পবিত্র কোরআনের আলো-আবিসিনিয়ার উদারপ্রাণ খ্রিস্টানরা কোরআন তিলাওয়াত শুনে কেঁদেছিল
৮৩. ওয়া ইযা ছামীঊ মা উনযিলা ইলার্ রাসুলি তারা আ'ইউনাহুম তাফীদ্বু মিনাদ্দাময়ি' মিম্মা আ'রাফূ মিনাল হাক্কি; ইয়াক্বূলূনা রাব্বা-না আ-মান্না ফাক্তুবনা মাআ'শ্ শা-হিদীন। ৮৪. ওয়া মা লানা লা নু'মিনু বিল্লাহি ওয়া মা জাআনা মিনাল হাক্কি ওয়া নাত্বমাউ' আন ইয়ুদখিলানা, রাব্বানা আ-মান্না ফাক্তুবনা মাআ'শ্ শা-হিদীন।
৮৫. ফাআছা-বাহুমুল্লা-হু বিমা ক্বা-লূ জান্না-তিন তাজরি মিন তাহ্তিহাল আনহা-রু খা-লিদীনা ফীহা; ওয়া যা-লিকা জাযা-উল মুহ্ছিনীন।
৮৬. ওয়াল্লাযীনা কাফারূ ওয়া কায্যাবূ বিআয়া-তিনা উলা-য়িকা আসহা-বুল জাহীম।
[সুরা : আল মায়েদা, আয়াত : ৮৩-৮৬]
অনুবাদ
৮৩. রাসুলের ওপর যা নাজিল করা হয়েছে সেই কোরআনের তিলাওয়াত যখন তারা শোনে, তখন আপনি এদের অনেককেই দেখবেন অশ্রুসজল, কারণ তারা সত্যকে উপলব্ধি করতে পেরেছে। তারা আল্লাহর কাছে আত্মনিবেদিত হয়ে বলে, 'হে আমাদের প্রভু, আমরা ইমান এনেছি, তুমি আমাদের সত্যের সাক্ষ্য দাতাদের দলে লিখে নাও।'
৮৪. (তারা বলে) আমরা কেন ইমান আনব না আল্লাহর ওপর এবং যে সত্য আমাদের কাছে এসেছে অর্থাৎ কোরআনের ওপর! আমরা তো প্রত্যাশা করি আমাদের প্রভু আমাদের সৎকর্মশীলদের দলভুক্ত করে নেবেন।
৮৫. অতঃপর তারা যা বলল, সে জন্য আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্ট হয়ে তাদের জন্য এমন এক জান্নাত দান করবেন যার তলদেশ দিয়ে নদী বয়ে গেছে। সেটা হবে তাদের চিরস্থায়ী বাসস্থান, আর এটা নেককার লোকদের সঠিক পরিণাম।
৮৬. অন্যদিকে যারা অবাধ্য হয়েছে এবং আমার আয়াতগুলোকে মিথ্যা বলেছে, এরা সবাই জাহান্নামের বাসিন্দা।
ব্যাখ্যা
এই আয়াতগুলো আগের আয়াতের ধারাবাহিকতায় এসেছে। কয়েকজন মুসলমানের আবিসিনিয়ায় হিজরতের মধ্য দিয়ে ইসলামের দাওয়াত মক্কার বাইরে এবং বিশেষ করে আফ্রিকা মহাদেশে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। রাসুল (সা.)-এর মদিনায় হিজরতের পর একবার আবিসিনিয়ার খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অন্তত ৭০ জনের একটি দল এসে তাঁর দরবারে হাজির হয়। সেখানে যখন তারা কোরআন তিলাওয়াত শুনতে পায়, তখন ভক্তি ও ভালোবাসায় তাদের চোখ অশ্রুসজল হয়ে ওঠে।
তাদের অনেকেই কাঁদতে থাকে। তারা নিজেদের খ্রিস্টান পরিচয় দেওয়া সত্ত্বেও বলতে থাকে, 'রাব্বানা আমান্না' অর্থাৎ 'হে প্রভু, আমরা ইমান এনেছি।' এখানে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কিছুসংখ্যক নিবেদিতপ্রাণ সৎলোকের কথা বলা হয়েছে, সমগ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কথা বলা হয়নি। খ্রিস্টানদের মধ্যেও এরূপ উদারপ্রাণ সৎলোক আছে এবং হয়তো সর্বকালেই থাকবে, এ কথাই হয়তো বোঝানো হয়েছে। এখানে সত্যকে সাম্প্রদায়িকতার ঊধর্ে্ব উঠে দেখার মহৎ নজির বর্ণনা করা হয়েছে। যে মানুষ সত্যকে উপলব্ধি করতে পারে, তারা ইহজাগতিক স্বার্থ বা সাম্প্রদায়িক পরিচয়ের কারণে হীনম্মন্যতায় ভোগে না। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের এমন কিছু উদারমনা লোক প্রসঙ্গের অবতারণা করে এখানে তাদের কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে। তারা বলে, আমরা কেন ইমান আনব না আল্লাহর ওপর এবং যে সত্য আমাদের কাছে এসেছে এর ওপর। সত্য বলতে এখানে কোরআনের শিক্ষাকেই বোঝানো হয়েছে। তারা আরো বলে যে আমরা কেন আশা করব না যে আমাদের প্রভু আমাদের সৎলোকদের দলভুক্ত করবেন না! যারা মনেপ্রাণে এ রকম বলে, তাদের আল্লাহ জান্নাত দেবেন। এটা সৎলোকদের প্রাপ্য। আর যারা অবাধ্য হবে তাদের ঠিকানা জাহান্নাম।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
