্গিতে তাঁদের অনেকেই বলেছেন, মুখে যে যাই বলুন না কেন, দলবাজি ও স্বজনপ্রীতির কারণেই অবস্থার দ্রুত অবনতি হচ্ছে। শুধু তাই নয়, দলীয় হস্তক্ষেপের কারণে পুলিশের চেইন অব কমান্ডও ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। রাজনৈতিক খুঁটির জোর থাকায় কিছু কিছু থানার ওসি এসপি-এএসপিকেও পাত্তা দিতে চান না। স্থানীয় এমপি বা আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে তাদের রয়েছে বিশেষ সখ্য। এসব কারণে দলীয় ক্যাডাররা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ক্যাডারদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করতে গেলে উল্টো বাদীকেই নাজেহাল হতে হয়। ক্যাডাররা কোনো কারণে ধরা পড়লেও তদন্ত রিপোর্ট এমনভাবে দেওয়া হয় যে খুনের মামলার আসামিও আদালত থেকে নির্দোষ খালাস পেয়ে যায়। এই যদি হয় অবস্থা, তাহলে এ দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি আশা করা যায় কি?
সাংবাদিককে পেটানোর পর মাননীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অবশ্য স্বীকার করেছেন, 'আমার অনেক দুষ্টু আত্মীয় আছে।' তবে এই 'দুষ্টু' আত্মীয়দের ব্যাপারে তিনি এ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নিয়েছেন বলে আমাদের জানা নেই। অপরাধের প্রকৃতি অনুযায়ী অপরাধীকে শাস্তি পেতে হয়- এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। আর তা না হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকে না। দুষ্টুরা সংখ্যায় বেড়ে যায়, শিষ্টের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ে। মাননীয় প্রতিমন্ত্রী কোনটা চান?
লেখক : সাংবাদিক
fmahmud53@yahoo.com
পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর হামলা-নির্যাতনের ঘটনা দিন দিন আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে। গত তিন বছরে প্রায় ৩৫০ জন সাংবাদিক হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এসব হামলায় সরকারদলীয় সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজ চক্র যেমন জড়িত, তেমনি জড়িত আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত বাহিনীগুলোর কতিপয় স্বেচ্ছাচারী সদস্য। এ মাসেই পাবনায় দুজন সাংবাদিককে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। আরেক সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর স্বজনদের টেন্ডার সন্ত্রাস নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছিলেন (কালের কণ্ঠ, ১১ মে, পৃষ্ঠা-১৪) কালের কণ্ঠের পাবনা আঞ্চলিক প্রতিনিধি আবদুল্লাহ আল মামুন। আর তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ভাতিজা আমিনুল ইসলাম ৮-১০ জন সন্ত্রাসী নিয়ে দিনদুপুরে হামলা চালায় মামুনের ওপর এবং লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তাঁকে গুরুতর আহত করে। পাবনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। ঘটনার পর ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও গত বুধবার পর্যন্ত পুলিশ আমিনুল কিংবা অন্য সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। উল্টো মামুনের নামে তারা চাঁদাবাজির মামলা করেছে। এখন বলা হচ্ছে আপোস করার জন্য। অর্থাৎ আমিনুল চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা তুলে নেবে এবং মামুনকেও নির্যাতনের মামলা তুলে নিতে হবে। এই কি আমাদের আইনের শাসন? খবরে প্রকাশ, মামুনের পক্ষে আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় দৈনিক ইনকিলাবের বেড়া সংবাদদাতা এবং স্থানীয় যুগের দীপ পত্রিকার সম্পাদক সরকার আরিফুর রহমানকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে অকথ্য গালিগালাজ করেছে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ভাতিজা আমিনুল। এদিকে পাবনায় দৈনিক সমকাল ও এনটিভির প্রতিনিধি এবিএম ফজলুর রহমান এখনো পাবনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁকেও সন্ত্রাসীরা গুরুতর আহত করেছে। এর আগে কক্সবাজারে সন্ত্রাসীরা একটি স্থানীয় দৈনিকের অফিসে হামলা চালিয়ে সাংবাদিকদের মারধর করছে। প্রতিনিয়তই ঘটছে এ ধরনের হামলার ঘটনা। অথচ প্রশাসন নির্বিকার। এ অবস্থায় সাংবাদিকদের পক্ষে সঠিকভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করা সম্ভব কি?
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব হচ্ছে সারা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করা। দুঃখজনক হলেও সত্য, দেশের সাধারণ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিন দিন অবনতিই হচ্ছে। এর একটি প্রধান কারণ, একচোখা নীতি এবং অপরাধীদের অপরাধ করেও পার পেয়ে যাওয়া। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী যদি দুর্নীতিবাজ ও ফৌজদারি অপরাধকারী স্বজনদের ক্ষেত্রে কঠোর না হতে পারেন, তাহলে অন্যদের ব্যাপারে কঠোর হবেন কিভাবে? দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিরই-বা উন্নতি হবে কিভাবে? দিনের পর দিন মানুষ গুম হয়েই চলেছে। বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীকে এখনো উদ্ধার করা যায়নি। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির খুনিদের এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি। খুন-রাহাজানি চরম পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে। এই অবস্থায়ও কি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কেবল দলীয় ক্যাডার আর আত্মীয়-স্বজনকে রক্ষার চেষ্টা করবেন? তাহলে এই দেশের বিপদগ্রস্ত সাধারণ মানুষ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, কার কাছে প্রতিকার চাইবে?
এর আগে দেশের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের বৈঠকেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। তাঁরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির সবচেয়ে বড় কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন টেন্ডার-সন্ত্রাসকে। চাঁদাবাজিকেও তাঁরা একটি বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। নাম প্রকাশ না করে আকারে-ইঙ্গিতে তাঁদের অনেকেই বলেছেন, মুখে যে যাই বলুন না কেন, দলবাজি ও স্বজনপ্রীতির কারণেই অবস্থার দ্রুত অবনতি হচ্ছে। শুধু তাই নয়, দলীয় হস্তক্ষেপের কারণে পুলিশের চেইন অব কমান্ডও ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। রাজনৈতিক খুঁটির জোর থাকায় কিছু কিছু থানার ওসি এসপি-এএসপিকেও পাত্তা দিতে চান না। স্থানীয় এমপি বা আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে তাদের রয়েছে বিশেষ সখ্য। এসব কারণে দলীয় ক্যাডাররা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ক্যাডারদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করতে গেলে উল্টো বাদীকেই নাজেহাল হতে হয়। ক্যাডাররা কোনো কারণে ধরা পড়লেও তদন্ত রিপোর্ট এমনভাবে দেওয়া হয় যে খুনের মামলার আসামিও আদালত থেকে নির্দোষ খালাস পেয়ে যায়। এই যদি হয় অবস্থা, তাহলে এ দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি আশা করা যায় কি?
সাংবাদিককে পেটানোর পর মাননীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অবশ্য স্বীকার করেছেন, 'আমার অনেক দুষ্টু আত্মীয় আছে।' তবে এই 'দুষ্টু' আত্মীয়দের ব্যাপারে তিনি এ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নিয়েছেন বলে আমাদের জানা নেই। অপরাধের প্রকৃতি অনুযায়ী অপরাধীকে শাস্তি পেতে হয়- এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। আর তা না হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকে না। দুষ্টুরা সংখ্যায় বেড়ে যায়, শিষ্টের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ে। মাননীয় প্রতিমন্ত্রী কোনটা চান?
লেখক : সাংবাদিক
fmahmud53@yahoo.com
No comments