পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন-দুই জোটে পাঁচফোড়ন by অমর সাহা
প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে গেছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার ২৯৪টি আসনের নির্বাচন। ছয় দফার এই নির্বাচন শুরু হয়েছে ১৮ এপ্রিল। শেষ হবে ১০ মে। শেষ দফার নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হবে মাওবাদী-প্রভাবিত জঙ্গলমহলের ১৪টি আসনে।
নির্বাচন শেষ পর্যায়ে এলেও এখনো গোটা পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ময়দানে ছড়িয়ে আছে দুই প্রধান জোটের নির্বাচনী
নির্বাচন শেষ পর্যায়ে এলেও এখনো গোটা পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ময়দানে ছড়িয়ে আছে দুই প্রধান জোটের নির্বাচনী
লড়াইয়ের নানা চিহ্ন। আছে শালীন, অশালীন তর্কযুদ্ধের নানা ছবি। গোটা যুদ্ধই যেন একে অপরকে হারানোর প্রতিযোগিতা। আর এবারের এই প্রতিযোগিতায় যেন সেই রাজনৈতিক পাঁচফোড়নের ঝাঁজ একটু বেশি। এই ঝাঁজ এখনো ছড়িয়ে আছে গোটা নির্বাচনী ময়দানে। সিঙ্গুর/নন্দীগ্রাম, মাওবাদী সঙ্গ, কালো টাকা, উইকিলিকসের তথ্য এবং পুরুলিয়ার অস্ত্র ফেলার সেই পাঁচফোড়নের ঝাঁজই এবার নির্বাচনী ময়দানকে উত্তপ্ত করে রেখেছে। নির্বাচনের মূল ইস্যুই হয়ে দাঁড়িয়েছে এবার এই পাঁচফোড়ন।
ফোড়ন ১: সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রাম
এবারের নির্বাচনে শাসকজোট বামফ্রন্টের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস-তৃণমূল জোট। এই জোট এবার বামফ্রন্টকে এমন বেগ দিয়েছে যে বামফ্রন্টের গদি টিকিয়ে রাখা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিঙ্গুর আর নন্দীগ্রাম আন্দোলনই বামফ্রন্টের গদি নাড়িয়ে দিয়েছে, মমতার উত্থান ঘটিয়েছে। তাই মমতার আন্দোলনের এবারও ইস্যু সেই সিঙ্গুর আর নন্দীগ্রাম। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মমতা রাজ্যবাসীকে এমনটা বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন যে সিপিএম নিজেদের গরিবের বন্ধু হিসেবে জাহির করলেও তারা ধনীদের মনোরঞ্জনের জন্য সিঙ্গুরে গাড়ির কারখানা গড়ার জন্য গরিবের উর্বর জমি লিজ দিয়েছে টাটাকে। অথচ একসময় এই সিপিএম বলেছিল, টাটাদের মতো বড় বড় শিল্পপতিই তাদের শত্রু। তাই মমতা বলেছেন, তাঁরা ক্ষমতায় এলেই ফিরিয়ে দেবেন সিঙ্গুরের অনিচ্ছুক কৃষকদের জমি। আর লিজ দেওয়া জায়গায় গড়ে তুলবেন শিল্প। আর নন্দীগ্রামে মমতা আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন প্রস্তাবিত রসায়ন শিল্পাঞ্চল গড়ার বিরুদ্ধে। এই নন্দীগ্রামে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ১০ হাজার একর জমি অধিগ্রহণের উদ্যোগ নিলে মমতা নন্দীগ্রামেও গড়ে তোলেন জমি অধিগ্রহণবিরোধী আন্দোলন। এ কারণে এই দুই আন্দোলনই মমতার রাজনৈতিক ভিতকে আরও শক্তিশালী করে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে।
ফোড়ন ২: মাওবাদী সঙ্গ
এবারের নির্বাচনে মমতার বিরুদ্ধে মাওবাদী সঙ্গের অভিযোগ আনে বামফ্রন্ট। তারা বারবার বলেছে, পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলমহলের পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া ও বাঁকুরা জেলার মাওবাদী-প্রভাবিত অঞ্চলে মাওবাদীদের মদদ দিচ্ছেন মমতা। তিনি মাওবাদীদের ছত্রচ্ছায়ায় গঠিত পুলিশি সন্ত্রাসবিরোধী জনগণের কমিটির নেতা ছত্রধর মাহাতকে সার্বিক সহযোগিতা করে এসেছেন। মমতার দলের সাংসদ সংগীতশিল্পী কবির সুমন ও প্রখ্যাত লেখিকা মহাশ্বেতা দেবীর মতো অনেকে এসে দাঁড়িয়েছেন মাওবাদীদের পাশে। কবির সুমন গান লিখেছেন ছত্রধর মাহাতকে নিয়ে। ফলে মমতাদের সমর্থন নিয়ে মাওবাদীরা আরও শক্তি সঞ্চার করেছে। অবশ্য মমতা বলে এসেছেন, তাঁদের সঙ্গে কোনো মাওবাদীর সম্পর্ক নেই। তাই এবারের নির্বাচনী প্রচারে জোরেশোরেই উঠে আসছে মাওবাদী প্রসঙ্গ।
