গণমাধ্যমের ওপর উদ্যত খড়গঃ গণতন্ত্রের জন্য হুমকি
প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহীর বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ সম্পর্কে সংবাদ প্রকাশ করায় সম্প্রতি দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ওপর সরকার সর্বশক্তি দিয়ে হুমকি, হামলা ও মামলার ঘটনা ঘটাচ্ছে। এ ঘটনা বাংলাদেশের রাষ্ট্রযন্ত্র ও গণমাধ্যমের ইতিহাসে নতুন ‘কালো অধ্যায়’-এর সৃষ্টি করেছে। একজন সংবাদকর্মী হিসেবে বিষয়টি জেনে সুদূর ফ্রান্সে বসে এর প্রতিবাদ জানাতে বাধ্য হলাম।
মনে পড়ছে ওয়ান-ইলেভেনের সেই সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গণমাধ্যমের ওপর সরকারি খড়গের ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা। ওই সময় সরকারের নেতিবাচক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশ করলে পরের দিন ক্যান্টনমেন্টে ডাক পড়ত। ডিজিএফআইর কালো তালিকায় নাম উঠত। টিভি টকশোতে কারা কারা আমন্ত্রণ পাবে, তার নির্দেশনা আসত ক্যান্টনমেন্ট থেকে। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়েও দুঃসাহসী সাংবাদিক ও কলামিস্টরা আপসহীন থেকে গণতন্ত্র আনয়নে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে। যেভাবেই হোক নতুন একটি গণতান্ত্রিক সরকার এসেছে।
এরপর গণমাধ্যমে সুস্থ পরিবেশ ফিরে আসার প্রত্যাশাই করেছিল সবাই। কিন্তু গত ১৭ ডিসেম্বর দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় ‘জয় ও তৌফিক-ই-এলাহীর বিরুদ্ধে ৩৫ কোটি টাকা ঘুষের অভিযোগ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশের পর পত্রিকাটির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে প্রকাশ্যে জনসভায় এমপি-মন্ত্রীদের হুমকি, ১৯ ডিসেম্বর সংশ্লিষ্ট রিপোর্টার এম আব্দুল্লাহর ওপর হামলা এবং সারা দেশে পত্রিকাটির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতাদের ২০টি মামলা করার ঘটনা পুরো গণমাধ্যমকে আক্রান্ত করেছে। চায়ের দোকান, ক্যাম্পাসের আড্ডা, টেলিভিশনের টকশো, জনসভা, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসেও এখন আলোচিত হচ্ছে গণমাধ্যমের ওপর এ আঘাতের ঘটনা। ১৯৭৫ সালে গণতন্ত্র হত্যার দৃষ্টান্তের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কাও করছেন কেউ কেউ। সুদূর ফ্রান্সে বাংলাদেশীদের আড্ডায় এখন শঙ্কার সঙ্গে আলোচিত হচ্ছে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত্ নিয়ে। কেননা গণমাধ্যম যখনই হুমকির মুখোমুখি হয়েছে, গণতন্ত্র তখনই বিপন্ন হয়েছে। তাই প্রবাস থেকে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন—গণমাধ্যমের ওপর চলমান খড়গাঘাত বন্ধ করতে আপনি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করুন। ১৯৭৫, ১৯৮২ সালেও গণতন্ত্র বিপন্ন হয়েছিল, যা দেশের সবার জন্য নেতিবাচক ফল বয়ে এনেছিল। এখনও গণতন্ত্র বিপন্ন হলে একজন রাজনীতিক হিসেবে আপনি ও আপনার দলও ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
এম ওয়াহিদুজ্জামান, সাংবাদিক, ফ্রান্স প্রবাসী
এরপর গণমাধ্যমে সুস্থ পরিবেশ ফিরে আসার প্রত্যাশাই করেছিল সবাই। কিন্তু গত ১৭ ডিসেম্বর দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় ‘জয় ও তৌফিক-ই-এলাহীর বিরুদ্ধে ৩৫ কোটি টাকা ঘুষের অভিযোগ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশের পর পত্রিকাটির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে প্রকাশ্যে জনসভায় এমপি-মন্ত্রীদের হুমকি, ১৯ ডিসেম্বর সংশ্লিষ্ট রিপোর্টার এম আব্দুল্লাহর ওপর হামলা এবং সারা দেশে পত্রিকাটির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতাদের ২০টি মামলা করার ঘটনা পুরো গণমাধ্যমকে আক্রান্ত করেছে। চায়ের দোকান, ক্যাম্পাসের আড্ডা, টেলিভিশনের টকশো, জনসভা, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসেও এখন আলোচিত হচ্ছে গণমাধ্যমের ওপর এ আঘাতের ঘটনা। ১৯৭৫ সালে গণতন্ত্র হত্যার দৃষ্টান্তের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কাও করছেন কেউ কেউ। সুদূর ফ্রান্সে বাংলাদেশীদের আড্ডায় এখন শঙ্কার সঙ্গে আলোচিত হচ্ছে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত্ নিয়ে। কেননা গণমাধ্যম যখনই হুমকির মুখোমুখি হয়েছে, গণতন্ত্র তখনই বিপন্ন হয়েছে। তাই প্রবাস থেকে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন—গণমাধ্যমের ওপর চলমান খড়গাঘাত বন্ধ করতে আপনি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করুন। ১৯৭৫, ১৯৮২ সালেও গণতন্ত্র বিপন্ন হয়েছিল, যা দেশের সবার জন্য নেতিবাচক ফল বয়ে এনেছিল। এখনও গণতন্ত্র বিপন্ন হলে একজন রাজনীতিক হিসেবে আপনি ও আপনার দলও ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
এম ওয়াহিদুজ্জামান, সাংবাদিক, ফ্রান্স প্রবাসী
No comments