অসময়ের স্বপ্ন-জুকোতি পার্ক থেকে রাজু ভাস্কর্য! by আরিফুজ্জামান তুহিন
গত রবিবার রাত সাড়ে ৯টায় যখন গুনে গুনে ১০৯ আতশবাজির শব্দে শাহবাগ, রমনা এলাকার মানুষ ভয়ে দৌড়াদৌড়ি করছে, বারডেম হাসপাতালের হৃদরোগের রোগীরা জীবনটা আছে কি নেই সন্দেহে পড়েছে ঠিক তখন শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অভুক্ত সোলেমান বলেন, 'হুদাই টাহাগুলানের শ্রাদ্ধ। আমারে দিলি ভাত খাতি পারতাম।' এর ঠিক পর পরই রাতের আকাশ উজ্জ্বল করে ফানুস উড়ে গেল।
ঢাকা ক্লাবের ১০০ বছর পূর্তিতে ছিল এসব জমকালো আয়োজন। এই আয়োজনের মাত্র ছয় ঘণ্টা আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে ভোগবাদবিরোধী, পুঁজিবাদবিরোধী, ধনীদের উগ্র ধনতান্ত্রিক শোষণবিরোধী একদল মানুষ তুমুল বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভ-সমাবেশ থেকে তারা বলেছে, ধনতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় ৯৯ শতাংশ মানুষের ভাগ্যে কিছুই জোটে না। মালিকশ্রেণী পুঁজিপতিরা সমাজের ৯৯ শতাংশ মানুষের জীবনকে ভয়াবহ এক পরিস্থিতির মধ্যে ঠেলে দেয়। সারা পৃথিবীতে এক অভূত আন্দোলনের ঢেউ আছড়ে পড়ছে। আর তা হলো 'আমরাই ৯৯ শতাংশ'। যার শুরুটা হয়েছিল গত ১৭ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিটের কাছে জুকোতি পার্কে পুঁজিবাদবিরোধীদের বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে। ওই আন্দোলন এখন পৃথিবীর দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। তৈরি করেছে পুঁজির মুনাফার বাইরে মানুষের প্রয়োজনের একটি যৌথ গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের। আমেরিকা, লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, অস্ট্রেলিয়া হয়ে এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়ায় পুঁজিবাদবিরোধী মানুষের যে সম্মিলন, সেই তরঙ্গে এবার বাংলাদেশের জনপদের মানুষ যুক্ত হচ্ছে। সবার মুখেই একটা মাত্র স্লোগান, তা হলো_'আমরা সমাজের ৯৯ শতাংশ'। সারা পৃথিবীর মানুষ আজ যন্ত্রে পরিণত হয়েছে। যন্ত্রটির নাম মুনাফা তৈরির মেশিন। আর মেশিনটির মালিক করপোরেট পুঁজির কেউ একজন বা অনেকে। সারা পৃথিবীর মানুষ এবার খোদ যন্ত্রের মালিককে উপড়ে ফেলে দেওয়ার জন্য রাস্তায় নেমেছে। কোথাও শান্তিপূর্ণ আবার কোথাও বা আগুন, ভাঙচুরের মধ্য দিয়ে। প্রতিরোধ তা শান্তিপূর্ণ অথবা সশস্ত্র যে পন্থায়ই হোক, প্রাথমিক কাজটি হলো মাঠে নামা, যন্ত্রের মালিককে অস্বীকার করা। আর যদি এ কাজটি আপনি করতে পারেন, তাহলে ধরে নিতে হবে আপনার মগজে এখনো প্রতিরোধের আগুন খেলে। আপনি চিন্তায় এখনো সশস্ত্র। আপনি নিশর্ত আত্মসমর্পণ হতে রাজি নন।
মুমূর্ষু পুঁজিবাদ চাই তরঙ্গের মতো আছড়েপড়া
পুঁজিবাদ ধসে পড়েছে অনেক আগেই। পুঁজিবাদের অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক দুর্বলতা তার পক্ষে কোনোভাবেই কাটানো সম্ভব নয়। এ কারণে সে মাঝেমধ্যে নানা ধরনের ফন্দি-ফিকির করে টিকে থাকার চেষ্টা করে। তবে পুঁজিবাদ এমনিতেই নিজে নিজে শেষ হয়ে যাবে না। এর জন্য প্রয়োজন চূড়ান্ত ধাক্কা। খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সেই লড়াই শুরু হয়ে গেছে জুকোতি পার্কে। তারা নিজেদের পরিচয় দিয়ে বলেছে, 'উই আর দ্য নাইনটি নাইন পারসেন্ট'। আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব শ্রমিক সংগঠন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রগুলোকে নানা ধরনের দান-খয়রাত