শীতে কাঁপছে দুস্থ মানুষঃ সহায়তার হাত বাড়ান
অঘ্রান শেষ না হতেই ঘন কুয়াশা আর হাড় কাঁপানো শীতে কাঁপছে দুস্থ মানুষ। শোনা যাচ্ছে শীত ঋতুর প্রথম মাস পৌষের হিমেল পদধ্বনি। বিশেষত দেশের উত্তরাঞ্চলের সর্বত্র ঘন কুয়াশা মোড়ানো শীতে প্রায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। খোদ রাজধানী ঢাকাতেও কুয়াশার চাদর ভেদ করে সূর্য মুখ দেখাতে পারছে না।
খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ শুরু হয়েছে গত কয়েক দিন ধরে। জরা-ব্যাধির দুর্ভোগ তো বটেই, শীতের তীব্রতায় চরাঞ্চলসহ উত্তর জনপদে মারা গেছেন কয়েকজন। নদীতীরবর্তী এলাকায় অনেক জায়গায় অঝোরে ঝরছে বৃষ্টির মতো ঘন কুয়াশা। দিনমান সূর্যের আলো চোখে পড়ছে না। শীতবস্ত্রের অভাব, গৃহহীন কিংবা ভাঙা ঘরদুয়ারে যারা বাস করেন সেসব হতদরিদ্র মানুষের ভোগান্তির কোনো কূল-কিনারা নেই। এদিকে কর্মহীন ও ভাঙনকবলিত অসংখ্য পরিবার দিন কাটাচ্ছে অনাহার-অর্ধাহারে। গতকাল পর্যন্ত সরকারিভাবে শীতবস্ত্র ও অন্যান্য সাহায্যসামগ্রী বিতরণের উল্লেখযোগ্য কোনো খবর পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা যে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
শীতের ঘন কুয়াশার আরেক দুর্ভোগ হচ্ছে হাইওয়েতে চলাচলকারী যানবাহনগুলোকে দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। ধীরগতিতে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চলাচল করছে ট্রেন। ঢাকার কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া এক্সপ্রেস ১২ ডিসেম্বর লালমনিরহাটে পৌঁছেছে দেড় ঘণ্টা দেরি করে। কুয়াশার কারণে ঝুঁকি নিয়ে চলছে ফেরি। এর মধ্যে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটে দীর্ঘ সময় ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায় অফিস-আদালত, ব্যাংক বীমা ও বাজারে লোকজনের উপস্থিতি কমেছে। রাস্তাঘাট হয়ে পড়েছে জনশূন্য।
সবচেয়ে দুঃসংবাদ হচ্ছে, ইতোমধ্যে শীতের তীব্রতায় উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় মারা গেছেন কয়েকজন শীতার্ত মানুষ। গত ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, কুড়িগ্রামের চিলমারীতে এক বৃদ্ধা ও ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় ছয়জন শীতজনিত কারণে মারা গেছেন। এদিকে টানা কয়েকদিনের শীতে ঠাণ্ডাজনিত রোগ-বালাই জ্বর-সর্দি, নিউমোনিয়া, আমাশয়, অ্যাজমাসহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বাড়ছে। এর মধ্যে শত শত রোগী ভর্তি হয়েছে হাসপাতালে। যারা সে সুযোগ নিতে পারেনি তারা ক্রমেই কাহিল হয়ে পড়ছে শীত ও রোগের যৌথ আক্রমণে। ওষুধপথ্য দূরের কথা, একবেলা অন্নসংস্থান করতে পারছে না অসংখ্য মানুষ। জানা গেছে, তিস্তা নদীতে মাছ ধরে এবং পাথর-বালু তুলে যারা জীবিকা নির্বাহ করেন তারা পড়েছেন বেশি বিপাকে। অন্যদিকে শীতকালীন সবজি আবাদ ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। শ্রমিকরা কাজে যেতে পারছেন না, রোজগার বন্ধ।
শীতাক্রান্ত অঞ্চলের অসহায়, দুস্থ, ছিন্নমূল, কর্মহীন মানুষজনের প্রথম দাবি শীতবস্ত্র এবং অসুখের ওষুধ। উল্লেখ্য, এটি কোনো নতুন খবর নয়। প্রতি বছর শীত মৌসুমে বিশেষত উত্তরাঞ্চলে কুয়াশা ও শীতে মৃত্যুসহ নানা বিড়ম্বনা পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে অন্তত জেলা প্রশাসনকে শীতের শুরুতেই যথাসম্ভব সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি ছিল। কিন্তু বরাবরের মতো এবারও সেই একই অভিযোগ, সরকারিভাবে শীতবস্ত্রসহ অন্যান্য সাহায্য সামগ্রী প্রত্যন্ত শীতার্ত জনপদে পৌঁছেনি। বেসরকারি সংস্থাগুলোর উদ্যোগও এখন পর্যন্ত অপ্রতুল। স্থানীয় ধনাঢ্য মানুষ, রাজনৈতিক নেতা, গণপ্রতিনিধি এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন যথাসময়ে এগিয়ে গেলে হয়তো মৃত্যু ও রোগব্যাধিসহ অন্যান্য বিড়ম্বনা কম-বেশি হ্রাস করা সম্ভব হতো। তবে এই শীতেই যে পৌষ-মাঘের দু’মাসের শীতের অবসান ঘটবে তা তো নয়। কাজেই বর্তমান পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করা ছাড়াও সরকার তথা স্থানীয় প্রশাসনকে আগাম সতর্কতা নিতে হবে। শীতবস্ত্রসহ ওষুধ ও খাবারের মজুত বাড়িয়ে সেগুলো বিতরণের সুষ্ঠু ব্যবস্থা করতে হবে। সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হবে জেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের। আমাদের প্রত্যাশা—সরকারসহ দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সচ্ছল মানুষ ও অন্যরা যে যার সাধ্যমত শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াবেন। দুস্থ মানুষ তাদের সাহায্য-সহানুভূতির ন্যায্য দাবিদার।
