পার্বত্য আদিবাসীদের ভূমি অধিকার সংরক্ষণের দাবি
পার্বত্য আদিবাসীদের ভূমিসংক্রান্ত প্রথাগত অধিকার সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা নাগরিক সংহতি। পার্বত্য অঞ্চলের ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি অবশ্যই স্থানীয় আদিবাসীদের মতামতের ভিত্তিতে করতে হবে। এ ছাড়া ১৯৯৭ সালে সম্পাদিত পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি অনুযায়ী আগে ভূমি বিরোধী নিষ্পত্তি এবং পরে ভূমি জরিপের দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান শরীফ। তিনি অভিযোগ করেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও তিন জেলার রাজার সঙ্গে আলোচনা না করে একক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বিভিন্ন কার্যক্রম চালাচ্ছেন বর্তমান ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যান। ফলে শান্তিচুক্তি অনুযায়ী ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তি ও জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের অন্যতম যুগ্ম আহ্বায়ক মিহির বিশ্বাস বলেন, বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ভূমি কমিশন গঠন করে ১৯৯৯ সালে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আনোয়ারুল হক চৌধুরীকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু দায়িত্ব নেওয়ার আগেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরে ২০০০ সালে বিচারপতি আবদুল করিমকে নিয়োগ দেওয়া হয়। দায়িত্ব নিয়ে তিনি খাগড়াছড়ি জেলা সফর করে শারীরিক অসুস্থতার কারণে পদত্যাগ করেন। এরও দেড় বছর পরে ২০০১ সালে বিচারপতি মাহমুদুর রহমানকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনিও ২০০৭ সালের নভেম্বরে মারা যান। পদ খালি থাকার কারণে ২০০৯ সালে বিচারপতি খাদেমুল ইসলাম চৌধুরীকে চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু এ পর্যন্ত ভূমি কমিশনের আইনে পরস্পর বিরোধপূর্ণ ধারাগুলোর কোনো পরিবর্তন করা হয়নি।
নাগরিক সংহতি সংগঠক আমিনুর রশিদ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির এক যুগ পার হয়ে গেলেও ভূমি বিরোধ ও ভূমি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিধান বাস্তবায়নের গতি খুবই ধীর। অন্যদিকে ভূমি কমিশন আইনের পরস্পরবিরোধী ধারা সংশোধনের বিষয়টি সংশোধনের নামে বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রাখার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত দাঙ্গা-হাঙ্গামা হচ্ছে এবং বহিরাগত বাঙালিদের কারণে পাহাড়ি জুম্মাদের জায়গা-জমি জবর দখলের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
সম্মেলনে সরকারের কাছে এ বিষয়টি দ্রুত ও আন্তরিকতার সঙ্গে সমাধানের দাবি জানানো হয়।
No comments