করে নিজে বেশ একটা জমিদারি ভাব নেয়। কিন্তু সেই যুক্তরাষ্ট্র হলো পৃথিবীর সব থেকে বড় খয়রাতি রাষ্ট্র। যাদের খয়রাতি দেনার পরিমাণ চৌদ্দ ট্রিলিয়ন (১৪,০০০,০০০,০০০,০০০) মার্কিন ডলারের মতো। যদি এ পরিমাণ অর্থ শোধ করতে হয় তাহলে দেশটির পুরোটাই বিক্রি করে দিতে হবে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি চৌদ্দ ট্রিলিয়ন ডলার। এর বিপরীতে আফগানিস্তান ও ইরাকে দেশটির যুদ্ধ ব্যয় চার ট্রিলিয়নেরও বেশি। আর সদ্য লিবিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র প্রতিদিন দুই মিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে। যুদ্ধ ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে দেশের মধ্যে নাগরিক পরিষেবা কমেছে। আর এ জন্যই ব্যয় সংকোচন নীতি নিয়েছে সরকার।
জুকোতি পার্ক থেকে বাংলাদেশ
যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হওয়া আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্বে। এটা যেন পুঁজিবাদের গর্ভে এক নতুন বিশ্বের স্বপ্নের শুরু। মার্কিন জনগণ আজ ফুঁসে উঠেছে। সেখানে যে পার্কে তারা অবস্থান করছে সেই জুকোতি পার্কের নাম বদলে আন্দোলনকারীরা এর নাম রেখেছে 'লিবারেশন পার্ক'।
বাংলাদেশের সব খাতেই শাসকশ্রেণী তীব্র শ্রেণীবৈষম্য তৈরি করেছে। শিক্ষা-স্বাস্থ্যের মতো সেবা খাত ব্যবসায়ীদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে যার অর্থ আছে সে ছাড়া শিক্ষা নিতে পারছে না। চলমান শ্রেণীবৈষম্য আরো প্রকট হচ্ছে। শিক্ষা খাতকে মুনাফার অংশ হিসেবে ধরায় এ খাতে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবিসহ করপোরেট মালিকরা বিনিয়োগ করছে। একই অবস্থা স্বাস্থ্য খাতে। একের পর এক বেসরকারি হাসপাতাল হচ্ছে, যার সদর দরজায় যাওয়ার মতো ক্ষমতা এখানকার নিম্নবিত্ত তো দূরের কথা মধ্যবিত্তেরও নেই। এর বাইরে শ্রমিকের কথা বললে, তার পেট চালানোর মতো উপকরণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্র। তবে মালিকশ্রেণী শ্রমিকের ঘাম নিংড়ে বিত্তের প্রাসাদ গড়ছে। নূ্যনতম মজুরির জন্য গণতান্ত্রিক অধিকার আন্দোলন করার, রাস্তায় নামলেই রাষ্ট্রের ভাড়াটিয়া বাহিনী পুলিশ-র্যাবের নির্মম নিপীড়ন হত্যা গুম এখানকার নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। কৃষি খাত বিশ্বব্যাংকসহ দাতা প্রতিষ্ঠানের ঋণভিত্তিক কথিত উন্নয়নের আওতায় আনায় কৃষকের কাছ থেকে ফসলের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ফলে যে কৃষক উৎপাদন করে, তার ঘরেই হানা দেয় মন্বন্তর।
অন্যদিকে দেশের তেল-গ্যাস খনিজসম্পদ বিদেশি করপোরেট দস্যুদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে অবাধ লুটপাটের জন্য।
আর অন্য পেশাজীবীদের কেউই ভালো নেই। মানুষ পরিণত হয়েছে মালিকের মুনাফার যন্ত্রে। সমাজের ৯৯ শতাংশ মানুষ ভালো না থাকলেও দেশের আইন-কানুন অর্থনৈতিক সুবিধা সবই দখল করে রেখেছে মাত্র ১ শতাংশ মানুষ।
আমরা ৯৯ শতাংশ মানুষ এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে আজ সারা পৃথিবীর মতোই মাঠে নামছি। বিকল্প পৃথিবীর খোঁজে আজ আমরা রাজপথে প্রান্তরে।
আরব বিশ্বের বসন্ত বাতাস সারা বিশ্বকে যেমন নাড়া দিয়েছে তেমনি পুঁজিবাদবিরোধী পৃথিবীব্যাপী এই আন্দোলন পুঁজিবাদের তাত্তি্বক কাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে। আমরা সমাজের ৯৯ শতাংশ।
দখল করো, আবর্জনার স্তূপে নিক্ষেপ করো। ইতিহাস বানিয়ে দাও।