শীতের ঘন কুয়াশার আরেক দুর্ভোগ হচ্ছে হাইওয়েতে চলাচলকারী যানবাহনগুলোকে দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। ধীরগতিতে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চলাচল করছে ট্রেন। ঢাকার কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া এক্সপ্রেস ১২ ডিসেম্বর লালমনিরহাটে পৌঁছেছে দেড় ঘণ্টা দেরি করে। কুয়াশার কারণে ঝুঁকি নিয়ে চলছে ফেরি। এর মধ্যে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটে দীর্ঘ সময় ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায় অফিস-আদালত, ব্যাংক বীমা ও বাজারে লোকজনের উপস্থিতি কমেছে। রাস্তাঘাট হয়ে পড়েছে জনশূন্য।
সবচেয়ে দুঃসংবাদ হচ্ছে, ইতোমধ্যে শীতের তীব্রতায় উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় মারা গেছেন কয়েকজন শীতার্ত মানুষ। গত ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, কুড়িগ্রামের চিলমারীতে এক বৃদ্ধা ও ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় ছয়জন শীতজনিত কারণে মারা গেছেন। এদিকে টানা কয়েকদিনের শীতে ঠাণ্ডাজনিত রোগ-বালাই জ্বর-সর্দি, নিউমোনিয়া, আমাশয়, অ্যাজমাসহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বাড়ছে। এর মধ্যে শত শত রোগী ভর্তি হয়েছে হাসপাতালে। যারা সে সুযোগ নিতে পারেনি তারা ক্রমেই কাহিল হয়ে পড়ছে শীত ও রোগের যৌথ আক্রমণে। ওষুধপথ্য দূরের কথা, একবেলা অন্নসংস্থান করতে পারছে না অসংখ্য মানুষ। জানা গেছে, তিস্তা নদীতে মাছ ধরে এবং পাথর-বালু তুলে যারা জীবিকা নির্বাহ করেন তারা পড়েছেন বেশি বিপাকে। অন্যদিকে শীতকালীন সবজি আবাদ ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। শ্রমিকরা কাজে যেতে পারছেন না, রোজগার বন্ধ।
শীতাক্রান্ত অঞ্চলের অসহায়, দুস্থ, ছিন্নমূল, কর্মহীন মানুষজনের প্রথম দাবি শীতবস্ত্র এবং অসুখের ওষুধ। উল্লেখ্য, এটি কোনো নতুন খবর নয়। প্রতি বছর শীত মৌসুমে বিশেষত উত্তরাঞ্চলে কুয়াশা ও শীতে মৃত্যুসহ নানা বিড়ম্বনা পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে অন্তত জেলা প্রশাসনকে শীতের শুরুতেই যথাসম্ভব সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি ছিল। কিন্তু বরাবরের মতো এবারও সেই একই অভিযোগ, সরকারিভাবে শীতবস্ত্রসহ অন্যান্য সাহায্য সামগ্রী প্রত্যন্ত শীতার্ত জনপদে পৌঁছেনি। বেসরকারি সংস্থাগুলোর উদ্যোগও এখন পর্যন্ত অপ্রতুল। স্থানীয় ধনাঢ্য মানুষ, রাজনৈতিক নেতা, গণপ্রতিনিধি এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন যথাসময়ে এগিয়ে গেলে হয়তো মৃত্যু ও রোগব্যাধিসহ অন্যান্য বিড়ম্বনা কম-বেশি হ্রাস করা সম্ভব হতো। তবে এই শীতেই যে পৌষ-মাঘের দু’মাসের শীতের অবসান ঘটবে তা তো নয়। কাজেই বর্তমান পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করা ছাড়াও সরকার তথা স্থানীয় প্রশাসনকে আগাম সতর্কতা নিতে হবে। শীতবস্ত্রসহ ওষুধ ও খাবারের মজুত বাড়িয়ে সেগুলো বিতরণের সুষ্ঠু ব্যবস্থা করতে হবে। সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হবে জেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের। আমাদের প্রত্যাশা—সরকারসহ দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সচ্ছল মানুষ ও অন্যরা যে যার সাধ্যমত শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াবেন। দুস্থ মানুষ তাদের সাহায্য-সহানুভূতির ন্যায্য দাবিদার।
No comments