তিন সীমান্তে চারজনকে হত্যা করেছে বিএসএফ
সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধে বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এলেও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সেই প্রতিশ্রুতি রাখছে না। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে দুই দিন আগে শেষ হওয়া দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বৈঠকেও বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। এরই মধ্যে তিনটি সীমান্তে চার বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করেছে বিএসএফ।এ চারজনের মধ্যে গত শুক্রবার রাতে দুজনকে হত্যা করা হয়েছে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার জামালপুর
ফলিমারি সীমান্তে। একই রাতে মেহেরপুরের গাংনী সীমান্তে আরো একজনকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার ভোরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে হত্যা করা হয়েছে আরো একজনকে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার চর গোড়কমণ্ডল সীমান্তে দুই বাংলাদেশি যুবককে গুলি করে বিএসএফ। আহত অবস্থায় একজন পালিয়ে গেলেও অন্যজনকে ধরে নিয়ে গেছেন ভারতীয় বাহিনীর সদস্যরা। তাকে এখনো ফেরত দেওয়া হয়নি।
আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :
দিনাজপুর : বিরামপুর সীমান্তের জামালপুর ফলিমারি এলাকায় বিএসএফের গুলিতে শুক্রবার রাতে নিহত দুজন হলেন দক্ষিণ দাউদপুর গ্রামের মতিউর রহমান (২০) ও রণগ্রামের তাজুল ইসলাম (২৬)। লাশ দুটি বিএসএফ নিয়ে গেছে।
বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) ৪০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মেজর তারেক মনোয়ার সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে এবং লাশ ফেরত চেয়ে বিএসএফকে চিঠি দিয়েছেন স্থানীয় ক্যাম্প কমান্ডার।
বিজিবির দাউদপুর ক্যাম্পের কম্পানি কমান্ডার বজলুর রহমান কালের কণ্ঠকে জানান, শুক্রবার রাত ১২টায় কাটলা এলাকার বিপরীতে ভারতীয় ভূখণ্ডের প্রায় ২০০ গজ ভেতরে চারটি গুলির শব্দ পাওয়া যায়। গরু চোরাচালিনের একটি দল তখন ওই এলাকায় ছিল।
বিজিবির এ কম্পানি কামান্ডার জানান, গতকাল বিকেলে সীমান্তের ঘাসুরিয়া ক্যাম্প এলাকায় কম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করেছে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। বিএসএফ লাশ দুটি আজ রবিবার হস্তান্তর করবে বলে জানিয়েছে। তবে আইনি জটিলতার কারণে এবং রবিবার ভারতে সরকারি ছুটি থাকায় লাশ দুটি সেদিন পাওয়া নাও যেতে পারে বলে জানান কম্পানি কামান্ডার বজলুর রহমান।
মেহেরপুর : গাংনী সীমান্তে শুক্রবার রাতে এক বাংলাদেশি কৃষককে গুলি করে হত্যা করেছে বিএসএফ। নিহত কৃষক নাহারুল ইসলাম (৪২) হাড়াভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি সওড়াতলা গ্রামে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন।
গ্রামবাসী ও বিজিবি সূত্রে জানা যায়, সওড়াতলা গ্রামের মাঠে সীমান্ত পিলারের কাছে গুলি করে হত্যার পর নাহারুলের লাশ বিএসএফের ব্রজনাথপুর ক্যাম্পের সদস্যরা টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে গেছেন। পরে লাশ পশ্চিমবঙ্গের মুরুটিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মুরুটিয়া থানা পুলিশ লাশের ময়নাতদন্তের জন্য কৃষ্ণনগর জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
বিজিবির ৩৫ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল হামিদুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বিএসএফকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। লাশটি ফেরত দেওয়ার জন্য তাদের অনুরোধ করা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রাম শহর থেকে ৪৪ কিলোমিটার দূরে ফুলবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী কৃষ্ণানন্দ বকশীর গ্রামের আলমগীর হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। গতকাল ভোর ৬টার দিকে বাড়ি লাগোয়া নোম্যান্সল্যান্ডে অবস্থিত একটি ছড়ার পাড়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গেলে বিএসএফ তাকে গুলি করে।
আলমগীরের বাবা ইসমাইল হোসেন জানান, গুলি খেয়ে বাড়ির আঙিনায় পড়ে গিয়ে ছেলে গোঁঙাতে থাকে। আর বলে 'বাবা গুলি লেগেছে'। গুরুতর আহত অবস্থায় গ্রামবাসী তাকে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ েনেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
গ্রামের মিল্টন মিয়া, কেরামত আলী, জাহাঙ্গীরসহ কয়েকজন কালের কণ্ঠকে জানান, এই ছড়াতে প্রচুর মাছ থাকে। কিন্তু মাছ ধরতে গেলে বিএসএফ সদস্যরা গালিগালাজ করে। গুলি করার হুমকি দেয়।
আলমগীরের মামা মোখলেচুর জানান, আলমগীর দিনমজুরি করত।
নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোসাব্বর রহমান মুসা বলেন, 'নিরপরাধ আলমগীরকে হত্যা করে বিএসএফ সীমান্তে গুলি না করার প্রতিশ্রুতি ভাঙল।'
কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. জাফর আলী বলেন, 'বিএসএফের এ ধরনের আচরণ আমাদের কাম্য নয়।'
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, এ ঘটনায় সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিজিবি ও বিএসএফ শক্তি বাড়িয়ে টহল জোরদার করেছে। সকালে বিজিবির ৪৫ ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়। দুপুর ১টা ১০ থেকে ২টা ২৭ মিনিট পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সীমানা পিলারের কাছে ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়। বৈঠকে বিজিবি ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ভবিষ্যতে আর এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না বলে আশ্বাস দেয়।
