এক গোলেই নায়ক ক্যালিয়ন

ল তো নয়, যেন ছুটে গেল আগুনের গোলা। এক ডিফেন্ডার চোখমুখ বুজে ঠেকানোর চেষ্টা করলেন, আরেকজন চেষ্টা করলেন ব্যাকভলি করে ঠেকাতে, ঝাঁপিয়ে পড়লেন গোলরক্ষকও। সেকেন্ডের ভগ্নাংশ সময়ের মধ্যে এই তিন প্রতিরোধ ব্যর্থ করে দিয়ে বল ঢুকে গেল জালে। বলের মতোই ক্ষিপ্রগতিতে ছুটলেন হোসে মারিয়া ক্যালিয়ন, ক্ষ্যাপাটে ষাঁড়ের মতোই হলো তাঁর উদ্যাপন। ৮৪ মিনিটে তাঁর ওই গোলেই যে ম্যাচটা জিতল রিয়াল মাদ্রিদ!


মাঠের ছবি যা-ই হোক, স্কোরবোর্ড বলছিল, ৭১ মিনিট পর্যন্ত রিয়াল পিছিয়ে ০-১ গোলে। ৩৯ মিনিটে টমার হেমেডের গোলে এগিয়ে যাওয়া মায়োর্কা বাকিটা সময় দাঁতমুখ খিঁচে রক্ষণ সামলে যাচ্ছিল। ১০ জন খেলোয়াড়ই আগলে রাখছিলেন নিজেদের গোলপোস্ট। মনে হচ্ছিল, অঘটন বুঝি ঘটিয়েই ফেলবে মায়োর্কা। আর তা হলে বার্সার সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান আটে নিয়ে যাওয়ার অভিলাষ পূরণ হবে না হোসে মরিনহোর।
কিন্তু অতিরক্ষণাত্মক খেলাটাই কাল হলো মায়োর্কার। রিয়ালের একের পর এক আক্রমণের ঢেউ আর কতক্ষণ সামলানো যায়! দ্বিতীয়ার্ধে কাকা আর গঞ্জালো হিগুয়েইনকে নামানোর পর আক্রমণের ধার বেড়ে গিয়েছিল আরও। অবশেষে একের পর এক চকিত পাস দিয়ে দারুণভাবে সাজানো একটি আক্রমণ থেকে ৭২ মিনিটে সমতা ফেরান হিগুয়েইন। এই মৌসুমে লিগে ১৭ ম্যাচে ১৪ গোল করে প্রথম একাদশে জায়গা পাওয়ার দাবি আরও জোরাল করলেন এই আর্জেন্টাইন।
তবে একাদশে জায়গাটা মনে হয় পাকা করে ফেললেন ক্যালিয়ন। আরেক আর্জেন্টাইন অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়ার বদলে পরশু তাঁকে ডান উইংয়ে খেলিয়েছেন মরিনহো। মায়োর্কা যখন জয় না পেলে ড্র-ই সই নীতি নিয়ে দুই স্ট্রাইকার তুলে দুই ডিফেন্ডার নামিয়ে বক্সের জটলা আরও বাড়াল, সেই সময় ক্যালিয়নের এই আগুনে শটে লক্ষ্যভেদ।
রিয়াল এদিন ঠিক পুরো ছন্দে ছিল না। ভাগ্যও পাশে ছিল না। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর দূরপাল্লার দুর্দান্ত একটি শট ক্রসবারে ধাক্কা লেগে ফিরে এসেছে। সার্জিও রামোসের একটা গোল বাতিলও হয়েছে, যদিও রিপ্লেতে বোঝা গেছে সিদ্ধান্তটি ছিল ভুল। না হলে ৯০ মিনিটজুড়ে এমন কাঁপতে কাঁপতে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে হতো না রিয়ালকে।
ম্যাচের নায়ক কিন্তু ম্যাচ শেষে নায়কোচিত মন্তব্যই করেছেন। ক্যালিয়ন কৃতিত্ব ভাগ করে দিয়েছেন সবার মধ্যে, ‘আসল ব্যাপারটাই হলো দলগত প্রচেষ্টা। এটাই আমাদের শীর্ষে রেখেছে। আমরা ৩ পয়েন্ট পেয়েছি। আমার গোলের চেয়ে এটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’ এএফপি, রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.