সাম্প্রতিক : ক্ষমতার ঘোড়দৌড়ে বিএনপি-সমস্যায় জর্জরিত আওয়ামী লীগ! by শাকিল ফারুক
লিয়াম ফঙ্, গত শুক্রবারের আগের শুক্রবার তিনি ব্রিটেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন। অ্যাডাম ওয়েরিটি নামের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুকে লিয়াম নিজের সরকারি কর্মস্থলে বহুবার প্রবেশের সুযোগ দিয়েছিলেন এবং ওয়েরিটি তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন এমন কিছু প্রাতিষ্ঠানিক বৈঠকে, যেখানে ওয়েরিটির থাকার কথা নয়, তা নিয়েই সংবাদ পরিবেশিত হলো ব্রিটেনের প্রচারমাধ্যমগুলোতে। এ নিয়ে খুব বেশি হৈচৈ না হলেও পদত্যাগপত্রে তিনি দোষ স্বীকার এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।
রূপকথার মতো মনে হলেও বহির্বিশ্বে এমনটা অহরই ঘটে। কিন্তু বাংলাদেশের ৪০ বছরের ইতিহাসে এমন ঘটনা বিরল। ব্যর্থতা, দুর্নীতি, অদূরদর্শিতা, দায়িত্বজ্ঞানহীনতাসহ যাবতীয় অযোগ্যতার সব নিদর্শন ধারণ করেও আমাদের মন্ত্রীরা আঁকড়ে থাকতে পারেন চেয়ার।
হায় সেতু, স্বপ্নের পদ্মা সেতু!
'পদ্মা সেতুর কাজ আটকে নেই'_সরকার পদ্মা সেতু প্রকল্প বিষয়ে এই শিরোনামে প্রেসনোট জারি করেছে। তাতে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ নাকি থেমে নেই, স্থগিত আছে। স্থগিত আর থেমে থাকার মধ্যে পার্থক্য কোথায়, কে জানে! যা হোক, সেতুর কাজ আটকে গেছে বিশ্বব্যাংকের আপত্তির কারণে। বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগে আপত্তি তুলেছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের কাছে নাকি কোনো ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ নেই। অর্থমন্ত্রীর দাবি, বিশ্বব্যাংকও নাকি কোনো অনিয়মের অভিযোগ করেনি তাঁদের কাছে; এবং শিগগিরই তারা অর্থায়নের কাজ শুরু করবে।
এখানে উল্লেখ্য, তাহলে কেন সরকারপক্ষ থেকে নিজ উদ্যোগে হলেও সেতু নির্মাণ করা হবে বলে কথা উঠল? পরিস্থিতি যদি অনুকূলেই থাকত, তাহলে সেতুতে মালয়েশীয় বিনিয়োগের বিষয়টি জানিয়ে কেন আশ্বস্ত করতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী?