ফুলবাড়ী থানা পুলিশ জানায়, সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আলমগীরের বুকের ডান দিকে গুলির চিহ্ন রয়েছে।
ফুলবাড়ী থানার ওসি (তদন্ত) আবদুস ছাত্তার খান জানান, ময়নাতদন্তের পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার চর গোড়কমণ্ডল সীমান্তে দুই বাংলাদেশি যুবককে গুলি করে বিএসএফ। আহত অবস্থায় একজন পালিয়ে গেলেও অন্যজনকে ধরে নিয়ে গেছেন ভারতীয় বাহিনীর সদস্যরা। তাকে এখনো ফেরত দেওয়া হয়নি।
আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :
দিনাজপুর : বিরামপুর সীমান্তের জামালপুর ফলিমারি এলাকায় বিএসএফের গুলিতে শুক্রবার রাতে নিহত দুজন হলেন দক্ষিণ দাউদপুর গ্রামের মতিউর রহমান (২০) ও রণগ্রামের তাজুল ইসলাম (২৬)। লাশ দুটি বিএসএফ নিয়ে গেছে।
বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) ৪০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মেজর তারেক মনোয়ার সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে এবং লাশ ফেরত চেয়ে বিএসএফকে চিঠি দিয়েছেন স্থানীয় ক্যাম্প কমান্ডার।
বিজিবির দাউদপুর ক্যাম্পের কম্পানি কমান্ডার বজলুর রহমান কালের কণ্ঠকে জানান, শুক্রবার রাত ১২টায় কাটলা এলাকার বিপরীতে ভারতীয় ভূখণ্ডের প্রায় ২০০ গজ ভেতরে চারটি গুলির শব্দ পাওয়া যায়। গরু চোরাচালিনের একটি দল তখন ওই এলাকায় ছিল।
বিজিবির এ কম্পানি কামান্ডার জানান, গতকাল বিকেলে সীমান্তের ঘাসুরিয়া ক্যাম্প এলাকায় কম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করেছে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। বিএসএফ লাশ দুটি আজ রবিবার হস্তান্তর করবে বলে জানিয়েছে। তবে আইনি জটিলতার কারণে এবং রবিবার ভারতে সরকারি ছুটি থাকায় লাশ দুটি সেদিন পাওয়া নাও যেতে পারে বলে জানান কম্পানি কামান্ডার বজলুর রহমান।
মেহেরপুর : গাংনী সীমান্তে শুক্রবার রাতে এক বাংলাদেশি কৃষককে গুলি করে হত্যা করেছে বিএসএফ। নিহত কৃষক নাহারুল ইসলাম (৪২) হাড়াভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি সওড়াতলা গ্রামে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন।
গ্রামবাসী ও বিজিবি সূত্রে জানা যায়, সওড়াতলা গ্রামের মাঠে সীমান্ত পিলারের কাছে গুলি করে হত্যার পর নাহারুলের লাশ বিএসএফের ব্রজনাথপুর ক্যাম্পের সদস্যরা টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে গেছেন। পরে লাশ পশ্চিমবঙ্গের মুরুটিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মুরুটিয়া থানা পুলিশ লাশের ময়নাতদন্তের জন্য কৃষ্ণনগর জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
বিজিবির ৩৫ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল হামিদুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বিএসএফকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। লাশটি ফেরত দেওয়ার জন্য তাদের অনুরোধ করা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রাম শহর থেকে ৪৪ কিলোমিটার দূরে ফুলবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী কৃষ্ণানন্দ বকশীর গ্রামের আলমগীর হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। গতকাল ভোর ৬টার দিকে বাড়ি লাগোয়া নোম্যান্সল্যান্ডে অবস্থিত একটি ছড়ার পাড়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গেলে বিএসএফ তাকে গুলি করে।
আলমগীরের বাবা ইসমাইল হোসেন জানান, গুলি খেয়ে বাড়ির আঙিনায় পড়ে গিয়ে ছেলে গোঁঙাতে থাকে। আর বলে 'বাবা গুলি লেগেছে'। গুরুতর আহত অবস্থায় গ্রামবাসী তাকে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ েনেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
গ্রামের মিল্টন মিয়া, কেরামত আলী, জাহাঙ্গীরসহ কয়েকজন কালের কণ্ঠকে জানান, এই ছড়াতে প্রচুর মাছ থাকে। কিন্তু মাছ ধরতে গেলে বিএসএফ সদস্যরা গালিগালাজ করে। গুলি করার হুমকি দেয়।
আলমগীরের মামা মোখলেচুর জানান, আলমগীর দিনমজুরি করত।
নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোসাব্বর রহমান মুসা বলেন, 'নিরপরাধ আলমগীরকে হত্যা করে বিএসএফ সীমান্তে গুলি না করার প্রতিশ্রুতি ভাঙল।'
কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. জাফর আলী বলেন, 'বিএসএফের এ ধরনের আচরণ আমাদের কাম্য নয়।'
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, এ ঘটনায় সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিজিবি ও বিএসএফ শক্তি বাড়িয়ে টহল জোরদার করেছে। সকালে বিজিবির ৪৫ ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়। দুপুর ১টা ১০ থেকে ২টা ২৭ মিনিট পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সীমানা পিলারের কাছে ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়। বৈঠকে বিজিবি ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ভবিষ্যতে আর এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না বলে আশ্বাস দেয়।
ফুলবাড়ী থানা পুলিশ জানায়, সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আলমগীরের বুকের ডান দিকে গুলির চিহ্ন রয়েছে।
ফুলবাড়ী থানার ওসি (তদন্ত) আবদুস ছাত্তার খান জানান, ময়নাতদন্তের পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
No comments