অপটিক ফাইবারকে মানুষের নাগালের মধ্যে আনা হবে- বেসিস সফটএক্সপো উদ্বোধনে অর্থমন্ত্রী
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে দেশে আইটি পার্ক করার চিনত্মাভাবনা করছে সরকার। একই সঙ্গে অপটিক ফাইবারকে আরও সহজ এবং সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে এনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাসত্মবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।
বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আনত্মর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসের (বেসিস) ৫ দিনব্যাপী সফটএক্সপো মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেছেন। এ সময় তিনি দেশে আইটি খাতের ব্যাপকভাবে উন্নতির জন্য বুদ্ধিভিত্তিক জনশক্তি গড়ে তোলা, অভ্যনত্মরীণ চাহিদা সৃষ্টি করে আনত্মর্জাতিক বাজার ধরা এবং দেশের প্রতি কর্তব্যপরায়ণ ও প্রতিশ্রম্নতিশীল যুবসমাজ গড়ে তুলতে হবে বলে জানান তিনি। সরকারী-বেসরকারী এবং যৌথ উদ্যোগে যোগ্য যুবসমাজ গড়া যায় বলে মনে করেন তিনি। এ খাতের উন্নয়নে সরকার প্রয়োজনে প্রণোদনা এবং নীতি সহায়তা দেয়া হবে বলে জানানো হয়।বেসিস সভাপতি হাবিবুলস্নাহ এন. করিমের সভাপতিত্ব্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বাণিজ্যমন্ত্রী কর্নেল (অব) মোহাম্মদ ফারম্নক খান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, এফবিসিসিআইর সভাপতি আনিসুল হক এবং গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অডভার হেসজেদালসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
সভায় অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বে গড়ে ৬০ শতাংশ মানুষ মোবাইল ব্যবহার করে, যা বাংলাদেশে ৪০ শতাংশ। আবার বিশ্বে গড়ে ৩০ শতাংশ মানুষ কম্পিউটার ব্যবহার করলেও বাংলাদেশে এ হার মাত্র ১ শতাংশ। তাঁর মতে, বাংলাদেশ সময়মতো বা প্রযুক্তি প্রসারের প্রথম দিকে সিদ্ধানত্ম না নিতে পারার কারণে প্রাথমিকভাবে আমরা পিছিয়ে পড়ি। তাঁর মতে, বাংলাদেশের প্রযুক্তি ব্যবহারকে তিন সত্মরে ভাগ করা যায়। ১৯৮৩ সালে একদম প্রাথমিকভাবে সিঙ্গাপুরভিত্তিক একটি কোম্পানির মাধ্যমে আনত্মর্জাতিক বিশ্বে বাংলাদেশ সরকার এবং বাণিজ্যিক দলিলাদির আদান-প্রদান করা হতো। ১৯৯০ থেকে '৯৬ সাল পর্যনত্ম সময়ে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে হলেও মোটামুটি একটা পর্যায়ে কম্পিউটারের প্রচলন হয়েছে। তবে ১৯৯৭ সালের পর থেকে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার অবাধ হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। তাঁর মতে, তৎকালীন অর্থমন্ত্রী প্রয়াত শাহ এএমএস কিবরিয়ার তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সিদ্ধানত্মের ফলে বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার অবাধ হয় বলে জানান তিনি। তাঁর মতে, ওই বছর কম্পিউটারসহ তথ্যপ্রযুক্তিবান্ধব বৈদেশিক পণ্য বিনাশুল্কে আমদানির সিদ্ধানত্ম নেয়ার পরই এদেশে কম্পিউটার, মোবাইলসহ তথ্যপ্রযুক্তি সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে আসে।
এবার এসব সুযোগসুবিধার পাশাপাশি অপটিক ফাইবারকে সকলের জন্য আরও সহজলভ্য করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাসত্মবায়ন করা হবে বলে জানান তিনি।
এ সময় তিনি আরও বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি বাণিজ্য নিয়ে এদেশের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সম্ভাবনাকে বাসত্মবে রূপ দিতে হলে বুদ্ধিভিত্তিক জনশক্তি, অভ্যনত্মরীণ সফটওয়্যারের চাহিদা সৃষ্টি এবং দেশের প্রতি কর্তব্যপরায়ণ যুবসমাজ গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, আমেরিকার এক যুবক বিলগেটস পুরো আমেরিকার অর্থনীতিতে বিশাল অবদান রাখছে। তাঁকে আদর্শ হিসেবে ধরেই আমাদের যুবসমাজকে এগিয়ে যেতে হবে বলে মনে করেন তিনি। তবে সরকারী-বেসরকারী উভয় পর্যায় থেকেই এ উদ্যোগ নিতে হবে।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী দেশে তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারে সরকারের প থেকে যা করতে হয় সরকার তা করতে প্রসত্মুত বলে জানান। এ সময় তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের মডেল হিসেবে আগে একটি ডিজিটাল জেলা করা উচিত। তিনি বলেন, বর্তমানে এ খাতের জন্য ২শ' কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। আরও ১শ' কোটি টাকার থোক বরাদ্দ রেখে ল্য বাসত্মবায়নে সরকার এগিয়ে যাবে বলে জানান তিনি।
প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেছেন, প্রযুক্তি মানুষের সময় বাঁচায় এবং দ্রম্নত হতে সাহায্য করে। তাই বর্তমান বিশ্বে এ প্রযুক্তি ছাড়া এগিয়ে যাওয়া অসম্ভব। তাই সরকার এবং বেসরকারী উদ্যোগে এ খাতের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলার ওপর গুরম্নতা্বরোপ করেন তিনি। এ সময় সরকারের প থেকে সকল প্রকার সহযোগিতা করে শেখ হাসিনার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার আকাঙ্ৰা ব্যক্ত করেন বক্তারা।
অন্য বক্তাদের প থেকে দেশে তথ্যপ্রযুক্তিু সম্প্রসারণে সরকারের প থেকে অবকাঠামো তৈরির ওপর গুরম্নতা্বরোপ করা হয়।
No comments