সব শেয়ার ৪৫ শতাংশ দর হারিয়েছে
দেশের শেয়ারবাজারে টানা এক বছরের দরপতনে তালিকাভুক্ত সব শেয়ারের দর গড়ে ৪৪ দশমিক ৬১ শতাংশ দর হারিয়েছে। আর গত বছরের ৬ ডিসেম্বরের তুলনায় গড় দরপতনের হার ৪৮ শতাংশ। দরপতনে অন্তত ১৩টি শেয়ারের দর সংশ্লিষ্ট কোম্পানির এনএভির থেকেও কমে গেছে। মিউচুয়াল ফান্ডগুলোকে বিবেচনায় নিলে এ সংখ্যা দাঁড়াবে ৪১টিতে। একইভাবে ব্যাপক দরপতনে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অর্ধেকে নেমে এসেছে অন্তত ১২৮টি
কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর। এ ছাড়া এক-তৃতীয়াংশ থেকে এক-ষষ্ঠাংশে নেমে এসেছে অন্তত ৩৪টির। ২০০৮ সালের পর গত তিন বছরে এ ধরনের পরিস্থিতি দেখা যায়নি। ব্যাপক দরপতনের বিপরীতে উল্টো চিত্রও দেখা গেছে। সাম্প্রতিক লেনদেন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অন্তত সাত কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হচ্ছে তার শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্যের (এনএভি) ১০ গুণ থেকে ২৪ গুণ বেশি মূল্যে। বিস্ময়কর হলেও সত্য, এ অবস্থায়ও অন্তত ৩টি কোম্পানির শেয়ার গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি বা একই মূল্যে লেনদেন হচ্ছে। এ ছাড়া শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্যের তুলনায় সর্বাধিক ২৪ গুণেরও বেশি মূল্যে লেনদেন হচ্ছে চিটাগং ভেজিটেবল অয়েল কোম্পানির শেয়ার।
এদিকে এ বছরের পুরো সময়ে নানা ইস্যুকে কেন্দ্র করে মাঝেমধ্যে দুই-একদিন শেয়ারদর বাড়লেও তা স্থায়ী হচ্ছে না। এর কারণ সম্পর্কে বাজার বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষকরা মনে করেন, সামগ্রিক পরিস্থিতিতে যে চরম আস্থাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে, তা-ই এ অবস্থার জন্য দায়ী। বর্তমান বাজারের বেশিরভাগ শেয়ারদর কোম্পানির আর্থিক অবস্থার তুলনায় অনেক কমে এলেও তা বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে পারছে না বলে মনে করেন তারা। তবে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ের বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় না হওয়াতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে আস্থা পাচ্ছেন না। বিপরীতে এখনও কিছুসংখ্যক শেয়ারের দর অতিমূল্যায়িত থাকার কারণ প্রসঙ্গে বলেন, এই বৈপরিত্যের জন্য সংশ্লিষ্ট কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কারসাজি সম্পৃক্ততা থাকতে পারে বলে শোনা যায়। এ ছাড়া স্রেফ গুজবভিত্তিক বিনিয়োগ মানসিকতাকেও দায়ী করেন তারা। বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির আর্থিক ও ব্যবসায়িক অবস্থান, লভ্যাংশ প্রদানের হার, শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য এবং কোম্পানির ভবিষ্যৎ ব্যবসায়িক সম্প্রসারণের বিষয় বিবেচনায় রেখে শেয়ার কেনাবেচা করেন না বলে জানান এসইসির সাবেক চেয়ারম্যান মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, সামগ্রিক বিবেচনায় অপেক্ষাকৃত ভালো কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা হচ্ছে খারাপ কোম্পানির তুলনায় অনেক কম মূল্যে। গুজবভিত্তিক বিনিয়োগ মানসিকতা থেকে বের হয়ে বিশ্লেষণমুখী হলে এখন অনেক শেয়ারে বিনিয়োগ করার সুযোগ রয়েছে।
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবারের শেয়ার কেনাবেচার সর্বশেষ দর বিবেচনা করে দেখা গেছে, ডিএসইর তালিকাভুক্ত ২৬১টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৪১টির শেয়ার ও ইউনিট কেনাবেচা হচ্ছে এনএভির তুলনায় কম মূল্যে। এর মধ্যে ১৩টি কোম্পানির শেয়ার এনএভির তুলনায় কম মূল্যে কেনাবেচা হচ্ছে সেগুলো হলো বিডি ল্যাম্পস, মালেক স্পিনিং, প্রাইম টেক্সটাইল, সাফকো স্পিনিং, সোনারগাঁ টেক্সটাইল, জাহিন টেক্সটাইল, এসিআই, ইবনে সিনা, এপেক্স ফুডস, রহিমা ফুডস, সোনালি আঁশ, বিডি সার্ভিস ও বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।
