এখনো উত্তরণের পথ খুঁজছে এসইসি
শেয়ারবাজারের চলমান সংকট ও তা থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজতে আবারও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠক করল সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)। বৈঠক শেষে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার মতো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের কথা জানাতে পারেনি এসইসি।
বৈঠক শেষে এসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সাইফুর রহমান জানিয়েছেন, আলোচনার মাধ্যমে সংকট বা সমস্যা সমাধানের উপায় খোঁজা হচ্ছে। বাজারের চলমান সংকটের জন্য কী কী সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে আর তা সমাধানের পদক্ষেপ নিয়ে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজকের (গতকাল) আলোচনার মাধ্যমে তিনটি প্রধান সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলো হলো—গুজব, আস্থা ও তারল্যসংকট। তিনি বলেন, ‘বাজারের বর্তমান অবস্থা যেমন একদিনে তৈরি হয়নি, তেমনি একদিনেই এ অবস্থার উত্তরণ সম্ভব নয়।’
এদিকে এসইসির এই বৈঠককে ঘিরে গত দুই দিনে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে মূল্যসূচকের বড় ধরনের উত্থান-পতন ঘটেছে। সোমবার বৈঠকের খবরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূল্যসূচক ১০৩ পয়েন্ট বেড়েছিল। আর গতকাল বৈঠক শেষের এক ঘণ্টার দরপতনে ডিএসইর সাধারণ সূচক কমেছে ১৩২ পয়েন্টেরও বেশি। অর্থাৎ বৈঠকের খবরে সূচকের যতটা উত্থান ঘটেছিল, বৈঠক শেষে তার চেয়ে বেশি পতন ঘটেছে।
এর আগে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বাজারের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করে এসইসি। তাতে উপস্থিত সবাই নিজ নিজ অবস্থানে থেকে তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
জানা যায়, বৈঠকে তালিকাভুক্ত কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের ন্যূনতম শেয়ার ধারণের বিষয়ে আলোচনা হয়। এ বিষয়ে এসইসি তাদের নিজস্ব অবস্থান উপস্থিত সবার সামনে তুলে ধরে বলে, কোনো অবস্থাতেই এই নির্দেশনা পরিবর্তন করা হবে না। এমনকি ন্যূনতম শেয়ার ধারণের জন্য যে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, তারও কোনো পরিবর্তন ঘটবে না।
পাশাপাশি আগামী ১ মার্চ থেকে দুই স্টক এক্সচেঞ্জে শুধু লেনদেনযোগ্য শেয়ারের ভিত্তিতে নতুন মূল্যসূচক চালুর বিষয়ে আলোচনা হয়। এ ক্ষেত্রে দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্যও এসইসির পক্ষ থেকে বলা হয়।
বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ফায়েকুজ্জামান বলেন, ১৯৯৬ সালে ডিএসইর সূচক ৩৬০০ পয়েন্ট থেকে কমে ৪০০ পয়েন্টে নেমেছিল। এবার অন্তত সে ধরনের পরিস্থিতি ঠেকানো গেছে। বর্তমানে শেয়ারের দর অনেক নিচে নেমে এসেছে।
ডিএসইর সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, গুজব ছড়িয়ে কেউ যাতে বাজারকে প্রভাবিত করতে না পারে এবং কোম্পানিগুলোর সম্প্রতি প্রকাশিত আর্থিক বিবরণীর প্রতি এসইসিকে বিশেষভাবে নজর রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সভাপতি আল মারুফ খান বলেন, তারল্যসংকট শেয়ারবাজারে সমস্যা তৈরি করছে।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মুহাম্মদ এ হাফিজ বলেন, ‘আমরা বলেছি বাজার নিয়ে সরকারি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কোনো মন্তব্য করতে চাইলে তা যেন এসইসির সঙ্গে আলোচনা করে করা হয়।’ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) সভাপতি মো. নুরুল আমিন বলেন, সব ব্যাংকই শেয়ার কেনা অব্যাহত রেখেছে।
No comments