সংসদে জিয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী by ড. মাহবুব উল্লাহ্
২০ জানুয়ারি ২০১০ জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ছিল প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্ব। চলতি অধিবেশনে এটিই ছিল প্রথম প্রশ্নোত্তর পর্ব। সংসদে প্রতি বুধবার প্রধানমন্ত্রী সম্পূরকসহ ১০টি প্রশ্নের জবাব দেন।
প্রধানমন্ত্রী সরকারি দলের জয়নাল আবেদিনের এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘জিয়া কর্নেল তাহের, ব্রিগেডিয়ার হুদা, খালেদ মোশাররফের মতো মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করিয়েছেন। আজ যদি বলি, জিয়ার কবরের পাশে সেই মুক্তিযোদ্ধাদের কবর স্থানান্তর করতে, তাহলে তাদের পরিবারবর্গ রাজি হবেন কিনা জানি না।’ওয়ারেসাত হোসেনের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমানের লাশের কথা বলে একটি বাক্স আনা হয়েছিল; কিন্তু আদৌ ওতে জিয়ার লাশ ছিল কিনা, জানি না। ওই লাশ কেউ দেখতে পারেননি। এমনকি তার স্ত্রী-সন্তানেরাও ওই লাশ দেখেননি। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান গুলিতে মারা গিয়েছিলেন। তাই তার লাশ দেখানো যেত। ওই লাশ দেখা যায়নি বলেই মানুষের মনে সন্দেহ রয়েছে। সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে জিয়াউর রহমান প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর উপর্যুক্ত বক্তব্যটি দৈনিক প্রথম আলো থেকে উদ্ধৃত। দৈনিক আমার দেশ একই বিষয়ে কিছুটা ভিন্নভাবে রিপোর্ট করেছে। দৈনিক আমার দেশ প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছে, ‘জিয়াউর রহমানের লাশ তো কেউ দেখতে পায়নি! সে গুলি খেয়ে মারা গেছে। এই লাশ দেখা তো অস্বাভাবিক কিছু ছিল না; কিন্তু সে লাশ এমনকি তার স্ত্রী এবং ছেলেরাও দেখতে পারেনি। তখন থেকেই মানুষের মনে সন্দেহ—ওখানে কোনো লাশই নেই। যেখানে লাশই নেই সেখানে অন্য যাদের (ফোর্স কমান্ডার) সেখানে কবর দেয়া হয়েছে সেখানে তাদের লাশ আছে, তারা সেখানে শান্তিতে আছেন। তাদেরকে এ রকম একটি জায়গায় তুলে আনার যৌক্তিকতা আছে কি? জিয়ার লাশ (চট্টগ্রাম) যেখান থেকে তুলে আনা হয়েছে সেখানেও কেউ বলতে পারেনি যে, ওখানে জিয়াউর রহমানকে কবর দেয়া হয়েছিল। কেউ প্রমাণও দেখাতে পারেনি।’ দৈনিক আমার দেশ উদ্ধৃতি চিহ্ন ব্যতিরেকে আরও রিপোর্ট করেছে : জয়নাল আবেদিনের অপর প্রশ্নের জবাবে জিয়াউর রহমানকে সেক্টর কমান্ডারসহ একাধিক মুক্তিযোদ্ধার হত্যাকারী উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়ার কারণেই এ দেশে রাজাকাররা রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছে। কর্নেল তাহের, ব্রিগেডিয়ার হুদা, খালেদ মোশাররফকে জিয়াউর রহমান হত্যা করেছেন। তার কবরের পাশে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যরা তাদের স্বজনদের কবর আনতে দেবে কিনা তাতে সন্দেহ রয়েছে।
