খেলাপি ঋণ বাড়ছে-ব্যাংক ব্যবস্থাপনাকে উন্নত করতে হবে
বাংলাদেশ ব্যাংকের বারবার তাগাদা সত্ত্বেও ব্যাংকগুলোয় বড় বড় খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমছে না। দেশের শীর্ষ ২০ ঋণখেলাপির কাছে মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে তা আরো বেড়েছে। গত জুন মাসে শীর্ষ ২০ ঋণখেলাপির কাছে ব্যাংকগুলোর পাওনা টাকার পরিমাণ ছিল ১৪ হাজার ৬৭০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বর শেষে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৯৩০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। অর্থাৎ খেলাপি ঋণগ্রহীতাদের কাছে ব্যাংকের পাওনা বেড়েছে আরো ২৬০ কোটি টাকারও বেশি।
তবে সুখের বিষয়, এই খেলাপিদের কাছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের পাওনা কিছুটা কমেছে। বেড়েছে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ। গতকাল মঙ্গলবার কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
গত তিন দশকে বাংলাদেশে বেসরকারি ব্যাংকের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। আরো নতুন নতুন ব্যাংক বাজারে আসছে। কিন্তু বেসরকারি ব্যাংকের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যাংকিং খাতে যে দক্ষ জনবল ও পরিচালনা পদ্ধতির উন্নয়ন ঘটানো প্রয়োজন ছিল, তা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় হয়নি। আবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকেরও যে ধরনের তত্ত্বাবধায়ন, নীতিনির্ধারণ, বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণের প্রয়োজন ছিল, তাও আশানুরূপভাবে এগোয়নি। ফলে ব্যাংকিং খাতে কিছু কিছু অব্যবস্থাপনা থেকেই যাচ্ছে। আর তারই সুযোগ নিচ্ছেন খেলাপি ঋণগ্রহীতা ও মন্দ ঋণগ্রহীতারা। প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, মূলত দুটো কারণে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। এক. খেলাপি ঋণগ্রহীতারা আদালতে রিট করে বসে থাকেন। রিটের ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত ব্যাংকগুলো তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না। ব্যাংকগুলোর আইনি লড়াই চালনার মতো সক্ষমতাও তুলনামূলকভাবে কম। দুই. ব্যাংকগুলো থেকে খেলাপি ঋণগ্রহীতারা যে পরিমাণ ঋণ নিয়েছেন সেই তুলনায় তাঁদের বন্ধকি সম্পত্তির পরিমাণ অনেক কম। ফলে ব্যাংকগুলো যদি তাঁদের সম্পত্তি নিলামে বিক্রিও করে, তবু তাদের পাওনা টাকার খুব সামান্যই তারা ফেরত পাবে। সে ক্ষেত্রেও তাদের লোকসান হবে অনেক বড়। শুধু শীর্ষ ২০ ঋণগ্রহীতাই নন, আরো অনেক খেলাপি ঋণগ্রহীতা রয়েছেন। আবার এমনও অনেক ঋণগ্রহীতার খবর অতীতে প্রকাশিত হয়েছে, যাঁরা জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকগুলো থেকে বড় অঙ্কের ঋণ নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান। কিংবা ব্যাংকগুলোয় জাল দলিলের মাধ্যমে নেওয়া ঋণ ব্যাংকগুলো আর আদায় করতে পারে না।
একটি দেশের ব্যাংকব্যবস্থা হচ্ছে সে দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। এখানে গ্রাহকরা যে অর্থ সঞ্চিত রাখবেন, তাই আবার অন্যদের ঋণ হিসেবে দেওয়া হয়। এ পদ্ধতিই বিনিয়োগকারীদের পুঁজির চাহিদা মেটাবে। কিন্তু ব্যাংকব্যবস্থাপনা উন্নত না হলে খেলাপি ঋণগ্রহীতা ও মন্দ ঋণগ্রহীতারা ব্যাংকের অর্থ নিয়ে নেবেন। প্রকৃত উদ্যোক্তারা মূলধন সংগ্রহ করতে পারবে না। দেশের বিনিয়োগ ও শিল্পায়নের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে। তাই কেবল নতুন নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া নয়, ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা উন্নত করার দিকেও সরকারকে যথেষ্ট মনোযোগী হতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারি বাড়ানোর জন্য একে আরো শক্তিশালী করতে হবে। আইনি কাঠামোকে সঠিক ও জোরদার করতে হবে। আদালতে রিট করে বছরের পর বছর যাতে ঋণ আদায়কে ঠেকিয়ে রাখা না যায়, সে জন্য প্রয়োজনে আইনের সংস্কার করতে হবে। মোটকথা, ব্যাংকগুলোকে প্রকৃত অর্থেই অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
