ধর্মের নামে... by শাহীন হাসনাত
আমার এক আত্মীয় তার ছেলেকে কোরআনে হাফেজ বানাতে চান। সে অনুযায়ী তাকে বাসার কাছের একটি হিফজ মাদ্রাসায় ভর্তি করা হলো। হঠাৎ একদিন খবর পেলাম ছেলেটিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। দিন দুয়েক পর ছেলেটি আমার বাসায় হাজির! শুরু হলো দেন-দরবার ছেলেটিকে মাদ্রাসায় পাঠানোর জন্য।
কিন্তু তার এক কথা, সে আর মাদ্রাসায় যাবে না। অনেক চাপাচাপির পর ছেলেটি বলল, 'মাদ্রাসায় ছোট বাচ্চাদের পড়া অনাদায়ে এবং বিভিন্ন অপরাধের জন্য যেভাবে সাজা দেওয়া হয় তা ভয়াবহ। ছেলেটির কথা বলার ভঙ্গি আর চেহারার আকুতি দেখে আমি আঁতকে উঠলাম। ভাবলাম, বাচ্চা বয়সে কে না দুষ্টমি করে? আমাদের মাদ্রাসার শিক্ষকরা কি পারেন না ছাত্রদের সঙ্গে একটু ভালো ব্যবহার করতে? পড়া না শিখে কেউ কি এভাবে ইচ্ছা করে মার খেতে চায়?
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সব ধরনের শারীরিক শাস্তি অসাংবিধানিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘন। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ জনস্বার্থে দায়ের করা একটি রিট আবেদনে এ রায় দেন। এরপরও থেমে নেই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা। কমবেশি সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষার্থীদের শাসন করা হলেও মাদ্রাসার ক্ষেত্রে ঘটে বিপত্তিকর ঘটনা। নিয়মিত ক্লাসের পড়া আদায়সহ নানা কারণে এই শাসন চলে। অনেক প্রতিষ্ঠানে ছাত্রদের পালিয়ে যাওয়া রুখতে পায়ে শিকল বেঁধে দেওয়া হয়। ঠিক এমনই একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে কিছুদিন আগে। খবরে প্রকাশ, 'নামাজ না পড়ার অপরাধে শ্যামপুরে মাদ্রাসা শিশুদের লোহার রড ও খুন্তি গরম করে নির্যাতন করা হয়েছে। কদমতলীর নামা শ্যামপুর বটতলা এলাকায় তালিমুল কোরআন মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষিকা জেসমিন আখতার ১৪ শিশুকে গরম রড ও খুন্তির ছেঁকা দিয়ে শরীর ঝলসে দিয়েছেন। নির্যাতনের শিকার ছাত্রীদের প্রায় সবাই ৮ থেকে ১০ বছরের শিশু।' শুধু শ্যামপুরের ওই মাদ্রাসাতেই নয়, দেশের বিভিন্ন মাদ্রাসাতে শিক্ষার্থীদের নির্দয় আচরণ সহ্য করতে হয়। শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা, সহপাঠীদের সামনে জুতা পেটা করা, বেত দিয়ে আঘাত করা, চুল কেটে দেওয়া, না খাইয়ে রাখা, দুই আঙুলের ফাঁকে কলম দিয়ে চেপে ধরা, বেঞ্চের নিচে মাথা ঢুকিয়ে রাখা, নিলডাউন করে রাখা ও কান ধরে ওঠবস করানোসহ বিচিত্র ধরনের শারীরিক নির্যাতনের খবর পাওয়া যায়। ওপরের ঘটনা তেমনই একটি ঘটনা। শ্যামপুরে শিশুদের নির্যাতন করা হয়েছে নামাজ না পড়ার অপরাধে। কিন্তু সেই মাদ্রাসা শিক্ষিকা কী করে ভুলে গেলেন যে ১২ বছরের আগে নামাজের জন্য কাউকে প্রহার করা ঠিক নয়। হাদিসেই এটা বলা হয়েছে। দেশের আইন, মানবাধিকার ও ধর্ম লঙ্ঘনের দায়ে তিনি কেন শাস্তি পাবেন না?