একই সঙ্গে যেসব কোম্পানির শেয়ারদর গত এক বছরে পাঁচ ভাগের এক ভাগ বা তারও কমে নেমে এসেছে, সেগুলো হলো ইউসিবিএল, সোনারগাঁ টেক্সটাইল, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, বিডি ওয়েল্ডিং। তবে এসব কোম্পানির অধিকাংশই রাইট ইস্যু বা বিপুল পরিমাণ বোনাস লভ্যাংশ প্রদান করায় মূল্য সংশোধন হওয়াতেই দর এতটা কমার প্রধান কারণ বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তালিকাভুক্ত কোম্পানির গত এক বছরের বাজারদর পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২২টি কোম্পানির শেয়ারদর গত বছরের এ সময়ের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ থেকে এক-চতুর্থাংশে নেমেছে। অর্ধেক থেকে এক-তৃতীয়াংশে নেমেছে ৯৯টি দর। শেয়ারদর অর্ধেকে নেমে আসা কোম্পানির সংখ্যা অন্তত ১২৮টি। বিপরীতে অভিহিত মূল্য ১০ টাকা বিবেচনা করে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অন্তত তিনটি কোম্পানির শেয়ার বেশি মূল্যে লেনদেন হতে দেখা যাচ্ছে। জেমিনি সি ফুড ১৬৯.৫০ টাকা থেকে ২১৮ টাকায়, মডার্ন ডায়িং ৪৮ থেকে বর্তমানে ৪৮ টাকায়, তাল্লু স্পিনিং ৭৫ টাকা থেকে ৭৭ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে।
বেসরকারি বন্ডের তিনটিই গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি মূল্যে কেনাবেচা হচ্ছে। এসিআই জিরো কুপন বন্ড গত বছরের এ সময়ে ৭৬১ টাকায় কেনাবেচা হলেও গতকাল তা ৮৩৩ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে। একইভাবে আইবিবিএল বন্ড ৯৪০ টাকা থেকে এক হাজার ৪ টাকায়। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কাছাকাছি মূল্যে রয়েছে বাটা সু, বিডি সার্ভিস, দেশ গার্মেন্টস, কে অ্যান্ড কিউ ও রেনেটার শেয়ার দর।
সামগ্রিক শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রবণতা যেখানে প্রবল, সে অবস্থায় বাজার বিশ্লেষক বলছেন, এ অবস্থার পরিবর্তন কেবল বিনিয়োগকারীরাই করতে পারেন, তাদের বিনিয়োগ কৌশল পরিবর্তনের মাধ্যমে। ডিএসইর সাবেক সিইও ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক সালাউদ্দিন আহমেদ খান বলেন, দরপতন রোধে গত এক বছরে অনেক প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। কোনোটাই কাজ করেনি। কারণ বিনিয়োগকারীরা সচেতন নন। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ঝুঁকি ও কৌশল তারা আত্মস্থ না করে এখনও বিনিয়োগ মানসিকতায় রয়েছেন। সরকার বা অন্য কারও পক্ষে শেয়ারদর বাড়িয়ে দেওয়া বা ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়।
এদিকে এ বছরের পুরো সময়ে নানা ইস্যুকে কেন্দ্র করে মাঝেমধ্যে দুই-একদিন শেয়ারদর বাড়লেও তা স্থায়ী হচ্ছে না। এর কারণ সম্পর্কে বাজার বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষকরা মনে করেন, সামগ্রিক পরিস্থিতিতে যে চরম আস্থাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে, তা-ই এ অবস্থার জন্য দায়ী। বর্তমান বাজারের বেশিরভাগ শেয়ারদর কোম্পানির আর্থিক অবস্থার তুলনায় অনেক কমে এলেও তা বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে পারছে না বলে মনে করেন তারা। তবে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ের বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় না হওয়াতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে আস্থা পাচ্ছেন না। বিপরীতে এখনও কিছুসংখ্যক শেয়ারের দর অতিমূল্যায়িত থাকার কারণ প্রসঙ্গে বলেন, এই বৈপরিত্যের জন্য সংশ্লিষ্ট কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কারসাজি সম্পৃক্ততা থাকতে পারে বলে শোনা যায়। এ ছাড়া স্রেফ গুজবভিত্তিক বিনিয়োগ মানসিকতাকেও দায়ী করেন তারা। বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির আর্থিক ও ব্যবসায়িক অবস্থান, লভ্যাংশ প্রদানের হার, শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য এবং কোম্পানির ভবিষ্যৎ ব্যবসায়িক সম্প্রসারণের বিষয় বিবেচনায় রেখে শেয়ার কেনাবেচা করেন না বলে জানান এসইসির সাবেক চেয়ারম্যান মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, সামগ্রিক বিবেচনায় অপেক্ষাকৃত ভালো কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা হচ্ছে খারাপ কোম্পানির তুলনায় অনেক কম মূল্যে। গুজবভিত্তিক বিনিয়োগ মানসিকতা থেকে বের হয়ে বিশ্লেষণমুখী হলে এখন অনেক শেয়ারে বিনিয়োগ করার সুযোগ রয়েছে।
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবারের শেয়ার কেনাবেচার সর্বশেষ দর বিবেচনা করে দেখা গেছে, ডিএসইর তালিকাভুক্ত ২৬১টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৪১টির শেয়ার ও ইউনিট কেনাবেচা হচ্ছে এনএভির তুলনায় কম মূল্যে। এর মধ্যে ১৩টি কোম্পানির শেয়ার এনএভির তুলনায় কম মূল্যে কেনাবেচা হচ্ছে সেগুলো হলো বিডি ল্যাম্পস, মালেক স্পিনিং, প্রাইম টেক্সটাইল, সাফকো স্পিনিং, সোনারগাঁ টেক্সটাইল, জাহিন টেক্সটাইল, এসিআই, ইবনে সিনা, এপেক্স ফুডস, রহিমা ফুডস, সোনালি আঁশ, বিডি সার্ভিস ও বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।
একই সঙ্গে যেসব কোম্পানির শেয়ারদর গত এক বছরে পাঁচ ভাগের এক ভাগ বা তারও কমে নেমে এসেছে, সেগুলো হলো ইউসিবিএল, সোনারগাঁ টেক্সটাইল, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, বিডি ওয়েল্ডিং। তবে এসব কোম্পানির অধিকাংশই রাইট ইস্যু বা বিপুল পরিমাণ বোনাস লভ্যাংশ প্রদান করায় মূল্য সংশোধন হওয়াতেই দর এতটা কমার প্রধান কারণ বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তালিকাভুক্ত কোম্পানির গত এক বছরের বাজারদর পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২২টি কোম্পানির শেয়ারদর গত বছরের এ সময়ের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ থেকে এক-চতুর্থাংশে নেমেছে। অর্ধেক থেকে এক-তৃতীয়াংশে নেমেছে ৯৯টি দর। শেয়ারদর অর্ধেকে নেমে আসা কোম্পানির সংখ্যা অন্তত ১২৮টি। বিপরীতে অভিহিত মূল্য ১০ টাকা বিবেচনা করে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অন্তত তিনটি কোম্পানির শেয়ার বেশি মূল্যে লেনদেন হতে দেখা যাচ্ছে। জেমিনি সি ফুড ১৬৯.৫০ টাকা থেকে ২১৮ টাকায়, মডার্ন ডায়িং ৪৮ থেকে বর্তমানে ৪৮ টাকায়, তাল্লু স্পিনিং ৭৫ টাকা থেকে ৭৭ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে।
বেসরকারি বন্ডের তিনটিই গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি মূল্যে কেনাবেচা হচ্ছে। এসিআই জিরো কুপন বন্ড গত বছরের এ সময়ে ৭৬১ টাকায় কেনাবেচা হলেও গতকাল তা ৮৩৩ টাকায় কেনাবেচা হয়েছে। একইভাবে আইবিবিএল বন্ড ৯৪০ টাকা থেকে এক হাজার ৪ টাকায়। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কাছাকাছি মূল্যে রয়েছে বাটা সু, বিডি সার্ভিস, দেশ গার্মেন্টস, কে অ্যান্ড কিউ ও রেনেটার শেয়ার দর।
সামগ্রিক শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রবণতা যেখানে প্রবল, সে অবস্থায় বাজার বিশ্লেষক বলছেন, এ অবস্থার পরিবর্তন কেবল বিনিয়োগকারীরাই করতে পারেন, তাদের বিনিয়োগ কৌশল পরিবর্তনের মাধ্যমে। ডিএসইর সাবেক সিইও ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক সালাউদ্দিন আহমেদ খান বলেন, দরপতন রোধে গত এক বছরে অনেক প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। কোনোটাই কাজ করেনি। কারণ বিনিয়োগকারীরা সচেতন নন। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ঝুঁকি ও কৌশল তারা আত্মস্থ না করে এখনও বিনিয়োগ মানসিকতায় রয়েছেন। সরকার বা অন্য কারও পক্ষে শেয়ারদর বাড়িয়ে দেওয়া বা ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়।
No comments