একটি স্পর্শকাতর প্রশ্ন নিয়ে দুটি দৈনিকের রিপোর্টের ভাষায় কিছুটা ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। আমার দেশ-এর রিপোর্টে আমরা দেখছি জিয়ার নামের পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী সে সর্বনাম পদটি ব্যবহার করেছেন, সেটি হলো ‘সে’। বাংলা ভাষায় সম্মানার্থে ‘তিনি’ এবং সাধারণ অর্থে ‘সে’ ব্যবহার করা হয়। ইংরেজি ভাষায় এ ধরনের কোনো পার্থক্য নেই। কেন নেই তার ব্যাখ্যা সামাজিক ভাষাতত্ত্ববিদরা বলতে পারবেন। বাংলাভাষার উপর জাতপাতে ব্যবধানভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থার ফলে এই পার্থক্য কোনো সুদূর অতীতে হয়েছিল বলে অনুমান করা যায়। এখনও এর জের চলছে। সর্বনাম প্রয়োগে পার্থক্যের কারণ যাই হোক না কেন। মানি ব্যক্তির ক্ষেত্রে ‘সে’ বলা হলে আমরা শিষ্টাচার বহির্ভূত বলে মনে করি। যারা রাজনীতি করেন, তাদেরকে অনেক বেশি দায়িত্বের সঙ্গে এই শিষ্টাচার মেনে চলতে হয়। অন্যথায় সাধারণ মানুষ এ রকম শিষ্টাচারবহির্ভূত উক্তি যারা করেন তাদের উপর ‘বীতঃশ্রদ্ধ’ হয়ে পড়ে। ১৯৯১’র নির্বাচনের প্রাক্কালে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা জিয়াউর রহমান সম্পর্কে ‘অখ্যাত মেজর’ বলে ইঙ্গিত করেছিলেন। এর ফল হয়েছিল হিতে বিপরীত। শুধু এই আপত্তিকর উক্তির জন্য ভোটের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তাকে ও তার দলকে বেশ খেসারত দিতে হয়েছিল। জনসমক্ষে না হলেও আওয়ামী লীগের প্রজ্ঞাবান নেতৃবৃন্দ এমন কি দলের সাধারণ কর্মীরাও অনেকে এটিকে একটি ব্যয়বহুল ভুল বলে স্বীকার করেন।
সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেত্রী প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতিকে যা অবহিত করেন তাকে একটি গণতান্ত্রিক দেশের নাগরিকরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তাত্পর্যমণ্ডিত বলে মনে করে। যেই তথ্যের বাস্তব ভিত্তি নেই তেমন তথ্য সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জবানিতে পরিবেশিত না হওয়াই শ্রেয়। যতদূর জানি বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর পাঠাভ্যাস আছে। তিনি লেখালেখিও করেন। আমার বিশ্বাস তিনি অ্যান্থনি ম্যাসকারেনহাসের ‘বাংলাদেশ : লিগেসি অব ব্লাড’ পড়ে দেখেছেন। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই সাংবাদিক ’৭১’র ২৫ মার্চ তত্কালে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর গণহত্যাযজ্ঞ সম্পর্কে রিপোর্ট করে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। উপর্যুক্ত গ্রন্থে ম্যাসকারেনহাস জানিয়েছেন, জিয়ার লাশ চট্টগ্রামের বাঙ্গুনিয়ার প্রথম কবর থেকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে ওই লাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে এবং গুলিতে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া অংশ পুনর্গঠন করেই জানাজার উপযুক্ত করে ঢাকায় পাঠানো হয়। তাকে কফিনসহই কবর দেয়া হয়। জিয়াউর রহমানের লাশ তো কেউ দেখতে পায়নি—এই বক্তব্য সঠিক নয়। প্রতিবছর জিয়ার শাহাদাত্ দিবস উপলক্ষে টেলিভিশনের বিভিন্ন চ্যানেলে রাঙ্গুনিয়ার প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাত্কারও প্রচার করা হয়। প্রশ্ন হলো কেন এই বিভ্রান্তির সৃষ্টি। প্রতিদ্বন্দ্বী দল বিএনপির ব্যাপারে, এমনকি জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে তার হাজারও সমালোচনা থাকতে পারে; কিন্তু তার কবরস্থ হওয়া সম্পর্কে অহেতুক প্রশ্ন উত্থাপন কতটা যুক্তিসঙ্গত এবং শ্রেয়বোধসম্পন্ন সে ব্যাপারে যে কোনো নাগরিকই প্রশ্ন তুলতে পারে।