আমরা জানি, শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের একটি নিয়ম আছে। শিক্ষকদের আচরণ কেমন হবে, বিশেষ করে কোমলমতি ছাত্রদের প্রতি শিক্ষকদের আচরণ কেমন হওয়া উচিত_ তা শিক্ষক প্রশিক্ষণে শেখানো হয়। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, এসব মহিলা মাদ্রাসার কোনো শিক্ষিকারই নেই যথাযথ প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা। প্রশিক্ষণহীন এসব শিক্ষিকার হঠকারী আচরণে অকালে ঝরে পড়ছে অনেকের শিক্ষাজীবন। এ ছাড়াও শিক্ষক কর্তৃক নির্যাতিত হয়ে অনেক কোমলপ্রাণ শিশু আত্মহত্যা করে, কেউ মানসিক ভারসাম্য হারায়, কেউ শারীরিকভাবে স্থায়ী ক্ষতির শিকার হয়। আমরা চাই শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ। নির্যাতন করে শিক্ষা দেওয়ার কোনো সভ্য সমাজের কাজ নয়। শিক্ষা মানুষকে সভ্য ও সুশীল বানায়। এখন সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই যদি জংলি-জানোয়ারের মতো আচরণ করা হয়, তাহলে আগামী প্রজন্ম শিখবেটা কী? এই বর্বরতার কি কোনো শেষ নেই?
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সব ধরনের শারীরিক শাস্তি অসাংবিধানিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘন। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ জনস্বার্থে দায়ের করা একটি রিট আবেদনে এ রায় দেন। এরপরও থেমে নেই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা। কমবেশি সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষার্থীদের শাসন করা হলেও মাদ্রাসার ক্ষেত্রে ঘটে বিপত্তিকর ঘটনা। নিয়মিত ক্লাসের পড়া আদায়সহ নানা কারণে এই শাসন চলে। অনেক প্রতিষ্ঠানে ছাত্রদের পালিয়ে যাওয়া রুখতে পায়ে শিকল বেঁধে দেওয়া হয়। ঠিক এমনই একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে কিছুদিন আগে। খবরে প্রকাশ, 'নামাজ না পড়ার অপরাধে শ্যামপুরে মাদ্রাসা শিশুদের লোহার রড ও খুন্তি গরম করে নির্যাতন করা হয়েছে। কদমতলীর নামা শ্যামপুর বটতলা এলাকায় তালিমুল কোরআন মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষিকা জেসমিন আখতার ১৪ শিশুকে গরম রড ও খুন্তির ছেঁকা দিয়ে শরীর ঝলসে দিয়েছেন। নির্যাতনের শিকার ছাত্রীদের প্রায় সবাই ৮ থেকে ১০ বছরের শিশু।' শুধু শ্যামপুরের ওই মাদ্রাসাতেই নয়, দেশের বিভিন্ন মাদ্রাসাতে শিক্ষার্থীদের নির্দয় আচরণ সহ্য করতে হয়। শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা, সহপাঠীদের সামনে জুতা পেটা করা, বেত দিয়ে আঘাত করা, চুল কেটে দেওয়া, না খাইয়ে রাখা, দুই আঙুলের ফাঁকে কলম দিয়ে চেপে ধরা, বেঞ্চের নিচে মাথা ঢুকিয়ে রাখা, নিলডাউন করে রাখা ও কান ধরে ওঠবস করানোসহ বিচিত্র ধরনের শারীরিক নির্যাতনের খবর পাওয়া যায়। ওপরের ঘটনা তেমনই একটি ঘটনা। শ্যামপুরে শিশুদের নির্যাতন করা হয়েছে নামাজ না পড়ার অপরাধে। কিন্তু সেই মাদ্রাসা শিক্ষিকা কী করে ভুলে গেলেন যে ১২ বছরের আগে নামাজের জন্য কাউকে প্রহার করা ঠিক নয়। হাদিসেই এটা বলা হয়েছে। দেশের আইন, মানবাধিকার ও ধর্ম লঙ্ঘনের দায়ে তিনি কেন শাস্তি পাবেন না?
আমরা জানি, শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের একটি নিয়ম আছে। শিক্ষকদের আচরণ কেমন হবে, বিশেষ করে কোমলমতি ছাত্রদের প্রতি শিক্ষকদের আচরণ কেমন হওয়া উচিত_ তা শিক্ষক প্রশিক্ষণে শেখানো হয়। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, এসব মহিলা মাদ্রাসার কোনো শিক্ষিকারই নেই যথাযথ প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা। প্রশিক্ষণহীন এসব শিক্ষিকার হঠকারী আচরণে অকালে ঝরে পড়ছে অনেকের শিক্ষাজীবন। এ ছাড়াও শিক্ষক কর্তৃক নির্যাতিত হয়ে অনেক কোমলপ্রাণ শিশু আত্মহত্যা করে, কেউ মানসিক ভারসাম্য হারায়, কেউ শারীরিকভাবে স্থায়ী ক্ষতির শিকার হয়। আমরা চাই শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ। নির্যাতন করে শিক্ষা দেওয়ার কোনো সভ্য সমাজের কাজ নয়। শিক্ষা মানুষকে সভ্য ও সুশীল বানায়। এখন সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই যদি জংলি-জানোয়ারের মতো আচরণ করা হয়, তাহলে আগামী প্রজন্ম শিখবেটা কী? এই বর্বরতার কি কোনো শেষ নেই?
No comments