ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের চোখে - ১/১১ কেন ব্যর্থ হলো
কাজল ঘোষ: দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঢালাও অভিযান চালানো আমাদের কাজ ছিল না। কারণ সেটা ছিল স্বল্পকালীন সরকার। আর রাজনৈতিক দলের সংস্কার তাদেরই করতে হবে। আমরা ইনস্টিটিউশনাল সংস্কারগুলো শুরু করেছিলাম। আমাদের সরকারের সমন্বয়হীনতা ছিল। দ্বৈতশাসন চলছিল। প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদের সঙ্গে আমাদের পলিটিক্যাল গোল কি হবে, কিভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায় তা নিয়ে সেনা নেতৃত্বের সঙ্গে পৃষ্ঠা ৮ কলাম ৪
বার বার কথা বলতে চাইলেও সম্ভব হয়নি। এক বছর চলে গেলেও কিছু একটা হয়ে গিয়েছিল ভেতরে এটা আঁচ করতে পেরেছিলাম। যে সংস্কার শুরু হয়েছিল তা অব্যাহত থাকলে ১/১১-এর উদ্দেশ্য ব্যর্থ হতো না। কিন্তু দেশ চলছে ডাবল ব্যুরোক্রেট ও বিজনেস পলিটিশিয়ান দিয়ে। ১/১১ চার বছরপূর্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন সেদিনের ঘটনাক্রম নিয়ে নানা অজানা কথা বলেছেন মানবজমিনকে। কিভাবে উপদেষ্টা হলেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সবকিছু যখন অচলাবস্থায় তখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হঠাৎ সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মইন আমাকে ফোন করলেন। এরপর দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তাদের সঙ্গে আমার বৈঠক হলো। সেখানে নৌ, বিমানসহ অন্যান্য বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। সেই বৈঠকে তারা আমাকে বললো, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে আমরা মার্শাল ল’ জারি করতে পারি। কিন্তু আমরা তা করতে চাই না। যদি আপনাদের মতো লোক আমরা না পাই তবে কিছু ঘটে যেতে পারে। কারণ সেনাবাহিনীতে অনেক ইয়ং অফিসার রয়ে গেছে। তাতে চেইন অব কমান্ড ভেঙে যেতে পারে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে যোগ দেয়ার প্রস্তাব শুনে আমি দু’দিনের সময় চাইলাম। ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও, ক্যু হতে পারে জেনেও, জীবন বিপন্ন হতে পারে জেনেও সরকারে যোগ দিলাম।
তিনি বলেন, মাত্র ১১ জনের একটি সরকার ছিল। সকল রাজনৈতিক দলের বিরোধিতা নিয়ে কাজ করা সত্যিই ছিল কষ্টকর। একটি নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে সামরিক বাহিনীসহ সকল মহল অসম্ভব পরিশ্রম করেছিল দেশ বাঁচাতে। প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদ প্রথম ভাষণেই কি করা হবে তা স্পষ্ট করেছিলেন। তিন মাসের অনির্বাচিত অস্থায়ী সরকারের নির্বাচনী ব্যবস্থা পুনর্গঠনসহ আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করতে সময় লাগবে দু’বছর। সে সময় মিডিয়ার কাছে বলেছিলাম, আমরা গণতন্ত্রের জন্য এসেছি। সুতরাং রাজনীতিতে যারা দুর্নীতি করে রুই-কাতলা হয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের ব্যবস্থা করা হোক। মিডিয়ায় লেখালেখি শুরু হলো শুধু কি রাজনীতিকরাই দুর্নীতি করেছে, ব্যবসায়ীরা দুর্নীতি করেনি, সরকারি কর্মচারীরা দুর্নীতি করেনি। আমরা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করলাম ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযান চালালে ব্যবসায়ীরা আমাদের বিরুদ্ধে যাবে, সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতি নিয়ে কাজ করলে তারাও আমাদের বিরুদ্ধে যাবে। রাজনীতিবিদরা তো আমাদের বিরুদ্ধে আছেই। কিন্তু সরকারের এক বছর অতিক্রম হলে কি হয়েছিল এটাও আমার কাছে একটি বড় প্রশ্ন। এটা আঁচ করতে পেরেছি ভেতরে ভেতরে কিছু একটা হয়েছে। আমাদের নেতৃত্বের মধ্যে সঙ্কট ছিল। অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার যৌথ নেতৃত্বে দ্বৈত ব্যবস্থার মধ্যে কাজ করেছিল। ফখরুদ্দীন সাহেব অত্যন্ত ভদ্র ও সজ্জন মানুষ ছিলেন এটা সত্য তবে তিনি সফলভাবে নেতৃত্ব দিতে পারেন নি।