চরাচর-ভেষজ অরণ্যের গল্প by রাজীব নন্দী
আচ্ছা, কেউ যদি বলে নাভিব্রাহ্মীগাছের পাতার শরবত খেলাম, আহা, অসাধারণ! সর্পগন্ধা গাছের সবুজ পাতা চিবান_তরতাজা হতে কতক্ষণ!, আর লাল টুকটুকে ফলটির আচার খান, কলেরা, ডায়রিয়া, উচ্চ রক্তচাপ দৌড় দেবে শরীর থেকে। কানাইডিঙ্গার আচার? সে তো দারুণ লাগে! কেমন শোনাবে তখন? হ্যাঁ, অবাক শোনালেও শোনাতে পারে। সারা দেশে একসময় এসব বৃক্ষ, লতাগুল্ম নিজেদের সংসার গেড়েছিল ঝোপঝাড়ে।
গরিব-হতদরিদ্র মানুষজনই ছিল তাদের প্রতিবেশী। প্রতিবেশীর সুখ-দুঃখে সাড়া দিয়ে একে অন্যকে টিকিয়ে রাখত ওরা। ভেষজই নিম্নবর্গীয় মানুষের প্রাথমিক আর চূড়ান্ত চিকিৎসা সবখানেই ছিল ভরসা। কারণ ভেষজ উদ্ভিদ ঘর থেকে দুই পা ফেলেই সংগ্রহ করে সারিয়ে ফেলা যেত সরল-জটিল সব রোগ। কিন্তু আজ কোথায় সেই ঝোপঝাড়? কোথায় সেই ঔষধি বনায়ন? চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সের বীজকেন্দ্র ও নার্সারি দেশবাসীকে সুখবর দিচ্ছে। নিবিড় পরিচর্যায় এখানে বেড়ে উঠছে বিপন্নপ্রায় ভেষজ উদ্ভিদ নাভিব্রাহ্মী, জাফরান, সর্পগন্ধা, দাদমর্দন, কুরুচ, পনিয়াল আর কানাইডিঙ্গা। স্বাস্থ্যসচেতন দেশবাসীর জন্য যিনি রীতিমতো বৈদ্যশাস্ত্র খুলে বসেছেন, তিনি ইনস্টিটিউটেরই অধ্যাপক নার্সারি ও বীজকেন্দ্রের পরিচালক ড. কামাল হোসাইন।
সরেজমিনে দেখতে গেলে ড. কামাল হোসাইন শোনালেন তাঁর গল্প। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল হার্বেরিয়াম কিছু ভেষজ উদ্ভিদ বিপন্নপ্রায় ঘোষণার পর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসব গাছ ও লতার কাণ্ড ও বীজ নমুনায়ন সংগ্রহ করা হয়। এরপর পরিকল্পিতভাবে চারাগায়ন এবং শেডে (নির্ধারিত স্থান) নিবিড় পরিচর্যায় এসব উদ্ভিদের নতুন করে জীবন দেওয়া হয়েছে। ইনস্টিটিউটেরই একাডেমিক গবেষণার অংশ হিসেবে এ কাজটি করা হয়েছে বলে জানান তিনি। বিপন্নপ্রায় সাত উদ্ভিদ সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে তিনি জানান, নাভিব্রাহ্মী থানকুনিপাতার মতো দেখতে। তিন বছর আগে নাটোর থেকে এর চারা সংগ্রহ করা হয়। এটি লতাজাতীয় উদ্ভিদ। অঙ্গজ বংশবৃদ্ধির মাধ্যমে এসব গাছের বংশবৃদ্ধি ঘটে। পাতা সবুজ ও গোল। এই পাতার রস হজমশক্তি বৃদ্ধি ও হৃদরোগ প্রতিরোধ করে। জাফরান বেড়ে উঠছে শেডের মাঝখানে। এ গাছের পাতা ও বাকলের রস মূলত দই ও মিষ্টি তৈরিতে ব্যবহৃত রং হিসেবে কাজ করে। গাছের পাতা পানপাতা আকৃতির, রং সবুজ। তিন বছর আগে বগুড়া থেকে এর বীজ সংগ্রহ করা হয়। সর্পগন্ধাগাছের লাল লাল গোটা ও পাতা দুটিই ভেষজ গুণসম্পন্ন। এটি উচ্চ রক্তচাপ, মানসিক ব্যাধি, ডায়রিয়া, কলেরা