আকার-ইঙ্গিতে সরকারের পক্ষ থেকে আবার বোঝানো হচ্ছে, বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া এবং নোবেলজয়ী ডক্টর ইউনূস বিশ্বব্যাংকে পদ্মা সেতু আটকে দেওয়ার লক্ষ্যে ষড়যন্ত্র করছেন। এভাবে হাওয়াই দোষ চাপিয়ে কী লাভ? যদি সরকারের হাতে প্রমাণ থাকে, তাহলে জনগণের সামনে তা তুলে ধরুক। না থাকলে অযথা গুজব ছড়ানো হচ্ছে কেন? রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য? প্রশ্ন অনেক, উত্তর নেই।
ক্ষমতার প্রতি বিএনপির মমতা
নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকে তিন বছর ধরে সরকারের পতন ঘটানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি, লাভ এখনো হয়নি। হয়তো হবেও না। রোডমার্চ সফল হয়েছে বটে, কিন্তু তাতেই যে সরকার পতিত হয়ে যাবে, এমনটা তো মনে হয় না। পদ্মা সেতু প্রকল্প আটকে যাওয়ায় বিএনপির চেয়ারপারসন থেকে শুরু করে দায়িত্বশীল ব্যক্তিরাও যে ধরনের কথা বলছেন, তাতে মনে হচ্ছে, প্রকল্প আটকে যাওয়ায় বিএনপি খুব খুশি। আর বিএনপির এই খুশি দেখে ধন্দ তৈরি হয় দলটির রাজনৈতিক উদ্দেশ্য দেখে। প্রকল্প আটকে গেলে সরকারি দলের বিরুদ্ধে কথা বলার ইস্যু তৈরি হবে, তাতে আনন্দিত হতেই পারে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, কিন্তু তাতে দেশের এবং জনগণের যে কতটা ক্ষতি সাধিত হয়ে যাবে, তা নিয়ে একটুও মাথাব্যথা নেই তাদের।
শক্ত হাতে লাগাম ধরুন
হাইকমান্ডের নির্দেশ উপেক্ষা করে শামীম ওসমান ও সেলিনা হায়াত আইভী_দুজনই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। দলের তিন সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম ওসমানের পক্ষে যখন দলীয় প্রচারণা চালালেন, মাহবুবুল আলম হানিফ তখন বললেন, ওই তিনজন ব্যক্তিগতভাবে সমর্থন জানিয়েছেন। সেই হানিফ নিজেই আবার জানালেন, শামীম ওসমানই আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী। সিদ্ধান্তের এই গরমিলের কারণ কী? আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কাঠামো কি ভেঙে পড়ছে?
সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনির বহু কাণ্ডর্কীর্তি এরই মধ্যে আমাদের সামনে এসেছে। কিছুই হয়নি তাঁর। এবার তিনি যোগাযোগমন্ত্রীর 'দৌড়'বিষয়ক যে গল্প প্রচারমাধ্যমে বলেছেন, তা সরকারি দল আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনা_সবার জন্যই যথেষ্ট বিব্রতকর তো বটেই, অপমানকরও। আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী দলের একজন কনিষ্ঠ নেতার এমন ধৃষ্টতা তো আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দুর্বলতার সন্দেহটা আরো পোক্ত করছে। বিএনপি কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা যদি এমন হতে থাকে, তাহলে বেকায়দায় পড়া ছাড়া গতি নেই তাদের।
দুই টুকরো সিটি করপোরেশন
অবশেষে বিভক্ত হচ্ছে ঢাকা সিটি করপোরেশন। সরকার বলছে, নাগরিকসুবিধা নিশ্চিত করাই এ সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য। বিএনপি স্বাভাবিকভাবেই এর বিরুদ্ধে। প্রায় দেড় কোটি মানুষের বসবাস এই ঢাকা সিটি করপোরেশনভুক্ত ৯২টি ওয়ার্ডে। উত্তর ও দক্ষিণ নামে দুটি ভাগ করে যথাক্রমে ৫৬টি ও ৩৬টি ওয়ার্ড আলাদা করা হবে। কিন্তু তা হলেই যে নাগরিকসুবিধা নিশ্চিত হবে, বিষয়টি এত সহজ ভাবা ঠিক হবে না। কারণ সিটি করপোরেশন একা কিছুই করতে পারে না। অন্য সেবা সংস্থাগুলোর মাধ্যমেই সিটি করপোরেশনকে কাজ করতে হয়। এই সংস্থাগুলোর সঙ্গে সিটি করপোরেশনের সমন্বয়ই পারে নাগরিকসুবিধা নিশ্চিত করতে। বর্তমান মেয়র সাদেক হোসেন খোকা বলেছেন, এসব সংস্থা এবং রাজউকের সঙ্গে সঠিক সমন্বয় প্রয়োজন সিটি করপোরেশনের কাজ সুষ্ঠুভাবে করার জন্য। সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফও এমন পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন। তা বাস্তবায়িত হয়নি। কেবল সিটি করপোরেশন ভাগ করলেই যে সব ঠিক হয়ে যাচ্ছে না, তা সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরাও নিশ্চয় বোঝেন। কিন্তু এ বিষয়ে কেউ কিছু বলেন না।
কেন বলেন না, তা তাঁরাই জানেন। সরকার যদি সত্যিই নাগরিকসুবিধা নিশ্চিত করতে চায়, তাহলে সমন্বয়ের বিষয়টি সুরাহা করা প্রয়োজন সব কিছুর আগে। তা না হলে ভাগাভাগির পরও 'যাহা লাউ, তাহাই কদু' রয়ে যাবে। সরকারের এ বিষয়ে তাই আরো ভাবা উচিত।
হায় সেতু, স্বপ্নের পদ্মা সেতু!
