অনলাইনে কর পরিশোধ-অফলাইনেও চাই স্বাচ্ছন্দ্য
অনলাইনে আয়কর পরিশোধের যে সুবিধা আগামী সেপ্টেম্বর থেকে চালু হতে যাচ্ছে, তার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সাধুবাদ পেতেই পারে। আমাদের দৈনন্দিন আর্থিক লেনদেনের উল্লেখযোগ্য অংশ যেভাবে ইতিমধ্যেই কার্ডনির্ভর হয়ে পড়েছে, সে তুলনায় এই পদক্ষেপ খানিকটা বিলম্বিত হলেও মন্দ বলার অবকাশ নেই।
বরং বলা চলে, এর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র ও নাগরিকের গুরুত্বপূর্ণ বন্ধনটির ডিজিটালাইজেশন আরেক ধাপ এগোবে। এতদিন যেভাবে অনলাইনে কেবল আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া যেত, তা যেন ছিল যানবাহনে রওনা হয়ে গন্তব্যের অর্ধেক পথ পায়ে হেঁটে পাড়ি দেওয়া। রিটার্ন জমা দেওয়ার পর যদি করের অর্থ জমা দেওয়ার জন্য সশরীরেই হাজির হতে হয়, তাহলে লাভ কী? ডেবিট কিংবা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কর জমা দেওয়ার 'ই-পেমেন্ট' খ্যাত এই পদ্ধতি চালু হওয়ার পর করদাতাদের সেই বিড়ম্বনা ঘুচবে আশা করা যায়। আমরা আশা করি, সেপ্টেম্বরের আগেই প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। এ-ও প্রত্যাশিত যে, বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় প্রচার ও প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ দায়িত্ব জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের, সন্দেহ নেই। কিন্তু অন্যরাও এগিয়ে আসতে পারে। বিশেষ করে নির্ধারিত ২৬ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তাদের সামাজিক দায়িত্বশীলতার অংশ হিসেবেও অনলাইনে কর পরিশোধের সুবিধা ও পদ্ধতি সম্পর্কে প্রচার চালাতে পারে। নাগরিক অধিকার ও কর্তব্য নিয়ে তৎপর সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও উন্নয়ন সংস্থাগুলোই-বা নির্লিপ্ত থাকবে কেন? সেপ্টেম্বরের আগের কয়েক মাসে এ কাজ স্বাচ্ছন্দ্যেই সম্পন্ন করা যায়। একই সঙ্গে হাতে হাতে কর জমা দেওয়ার পদ্ধতিটিও হয়রানিমুক্ত রাখার আহ্বান জানাই আমরা। অনলাইনের ডামাডোলে পুরনো ব্যবস্থা উন্নত করার ততোধিক পুরনো দাবিটি যাতে চাপা পড়ে না যায়, সেদিকে নজর রাখা জরুরি। অনলাইন ও অফলাইনে সমান স্বাচ্ছন্দ্য ছাড়া কার্যকর কর আদায়
ব্যবস্থা গড়ে উঠতে পারে না।
ব্যবস্থা গড়ে উঠতে পারে না।
No comments