স্মরণ-নাট্যকার সাঈদ আহমেদ by বিশ্বজিৎ পাল বাবু
একজন শুদ্ধ নাট্যজন। বাংলা নাটক ও নাট্যচর্চার ইতিহাসে তিনি বিশেষ ও ব্যতিক্রম, যাঁকে বাংলা নাটকের আধুনিক নাট্যধারার প্রবর্তক বলে বিবেচনা করা হয়। দেশের নাটককে বিশ্বের রঙ্গমঞ্চে নিয়ে গেছেন তিনি।
একাধারে তিনি শিক্ষক, উচ্চপদস্থ চাকরিজীবী, সংগীতজ্ঞ, চিত্র-সমালোচক, ভালো সাংস্কৃতিক বক্তা, নির্মাতা ও অভিনেতা। ওয়াশিংটন এরিনা স্টেজের নাট্যশালার দর্শক আসনের একটি সারি তাঁর নামে করা হয়েছে, যা আর কোনো বাঙালি নাট্যকারকে নিয়ে হয়নি। তিনি নাট্যকার সাঈদ আহমেদ।
হ্যাঁ, নাট্যকার সাঈদ আহমেদ। ষাটের দশকে ইংরেজি ভাষায় 'দ্য থিং' শীর্ষক রচনার মাধ্যমে বাংলা নাটকে ইউরোপীয় প্রতীকীবাদী অসম্ভবের নাট্যধারার প্রবর্তন করেন সাঈদ আহমেদ। প্রকৃতি শক্তির বিরুদ্ধে মানুষ কিভাবে লড়াই করে টিকে থাকে তাঁর লেখায় এ বিষয় তীব্রভাবে উঠে এসেছে। 'কালবেলা', 'মাইলপোস্ট', 'এক দিন প্রতিদিন', 'শেষ নবাব' প্রভৃতি তাঁর প্রসিদ্ধ নাটক। তাঁর বেশ কয়েকটি নাটক ইংরেজি, ফরাসি, ইতালি ও জার্মান ভাষায় অনূদিত হয়। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে 'বাংলাদেশের সুর শ্রষ্টারা', 'জীবনের সাত রং', 'ঢাকা আমার ঢাকা'। ১০ বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'পলাতকা' আবৃত্তি করে প্রথম পুরস্কার জিতেছিলেন তিনি। স্কুলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গানও গাইতেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ১৯৫০ সালে 'সাঈদ আহমেদ ও সম্প্রদায়' নাম দিয়ে একটি সংগীতের দল গঠন করেন তিনি। নাজিম উদ্দিন রোড ও দেওয়ান বাজার রেডিও স্টেশন থেকে নিয়মিত অর্কেস্ট্রা পরিবেশন করত এই সম্প্রদায়।
১৯৭৬ সালের দিকে আইএমএফে কাজ করার সময় সাঈদ আহমেদ জর্জটাউন ইউনিভার্সিটি, আমেরিকান ইউনিভার্সিটি ও ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটির গেস্ট লেকচারার ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত ও নাট্যকলা বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষকতাও করেছেন তিনি। ১৯৬৫ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তিনি চীন, জাপান, ভারত, ইউএসএ, হংকং, সোভিয়েত রাশিয়া, ব্রাজিল, মালয়েশিয়া, নরওয়ে, পূর্ব জার্মানি, হল্যান্ড, তুরস্কসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নাট্যকার, চিত্র-সমালোচক হিসেবে বক্তৃতা করেন।
সাঈদ আহমেদ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন তাঁর নাট্যকলার জন্য। এর মধ্যে ১৯৯৩ সালে ফরাসি সরকারের লিজন দ্য অনার, ১৯৯৫ সালে আবদুল জব্বার খান স্বর্ণ পদক, ১৯৯৬ সালে লোকনাট্য দল পদক, ১৯৯৭ সালে নাগরিক শ্রদ্ধাঞ্জলি, মুনীর চৌধুরী পদক, ২০০৮ সালে চন্দ্রাবতী পদক পান তিনি। পুরান ঢাকার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯৩১ সালের ১ জানুয়ারি সাঈদ আহমেদের জন্ম। বড় হয়েছেন সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে। বাবা মির্জা এফ মোহাম্মদ খান হারমোনিয়াম বাজিয়ে গান গাইতেন। মা জামিলা খাতুন গাইতেন হামদ ও নাত। দাদা মির্জা মো. হায়াৎ খান ছিলেন গান-বাজনায় শৌখিন।
