ব্যাংক থেকে আর ঋণ নেবেন না-সরকারকে পরামর্শ এফবিসিসিআইয়ের

ব্যাংক থেকে আর ঋণ না নিয়ে সরকারকে ব্যয় কমানোর পরামর্শ দিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে আরো ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন বলে উল্লেখ করে সংগঠনটির সভাপতি এ কে আজাদ বলেছেন, সরকার ঋণ নেওয়ায় ব্যাংকে তারল্য সংকট তৈরি হচ্ছে। ফলে বেসরকারি খাতে ঋণ কমে যাচ্ছে। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতিও বাড়ছে।


গতকাল শনিবার 'ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পমেলা (এসএমই)-২০১১' উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কে আজাদ এসব কথা বলেন। মতিঝিলে এফবিসিসিআইয়ের কার্যালয় ফেডারেশন ভবনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আগামী ২০ ডিসেম্বর থেকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পাঁচ দিনের এসএমই মেলার আয়োজন করেছে এফবিসিসিআই। এতে দেশীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নেবে।
শিল্পে মেয়াদী ঋণ ১১ শতাংশ কমে গেছে উল্লেখ করে এ কে আজাদ বলেন, ইতিমধ্যে চলতি অর্থবছরে সরকার ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। আরো ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার প্রস্তাব করেছে অর্থমন্ত্রণালয়। সরকার ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিলে বেসরকারি খাত ব্যাংকঋণ থেকে বঞ্চিত হবে। সরকারের উচিত খরচ কমিয়ে অর্থের অভাব মেটানো।
ব্যাংক থেকে আর ঋণ না নেওয়ার জন্য সরকারকে মৌখিকভাবে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বেসরকারি খাত ঋণ নিলে বিনিয়োগ হয়। উৎপাদন বাড়ে। কর্মসংস্থান হয়। সরকার ঋণ নেওয়ায় মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। আরো ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিলে মূল্যস্ফীতি আরো বাড়বে।
ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে বলেও মন্তব্য করে এ কে আজাদ বলেন, ডলার কিনতে এখন বেশি টাকা লাগছে। এ কারণে আমদানি ব্যয় বাড়ছে। ফলে ব্যবসায়ীদের কর ও শুল্ক বেশি দিতে হচ্ছে। পাশাপাশি পণ্যের দামও বেড়ে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, পণ্য আমদানির কর ও শুল্ক থাকে শতাংশ হারে। ফলে কোনো পণ্য কিনতে বেশি টাকা লাগলে শুল্ক ও অগ্রিম আয়করও বেশি দিতে হয়।
পঞ্চম বারের মতো আয়োজিত এবারের এসএমই মেলায় মোট ১৩১টি স্টল এবং ১৯টি প্যাভিলিয়ন থাকবে। এর মধ্যে ৬৪টি উদ্যোক্তা ও ৩৪টিতে ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মেলার চতুর্থ দিনে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান এসএমই অ্যাওয়ার্ড বিতরণ করবেন। ক্ষুদ্র ও কুঠিরশিল্প ক্যাটাগরিতে তিনটি, মাঝারি উদ্যোক্তা ক্যাটাগরিতে তিনটি এবং এসএমই খাতের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখায় বেস্ট ফ্যাসিলেটর ক্যাটাগরিতে একটি করে মোট ১০টি অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের প্রথম সহসভাপতি ও মেলার আহ্বায়ক মো. জসিম উদ্দিন, সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, পরিচালক ও মেলার সহ-আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাক, পরিচালক হেলালউদ্দিন, হারুন অর রশিদ, মনোয়ারা হাকিম আলী, সাবেক সহসভাপতি মোহাম্মদ আলী উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.