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটা সত্য যে, সেনাবাহিনীকে দেশের সর্বত্র যেতে হয়েছে। সব বিষয় তাদেরই মোকাবিলা করতে হয়েছে। আর আমাদের পক্ষে লোক ছিল না। আমরা ঝুলন্ত সরকার হিসেবেই দেশ চালাচ্ছিলাম। পুরো ঘটনাক্রম বিবেচনা করলে আমার উপলব্ধি এটা পুরোটাই রাজনৈতিক অপপ্রচার (পলিটিক্যাল প্রপাগান্ডা)। কারণ রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে যে সমস্ত মামলা আমরা করেছিলাম; যাদের বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে চুরির দায়ে; আদালতের মাধ্যমে যাদের শাস্তি নিশ্চিত করা হয়েছে, তারা আমাদের রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন না করতে পারলে, চোর না বলতে পারলে যেসব রাজনীতিকদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠনের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে তারা রেহাই পাবে কি করে? প্রেক্ষাপট বদলালে মামলাও বাতিল হয়ে যায়। একজন আইনজীবী তো প্রকাশ্যেই বলেছেন, আমাদের দেশে হাওয়া বদলালে বিচারকও বদলে যায়। কার্যত তাই ঘটেছে। আর যে সব দুর্নীতির মামলা করেছি তার কাগজপত্র এখনও দুর্নীতি দমন কমিশনে আছে তা পরীক্ষা করে দেখলেই জানা যাবে কোথাও ভুল ছিল কিনা? কথা হচ্ছে বিচার যখন হচ্ছিল তখন কেউ এর আইনগত দুর্বলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন নি। অথচ হাওয়া বদলের সঙ্গে বিচারও বদলে গেছে। কিন্তু কথা হলো, যারা দুর্নীতিপরায়ণ তারা সকলকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলবেই। না হলে তাদের সম্মান থাকে না। আমাদের দুঃখ, দেশে বিজ্ঞ বা দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রাজনীতিবিদ নেই। তাহলে সে সময়কার পরিস্থিতি নিয়ে বা সে সময় কি ঘটেছিল তারা আমাদের ডেকে জিজ্ঞাসা করতে পারতেন। কী কঠিন বাস্তবতার মধ্য দিয়ে তাদের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়েছি-এ জন্য তাদের কৃতজ্ঞতাবোধ থাকা উচিত। আজকে চোর বলুক, দুর্নীতির কথা বলুক, যে আগুনে রাজনীতিকরা তখন দেশ রেখে গিয়েছিলেন-তা থেকে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আমরা দেশকে নিয়ে এসেছি।
দু’নেত্রীকে জেলে নেয়া ও ছেড়ে দেয়া এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, খালেদা-হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির ফাইল আগে থেকেই তৈরি ছিল। আমরা তাদের বিরুদ্ধে নতুন কোন মামলা দেইনি। এই মামলাগুলোকে অ্যাকটিভেট করা হয়েছে মাত্র। শেখ হাসিনাকে যখন গ্রেপ্তার করা হয় তখন কিছুই জানতাম না। গ্রেপ্তারের পরপরই প্রধান উপদেষ্টার কাছে জানতে চেয়েছিলাম, হাসিনার মতো একজন বড় নেতাকে গ্রেপ্তারে একটি রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া হতে পারে; অচলাবস্থা দেখা দিতে পারে। খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তারের আগে আমাদের ক’জনের সঙ্গে কথা হয়েছিল। মামলার নথিপত্র নিয়েই বৈঠকে আলোচনা হয়েছিল। খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সুতরাং শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা যাবে না- এমন কথায় তো আর বলার কিছু ছিল না। তাকেও গ্রেপ্তার করা হলো। তিনি বলেন, এটা ঠিক। গ্রেপ্তারের আগে শেখ হাসিনা আমাকে তিনবার ফোন করেছিলেন। আমি তাকে প্রতিবারই বলেছি, দেখো আমি কিছুই জানি না। আমি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো। হয়তো কোন মামলা থাকতে পারে। এখন তোমার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করো না। বিষয়টি আমরা দেখবো। তিনি চেয়েছিলেন, গ্রেপ্তার বন্ধ করতে। কিন্তু তা করার কোন ক্ষমতা আমার ছিল না। দল ভাঙাগড়া নিয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে রাজনৈতিক দলের কেউ কেউ যুক্ত থাকতে পারে। বরং শোনা গেছে, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃত্ব বা রাজনৈতিক দলের নেতারাই ক্যান্টনমেন্টে লাইন দিয়ে যোগাযোগ করেছে সে সময়।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার হলেই কেউ জেলে যাবেন তা কি করে হয়। কেউ যদি জেলে যাবার কাজ করেন তখন তাকে তো জেলে যেতেই হবে।
