জনকণ্ঠ কোন সাহায্য চায়নি বললেন হাজারী- বোধোদয়
অবশেষে জয়নাল হাজারীর বোধোদয় 'জনকণ্ঠ তার কাছে কোন সাহায্য চায়নি, টাকাও নেয়নি।' বুধবার জনকণ্ঠে প্রকাশিত খবরের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সন্ত্রাসের কারণে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত এই নেতা স্বীকার করেছেন, জনকণ্ঠ তার কাছে কোন সাহায্য চায়নি।
জনকণ্ঠের চাকরিচু্যত এক কর্মচারীর সঙ্গে তার ব্যক্তিগত লেনদেন হয়েছে। যার দায়ভার কোনভাবেই প্রতিষ্ঠানের নয়। অসত্য বক্তব্যকে ঢাকতে নিজেকে প্রতারণার শিকার বলেও জাহির করেছেন জয়নাল হাজারী। শুধু তাই নয়, তিনি যে এ বিষয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন তা জনকণ্ঠকে বিশ্বাস করতে আনত্মরিকভাবে অনুরোধও জানিয়েছেন। জোট সরকারের শাসনামল থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পর্যনত্ম সাত বছর চরম প্রতিকূলতার মধ্যেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণকারী পত্রিকা দৈনিক জনকণ্ঠ সাংবাদিক-কর্মর্ীদের অকানত্ম পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রকাশনা অব্যাহত রেখে যখন আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছে, সে সময় জয়নাল হাজারীর মিথ্যাচারে পাঠকরা বিস্মিত ও ৰুব্ধ। কোটি কোটি টাকার একটি প্রকাশনাকে বাঁচিয়ে রাখতে বাহক মারফত তার তিন লাখ টাকা পাঠানোকে 'আষাঢ়ে গল্প' বলেও মনে করছেন পাঠকরা। বুধবার সারাদিন এ ব্যাপারে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে জনকণ্ঠ কার্যালয়ে ফোন করেছেন পাঠক ও শুভানুধ্যায়ীরা।সোমবার 'জয়নাল হাজারী বলছি' নামে একটি আত্মজীবনীমূলক বই প্রকাশ করেন এক সময়ের ফেনীর সন্ত্রাসী গডফাদার হিসেবেই বেশি পরিচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে পলাতক আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা জয়নাল হাজারী। তিনি তার বইয়ে উলেস্নখ করেন, জনকণ্ঠ যখন অর্থের অভাবে বিলুপ্ত হওয়ার পথে, তখন তারা আমার সহযোগিতা চাইলেন। কাগজ কেনার টাকা নেই। কাগজ কিনে দিলাম। মুক্তিযুদ্ধের মুখপত্রটি মুখ থুবড়ে পড়বে, মানতে পারলাম না।' এ যেন ভূতের মুখে রাম নাম! তিনি ভুলে গেলেও জনকণ্ঠ ভুলে যায়নি, এক সময় তার সন্ত্রাসী কর্মকা- নিয়ে প্রতিবেদন ছাপানোর অপরাধে (!) ফেনীতে জনকণ্ঠ পোড়ানো হয়েছিল। তার তা-বে ফেনীতে জনকণ্ঠ মারাত্মক আর্থিক ৰতির সম্মুখীন হয়। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে আর্থিক দায় বা লেনদেন না থাকায় দ্ব্যর্থহীনভাবে জনকণ্ঠ তার এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানায় বুধবার। জনকণ্ঠ তার প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেছে, লেনদেন প্রমাণ করতে পারলে জনকণ্ঠ প্রকাশনা বন্ধ করে দেবে। কোন এক কর্মচারীর সঙ্গে ব্যক্তিগত লেনদেনের কারণে সে প্রতিষ্ঠানটির দায় থাকতে পারে না, সেটি বোঝার মতো তার বুদ্ধিজ্ঞান আছে বলে আশা করে জনকণ্ঠ। বুধবার প্রতিবাদ প্রকাশের পর সে বিষয়ে জনকণ্ঠের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা পাঠিয়েছেন জয়নাল হাজারী। তাতে তিনি লিখেছেন, প্রকাশিত সংবাদটি আমাকে বিস্মিত করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জনকণ্ঠের সাবেক ফটোসাংবাদিক মীর আহাম্মদ মীরম্ন জনকণ্ঠে থাকা অবস্থায় আমি তাকে ৩ লাখ টাকা দিয়েছি। এ কথাটাই আমার জন্য যথেষ্ট। যদিও বলা হয়েছে মীরম্নকে পাওনা টাকা পরিশোধ করেছি। এমনকি সে নাকি আরও কয়েক লাখ টাকা আমার কাছে পাওনা আছে। এ কথাটি বিশ্বাস করার মতো একটি লোকও বাংলাদেশে আছে বলে আমার মনে হয় না। একজন ফটোসাংবাদিক কাউকে কাউকে লাখ লাখ টাকা ধার দিতে পারে কিনা সেটা জানতে হবে। সকলেই জানে মীরম্ন জনকণ্ঠের নাম ভাঙ্গিয়ে অনেকের কাছ থেকেই বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। সেসব ব্যাপারে তার বিরম্নদ্ধে মামলা হওয়ার কথা ছিল। তিনি আরও বলেন, আসল কথা হচ্ছে আমি ৩ লাখ টাকা দিয়েছিলাম জনকণ্ঠের জন্যই। অবশ্য পরে কিছুটা বুঝতে পেরেছি জনকণ্ঠ সে টাকা পায়নি বা তারা সাহায্যও চায়নি। আমার তো কোন খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না। তবে আমি প্রতারণার শিকার হয়েছি, এটা আনত্মরিকভাবে বিশ্বাস করতে জনকণ্ঠকে অনুরোধ করছি।
No comments