মহাসমাবেশে নির্বাচনী হাওয়া by প্রণব বল

১৪ দলের মহাসমাবেশে ছিল নির্বাচনী হাওয়া। বুধবার সকাল ১০টা থেকে সমাবেশ প্রাঙ্গণে দলীয় নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকা নিয়ে উপস্থিত হতে থাকেন। ব্যানার, ফেস্টুনেও ফুটে ওঠে নির্বাচনী প্রতিচ্ছবি। দুপুর পর্যন্ত সমাবেশস্থল ফাঁকা থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে।


জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি স্থানীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবেও নেতারা এই সমাবেশকে উপলক্ষ করেছেন। মহাসমাবেশ উপলক্ষে নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে সকাল থেকেই নেতা-কর্মীরা উপস্থিত হতে থাকেন মিছিল নিয়ে। মিছিলের মুখ্য স্লোগান ছিল ‘শেখ মুজিব, শেখ হাসিনা ও নৌকা’। কাগজ ও কাঠের তৈরি নৌকা প্রতীক মিছিলে ঠাঁই করে নেয়। এ ছাড়া ব্যানার, ফেস্টুনেও ছিল নৌকার প্রতীক।
দলীয় নির্বাচন ছাড়াও স্থানীয় মধ্যম সারির নেতারা এই মহাসমাবেশকে আগামী দিনে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছেন। গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিজয়ী ও পরাজিত বিভিন্ন ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিজ নিজ উদ্যোগে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হতে দেখা গেছে। মিছিলে কার চেয়ে কে বেশি লোক নিতে পারেন ওই প্রতিযোগিতাও ছিল তাঁদের মধ্যে।
সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে গত নির্বাচনে পরাজিত নিলু নাগকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দেখা যায় কর্মীদের নিয়ে মিছিল-সহকারে সমাবেশস্থলে ঢুকতে। একইভাবে গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থী জহরলাল হাজারী, বিজয় কুমার চৌধুরী, রেখা আলম, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনীসহ মধ্যম সারির নেতারা মিছিল-সহকারে সমাবেশস্থলে যান।
এ ছাড়া পটিয়া, আনোয়ারা, রাউজানসহ বিভিন্ন উপজেলার মধ্যম সারির নেতাদের লক্ষ্যও ছিল আগামী দিনের উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন।
তবে নগর ও জেলা আওয়ামী লীগের প্রথম সারির নেতারা ছাপিয়ে যান সবকিছু। তাঁরা নিজের ও শেখ হাসিনার ছবিসংবলিত টি-শার্ট ও টুপি পরিয়ে কর্মীদের সমাবেশে নিয়ে আসেন। বিতরণ করা হয় খাবার প্যাকেট ও পানি। সমাবেশস্থল ও নগরের বিভিন্ন স্থানে টানানো এসব নেতার নামখচিত ব্যানার, ফেস্টুনেও ভবিষ্যৎ নির্বাচন প্রস্তুতির ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
এদিকে, নেতাদের মধ্যে ছিল মঞ্চের সামনের জায়গা দখলের প্রতিযোগিতাও। সকাল ১০টার দিকে আফছারুল আমীনের একটি মিছিল সমাবেশস্থলে ঢুকে মঞ্চের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়। পর পর সমাবেশস্থলে আসে আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু, আ জ ম নাছির উদ্দিন, মহিউদ্দিন চৌধুরী-সমর্থিত খণ্ড খণ্ড মিছিল। সবার হাতে নৌকার প্রতীক ছাড়াও ঢোল-কাঁসাসহ নানা বাদ্যযন্ত্র দেখা গেছে। গ্রাম থেকে ট্রাক ও বাসে করে নেতা-কর্মীরা এসে যোগ দেন সমাবেশে।
সমাবেশস্থলে সকাল থেকেই শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীদের পাশাপাশি জনপ্রিয় শিল্পী মমতাজ, ফকির সাহাবুদ্দিন সংগীত পরিবেশন করেন। প্রসঙ্গত, বিএনপির সমাবেশে বেলা ১১টার দিকে মাঠে জনসমাগম হলেও গতকাল বেলা ১২টা পর্যন্ত মাঠ পুরোপুরি পূর্ণ হয়নি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নগর আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, ‘তীব্র গরমের কারণে লোকজন আশপাশে অবস্থান নিচ্ছে। দুইটার মধ্যেই মানুষের ঢল নামবে।’
গত সপ্তাহে সিলেটের সমাবেশের মতো দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনাও পলোগ্রাউন্ড ময়দানে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের লক্ষ্য তুলে ধরেন।

No comments

Powered by Blogger.