তিস্তা চুক্তি শিগগিরই হচ্ছে না, তবে আশাবাদী বাংলাদেশ
তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি শিগগিরই হচ্ছে না—ভারতের পক্ষ থেকে এমন আভাস পাওয়ার পরও চুক্তি নিয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেছেন, ভারতের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের গঠিত তিস্তা নদীবিষয়ক কমিশনের প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিস্তার মূল অববাহিকায় পানির পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে কমে আসছে। এ পরিস্থিতিতে ওই কমিশন ভারত ও বাংলাদেশকে তিস্তা থেকে পানি প্রত্যাহার না করার সুপারিশ করেছে।
ভারত সরকারের একটি উচ্চপদস্থ সূত্রের বরাত দিয়ে গত বুধবার রাতে বিবিসির খবরে বলা হয়, দিল্লি সফরের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনিকে ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আপাতত তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সই হচ্ছে না। তবে গতকাল প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী বিবিসির খবর অস্বীকার করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল মিসরের শারম আল শেখ থেকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আপাতত তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সই হবে না—ভারতীয় নেতারা তাঁর কাছে এ ধরনের কোনো মনোভাব প্রকাশ করেননি। তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণা ও পানিসম্পদমন্ত্রী পবন কুমার বানসালের সঙ্গে আলোচনায় তিস্তার ব্যাপারে বাংলাদেশের গুরুত্ব তুলে ধরেছি। এটি আমাদের জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন, সে কথা তাঁদের জানিয়েছি। এ প্রেক্ষাপটে তাঁরা আমাকে এটা বলে আশ্বস্ত করেছেন যে তিস্তার পানি চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে ভারত সচেষ্ট রয়েছে।’
ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভীর কাছে জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি শিগগির হবে না—এমন কোনো তথ্য ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে জানানো হয়নি।
দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রগুলো এই প্রতিবেদককে জানিয়েছে, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের আন্তরিকতা থাকলেও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দ্রুত তিস্তা চুক্তি সই নিয়ে সংশয় রয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরে তিস্তা চুক্তি সই না হওয়ায় বাংলাদেশে হতাশা তৈরি হয়। এরপর সরকারের মন্ত্রী ও উপদেষ্টারা চুক্তি সই নিয়ে আশার বাণী শুনিয়েছিলেন। তাঁদের কেউ কেউ সময়সীমা বেঁধে দিয়ে ওই সময়ের মধ্যেই চুক্তি সই হবে বলে জানিয়েছিলেন।
রুদ্র কমিশনের সমীক্ষা প্রতিবেদন: তিস্তা নিয়ে সমীক্ষা চালাতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কল্যাণ রুদ্রকে দায়িত্ব দেয়। গত সেপ্টেম্বরে তিস্তা চুক্তি সই না হওয়ার পর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অনুরোধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ পদক্ষেপ নেন। কল্যাণ রুদ্র শুষ্ক মৌসুমে তিস্তা অববাহিকার পানিপ্রবাহ নিয়ে দুটি সমীক্ষা চালান। সমীক্ষা দুটির ওপর ভিত্তি করে প্রাথমিক একটি প্রতিবেদন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে বলে পশ্চিমবঙ্গের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
ওই সূত্রটি জানায়, কল্যাণ রুদ্রর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিস্তা নদীর মূল অববাহিকায় পানির পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে কমে আসছে। অববাহিকার ভারতীয় অংশে বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বাঁধ নির্মাণের ফলে তিস্তার পানি দ্রুতগতিতে কমে আসছে। আর নদীর বুকে পলি জমার পরিমাণ বাড়ছে। ফলে নদীটির নিজস্ব প্রতিবেশব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার জন্য কোনো পানি থাকছে না। এ পরিস্থিতি তুলে ধরে কল্যাণ রুদ্র উভয় দেশকেই তিস্তা থেকে পানি প্রত্যাহার না করার সুপারিশ করেছেন।
অভ্যন্তরীণ রাজনীতির জের: এমনিতেই লোকপাল বিল, টুজি কেলেঙ্কারিসহ নানা কারণে কিছুটা বিপাকে ছিল কংগ্রেস পার্টির নেতৃত্বাধীন প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক জোট (ইউপিএ) সরকার। গত মার্চে উত্তর প্রদেশের রাজ্যসভা নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টির কাছে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়। এ ছাড়া এবারই প্রথম উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরের ৬০ আসনবিশিষ্ট রাজ্যসভা নির্বাচনে সাতটি আসনে জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সার্বিক পরিস্থিতিতে রাজ্যসভা নির্বাচনের পর কংগ্রেসের সঙ্গে দর-কষাকষিতে শক্ত অবস্থানে রয়েছে তৃণমূল।