এবারের নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম অধিবেশনে যোগদান করার পর থেকে বিরোধীদল সংসদ বর্জন করে চলেছে। বিরোধীদলের অনেক অভিযোগ। তারা সংসদে যোগদানের পরিবেশ সৃষ্টির শর্ত হিসেবে দশ দফা দাবিও উত্থাপন করেছে। ভারত সফর শেষে দেশে ফিরে আসার পর সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলকে সংসদে এসে কথা বলার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আশ্বস্ত করতে চেয়েছেন যে, বিরোধীদলীয় নেত্রী যতক্ষণ ইচ্ছা কথা বলতে পারবেন, মাইক বন্ধ করা হবে না। বিভিন্ন সংবাদপত্রের রিপোর্ট থেকে অনুমান করা যাচ্ছে, বিরোধীদল প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে সম্পাদিত চুক্তি, সম্মত স্মারকপত্র এবং যৌথ ঘোষণার উপর তাদের নিজস্ব বক্তব্য সংসদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে সংসদের বর্তমান অধিবেশনেই উপস্থাপন করতে আগ্রহী। ঠিক এ রকম একটি সময়ে সংসদে জিয়াউর রহমান সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর কিছু বক্রোক্তি সংসদকে কার্যকর করার জন্য কতটুকু সহায়ক তা আর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের অপেক্ষা রাখে না। বিরোধীদলীয় নেত্রী অনেকবারই অনুযোগের সুরে বলেছেন, সংসদে যে ধরনের অশালীন কথাবার্তা হয় তাতে সংসদ অধিবেশনে বসার রুচি থাকে না। গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেত্রী জিয়াউর রহমান সম্পর্কে যা যা বলেছেন তা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং হতাশাব্যঞ্জক।
জিয়াউর রহমান বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল তাহের, ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ এবং ব্রিগেডিয়ার হুদাকে হত্যা করিয়েছেন এমন তথ্য প্রধানমন্ত্রী কোথায় পেলেন? প্রকৃত ঘটনা হলো ৬ ও ৭ নভেম্বর ১৯৭৫’র মধ্যরাতে সেনাবাহিনীর জওয়ানদের অভ্যুত্থানের সূচনা হয়। অভ্যুত্থানের পর জওয়ানরা জিয়াউর রহমানকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে। খালেদ মোশাররফ এবং তার অভ্যুত্থানের সহযোগী ব্রিগেডিয়ার হুদা প্রাণ রক্ষার জন্য পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। সিপাহীদের কোনো একটি গ্রুপ তাদের ধরে ফেলে এবং হত্যা করে। এতে জিয়ার সামান্যতম সায় ছিল—এটি অন্তত খালেদ মোশাররফের ঘনিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধারা মনে করেন না। এদেরই একজন ছিলেন সাপ্তাহিক বিচিত্রার সম্পাদক মরহুম শাহাদাত্ চৌধুরী। সেই সময় তার মুখেই শুনেছি, জিয়া এদের প্রাণ রক্ষার জন্য ওয়্যারলেস মেসেজ পাঠিয়ে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সিপাহীদের আক্রোশ থেকে একটি অভ্যুত্থান পরিস্থিতিতে তাদের রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। পরে মুক্তিযোদ্ধারাই সসম্মানে জিয়ার সম্মতিতে তাদের লাশ সমাহিত করেন। অন্যদিকে কর্নেল তাহেরের ঘটনাটি ভিন্ন। ৭ নভেম্বরের অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ২৪ নভেম্বর কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে আরেকটি পাল্টা অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টা করা হলে কর্নেল তাহের ও তার সহযোগীরা গ্রেফতার হন এবং কোর্ট মার্শালে তাদের বিচার হয় এবং দণ্ড দেয়া হয়। কর্নেল তাহেরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। কর্নেল তাহের নির্ভীক চিত্তে ফাঁসির মঞ্চের দিকে এগিয়ে যান। এতে তার মুক্তিযোদ্ধা ও সৈনিকসুলভ বীরত্বের অভিব্যক্তি ছিল, সন্দেহ নেই। কিন্তু বিদ্যমান