ঢাকায় পুঁজিবাদবিরোধী যে আন্দোলনের সূচনা হলো, সেখানে যেসব বিষয় উঠে এসেছে এর মধ্যে_১. বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে উচ্চশিক্ষাকে বেসরকারীকরণ করা চলবে না। ঔপনিবেশিক শিক্ষা কাঠামো পরিবর্তন করে দেশের শিক্ষা খাতে ৯৯ শতাংশ জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। ২. করপোরেট সাম্রাজ্যবাদকে বিদায় করে জাতীয় সম্পদের ওপর জনগণের ৯৯ শতাংশ মালিকানা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। ৩. শেয়ারবাজারকে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ জোগানের মাধ্যম হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। ৪. গার্মেন্ট শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় মজুরি ও সম্মানের মালিকানা দিতে হবে এমন ১০টি দাবি।
আন্দোলনকারীদের ব্যানারের পরিচয় 'আমরাই ৯৯ শতাংশ'। তারা আরো ঘোষণা দিয়েছে, এখন থেকে প্রতি শনিবারে এ আন্দোলন হবে। একটা বিষয় পরিষ্কার থাকা দরকার যে ৯০-এ সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর যাঁরা বলেছিলেন পুঁজিবাদই শেষ কথা, তাঁদের চোখে এখন কেবলই শর্ষে ফুল। বরং মাত্র দুই দশকের মাথায় পৃথিবীব্যাপী পুঁজিবাদের প্রতি মানুষের এই অনাস্থায় আবারও বিকল্প ন্যায়ভিত্তিক সমাজের প্রয়োজনীয়তা সামনে চলে এসেছে।
মুমূর্ষু পুঁজিবাদ চাই তরঙ্গের মতো আছড়েপড়া
পুঁজিবাদ ধসে পড়েছে অনেক আগেই। পুঁজিবাদের অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক দুর্বলতা তার পক্ষে কোনোভাবেই কাটানো সম্ভব নয়। এ কারণে সে মাঝেমধ্যে নানা ধরনের ফন্দি-ফিকির করে টিকে থাকার চেষ্টা করে। তবে পুঁজিবাদ এমনিতেই নিজে নিজে শেষ হয়ে যাবে না। এর জন্য প্রয়োজন চূড়ান্ত ধাক্কা। খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সেই লড়াই শুরু হয়ে গেছে জুকোতি পার্কে। তারা নিজেদের পরিচয় দিয়ে বলেছে, 'উই আর দ্য নাইনটি নাইন পারসেন্ট'। আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব শ্রমিক সংগঠন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রগুলোকে নানা ধরনের দান-খয়রাত করে নিজে বেশ একটা জমিদারি ভাব নেয়। কিন্তু সেই যুক্তরাষ্ট্র হলো পৃথিবীর সব থেকে বড় খয়রাতি রাষ্ট্র। যাদের খয়রাতি দেনার পরিমাণ চৌদ্দ ট্রিলিয়ন (১৪,০০০,০০০,০০০,০০০) মার্কিন ডলারের মতো। যদি এ পরিমাণ অর্থ শোধ করতে হয় তাহলে দেশটির পুরোটাই বিক্রি করে দিতে হবে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি চৌদ্দ ট্রিলিয়ন ডলার। এর বিপরীতে আফগানিস্তান ও ইরাকে দেশটির যুদ্ধ ব্যয় চার ট্রিলিয়নেরও বেশি। আর সদ্য লিবিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র প্রতিদিন দুই মিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে। যুদ্ধ ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে দেশের মধ্যে নাগরিক পরিষেবা কমেছে। আর এ জন্যই ব্যয় সংকোচন নীতি নিয়েছে সরকার।
জুকোতি পার্ক থেকে বাংলাদেশ
যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হওয়া আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্বে। এটা যেন পুঁজিবাদের গর্ভে এক নতুন বিশ্বের স্বপ্নের শুরু। মার্কিন জনগণ আজ ফুঁসে উঠেছে। সেখানে যে পার্কে তারা অবস্থান করছে সেই জুকোতি পার্কের নাম বদলে আন্দোলনকারীরা এর নাম রেখেছে 'লিবারেশন পার্ক'।