ঢাকা ও দিল্লির কূটনীতিকেরা বলছেন, অভ্যন্তরীণ রাজনীতির এ সমীকরণে স্বভাবতই তৃণমূলকে চটাতে চাইছে না কংগ্রেস। ফলে মনমোহন সিংয়ের সরকারের আন্তরিকতা থাকলেও হার মানতে হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনড় অবস্থানের কাছে।
ভারত সরকারের একটি উচ্চপদস্থ সূত্রের বরাত দিয়ে গত বুধবার রাতে বিবিসির খবরে বলা হয়, দিল্লি সফরের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনিকে ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আপাতত তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সই হচ্ছে না। তবে গতকাল প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী বিবিসির খবর অস্বীকার করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল মিসরের শারম আল শেখ থেকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আপাতত তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি সই হবে না—ভারতীয় নেতারা তাঁর কাছে এ ধরনের কোনো মনোভাব প্রকাশ করেননি। তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণা ও পানিসম্পদমন্ত্রী পবন কুমার বানসালের সঙ্গে আলোচনায় তিস্তার ব্যাপারে বাংলাদেশের গুরুত্ব তুলে ধরেছি। এটি আমাদের জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন, সে কথা তাঁদের জানিয়েছি। এ প্রেক্ষাপটে তাঁরা আমাকে এটা বলে আশ্বস্ত করেছেন যে তিস্তার পানি চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে ভারত সচেষ্ট রয়েছে।’
ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভীর কাছে জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি শিগগির হবে না—এমন কোনো তথ্য ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে জানানো হয়নি।
দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রগুলো এই প্রতিবেদককে জানিয়েছে, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের আন্তরিকতা থাকলেও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দ্রুত তিস্তা চুক্তি সই নিয়ে সংশয় রয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরে তিস্তা চুক্তি সই না হওয়ায় বাংলাদেশে হতাশা তৈরি হয়। এরপর সরকারের মন্ত্রী ও উপদেষ্টারা চুক্তি সই নিয়ে আশার বাণী শুনিয়েছিলেন। তাঁদের কেউ কেউ সময়সীমা বেঁধে দিয়ে ওই সময়ের মধ্যেই চুক্তি সই হবে বলে জানিয়েছিলেন।
রুদ্র কমিশনের সমীক্ষা প্রতিবেদন: তিস্তা নিয়ে সমীক্ষা চালাতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কল্যাণ রুদ্রকে দায়িত্ব দেয়। গত সেপ্টেম্বরে তিস্তা চুক্তি সই না হওয়ার পর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অনুরোধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ পদক্ষেপ নেন। কল্যাণ রুদ্র শুষ্ক মৌসুমে তিস্তা অববাহিকার পানিপ্রবাহ নিয়ে দুটি সমীক্ষা চালান। সমীক্ষা দুটির ওপর ভিত্তি করে প্রাথমিক একটি প্রতিবেদন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে বলে পশ্চিমবঙ্গের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
ওই সূত্রটি জানায়, কল্যাণ রুদ্রর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিস্তা নদীর মূল অববাহিকায় পানির পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে কমে আসছে। অববাহিকার ভারতীয় অংশে বিদ্যুৎকেন্দ্র ও বাঁধ নির্মাণের ফলে তিস্তার পানি দ্রুতগতিতে কমে আসছে। আর নদীর বুকে পলি জমার পরিমাণ বাড়ছে। ফলে নদীটির নিজস্ব প্রতিবেশব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার জন্য কোনো পানি থাকছে না। এ পরিস্থিতি তুলে ধরে কল্যাণ রুদ্র উভয় দেশকেই তিস্তা থেকে পানি প্রত্যাহার না করার সুপারিশ করেছেন।
অভ্যন্তরীণ রাজনীতির জের: এমনিতেই লোকপাল বিল, টুজি কেলেঙ্কারিসহ নানা কারণে কিছুটা বিপাকে ছিল কংগ্রেস পার্টির নেতৃত্বাধীন প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক জোট (ইউপিএ) সরকার। গত মার্চে উত্তর প্রদেশের রাজ্যসভা নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টির কাছে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়। এ ছাড়া এবারই প্রথম উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরের ৬০ আসনবিশিষ্ট রাজ্যসভা নির্বাচনে সাতটি আসনে জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সার্বিক পরিস্থিতিতে রাজ্যসভা নির্বাচনের পর কংগ্রেসের সঙ্গে দর-কষাকষিতে শক্ত অবস্থানে রয়েছে তৃণমূল।
ঢাকা ও দিল্লির কূটনীতিকেরা বলছেন, অভ্যন্তরীণ রাজনীতির এ সমীকরণে স্বভাবতই তৃণমূলকে চটাতে চাইছে না কংগ্রেস। ফলে মনমোহন সিংয়ের সরকারের আন্তরিকতা থাকলেও হার মানতে হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনড় অবস্থানের কাছে।
No comments