'পদ্মা সেতুর কাজ আটকে নেই'_সরকার পদ্মা সেতু প্রকল্প বিষয়ে এই শিরোনামে প্রেসনোট জারি করেছে। তাতে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ নাকি থেমে নেই, স্থগিত আছে। স্থগিত আর থেমে থাকার মধ্যে পার্থক্য কোথায়, কে জানে! যা হোক, সেতুর কাজ আটকে গেছে বিশ্বব্যাংকের আপত্তির কারণে। বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগে আপত্তি তুলেছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের কাছে নাকি কোনো ধরনের দুর্নীতির অভিযোগ নেই। অর্থমন্ত্রীর দাবি, বিশ্বব্যাংকও নাকি কোনো অনিয়মের অভিযোগ করেনি তাঁদের কাছে; এবং শিগগিরই তারা অর্থায়নের কাজ শুরু করবে।
এখানে উল্লেখ্য, তাহলে কেন সরকারপক্ষ থেকে নিজ উদ্যোগে হলেও সেতু নির্মাণ করা হবে বলে কথা উঠল? পরিস্থিতি যদি অনুকূলেই থাকত, তাহলে সেতুতে মালয়েশীয় বিনিয়োগের বিষয়টি জানিয়ে কেন আশ্বস্ত করতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী?
আকার-ইঙ্গিতে সরকারের পক্ষ থেকে আবার বোঝানো হচ্ছে, বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া এবং নোবেলজয়ী ডক্টর ইউনূস বিশ্বব্যাংকে পদ্মা সেতু আটকে দেওয়ার লক্ষ্যে ষড়যন্ত্র করছেন। এভাবে হাওয়াই দোষ চাপিয়ে কী লাভ? যদি সরকারের হাতে প্রমাণ থাকে, তাহলে জনগণের সামনে তা তুলে ধরুক। না থাকলে অযথা গুজব ছড়ানো হচ্ছে কেন? রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য? প্রশ্ন অনেক, উত্তর নেই।
ক্ষমতার প্রতি বিএনপির মমতা
নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকে তিন বছর ধরে সরকারের পতন ঘটানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি, লাভ এখনো হয়নি। হয়তো হবেও না। রোডমার্চ সফল হয়েছে বটে, কিন্তু তাতেই যে সরকার পতিত হয়ে যাবে, এমনটা তো মনে হয় না। পদ্মা সেতু প্রকল্প আটকে যাওয়ায় বিএনপির চেয়ারপারসন থেকে শুরু করে দায়িত্বশীল ব্যক্তিরাও যে ধরনের কথা বলছেন, তাতে মনে হচ্ছে, প্রকল্প আটকে যাওয়ায় বিএনপি খুব খুশি। আর বিএনপির এই খুশি দেখে ধন্দ তৈরি হয় দলটির রাজনৈতিক উদ্দেশ্য দেখে। প্রকল্প আটকে গেলে সরকারি দলের বিরুদ্ধে কথা বলার ইস্যু তৈরি হবে, তাতে আনন্দিত হতেই পারে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, কিন্তু তাতে দেশের এবং জনগণের যে কতটা ক্ষতি সাধিত হয়ে যাবে, তা নিয়ে একটুও মাথাব্যথা নেই তাদের।
শক্ত হাতে লাগাম ধরুন
হাইকমান্ডের নির্দেশ উপেক্ষা করে শামীম ওসমান ও সেলিনা হায়াত আইভী_দুজনই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। দলের তিন সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম ওসমানের পক্ষে যখন দলীয় প্রচারণা চালালেন, মাহবুবুল আলম হানিফ তখন বললেন, ওই তিনজন ব্যক্তিগতভাবে সমর্থন জানিয়েছেন। সেই হানিফ নিজেই আবার জানালেন, শামীম ওসমানই আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী। সিদ্ধান্তের এই গরমিলের কারণ কী? আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কাঠামো কি ভেঙে পড়ছে?
সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনির বহু কাণ্ডর্কীর্তি এরই মধ্যে আমাদের সামনে এসেছে। কিছুই হয়নি তাঁর। এবার তিনি যোগাযোগমন্ত্রীর 'দৌড়'বিষয়ক যে গল্প প্রচারমাধ্যমে বলেছেন, তা সরকারি দল আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনা_সবার জন্যই যথেষ্ট বিব্রতকর তো বটেই, অপমানকরও। আওয়ামী লীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী দলের একজন কনিষ্ঠ নেতার এমন ধৃষ্টতা তো আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দুর্বলতার সন্দেহটা আরো পোক্ত করছে। বিএনপি কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা যদি এমন হতে থাকে, তাহলে বেকায়দায় পড়া ছাড়া গতি নেই তাদের।
দুই টুকরো সিটি করপোরেশন
অবশেষে বিভক্ত হচ্ছে ঢাকা সিটি করপোরেশন। সরকার বলছে, নাগরিকসুবিধা নিশ্চিত করাই এ সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য। বিএনপি স্বাভাবিকভাবেই এর বিরুদ্ধে। প্রায় দেড় কোটি মানুষের বসবাস এই ঢাকা সিটি করপোরেশনভুক্ত ৯২টি ওয়ার্ডে। উত্তর ও দক্ষিণ নামে দুটি ভাগ করে যথাক্রমে ৫৬টি ও ৩৬টি ওয়ার্ড আলাদা করা হবে। কিন্তু তা হলেই যে নাগরিকসুবিধা নিশ্চিত হবে, বিষয়টি এত সহজ ভাবা ঠিক হবে না। কারণ সিটি করপোরেশন একা কিছুই করতে পারে না। অন্য সেবা সংস্থাগুলোর মাধ্যমেই সিটি করপোরেশনকে কাজ করতে হয়। এই সংস্থাগুলোর সঙ্গে সিটি করপোরেশনের সমন্বয়ই পারে নাগরিকসুবিধা নিশ্চিত করতে। বর্তমান মেয়র সাদেক হোসেন খোকা বলেছেন, এসব সংস্থা এবং রাজউকের সঙ্গে সঠিক সমন্বয় প্রয়োজন সিটি করপোরেশনের কাজ সুষ্ঠুভাবে করার জন্য। সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফও এমন পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন। তা বাস্তবায়িত হয়নি। কেবল সিটি করপোরেশন ভাগ করলেই যে সব ঠিক হয়ে যাচ্ছে না, তা সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরাও নিশ্চয় বোঝেন। কিন্তু এ বিষয়ে কেউ কিছু বলেন না।
কেন বলেন না, তা তাঁরাই জানেন। সরকার যদি সত্যিই নাগরিকসুবিধা নিশ্চিত করতে চায়, তাহলে সমন্বয়ের বিষয়টি সুরাহা করা প্রয়োজন সব কিছুর আগে। তা না হলে ভাগাভাগির পরও 'যাহা লাউ, তাহাই কদু' রয়ে যাবে। সরকারের এ বিষয়ে তাই আরো ভাবা উচিত।
No comments