৮৬. ওয়াল্লাযীনা কাফারূ ওয়া কায্যাবূ বিআয়া-তিনা উলা-য়িকা আসহা-বুল জাহীম।
[সুরা : আল মায়েদা, আয়াত : ৮৩-৮৬]
অনুবাদ
৮৩. রাসুলের ওপর যা নাজিল করা হয়েছে সেই কোরআনের তিলাওয়াত যখন তারা শোনে, তখন আপনি এদের অনেককেই দেখবেন অশ্রুসজল, কারণ তারা সত্যকে উপলব্ধি করতে পেরেছে। তারা আল্লাহর কাছে আত্মনিবেদিত হয়ে বলে, 'হে আমাদের প্রভু, আমরা ইমান এনেছি, তুমি আমাদের সত্যের সাক্ষ্য দাতাদের দলে লিখে নাও।'
৮৪. (তারা বলে) আমরা কেন ইমান আনব না আল্লাহর ওপর এবং যে সত্য আমাদের কাছে এসেছে অর্থাৎ কোরআনের ওপর! আমরা তো প্রত্যাশা করি আমাদের প্রভু আমাদের সৎকর্মশীলদের দলভুক্ত করে নেবেন।
৮৫. অতঃপর তারা যা বলল, সে জন্য আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্ট হয়ে তাদের জন্য এমন এক জান্নাত দান করবেন যার তলদেশ দিয়ে নদী বয়ে গেছে। সেটা হবে তাদের চিরস্থায়ী বাসস্থান, আর এটা নেককার লোকদের সঠিক পরিণাম।
৮৬. অন্যদিকে যারা অবাধ্য হয়েছে এবং আমার আয়াতগুলোকে মিথ্যা বলেছে, এরা সবাই জাহান্নামের বাসিন্দা।
ব্যাখ্যা
এই আয়াতগুলো আগের আয়াতের ধারাবাহিকতায় এসেছে। কয়েকজন মুসলমানের আবিসিনিয়ায় হিজরতের মধ্য দিয়ে ইসলামের দাওয়াত মক্কার বাইরে এবং বিশেষ করে আফ্রিকা মহাদেশে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। রাসুল (সা.)-এর মদিনায় হিজরতের পর একবার আবিসিনিয়ার খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অন্তত ৭০ জনের একটি দল এসে তাঁর দরবারে হাজির হয়। সেখানে যখন তারা কোরআন তিলাওয়াত শুনতে পায়, তখন ভক্তি ও ভালোবাসায় তাদের চোখ অশ্রুসজল হয়ে ওঠে।
তাদের অনেকেই কাঁদতে থাকে। তারা নিজেদের খ্রিস্টান পরিচয় দেওয়া সত্ত্বেও বলতে থাকে, 'রাব্বানা আমান্না' অর্থাৎ 'হে প্রভু, আমরা ইমান এনেছি।' এখানে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কিছুসংখ্যক নিবেদিতপ্রাণ সৎলোকের কথা বলা হয়েছে, সমগ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কথা বলা হয়নি। খ্রিস্টানদের মধ্যেও এরূপ উদারপ্রাণ সৎলোক আছে এবং হয়তো সর্বকালেই থাকবে, এ কথাই হয়তো বোঝানো হয়েছে। এখানে সত্যকে সাম্প্রদায়িকতার ঊধর্ে্ব উঠে দেখার মহৎ নজির বর্ণনা করা হয়েছে। যে মানুষ সত্যকে উপলব্ধি করতে পারে, তারা ইহজাগতিক স্বার্থ বা সাম্প্রদায়িক পরিচয়ের কারণে হীনম্মন্যতায় ভোগে না। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের এমন কিছু উদারমনা লোক প্রসঙ্গের অবতারণা করে এখানে তাদের কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে। তারা বলে, আমরা কেন ইমান আনব না আল্লাহর ওপর এবং যে সত্য আমাদের কাছে এসেছে এর ওপর। সত্য বলতে এখানে কোরআনের শিক্ষাকেই বোঝানো হয়েছে। তারা আরো বলে যে আমরা কেন আশা করব না যে আমাদের প্রভু আমাদের সৎলোকদের দলভুক্ত করবেন না! যারা মনেপ্রাণে এ রকম বলে, তাদের আল্লাহ জান্নাত দেবেন। এটা সৎলোকদের প্রাপ্য। আর যারা অবাধ্য হবে তাদের ঠিকানা জাহান্নাম।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments