স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা প্রয়োজন-সুশাসনে বাংলাদেশের অবস্থান
ওয়াশিংটনভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা গ্লোবাল ইন্টেগ্রিটির ‘দ্য গ্লোবাল ইন্টেগ্রিটি রিপোর্ট ২০১০’ শীর্ষক সমীক্ষা প্রতিবেদনে সুশাসনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের যে অবস্থানের চিত্র ফুটে উঠেছে তা এক কথায় হতাশাব্যঞ্জক। দুই দশক ধরে যে দেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনভিত্তিক সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু রয়েছে, সে দেশে সুশাসন, জবাবদিহি, আইনের শাসনের ক্ষেত্রে কেন অগ্রগতি ঘটেনি তা একটি গভীর প্রশ্ন।
৩০০টি সূচকের ওপর পরিচালিত ওই সমীক্ষায় বাংলাদেশ ১০০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছে ৭০। এর অর্থ সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অবস্থান দুর্বল। সমীক্ষা প্রতিবেদনটিতে কিছু বিষয় নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, যেগুলো নিয়ে নাগরিক সমাজ অনেক দিন ধরে সোচ্চার। ন্যায়পাল নিয়োগ না করা, দুর্নীতি দমন কমিশনকে আরও স্বাধীন ও শক্তিশালী করার পরিবর্তে আইন সংশোধন করে এর বিদ্যমান ক্ষমতাও হ্রাস করার উদ্যোগ, বিচার বিভাগের ওপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ—এগুলো আমাদের বহুলালোচিত বিষয়। দেশে গণতন্ত্র চলছে, অথচ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বুনিয়াদ মজবুত হওয়ার পরিবর্তে ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে। প্রশাসন ও আইন প্রয়োগব্যবস্থায় রাজনৈতিক প্রভাব ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাগুলো কার্যকর হচ্ছে না।
প্রতিবেদনটির এক বিশেষ উল্লেখযোগ্য দিক হলো, আরব বিশ্বের সাম্প্রতিক গণ-অসন্তোষের পেছনে ওই দেশগুলোর সুশাসনের অভাবের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতি দমনে ধারাবাহিক ব্যর্থতার পটভূমিতে মিসরসহ আরব বিশ্বের দেশগুলোতে দেখা দিয়েছে এই ব্যাপক গণ-অসন্তোষ। এই পর্যবেক্ষণ বাংলাদেশের জন্যও ইঙ্গিতবহ। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতি দমনে আমাদেরও ব্যর্থতা বিরাট। এবং ব্যর্থতা চলছে ধারাবাহিকভাবেই। ১৯৯০ সালে ব্যাপক গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরশাসনের পতন ঘটিয়ে সংসদীয় গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের পরও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আমাদের ব্যর্থতা দূর হয়নি। বরং বিদ্যমান গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো, সুশাসনের হাতিয়ারগুলো ক্রমেই দুর্বল হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো গণতন্ত্রকে বিকশিত করার লক্ষ্যে জাতীয় সংসদের ভেতর ও বাইরে নিজ নিজ ভূমিকা যথাযথভাবে পালন করলে এই অবস্থা সৃষ্টি হতো না। সরকার ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের জবাবদিহি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বিরোধী দলের যে দায়িত্ব রয়েছে, তা এ দেশে কখনো আন্তরিকভাবে অনুভব করা হয়েছে বলে মনে হয় না।
গ্লোবাল ইন্টেগ্রিটির সমীক্ষা প্রতিবেদনের এই পর্যবেক্ষণ সঠিক যে আমরা আইন প্রণয়নে যত পারঙ্গম, আইন কার্যকর করার ক্ষেত্রে ততটাই ব্যর্থ। এই ব্যর্থতা সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ব্যর্থতারই একটি অংশ। রাজনৈতিক নেতাদের আন্তরিক অঙ্গীকার ছাড়া এই ব্যর্থতা দূর হওয়ার নয়। প্রধানত, দ্বিদলীয় একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থায় অধিকারসচেতন ও পরিশ্রমী একটি জাতির পক্ষে সার্বিক সুশাসন প্রতিষ্ঠার যে সুযোগ ও সম্ভাবনা আমাদের সামনে রয়েছে, তার সদ্ব্যবহারের দায়িত্ব মূলত রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক দলগুলোর।
প্রতিবেদনটির এক বিশেষ উল্লেখযোগ্য দিক হলো, আরব বিশ্বের সাম্প্রতিক গণ-অসন্তোষের পেছনে ওই দেশগুলোর সুশাসনের অভাবের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতি দমনে ধারাবাহিক ব্যর্থতার পটভূমিতে মিসরসহ আরব বিশ্বের দেশগুলোতে দেখা দিয়েছে এই ব্যাপক গণ-অসন্তোষ। এই পর্যবেক্ষণ বাংলাদেশের জন্যও ইঙ্গিতবহ। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতি দমনে আমাদেরও ব্যর্থতা বিরাট। এবং ব্যর্থতা চলছে ধারাবাহিকভাবেই। ১৯৯০ সালে ব্যাপক গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরশাসনের পতন ঘটিয়ে সংসদীয় গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের পরও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আমাদের ব্যর্থতা দূর হয়নি। বরং বিদ্যমান গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো, সুশাসনের হাতিয়ারগুলো ক্রমেই দুর্বল হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো গণতন্ত্রকে বিকশিত করার লক্ষ্যে জাতীয় সংসদের ভেতর ও বাইরে নিজ নিজ ভূমিকা যথাযথভাবে পালন করলে এই অবস্থা সৃষ্টি হতো না। সরকার ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের জবাবদিহি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বিরোধী দলের যে দায়িত্ব রয়েছে, তা এ দেশে কখনো আন্তরিকভাবে অনুভব করা হয়েছে বলে মনে হয় না।
গ্লোবাল ইন্টেগ্রিটির সমীক্ষা প্রতিবেদনের এই পর্যবেক্ষণ সঠিক যে আমরা আইন প্রণয়নে যত পারঙ্গম, আইন কার্যকর করার ক্ষেত্রে ততটাই ব্যর্থ। এই ব্যর্থতা সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ব্যর্থতারই একটি অংশ। রাজনৈতিক নেতাদের আন্তরিক অঙ্গীকার ছাড়া এই ব্যর্থতা দূর হওয়ার নয়। প্রধানত, দ্বিদলীয় একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থায় অধিকারসচেতন ও পরিশ্রমী একটি জাতির পক্ষে সার্বিক সুশাসন প্রতিষ্ঠার যে সুযোগ ও সম্ভাবনা আমাদের সামনে রয়েছে, তার সদ্ব্যবহারের দায়িত্ব মূলত রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক দলগুলোর।
No comments