নানা আনুষ্ঠানিকতায় বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালিতঃ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ হচ্ছে না
বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় যে ভীতু-কাপুরুষরা নিরস্ত্র মানুষ হত্যা করে তাদের দিয়ে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা সম্ভব নয় বলে মত ব্যক্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার উপলক্ষটি নিয়ে দেশজুড়ে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন আলোচনা সভার আয়োজন করে।
প্রতিটি অনুষ্ঠানেই ক্রসফায়ারের নামে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধের দাবি প্রাধান্য পায়। সামাজিক উচ্ছৃঙ্খলতা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে দুর্বৃত্তায়নের প্রতিফলন হিসেবে ক্রসফায়ারের উল্লেখ করে অমঙ্গলের মাঝে মঙ্গল খোঁজার এ ধরনের ভয়ঙ্কর চর্চা বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়। একটি আলোচনা সভায় উপস্থিত র্যাবের হাতে ক্রসফায়ারের শিকার এক হতভাগ্য যুবকের নিকটাত্মীয়রা জানান, নামের ভুলে তাদের প্রিয়জনকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলা হলেও এর প্রতিকারে কিছুই করা হচ্ছে না। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে অনুষ্ঠানের সভাপতি বলেছেন, আমাদের রাষ্ট্র ভুল করলেও স্বীকার করে না। রাষ্ট্রের যেখানে সন্ত্রাস দমন করার কথা, সেখানে রাষ্ট্র নিজেই সন্ত্রাসী ভূমিকায় নেমেছে। কথাটি যে মিথ্যা নয় তার প্রমাণ মিলেছে একটি মানবাধিকার সংস্থার প্রকাশিত রিপোর্টে।
অধিকার-এর তথ্য অনুযায়ী এ বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে ১৪১ জন নিহত হয়েছেন বিচারবহির্ভূতভাবে। ক্রসফায়ারের নামে মারা যাওয়া এদের মধ্যে র্যাব ৩৯ জন, পুলিশ ৬৮ জন, র্যাব-পুলিশ যৌথভাবে ২৫ জন, সেনাবাহিনী ৩ জন, জেলপুলিশ ১ জন, ফরেস্ট গার্ড ১ জন, আনসার ২ জন এবং বিডিআর-কোস্টগার্ড সদস্যদের হাতে ২ জনের মৃত্যুর উল্লেখ করা হয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে প্রতি মাসে নিয়মিতভাবে মৃত্যুর ঘটনা সত্ত্বেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ উচ্চপদস্থ সবাই একবাক্যে ক্রসফায়ারে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অথচ সরকারের প্রতিমন্ত্রী এবং সংসদ সদস্যরাও মানবাধিকার দিবসের আলোচনায় যে কোনো মূল্যে বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধের দাবিতে সুর মেলাতে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় হোক বাধ্য হয়েছেন। আর আইনমন্ত্রী মানবাধিকার নিশ্চিত করতে সরকারের তত্পর থাকার কথা উল্লেখ করেছেন তার ভাষণে। অন্যদিকে মানবাধিকার দিবসেই সদর দফতরের মাসিক আলোচনা সভায় র্যাব মহাপরিচালক ক্রসফায়ারের ঘটনায় যাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন না ঘটে সে ব্যাপারে নিজেদের সদা সচেতন থাকার কথা জানিয়েছেন। অদ্ভুত বটে! দায়িত্বশীল ও উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গের এ ধরনের কথাবার্তা থেকে অনুমান করা যায়, সরকার নিজেদের সৃষ্ট স্ববিরোধিতার পাঁকে কীভাবে আটকে গেছে। সন্ত্রাস দমনের নামে গঠিত এলিটফোর্স র্যাবের ভেতরের অবস্থা থেকে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হয়ে যায়। মহাক্ষমতাধর এ বাহিনীর তত্পরতার বিরুদ্ধে উত্থাপিত বিভিন্ন অভিযোগের তদন্তে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় ৭০০ সদস্যের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হয়েছে, যার মধ্যে গুরুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন সাড়ে ৩০০ র্যাব সদস্য। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সরকারি বাহিনীগুলো থেকে বাছাই করা চৌকস সদস্যদের নিয়ে গঠিত র্যাবের ভেতরেই যখন এমন অবস্থা, তখন অন্যান্য সংস্থার বর্তমান অবস্থা অনুমান করা মোটেই কঠিন নয়। এর ফলেই দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা কমে আসার পরিবর্তে বেড়ে চলেছে। মানবাধিকার দিবসের বিভিন্ন সভায় বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ এমনই ধারণা দেয়। জাতিসংঘ তথ্য কেন্দ্রও দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ না করে পারেনি।