গত তিন দশকে বাংলাদেশে বেসরকারি ব্যাংকের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। আরো নতুন নতুন ব্যাংক বাজারে আসছে। কিন্তু বেসরকারি ব্যাংকের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যাংকিং খাতে যে দক্ষ জনবল ও পরিচালনা পদ্ধতির উন্নয়ন ঘটানো প্রয়োজন ছিল, তা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় হয়নি। আবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকেরও যে ধরনের তত্ত্বাবধায়ন, নীতিনির্ধারণ, বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণের প্রয়োজন ছিল, তাও আশানুরূপভাবে এগোয়নি। ফলে ব্যাংকিং খাতে কিছু কিছু অব্যবস্থাপনা থেকেই যাচ্ছে। আর তারই সুযোগ নিচ্ছেন খেলাপি ঋণগ্রহীতা ও মন্দ ঋণগ্রহীতারা। প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, মূলত দুটো কারণে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। এক. খেলাপি ঋণগ্রহীতারা আদালতে রিট করে বসে থাকেন। রিটের ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত ব্যাংকগুলো তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না। ব্যাংকগুলোর আইনি লড়াই চালনার মতো সক্ষমতাও তুলনামূলকভাবে কম। দুই. ব্যাংকগুলো থেকে খেলাপি ঋণগ্রহীতারা যে পরিমাণ ঋণ নিয়েছেন সেই তুলনায় তাঁদের বন্ধকি সম্পত্তির পরিমাণ অনেক কম। ফলে ব্যাংকগুলো যদি তাঁদের সম্পত্তি নিলামে বিক্রিও করে, তবু তাদের পাওনা টাকার খুব সামান্যই তারা ফেরত পাবে। সে ক্ষেত্রেও তাদের লোকসান হবে অনেক বড়। শুধু শীর্ষ ২০ ঋণগ্রহীতাই নন, আরো অনেক খেলাপি ঋণগ্রহীতা রয়েছেন। আবার এমনও অনেক ঋণগ্রহীতার খবর অতীতে প্রকাশিত হয়েছে, যাঁরা জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকগুলো থেকে বড় অঙ্কের ঋণ নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান। কিংবা ব্যাংকগুলোয় জাল দলিলের মাধ্যমে নেওয়া ঋণ ব্যাংকগুলো আর আদায় করতে পারে না।
একটি দেশের ব্যাংকব্যবস্থা হচ্ছে সে দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। এখানে গ্রাহকরা যে অর্থ সঞ্চিত রাখবেন, তাই আবার অন্যদের ঋণ হিসেবে দেওয়া হয়। এ পদ্ধতিই বিনিয়োগকারীদের পুঁজির চাহিদা মেটাবে। কিন্তু ব্যাংকব্যবস্থাপনা উন্নত না হলে খেলাপি ঋণগ্রহীতা ও মন্দ ঋণগ্রহীতারা ব্যাংকের অর্থ নিয়ে নেবেন। প্রকৃত উদ্যোক্তারা মূলধন সংগ্রহ করতে পারবে না। দেশের বিনিয়োগ ও শিল্পায়নের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে। তাই কেবল নতুন নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া নয়, ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা উন্নত করার দিকেও সরকারকে যথেষ্ট মনোযোগী হতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারি বাড়ানোর জন্য একে আরো শক্তিশালী করতে হবে। আইনি কাঠামোকে সঠিক ও জোরদার করতে হবে। আদালতে রিট করে বছরের পর বছর যাতে ঋণ আদায়কে ঠেকিয়ে রাখা না যায়, সে জন্য প্রয়োজনে আইনের সংস্কার করতে হবে। মোটকথা, ব্যাংকগুলোকে প্রকৃত অর্থেই অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
No comments