অব্যাহত অভিযান চালাতে হবে-আমরা ফল খাই না বিষ খাই?

আমের মৌসুম এখনো শুরু হয়নি। কিন্তু বাজার ছেয়ে গেছে টসটসে পাকা আমে। ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করছেন বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো আম। এসব আম খেয়ে শরীরে বিষক্রিয়া দেখা দেয়। তবে ধীরে। বোঝা যায় না। যখন ধরা পড়ে, তখন অনেক দেরি।


হয়তো ক্যানসারের শেষ পর্যায়ে বোঝা যাবে কত কঠিন রোগ শরীরে বাসা বেঁধেছে। অসময়ে কৃত্রিম উপায়ে আম পাকিয়ে বাজারে আনতে পারলে বেশি দামে বিক্রি করে বেশি মুনাফা পাওয়া যায়। একশ্রেণীর মুনাফালোভী তথাকথিত ব্যবসায়ীর হাতে আজ আমাদের দেশের মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে।
আম একটা উদাহরণ মাত্র। সামান্য কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া এমন কোনো ফল বা খাদ্যদ্রব্য নেই, যা ভেজালমুক্ত। বেসরকারি উন্নত হাসপাতালগুলোতে রোগীর জন্য দোকান থেকে কেনা ফল নিতে দেওয়া হয় না। কারণ, আঙুর, আপেল, নাশপাতি, কলা—সবকিছুই আজ স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি বলে গণ্য করা হয়। কাঁচাবাজারে তাজা শাকসবজি, টাটকা মাছ ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে। কিন্তু এখন জানা গেছে বেশি তাজা তরিতরকারি, মাছ-মাংসে ফরমালিন মেশানো থাকে। মাছের বাজারে যে আজকাল মাছি থাকে না, তার অন্যতম কারণ এই ফরমালিন। স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি এই ফরমালিন মেশানো দ্রব্যাদি সহজে পচে না, তাই মাছির আনাগোনাও থাকে না। কোনো কোনো খামারে বিষ দিয়ে মাছ মেরে বাজারে বিক্রি করা হয়। এ যে ভয়ংকর ব্যাপার!
আজকাল বাঁচতে হলে একটু চালাক হতে হবে। যেসব ফলমূলে পোকা ধরে, বাজার থেকে ওগুলোই বেছে বেছে কিনে খেতে হবে। কারণ, কীটনাশক বা ক্ষতিকর রাসায়নিক মেশানো থাকলে তো পোকা ধরত না। যে মাছ একটু নরম, সেটাই বরং ভালো। কারণ, বোঝা যাবে যে ওতে ফরমালিন মেশানো হয়নি!
কিন্তু সরকারের লোকজন কী করেন? মাঝেমধ্যে অভিযান চালানো হয়। অপরাধীদের শুধু জরিমানা যথেষ্ট নয়, অন্তত পাঁচ-সাত বছরের জেল ও সেই সঙ্গে জরিমানার বিধান রাখতে হবে। কঠোর ও অব্যাহত অভিযান চালিয়ে খাদ্যে ভেজাল ও রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো বন্ধ না করতে পারলে কারও জীবন নিরাপদ হবে না।

No comments

Powered by Blogger.