বার বার কথা বলতে চাইলেও সম্ভব হয়নি। এক বছর চলে গেলেও কিছু একটা হয়ে গিয়েছিল ভেতরে এটা আঁচ করতে পেরেছিলাম। যে সংস্কার শুরু হয়েছিল তা অব্যাহত থাকলে ১/১১-এর উদ্দেশ্য ব্যর্থ হতো না। কিন্তু দেশ চলছে ডাবল ব্যুরোক্রেট ও বিজনেস পলিটিশিয়ান দিয়ে। ১/১১ চার বছরপূর্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন সেদিনের ঘটনাক্রম নিয়ে নানা অজানা কথা বলেছেন মানবজমিনকে। কিভাবে উপদেষ্টা হলেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সবকিছু যখন অচলাবস্থায় তখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হঠাৎ সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মইন আমাকে ফোন করলেন। এরপর দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তাদের সঙ্গে আমার বৈঠক হলো। সেখানে নৌ, বিমানসহ অন্যান্য বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। সেই বৈঠকে তারা আমাকে বললো, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে আমরা মার্শাল ল’ জারি করতে পারি। কিন্তু আমরা তা করতে চাই না। যদি আপনাদের মতো লোক আমরা না পাই তবে কিছু ঘটে যেতে পারে। কারণ সেনাবাহিনীতে অনেক ইয়ং অফিসার রয়ে গেছে। তাতে চেইন অব কমান্ড ভেঙে যেতে পারে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে যোগ দেয়ার প্রস্তাব শুনে আমি দু’দিনের সময় চাইলাম। ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও, ক্যু হতে পারে জেনেও, জীবন বিপন্ন হতে পারে জেনেও সরকারে যোগ দিলাম।
তিনি বলেন, মাত্র ১১ জনের একটি সরকার ছিল। সকল রাজনৈতিক দলের বিরোধিতা নিয়ে কাজ করা সত্যিই ছিল কষ্টকর। একটি নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে সামরিক বাহিনীসহ সকল মহল অসম্ভব পরিশ্রম করেছিল দেশ বাঁচাতে। প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দীন আহমদ প্রথম ভাষণেই কি করা হবে তা স্পষ্ট করেছিলেন। তিন মাসের অনির্বাচিত অস্থায়ী সরকারের নির্বাচনী ব্যবস্থা পুনর্গঠনসহ আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করতে সময় লাগবে দু’বছর। সে সময় মিডিয়ার কাছে বলেছিলাম, আমরা গণতন্ত্রের জন্য এসেছি। সুতরাং রাজনীতিতে যারা দুর্নীতি করে রুই-কাতলা হয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের ব্যবস্থা করা হোক। মিডিয়ায় লেখালেখি শুরু হলো শুধু কি রাজনীতিকরাই দুর্নীতি করেছে, ব্যবসায়ীরা দুর্নীতি করেনি, সরকারি কর্মচারীরা দুর্নীতি করেনি। আমরা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করলাম ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযান চালালে ব্যবসায়ীরা আমাদের বিরুদ্ধে যাবে, সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতি নিয়ে কাজ করলে তারাও আমাদের বিরুদ্ধে যাবে। রাজনীতিবিদরা তো আমাদের বিরুদ্ধে আছেই। কিন্তু সরকারের এক বছর অতিক্রম হলে কি হয়েছিল এটাও আমার কাছে একটি বড় প্রশ্ন। এটা আঁচ করতে পেরেছি ভেতরে ভেতরে কিছু একটা হয়েছে। আমাদের নেতৃত্বের মধ্যে সঙ্কট ছিল। অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার যৌথ নেতৃত্বে দ্বৈত ব্যবস্থার মধ্যে কাজ করেছিল। ফখরুদ্দীন সাহেব অত্যন্ত ভদ্র ও সজ্জন মানুষ ছিলেন এটা সত্য তবে তিনি সফলভাবে নেতৃত্ব দিতে পারেন নি।