ইত্যাদি প্রতিরোধী। লম্বায় সর্বোচ্চ চার ফুট পর্যন্ত হয়। দাদমর্দন অ্যাকজিমা, দাদ, চর্মরোগসহ ছত্রাকবিরোধী ভূমিকা পালন করে শরীরে। সর্বোচ্চ সাত ফুট পর্যন্ত লম্বা হয় এ গাছ। এর হলুদ ফুল ও বাকল ব্রংকাইটিস প্রতিরোধী। একইভাবে পুরো শেডে বেড়ে উঠছে কুরুচ, পনিয়াল ও কানাইডিঙ্গা। জীবন বাঁচাতে বিপন্নপ্রায় ভেষজ উদ্ভিদ বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা নিশ্চয় সুখবর। কিন্তু বাংলাদেশের অসংখ্য আদিবাসী, গরিব মানুষ একসময় এসব কবিরাজি ওষুধ সেবন করে বেঁচে থাকলেও বর্তমানে তারাই এসব ভেষজ সুবিধা থেকে সবচেয়ে বঞ্চিত।
রাজীব নন্দী
সরেজমিনে দেখতে গেলে ড. কামাল হোসাইন শোনালেন তাঁর গল্প। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল হার্বেরিয়াম কিছু ভেষজ উদ্ভিদ বিপন্নপ্রায় ঘোষণার পর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসব গাছ ও লতার কাণ্ড ও বীজ নমুনায়ন সংগ্রহ করা হয়। এরপর পরিকল্পিতভাবে চারাগায়ন এবং শেডে (নির্ধারিত স্থান) নিবিড় পরিচর্যায় এসব উদ্ভিদের নতুন করে জীবন দেওয়া হয়েছে। ইনস্টিটিউটেরই একাডেমিক গবেষণার অংশ হিসেবে এ কাজটি করা হয়েছে বলে জানান তিনি। বিপন্নপ্রায় সাত উদ্ভিদ সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে তিনি জানান, নাভিব্রাহ্মী থানকুনিপাতার মতো দেখতে। তিন বছর আগে নাটোর থেকে এর চারা সংগ্রহ করা হয়। এটি লতাজাতীয় উদ্ভিদ। অঙ্গজ বংশবৃদ্ধির মাধ্যমে এসব গাছের বংশবৃদ্ধি ঘটে। পাতা সবুজ ও গোল। এই পাতার রস হজমশক্তি বৃদ্ধি ও হৃদরোগ প্রতিরোধ করে। জাফরান বেড়ে উঠছে শেডের মাঝখানে। এ গাছের পাতা ও বাকলের রস মূলত দই ও মিষ্টি তৈরিতে ব্যবহৃত রং হিসেবে কাজ করে। গাছের পাতা পানপাতা আকৃতির, রং সবুজ। তিন বছর আগে বগুড়া থেকে এর বীজ সংগ্রহ করা হয়। সর্পগন্ধাগাছের লাল লাল গোটা ও পাতা দুটিই ভেষজ গুণসম্পন্ন। এটি উচ্চ রক্তচাপ, মানসিক ব্যাধি, ডায়রিয়া, কলেরা ইত্যাদি প্রতিরোধী। লম্বায় সর্বোচ্চ চার ফুট পর্যন্ত হয়। দাদমর্দন অ্যাকজিমা, দাদ, চর্মরোগসহ ছত্রাকবিরোধী ভূমিকা পালন করে শরীরে। সর্বোচ্চ সাত ফুট পর্যন্ত লম্বা হয় এ গাছ। এর হলুদ ফুল ও বাকল ব্রংকাইটিস প্রতিরোধী। একইভাবে পুরো শেডে বেড়ে উঠছে কুরুচ, পনিয়াল ও কানাইডিঙ্গা। জীবন বাঁচাতে বিপন্নপ্রায় ভেষজ উদ্ভিদ বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা নিশ্চয় সুখবর। কিন্তু বাংলাদেশের অসংখ্য আদিবাসী, গরিব মানুষ একসময় এসব কবিরাজি ওষুধ সেবন করে বেঁচে থাকলেও বর্তমানে তারাই এসব ভেষজ সুবিধা থেকে সবচেয়ে বঞ্চিত।
রাজীব নন্দী
No comments