২০১০ সালের ২১ জানুয়ারি বাংলাদেশ হারায় একজন প্রসিদ্ধ নাট্যকারকে। বাংলা নাটকের উন্নয়নের জন্য কাজ করায় এ নাট্যকারের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। আজকের এই দিনে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি শুদ্ধ নাট্যকার সাঈদ আহমেদকে।
বিশ্বজিৎ পাল বাবু
হ্যাঁ, নাট্যকার সাঈদ আহমেদ। ষাটের দশকে ইংরেজি ভাষায় 'দ্য থিং' শীর্ষক রচনার মাধ্যমে বাংলা নাটকে ইউরোপীয় প্রতীকীবাদী অসম্ভবের নাট্যধারার প্রবর্তন করেন সাঈদ আহমেদ। প্রকৃতি শক্তির বিরুদ্ধে মানুষ কিভাবে লড়াই করে টিকে থাকে তাঁর লেখায় এ বিষয় তীব্রভাবে উঠে এসেছে। 'কালবেলা', 'মাইলপোস্ট', 'এক দিন প্রতিদিন', 'শেষ নবাব' প্রভৃতি তাঁর প্রসিদ্ধ নাটক। তাঁর বেশ কয়েকটি নাটক ইংরেজি, ফরাসি, ইতালি ও জার্মান ভাষায় অনূদিত হয়। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে 'বাংলাদেশের সুর শ্রষ্টারা', 'জীবনের সাত রং', 'ঢাকা আমার ঢাকা'। ১০ বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'পলাতকা' আবৃত্তি করে প্রথম পুরস্কার জিতেছিলেন তিনি। স্কুলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গানও গাইতেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় ১৯৫০ সালে 'সাঈদ আহমেদ ও সম্প্রদায়' নাম দিয়ে একটি সংগীতের দল গঠন করেন তিনি। নাজিম উদ্দিন রোড ও দেওয়ান বাজার রেডিও স্টেশন থেকে নিয়মিত অর্কেস্ট্রা পরিবেশন করত এই সম্প্রদায়।
১৯৭৬ সালের দিকে আইএমএফে কাজ করার সময় সাঈদ আহমেদ জর্জটাউন ইউনিভার্সিটি, আমেরিকান ইউনিভার্সিটি ও ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটির গেস্ট লেকচারার ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত ও নাট্যকলা বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষকতাও করেছেন তিনি। ১৯৬৫ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তিনি চীন, জাপান, ভারত, ইউএসএ, হংকং, সোভিয়েত রাশিয়া, ব্রাজিল, মালয়েশিয়া, নরওয়ে, পূর্ব জার্মানি, হল্যান্ড, তুরস্কসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নাট্যকার, চিত্র-সমালোচক হিসেবে বক্তৃতা করেন।
সাঈদ আহমেদ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন তাঁর নাট্যকলার জন্য। এর মধ্যে ১৯৯৩ সালে ফরাসি সরকারের লিজন দ্য অনার, ১৯৯৫ সালে আবদুল জব্বার খান স্বর্ণ পদক, ১৯৯৬ সালে লোকনাট্য দল পদক, ১৯৯৭ সালে নাগরিক শ্রদ্ধাঞ্জলি, মুনীর চৌধুরী পদক, ২০০৮ সালে চন্দ্রাবতী পদক পান তিনি। পুরান ঢাকার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯৩১ সালের ১ জানুয়ারি সাঈদ আহমেদের জন্ম। বড় হয়েছেন সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে। বাবা মির্জা এফ মোহাম্মদ খান হারমোনিয়াম বাজিয়ে গান গাইতেন। মা জামিলা খাতুন গাইতেন হামদ ও নাত। দাদা মির্জা মো. হায়াৎ খান ছিলেন গান-বাজনায় শৌখিন।
২০১০ সালের ২১ জানুয়ারি বাংলাদেশ হারায় একজন প্রসিদ্ধ নাট্যকারকে। বাংলা নাটকের উন্নয়নের জন্য কাজ করায় এ নাট্যকারের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। আজকের এই দিনে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি শুদ্ধ নাট্যকার সাঈদ আহমেদকে।
বিশ্বজিৎ পাল বাবু
No comments