দেশব্যাপী মানবাধিকার দিবসের অনুষ্ঠানের খবরাখবর থেকে বোঝা যায়, মানবাধিকার সংগঠনের সংখ্যা ও তত্পরতা দুটোই বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পাশাপাশি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বৃদ্ধির আলামতও অস্বীকার করা যাবে না। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর তুলনামূলক নীরবতা চোখে পড়ার মতো। রাজনৈতিক দল যদি মনবাধিকার রক্ষায় সোচ্চার ও উদ্যোগী হয়ে না ওঠে তবে সরকার বা সরকারি বাহিনীগুলোর মানবাধিকার রক্ষায় বিদ্যমান দায়িত্বহীনতা দূর হবে, এমন আশা করা দুরাশা মাত্র। বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতাসহ ঘুণে ধরা আমলাতান্ত্রিক রাষ্ট্রযন্ত্র ঢেলে সাজানো এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় সবই হবে অর্থহীন। এটা প্রমাণিত হয় সংবিধানে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়া সত্ত্বেও দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিয়মিত ঘটনায়, যার সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীগুলোই গভীরভাবে জড়িত। মুখের কথায় নয়, বাস্তবে বিদ্যমান অবস্থার পরিবর্তন ছাড়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা যে বাড়তেই থাকবে এটা জোর গলায় বলা যায়।
অধিকার-এর তথ্য অনুযায়ী এ বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে ১৪১ জন নিহত হয়েছেন বিচারবহির্ভূতভাবে। ক্রসফায়ারের নামে মারা যাওয়া এদের মধ্যে র্যাব ৩৯ জন, পুলিশ ৬৮ জন, র্যাব-পুলিশ যৌথভাবে ২৫ জন, সেনাবাহিনী ৩ জন, জেলপুলিশ ১ জন, ফরেস্ট গার্ড ১ জন, আনসার ২ জন এবং বিডিআর-কোস্টগার্ড সদস্যদের হাতে ২ জনের মৃত্যুর উল্লেখ করা হয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে প্রতি মাসে নিয়মিতভাবে মৃত্যুর ঘটনা সত্ত্বেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ উচ্চপদস্থ সবাই একবাক্যে ক্রসফায়ারে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অথচ সরকারের প্রতিমন্ত্রী এবং সংসদ সদস্যরাও মানবাধিকার দিবসের আলোচনায় যে কোনো মূল্যে বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধের দাবিতে সুর মেলাতে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় হোক বাধ্য হয়েছেন। আর আইনমন্ত্রী মানবাধিকার নিশ্চিত করতে সরকারের তত্পর থাকার কথা উল্লেখ করেছেন তার ভাষণে। অন্যদিকে মানবাধিকার দিবসেই সদর দফতরের মাসিক আলোচনা সভায় র্যাব মহাপরিচালক ক্রসফায়ারের ঘটনায় যাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন না ঘটে সে ব্যাপারে নিজেদের সদা সচেতন থাকার কথা জানিয়েছেন। অদ্ভুত বটে! দায়িত্বশীল ও উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গের এ ধরনের কথাবার্তা থেকে অনুমান করা যায়, সরকার নিজেদের সৃষ্ট স্ববিরোধিতার পাঁকে কীভাবে আটকে গেছে। সন্ত্রাস দমনের নামে গঠিত এলিটফোর্স র্যাবের ভেতরের অবস্থা থেকে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হয়ে যায়। মহাক্ষমতাধর এ বাহিনীর তত্পরতার বিরুদ্ধে উত্থাপিত বিভিন্ন অভিযোগের তদন্তে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় ৭০০ সদস্যের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হয়েছে, যার মধ্যে গুরুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন সাড়ে ৩০০ র্যাব সদস্য। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সরকারি বাহিনীগুলো থেকে বাছাই করা চৌকস সদস্যদের নিয়ে গঠিত র্যাবের ভেতরেই যখন এমন অবস্থা, তখন অন্যান্য সংস্থার বর্তমান অবস্থা অনুমান করা মোটেই কঠিন নয়। এর ফলেই দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা কমে আসার পরিবর্তে বেড়ে চলেছে। মানবাধিকার দিবসের বিভিন্ন সভায় বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ এমনই ধারণা দেয়। জাতিসংঘ তথ্য কেন্দ্রও দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ না করে পারেনি।
দেশব্যাপী মানবাধিকার দিবসের অনুষ্ঠানের খবরাখবর থেকে বোঝা যায়, মানবাধিকার সংগঠনের সংখ্যা ও তত্পরতা দুটোই বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পাশাপাশি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বৃদ্ধির আলামতও অস্বীকার করা যাবে না। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর তুলনামূলক নীরবতা চোখে পড়ার মতো। রাজনৈতিক দল যদি মনবাধিকার রক্ষায় সোচ্চার ও উদ্যোগী হয়ে না ওঠে তবে সরকার বা সরকারি বাহিনীগুলোর মানবাধিকার রক্ষায় বিদ্যমান দায়িত্বহীনতা দূর হবে, এমন আশা করা দুরাশা মাত্র। বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতাসহ ঘুণে ধরা আমলাতান্ত্রিক রাষ্ট্রযন্ত্র ঢেলে সাজানো এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় সবই হবে অর্থহীন। এটা প্রমাণিত হয় সংবিধানে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়া সত্ত্বেও দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিয়মিত ঘটনায়, যার সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীগুলোই গভীরভাবে জড়িত। মুখের কথায় নয়, বাস্তবে বিদ্যমান অবস্থার পরিবর্তন ছাড়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা যে বাড়তেই থাকবে এটা জোর গলায় বলা যায়।
No comments