ফোড়ন ৩: কালো টাকা
এবারের নির্বাচনে কালো টাকা ব্যবহারের মূল ইস্যু তুলেছে বামফ্রন্ট। তাদের অভিযোগ, মমতা এবারের নির্বাচনে অন্তত ১০০ কোটি কালো টাকা খরচ করছেন। এত টাকা তিনি পেলেন কোথায়? সিপিএম নেতা গৌতম দেব কলকাতা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ তোলেন, মমতার দল তাঁদের ২২৫ জন প্রার্থীকে ১৫ লাখ টাকা করে সর্বমোট ৩৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা দিয়েছেন বেআইনিভাবে। ওই টাকার সমর্থনে প্রত্যেক প্রার্থীর হাতে তুলে দিয়েছেন চাঁদা আদায়ের কুপনের অর্ধাংশ। শুধু তা-ই নয়, গৌতম দেব এও অভিযোগ করেছেন, কীভাবে একজন হাওয়াই চপ্পল পরা নেত্রী দুটি হেলিকপ্টার ভাড়া করে দিনের পর দিন নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন? কীভাবে তৃণমূল কংগ্রেস দিনের পর দিন ভারতের বিভিন্ন সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেলে কোটি কোটি টাকার বিজ্ঞাপন দিচ্ছে? এত টাকা মমতা কোথায় পেলেন? শুধু তা-ই নয়, গৌতম দেব যেখানে ভারতের রিজার্ভ ব্যাংকের আইন অনুসারে নগদে ৫০ হাজার টাকা বা তার বেশির ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডার করতে পারেন না, সেখানে মমতার দল কীভাবে নগদ এক কোটি ৩৩ লাখ টাকার ব্যাংক ড্রাফট করেছে? আর মমতা বলেছেন, সিপিএমের টাকা কি গঙ্গাজলে ধোয়া? তারা কীভাবে শত শত পার্টি অফিস গড়ে? তাদের টাকা তো পাপের টাকা।
ফোড়ন ৪: উইকিলিকস ফাঁস
উইকিলিকস নির্বাচনের মধ্যেই ফাঁস করে দেয় কলকাতার মার্কিন কনসাল জেনারেলের এক তারবার্তার চিঠির কথা। তাতে মমতার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ার লক্ষ্যে তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন ওই মার্কিন দূত। ওই গোপন চিঠিতে মমতাকে পশ্চিমবঙ্গের ভাবী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করে বলেছিলেন, মমতা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হলে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও উন্নত হবে। তিনি আরও জানিয়েছিলেন, বর্তমান সিপিআইএমের চেয়ে মমতার সরকার যে অনেক বেশি বন্ধুত্বপূর্ণ হবে, তার ‘উৎসাহব্যঞ্জক ইঙ্গিত’ তিনি দেখতে পেয়েছেন। মমতার দলের প্রকাশ্যে জেহাদ বা মার্কিনবিরোধী মন্তব্য না করা এবং কনসুলেটের কর্মকর্তাদের কাছে ব্যক্তিগত স্তরে পৌঁছানোর চেষ্টাই তিনি উৎসাহজনক বলে মনে করেছেন। এই তথ্য ফাঁসের পর বামফ্রন্ট এটিকে নির্বাচনের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে। বামফ্রন্ট ভোটারদের বোঝাতে থাকে এবার প্রমাণিত হয়ে গেল, বামফ্রন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও তৎপর।
ফোড়ন ৫: পুরুলিয়ায় অস্ত্র ফেলা
নির্বাচনের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ার চাঞ্চল্যকর অস্ত্র ফেলা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত কিম পিটার ডেভি ভারতের একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের বাম কমিউনিস্ট সরকারকে পরিকল্পিতভাবে উৎখাত করার জন্য পুরুলিয়ার গ্রামে অস্ত্র ফেলা হয়েছিল। এই অস্ত্র ফেলার ঘটনা ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এবং ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা ‘এমআই-৫’ জানত। ব্রিটিশ অস্ত্র ব্যবসায়ী পিটার বিচও লন্ডন থেকে এক সাক্ষাৎকারে একই কথা বলেন। ডেভি আরও বলেছেন, মুম্বাইতে ধরা পড়ার পর তিনি ভারতীয় কংগ্রেসের এক সাংসদের গাড়িতে করে নেপালে পালিয়ে যান। বিহারের ওই সাংসদের নাম পাপ্পু যাদব। তিনি এখন একটি হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন। বামফ্রন্ট পুরুলিয়ায় এই অস্ত্র ফেলার ঘটনাকে নির্বাচনী প্রচারের অস্ত্র বানিয়ে নেমে পড়েছে প্রচারের ময়দানে। বোঝাতে শুরু করে, বামফ্রন্ট সরকারকে গদিচ্যুত করার জন্য কত তৎপর দেশি ও বিদেশি চক্র?