পরিস্থিতির সঠিক মূল্যায়ন করতে না পারাই তাকে ট্র্যাজিক পরিণতির দিকে ঠেলে দিয়েছিল। ৭ নভেম্বরের আগেও তিনি তত্কালীন মুজিব সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলার কাজে ব্রতী ছিলেন। এটাই হলো ইতিহাস। ইতিহাস তার নিজস্ব গতিতেই তার মূল্যায়ন করবে। সেই সময় কী ঘটেছিল সেই সম্পর্কে অনুপুঙ্খ তথ্যভিত্তিক বিবরণের জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। তার আগে শুধু বিদ্বেষবশবর্তী হয়ে কোনো রায় ঘোষণা সমীচীন নয় বলেই অধিকাংশ চিন্তাশীল মানুষ একমত হবেন। জিয়ার প্রতি দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিরাগ হওয়ার অনেক কারণ আছে। সবচেয়ে বড় কারণ হলো জিয়ার সৃষ্ট দল বিএনপি বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের একচেটিয়াত্ব ভেঙে দিয়ে কার্যকর দ্বি-দলীয় অবস্থার সৃষ্টি করেছে। ভোট প্রাপ্তির বিচারে চরম দুঃসময়েও বিএনপিকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার অবকাশ নেই। বরং এটি করলে গণতন্ত্রেরই ক্ষতি হবে এবং দল হিসেবে আওয়ামী লীগেরও ক্ষতি হবে। গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে সহিষ্ণুতার বিকল্প কিছু নেই। এই সত্য উভয় দলের জন্যই প্রযোজ্য। ১৯৯৬-তে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর জিয়ার মাজারে যাওয়ার বেইলি ব্রিজটি রাতের অন্ধকারে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এ কাজটির তীব্র সমালোচনা তখন হয়েছিল। একপর্যায়ে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলো অন্যত্র যোগাযোগের জন্য এ রকম একটি ব্রিজের প্রয়োজন থাকায় তা সাময়িকভাবে তুলে নেয়া হয়েছে। সময়মত সেটা যথাস্থানে পুনঃস্থাপন করা হবে; কিন্তু সে কাজটি আর করা হয়নি। এ রকম কাজ এবং এ ধরনের আরও অপরিণামদর্শী কাজের জন্যই ২০০১’র নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হয়। সুতরাং যে দলই ক্ষমতাসীন থাকুক না কেন তাকে অবশ্যই ভবিষ্যত্ পরিণতির কথা ভাবতে হবে।
বাংলাদেশীরা এক দুর্ভাগা জাতি। তা নাহলে এই জাতির মহান পুরুষরা কেন এত বিতর্কিত হবেন বা বিতর্কিত করা হবে। পৃথিবীর যেসব জাতি তাদের জাতীয় নেতা ও বীরদের বিতর্কিত করেনি তারা জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ হতে পেরেছে, শক্তিশালী ও সম্পদশালী হয়েছে। মার্কিনিরা জর্জ ওয়াশিংটন ও জেফারসনকে বিতর্কিত করেনি। ভারতীয়রা গান্ধী ও নেহরুকে অহেতুক বিতর্কিত করেনি। ভারতীয় বুদ্ধিজীবী ও মিডিয়া গান্ধী ও নেহরুর জীবনাদর্শ নিয়ে প্রদীপ্ত আলোচনা করে বটে। তবে কোনো অশ্রদ্ধাপূর্ণ উক্তি করে না। গনচীনে মাও সেতুং ও চৌ এন লাই কিংবা দেং শিয়াও পিং সে দেশের মানুষের কাছে শ্রদ্ধাভাজন নেতা। চীন বিপ্লবের নেতা মাও সেতুংয়ের কিছু সমালোচনা হয়েছে বটে; কিন্তু তা সত্ত্বেও চীনা নেতৃবৃন্দ মনে করে তিনি ৭০ শতাংশ সঠিক ছিলেন এবং ৩০ শতাংশ ভুল করেছেন। চীনা মানদণ্ডে এ রকম মূল্যায়ন ভালো নেতাদের ক্ষেত্রেই করা হয়। আজও বেইজিংয়ের তিয়েন আনমেন স্কয়ারে মাও’র বিশাল প্রতিকৃতি শোভা পায়। সেখানে চীনের তাবত্ জাতীয় অনুষ্ঠানাদি হয়। এভাবে আমরা যদি আমাদের জাতিরাষ্ট্র গঠনে যারা অবদান রেখেছেন তাদের প্রাপ্য মর্যাদার আসনে স্থান না দেই তাহলে আমরাই ক্ষতিগ্রস্ত হব, তারা নন।
লেখক : অধ্যাপক, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
No comments