বাংলাদেশের সব খাতেই শাসকশ্রেণী তীব্র শ্রেণীবৈষম্য তৈরি করেছে। শিক্ষা-স্বাস্থ্যের মতো সেবা খাত ব্যবসায়ীদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে যার অর্থ আছে সে ছাড়া শিক্ষা নিতে পারছে না। চলমান শ্রেণীবৈষম্য আরো প্রকট হচ্ছে। শিক্ষা খাতকে মুনাফার অংশ হিসেবে ধরায় এ খাতে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবিসহ করপোরেট মালিকরা বিনিয়োগ করছে। একই অবস্থা স্বাস্থ্য খাতে। একের পর এক বেসরকারি হাসপাতাল হচ্ছে, যার সদর দরজায় যাওয়ার মতো ক্ষমতা এখানকার নিম্নবিত্ত তো দূরের কথা মধ্যবিত্তেরও নেই। এর বাইরে শ্রমিকের কথা বললে, তার পেট চালানোর মতো উপকরণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্র। তবে মালিকশ্রেণী শ্রমিকের ঘাম নিংড়ে বিত্তের প্রাসাদ গড়ছে। নূ্যনতম মজুরির জন্য গণতান্ত্রিক অধিকার আন্দোলন করার, রাস্তায় নামলেই রাষ্ট্রের ভাড়াটিয়া বাহিনী পুলিশ-র্যাবের নির্মম নিপীড়ন হত্যা গুম এখানকার নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। কৃষি খাত বিশ্বব্যাংকসহ দাতা প্রতিষ্ঠানের ঋণভিত্তিক কথিত উন্নয়নের আওতায় আনায় কৃষকের কাছ থেকে ফসলের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ফলে যে কৃষক উৎপাদন করে, তার ঘরেই হানা দেয় মন্বন্তর।
অন্যদিকে দেশের তেল-গ্যাস খনিজসম্পদ বিদেশি করপোরেট দস্যুদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে অবাধ লুটপাটের জন্য।
আর অন্য পেশাজীবীদের কেউই ভালো নেই। মানুষ পরিণত হয়েছে মালিকের মুনাফার যন্ত্রে। সমাজের ৯৯ শতাংশ মানুষ ভালো না থাকলেও দেশের আইন-কানুন অর্থনৈতিক সুবিধা সবই দখল করে রেখেছে মাত্র ১ শতাংশ মানুষ।
আমরা ৯৯ শতাংশ মানুষ এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে আজ সারা পৃথিবীর মতোই মাঠে নামছি। বিকল্প পৃথিবীর খোঁজে আজ আমরা রাজপথে প্রান্তরে।
আরব বিশ্বের বসন্ত বাতাস সারা বিশ্বকে যেমন নাড়া দিয়েছে তেমনি পুঁজিবাদবিরোধী পৃথিবীব্যাপী এই আন্দোলন পুঁজিবাদের তাত্তি্বক কাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে। আমরা সমাজের ৯৯ শতাংশ।
দখল করো, আবর্জনার স্তূপে নিক্ষেপ করো। ইতিহাস বানিয়ে দাও।
ঢাকায় পুঁজিবাদবিরোধী যে আন্দোলনের সূচনা হলো, সেখানে যেসব বিষয় উঠে এসেছে এর মধ্যে_১. বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে উচ্চশিক্ষাকে বেসরকারীকরণ করা চলবে না। ঔপনিবেশিক শিক্ষা কাঠামো পরিবর্তন করে দেশের শিক্ষা খাতে ৯৯ শতাংশ জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। ২. করপোরেট সাম্রাজ্যবাদকে বিদায় করে জাতীয় সম্পদের ওপর জনগণের ৯৯ শতাংশ মালিকানা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। ৩. শেয়ারবাজারকে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ জোগানের মাধ্যম হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। ৪. গার্মেন্ট শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় মজুরি ও সম্মানের মালিকানা দিতে হবে এমন ১০টি দাবি।
আন্দোলনকারীদের ব্যানারের পরিচয় 'আমরাই ৯৯ শতাংশ'। তারা আরো ঘোষণা দিয়েছে, এখন থেকে প্রতি শনিবারে এ আন্দোলন হবে। একটা বিষয় পরিষ্কার থাকা দরকার যে ৯০-এ সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর যাঁরা বলেছিলেন পুঁজিবাদই শেষ কথা, তাঁদের চোখে এখন কেবলই শর্ষে ফুল। বরং মাত্র দুই দশকের মাথায় পৃথিবীব্যাপী পুঁজিবাদের প্রতি মানুষের এই অনাস্থায় আবারও বিকল্প ন্যায়ভিত্তিক সমাজের প্রয়োজনীয়তা সামনে চলে এসেছে।
No comments