অমর সাহা: প্রথম আলোর কলকাতা প্রতিনিধি।
ফোড়ন ১: সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রাম
এবারের নির্বাচনে শাসকজোট বামফ্রন্টের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস-তৃণমূল জোট। এই জোট এবার বামফ্রন্টকে এমন বেগ দিয়েছে যে বামফ্রন্টের গদি টিকিয়ে রাখা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিঙ্গুর আর নন্দীগ্রাম আন্দোলনই বামফ্রন্টের গদি নাড়িয়ে দিয়েছে, মমতার উত্থান ঘটিয়েছে। তাই মমতার আন্দোলনের এবারও ইস্যু সেই সিঙ্গুর আর নন্দীগ্রাম। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মমতা রাজ্যবাসীকে এমনটা বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন যে সিপিএম নিজেদের গরিবের বন্ধু হিসেবে জাহির করলেও তারা ধনীদের মনোরঞ্জনের জন্য সিঙ্গুরে গাড়ির কারখানা গড়ার জন্য গরিবের উর্বর জমি লিজ দিয়েছে টাটাকে। অথচ একসময় এই সিপিএম বলেছিল, টাটাদের মতো বড় বড় শিল্পপতিই তাদের শত্রু। তাই মমতা বলেছেন, তাঁরা ক্ষমতায় এলেই ফিরিয়ে দেবেন সিঙ্গুরের অনিচ্ছুক কৃষকদের জমি। আর লিজ দেওয়া জায়গায় গড়ে তুলবেন শিল্প। আর নন্দীগ্রামে মমতা আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন প্রস্তাবিত রসায়ন শিল্পাঞ্চল গড়ার বিরুদ্ধে। এই নন্দীগ্রামে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ১০ হাজার একর জমি অধিগ্রহণের উদ্যোগ নিলে মমতা নন্দীগ্রামেও গড়ে তোলেন জমি অধিগ্রহণবিরোধী আন্দোলন। এ কারণে এই দুই আন্দোলনই মমতার রাজনৈতিক ভিতকে আরও শক্তিশালী করে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে।
ফোড়ন ২: মাওবাদী সঙ্গ
এবারের নির্বাচনে মমতার বিরুদ্ধে মাওবাদী সঙ্গের অভিযোগ আনে বামফ্রন্ট। তারা বারবার বলেছে, পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলমহলের পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া ও বাঁকুরা জেলার মাওবাদী-প্রভাবিত অঞ্চলে মাওবাদীদের মদদ দিচ্ছেন মমতা। তিনি মাওবাদীদের ছত্রচ্ছায়ায় গঠিত পুলিশি সন্ত্রাসবিরোধী জনগণের কমিটির নেতা ছত্রধর মাহাতকে সার্বিক সহযোগিতা করে এসেছেন। মমতার দলের সাংসদ সংগীতশিল্পী কবির সুমন ও প্রখ্যাত লেখিকা মহাশ্বেতা দেবীর মতো অনেকে এসে দাঁড়িয়েছেন মাওবাদীদের পাশে। কবির সুমন গান লিখেছেন ছত্রধর মাহাতকে নিয়ে। ফলে মমতাদের সমর্থন নিয়ে মাওবাদীরা আরও শক্তি সঞ্চার করেছে। অবশ্য মমতা বলে এসেছেন, তাঁদের সঙ্গে কোনো মাওবাদীর সম্পর্ক নেই। তাই এবারের নির্বাচনী প্রচারে জোরেশোরেই উঠে আসছে মাওবাদী প্রসঙ্গ।
ফোড়ন ৩: কালো টাকা
এবারের নির্বাচনে কালো টাকা ব্যবহারের মূল ইস্যু তুলেছে বামফ্রন্ট। তাদের অভিযোগ, মমতা এবারের নির্বাচনে অন্তত ১০০ কোটি কালো টাকা খরচ করছেন। এত টাকা তিনি পেলেন কোথায়? সিপিএম নেতা গৌতম দেব কলকাতা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ তোলেন, মমতার দল তাঁদের ২২৫ জন প্রার্থীকে ১৫ লাখ টাকা করে সর্বমোট ৩৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা দিয়েছেন বেআইনিভাবে। ওই টাকার সমর্থনে প্রত্যেক প্রার্থীর হাতে তুলে দিয়েছেন চাঁদা আদায়ের কুপনের অর্ধাংশ। শুধু তা-ই নয়, গৌতম দেব এও অভিযোগ করেছেন, কীভাবে একজন হাওয়াই চপ্পল পরা নেত্রী দুটি হেলিকপ্টার ভাড়া করে দিনের পর দিন নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন? কীভাবে তৃণমূল কংগ্রেস দিনের পর দিন ভারতের বিভিন্ন সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেলে কোটি কোটি টাকার বিজ্ঞাপন দিচ্ছে? এত টাকা মমতা কোথায় পেলেন? শুধু তা-ই নয়, গৌতম দেব যেখানে ভারতের রিজার্ভ ব্যাংকের আইন অনুসারে নগদে ৫০ হাজার টাকা বা তার বেশির ব্যাংক ড্রাফট বা পে-অর্ডার করতে পারেন না, সেখানে মমতার দল কীভাবে নগদ এক কোটি ৩৩ লাখ টাকার ব্যাংক ড্রাফট করেছে? আর মমতা বলেছেন, সিপিএমের টাকা কি গঙ্গাজলে ধোয়া? তারা কীভাবে শত শত পার্টি অফিস গড়ে? তাদের টাকা তো পাপের টাকা।
ফোড়ন ৪: উইকিলিকস ফাঁস
উইকিলিকস নির্বাচনের মধ্যেই ফাঁস করে দেয় কলকাতার মার্কিন কনসাল জেনারেলের এক তারবার্তার চিঠির কথা। তাতে মমতার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ার লক্ষ্যে তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন ওই মার্কিন দূত। ওই গোপন চিঠিতে মমতাকে পশ্চিমবঙ্গের ভাবী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করে বলেছিলেন, মমতা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হলে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক আরও উন্নত হবে। তিনি আরও জানিয়েছিলেন, বর্তমান সিপিআইএমের চেয়ে মমতার সরকার যে অনেক বেশি বন্ধুত্বপূর্ণ হবে, তার ‘উৎসাহব্যঞ্জক ইঙ্গিত’ তিনি দেখতে পেয়েছেন। মমতার দলের প্রকাশ্যে জেহাদ বা মার্কিনবিরোধী মন্তব্য না করা এবং কনসুলেটের কর্মকর্তাদের কাছে ব্যক্তিগত স্তরে পৌঁছানোর চেষ্টাই তিনি উৎসাহজনক বলে মনে করেছেন। এই তথ্য ফাঁসের পর বামফ্রন্ট এটিকে নির্বাচনের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে। বামফ্রন্ট ভোটারদের বোঝাতে থাকে এবার প্রমাণিত হয়ে গেল, বামফ্রন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও তৎপর।
ফোড়ন ৫: পুরুলিয়ায় অস্ত্র ফেলা
নির্বাচনের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ার চাঞ্চল্যকর অস্ত্র ফেলা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত কিম পিটার ডেভি ভারতের একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের বাম কমিউনিস্ট সরকারকে পরিকল্পিতভাবে উৎখাত করার জন্য পুরুলিয়ার গ্রামে অস্ত্র ফেলা হয়েছিল। এই অস্ত্র ফেলার ঘটনা ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এবং ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা ‘এমআই-৫’ জানত। ব্রিটিশ অস্ত্র ব্যবসায়ী পিটার বিচও লন্ডন থেকে এক সাক্ষাৎকারে একই কথা বলেন। ডেভি আরও বলেছেন, মুম্বাইতে ধরা পড়ার পর তিনি ভারতীয় কংগ্রেসের এক সাংসদের গাড়িতে করে নেপালে পালিয়ে যান। বিহারের ওই সাংসদের নাম পাপ্পু যাদব। তিনি এখন একটি হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন। বামফ্রন্ট পুরুলিয়ায় এই অস্ত্র ফেলার ঘটনাকে নির্বাচনী প্রচারের অস্ত্র বানিয়ে নেমে পড়েছে প্রচারের ময়দানে। বোঝাতে শুরু করে, বামফ্রন্ট সরকারকে গদিচ্যুত করার জন্য কত তৎপর দেশি ও বিদেশি চক্র?
অমর সাহা: প্রথম আলোর কলকাতা প্রতিনিধি।
No comments