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটা সত্য যে, সেনাবাহিনীকে দেশের সর্বত্র যেতে হয়েছে। সব বিষয় তাদেরই মোকাবিলা করতে হয়েছে। আর আমাদের পক্ষে লোক ছিল না। আমরা ঝুলন্ত সরকার হিসেবেই দেশ চালাচ্ছিলাম। পুরো ঘটনাক্রম বিবেচনা করলে আমার উপলব্ধি এটা পুরোটাই রাজনৈতিক অপপ্রচার (পলিটিক্যাল প্রপাগান্ডা)। কারণ রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে যে সমস্ত মামলা আমরা করেছিলাম; যাদের বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে চুরির দায়ে; আদালতের মাধ্যমে যাদের শাস্তি নিশ্চিত করা হয়েছে, তারা আমাদের রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন না করতে পারলে, চোর না বলতে পারলে যেসব রাজনীতিকদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠনের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে তারা রেহাই পাবে কি করে? প্রেক্ষাপট বদলালে মামলাও বাতিল হয়ে যায়। একজন আইনজীবী তো প্রকাশ্যেই বলেছেন, আমাদের দেশে হাওয়া বদলালে বিচারকও বদলে যায়। কার্যত তাই ঘটেছে। আর যে সব দুর্নীতির মামলা করেছি তার কাগজপত্র এখনও দুর্নীতি দমন কমিশনে আছে তা পরীক্ষা করে দেখলেই জানা যাবে কোথাও ভুল ছিল কিনা? কথা হচ্ছে বিচার যখন হচ্ছিল তখন কেউ এর আইনগত দুর্বলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন নি। অথচ হাওয়া বদলের সঙ্গে বিচারও বদলে গেছে। কিন্তু কথা হলো, যারা দুর্নীতিপরায়ণ তারা সকলকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলবেই। না হলে তাদের সম্মান থাকে না। আমাদের দুঃখ, দেশে বিজ্ঞ বা দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রাজনীতিবিদ নেই। তাহলে সে সময়কার পরিস্থিতি নিয়ে বা সে সময় কি ঘটেছিল তারা আমাদের ডেকে জিজ্ঞাসা করতে পারতেন। কী কঠিন বাস্তবতার মধ্য দিয়ে তাদের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়েছি-এ জন্য তাদের কৃতজ্ঞতাবোধ থাকা উচিত। আজকে চোর বলুক, দুর্নীতির কথা বলুক, যে আগুনে রাজনীতিকরা তখন দেশ রেখে গিয়েছিলেন-তা থেকে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আমরা দেশকে নিয়ে এসেছি।
দু’নেত্রীকে জেলে নেয়া ও ছেড়ে দেয়া এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, খালেদা-হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির ফাইল আগে থেকেই তৈরি ছিল। আমরা তাদের বিরুদ্ধে নতুন কোন মামলা দেইনি। এই মামলাগুলোকে অ্যাকটিভেট করা হয়েছে মাত্র। শেখ হাসিনাকে যখন গ্রেপ্তার করা হয় তখন কিছুই জানতাম না। গ্রেপ্তারের পরপরই প্রধান উপদেষ্টার কাছে জানতে চেয়েছিলাম, হাসিনার মতো একজন বড় নেতাকে গ্রেপ্তারে একটি রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া হতে পারে; অচলাবস্থা দেখা দিতে পারে। খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তারের আগে আমাদের ক’জনের সঙ্গে কথা হয়েছিল। মামলার নথিপত্র নিয়েই বৈঠকে আলোচনা হয়েছিল। খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সুতরাং শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা যাবে না- এমন কথায় তো আর বলার কিছু ছিল না। তাকেও গ্রেপ্তার করা হলো। তিনি বলেন, এটা ঠিক। গ্রেপ্তারের আগে শেখ হাসিনা আমাকে তিনবার ফোন করেছিলেন। আমি তাকে প্রতিবারই বলেছি, দেখো আমি কিছুই জানি না। আমি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো। হয়তো কোন মামলা থাকতে পারে। এখন তোমার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করো না। বিষয়টি আমরা দেখবো। তিনি চেয়েছিলেন, গ্রেপ্তার বন্ধ করতে। কিন্তু তা করার কোন ক্ষমতা আমার ছিল না। দল ভাঙাগড়া নিয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে রাজনৈতিক দলের কেউ কেউ যুক্ত থাকতে পারে। বরং শোনা গেছে, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃত্ব বা রাজনৈতিক দলের নেতারাই ক্যান্টনমেন্টে লাইন দিয়ে যোগাযোগ করেছে সে সময়।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার হলেই কেউ জেলে যাবেন তা কি করে হয়। কেউ যদি জেলে যাবার কাজ করেন তখন তাকে তো জেলে যেতেই হবে।
No comments