চরাচর-লাউয়াছড়ার উল্লুক by বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন
বাংলাদেশ থেকে যেসব প্রাণী হারিয়ে যেতে চলেছে, 'উল্লুক' এর মধ্যে অন্যতম। পৃথিবীব্যাপী উল্লুককে 'বিপন্নপ্রাণী' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং আমাদের দেশেও এটি বিপন্ন তালিকাভুক্ত প্রাণী।
বন্যপ্রাণী বসবাসের উপযুক্ত বনভূমি ক্রমেই ধ্বংস এবং খাদ্যাভাবের ফলে এসব প্রাণীর অস্তিত্ব বিপন্ন হতে চলেছে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট অব বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, 'বনের মধ্যে উল্লুক বসবাসের অর্থ হচ্ছে বনের সামগ্রিক পরিবেশ অত্যন্ত সুষম অবস্থায় থাকা। উল্লুক যে বনভূমিতে বাস করে তার কোনো অংশ বৃক্ষহীন হয়ে পড়লেই এদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয়।' তিনি আরো জানান, ১৯৮০ সালে পরিচালিত এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল বাংলাদেশের বিভিন্ন বনাঞ্চলে তিন হাজার উল্লুক রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে তা আশঙ্কাজনকভাবে কমে ৩০০-তে নেমে এসেছে। বর্তমানে দেশের কয়েকটি বনাঞ্চলে প্রায় ৩০০টি উল্লুক বসবাস করছে। এদের মধ্যে বড় দুটি গ্রুপ বাস করছে চট্টগ্রামের কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্ক ও মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্কে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মনিরুল হক খান বলেন, বনসম্প্রসারণে বৃক্ষচারী উল্লুকের ভূমিকা অপরিসীম। উল্লুক বনের ওপরের স্তরের প্রাণী। এরা গাছে-গাছে, ডালে-ডালে ঘুরে বেড়ায় এবং এদের জীবন নির্ভর করে চিরসবুজ বনের ওপর। নিরাপত্তার কারণে উঁচু গাছ থেকে এরা কখনো নিচে নেমে আসে না। বন ধ্বংস এবং ফলবান বৃক্ষের অভাবে এদের অস্তিত্ব আজ মারাত্মক হুমকির মুখে।
বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী ট্রাস্ট এবং গ্লোবাল সায়েন্স প্রোডাকশনের সহযোগিতায় ২০০৮ সালের ১০ জানুয়ারিতে লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্কে উল্লুকের বাস্তব জীবনের ওপর ভিত্তি করে একটি তথ্যমূলক প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করা হয়েছে। এ প্রামাণ্যচিত্রটি তৈরি করছেন ড. এলিয়ট। বিশ্বব্যাপী বিপন্নপ্রায় উল্লুক সংরক্ষণে প্রত্যেকের করণীয় জনসচেতনতা গড়ে তোলা এবং উল্লুক সংরক্ষণে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য এরূপ একটি প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করা হয়েছে।
উল্লুকের ইংরেজি নাম 'হুলুক গিবন'। উল্লুকরা দলবদ্ধ জীবনযাপন করে এবং প্রতিটি পরিবার বা দল একটি নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে অবস্থান করে। একেকটি দলে দুই থেকে পাঁচটি করে সদস্য থাকে। খাদ্য ও আশ্রয়ের জন্য উল্লুক সম্পূর্ণভাবে বৃক্ষের ওপর নির্ভরশীল। এদের খাদ্য তালিকায় ৫১ শতাংশ পাকা ফল, ৩৮ শতাংশ ডুমুর, ৫ শতাংশ ফুল এবং ৬ শতাংশ পাতাকুঁড়ি রয়েছে। উল্লুক নানা বৈশিষ্ট্যের বিবেচনায় বানরের থেকে উন্নততর। এদের লেজ নেই। এদের মাথায় মগজের পরিমাণও বেশি। মেয়ে উল্লুকেরা প্রতি দুই বা তিন বছরে একটি সন্তান জন্ম দেয়। সারা জীবনে তারা পাঁচ থেকে ছয়টি সন্তানের জন্ম দেয়। সাধারণত ২৫ থেকে ৩০ বছর বাঁচে। পুরুষ উল্লুক আর নারী উল্লুক আকারে প্রায় একই সমান হলেও এদের গায়ের রঙে বেশ পার্থক্য রয়েছে।
বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এবং ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট অব বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, 'বনের মধ্যে উল্লুক বসবাসের অর্থ হচ্ছে বনের সামগ্রিক পরিবেশ অত্যন্ত সুষম অবস্থায় থাকা। উল্লুক যে বনভূমিতে বাস করে তার কোনো অংশ বৃক্ষহীন হয়ে পড়লেই এদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয়।' তিনি আরো জানান, ১৯৮০ সালে পরিচালিত এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল বাংলাদেশের বিভিন্ন বনাঞ্চলে তিন হাজার উল্লুক রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে তা আশঙ্কাজনকভাবে কমে ৩০০-তে নেমে এসেছে। বর্তমানে দেশের কয়েকটি বনাঞ্চলে প্রায় ৩০০টি উল্লুক বসবাস করছে। এদের মধ্যে বড় দুটি গ্রুপ বাস করছে চট্টগ্রামের কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্ক ও মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্কে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মনিরুল হক খান বলেন, বনসম্প্রসারণে বৃক্ষচারী উল্লুকের ভূমিকা অপরিসীম। উল্লুক বনের ওপরের স্তরের প্রাণী। এরা গাছে-গাছে, ডালে-ডালে ঘুরে বেড়ায় এবং এদের জীবন নির্ভর করে চিরসবুজ বনের ওপর। নিরাপত্তার কারণে উঁচু গাছ থেকে এরা কখনো নিচে নেমে আসে না। বন ধ্বংস এবং ফলবান বৃক্ষের অভাবে এদের অস্তিত্ব আজ মারাত্মক হুমকির মুখে।
বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী ট্রাস্ট এবং গ্লোবাল সায়েন্স প্রোডাকশনের সহযোগিতায় ২০০৮ সালের ১০ জানুয়ারিতে লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্কে উল্লুকের বাস্তব জীবনের ওপর ভিত্তি করে একটি তথ্যমূলক প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করা হয়েছে। এ প্রামাণ্যচিত্রটি তৈরি করছেন ড. এলিয়ট। বিশ্বব্যাপী বিপন্নপ্রায় উল্লুক সংরক্ষণে প্রত্যেকের করণীয় জনসচেতনতা গড়ে তোলা এবং উল্লুক সংরক্ষণে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য এরূপ একটি প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করা হয়েছে।
উল্লুকের ইংরেজি নাম 'হুলুক গিবন'। উল্লুকরা দলবদ্ধ জীবনযাপন করে এবং প্রতিটি পরিবার বা দল একটি নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে অবস্থান করে। একেকটি দলে দুই থেকে পাঁচটি করে সদস্য থাকে। খাদ্য ও আশ্রয়ের জন্য উল্লুক সম্পূর্ণভাবে বৃক্ষের ওপর নির্ভরশীল। এদের খাদ্য তালিকায় ৫১ শতাংশ পাকা ফল, ৩৮ শতাংশ ডুমুর, ৫ শতাংশ ফুল এবং ৬ শতাংশ পাতাকুঁড়ি রয়েছে। উল্লুক নানা বৈশিষ্ট্যের বিবেচনায় বানরের থেকে উন্নততর। এদের লেজ নেই। এদের মাথায় মগজের পরিমাণও বেশি। মেয়ে উল্লুকেরা প্রতি দুই বা তিন বছরে একটি সন্তান জন্ম দেয়। সারা জীবনে তারা পাঁচ থেকে ছয়টি সন্তানের জন্ম দেয়। সাধারণত ২৫ থেকে ৩০ বছর বাঁচে। পুরুষ উল্লুক আর নারী উল্লুক আকারে প্রায় একই সমান হলেও এদের গায়ের রঙে বেশ পার্থক্য রয়েছে।
বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন
No comments