ইরানে বোমা হামলায় পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত-ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র দায়ী :তেহরান

রানের রাজধানী তেহরানে বোমা হামলায় ইরানি এক পরমাণু বিজ্ঞানী মুস্তফা আহমাদি রোশান নিহত হয়েছেন। তিনি তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। গতকাল বুধবার সকালে তাকে রিমোট কন্ট্রোল বোমার সহায়তায় হত্যা করা হয়েছে বলে জানায় তেহরান। এ হত্যাকাণ্ডের জন্য ইহুদিপন্থিদের দায়ী করেছে ইরান। তবে ইহুদিদের এ ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও ইরানে পরমাণু কার্যক্রম বন্ধ হবে না বলে জানান দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা রহিমি।


এদিকে ইরানের পরমাণু ইস্যু নিয়ে দেশটিকে আবারও কার্যকর আলোচনায় ফেরার আহ্বান জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'আমরা আবারও নিশ্চয়তা দিচ্ছি, আমাদের লক্ষ্য আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যার তাৎপর্যপূর্ণ একটি সমাধান বের করা। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, কুয়াম নগরীর কাছে ভূগর্ভস্থ ফারদো বাঙ্কারে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করেছে ইরান। খবর বিবিসি, এএফপি, রয়টার্সের।
নিহত পরমাণু বিশেষজ্ঞের মুস্তফা আহমাদি রোশান দেশটির অন্যতম পরমাণু কেন্দ্র নাতাঞ্জ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের সহকারী পরিচালক। এ বিষয়ে তেহেরানের ডেপুটি গভর্নর সাফারালি বারাতলু বলেন, 'তাকে একটি রিমোট কন্ট্রোল বোমার সহায়তায় হত্যা করা হয়েছে এবং এটা ইহুদিদের কাজ। আগের মতোই তারা আমাদের বিজ্ঞানীদের হত্যার ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে।' এর আগেও ইরানি বেশ কয়েকজন পরমাণু বিজ্ঞানী গুপ্তহত্যার শিকার হয়েছেন। এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য তেহরান যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলকে দায়ী করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল উভয়ই এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা ফার্স জানায়, ৩২ বছর বয়সী রোশান অন্য দু'জনের সঙ্গে গাড়িতে করে তেহরানের উত্তরে গোলনবির দিকে যাচ্চ্িছলেন। তার গাড়ির পাশে একটি মোটরসাইকেলে পেতে রাখা বোমার বিস্ফোরণে তার মৃত্যু হয়। রোশানের সঙ্গে থাকা অন্য দু'জন আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। একই ধরনের আরেক বোমা হামলায় ২০১০ সালের ১২ জানুয়ারি তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক অধ্যাপক মাসুদ আলী মোহাম্মদিকে হত্যা করা হয়। তিনি পদার্থবিদ্যার শিক্ষক ছিলেন। ২০১০ সালের নভেম্বর মাসে তেহরানের বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলায় আরও এক পরমাণ?ু বিজ্ঞানীকে হত্যা করা হয়। এ সময় বেশ কয়েকজন আহত হয়। এ নিয়ে ইরানে ৪ পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করা হলো।
অন্যদিকে ভূগর্ভস্থ বাঙ্কারে পরমাণু সমৃদ্ধকরণের ব্যাপারে ইরানি সিদ্ধান্ত উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে কার্যকর আলোচনায় ফেরার জন্য ইরানের প্রতি আহ্বান জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি। ইরানকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্য এবং জার্মানির সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। ভূগর্ভস্থ বাঙ্কারে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের বিষয়ে হিলারি বলেন, এ পদক্ষেপের পক্ষে যুক্তিগ্রাহ্য কোনো কারণ নেই। এর মধ্য দিয়ে ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে প্রয়োজনীয় অতি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদনের কাছাকাছি চলে যাবে বলে মন্তব্য করেন হিলারি।

No comments

Powered by Blogger.