পশু দম্পতি নয় চাই সুখী সমাজ by মাহবুবা কানিজ কেয়া
কাপাসিয়ার কাজল মোল্লা গৃহপরিচারিকার ওপর যে পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে বলে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে, তাকে ঘৃণা জানানোর ভাষা জানা নেই। সভ্য সমাজেও এমন আদিমতা থাকতে পারে, এটা অবিশ্বাস্য হলেও সত্য হয়ে উঠেছে। কন্যাশিশু যেন এখন সুস্থভাবে বেঁচে থাকার অধিকারও পাবে না।
অতিদ্রুত এর অবসান হওয়া উচিত। এ ধরনের ঘটনা ব্যক্তি পর্যায়ে হলেও তা নিরসনে প্রশাসন ও সমাজের অনেক কিছু করার আছে। এ জন্য দেখতে হবে কেন এমন ঘটনা ঘটছে। প্রথমেই আমি বলব, আইনের বিষয়ে। আমাদের এখানে আইন আছে, কিন্তু এর যথাযথ প্রয়োগ হয় না। আইন প্রয়োগ না হওয়ার পেছনে কাজ করে পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা। এরপর আসে মনস্তাত্ত্বিক একটা বিষয়। অপরাধী যখন দেখে, ধর্ষণ করার পরও কিছু হয় না তখন তার মধ্যে পুরস্কৃত হওয়ার তৃপ্তি কাজ করে। আবার সে পশুবৃত্তিতে লিপ্ত হয়। দুর্বলের ওপর অত্যাচার করার মানসিকতা অনেকটা মনস্তাত্ত্বিক। যখন দেখে দুর্বলকে অত্যাচার করলে আইন তাকে রক্ষা করে তখন সে আবারও অপরাধে লিপ্ত হতে চায়। পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতায় এ ধরনের অপরাধকে কম গুরুত্ব দেওয়া হয়। আবার ভুক্তভোগীকেই আক্রমণ করে। অপরাধীর দিকে আঙুল না দেখিয়ে যখন দৃষ্টি যায় ভুক্তভোগীর দিকে তখন ভুক্তভোগীর মধ্যে অসহায়ত্ব বেড়ে যায়। স্বাভাবিক-সাধারণ মেয়েদের চেয়ে কন্যাশিশু আরো দুর্বল। অধিকতর দুর্বলকে অত্যাচার করার যে মানসিকতা তৈরি হয়, এর উদাহরণ হিসেবে আমরা কন্যাশিশুদের নির্যাতনকে উল্লেখ করতে পারি। সম্প্রতি ভারতে মাত্র চার বছরের এক কন্যাশিশুকে বাসে ধর্ষণ করা হয়েছে। আমাদের এখানেও কন্যাশিশু এভাবে ধর্ষিতা হচ্ছে।
যে কাজল মোল্লার প্রসঙ্গ এখানে সংবাদ হচ্ছে, সেই কাজল মোল্লার ব্যাপারটিও আমরা এভাবেই বিশ্লেষণ করতে পারি। সেখানে বিত্ত কিন্তু বড় কথা নয়। বিত্ত যদি প্রধান কারণ হতো তাহলে বিত্তবান মহিলারা অন্তত নিরাপদ থাকত। এটা হচ্ছে মানুষের মনের মধ্যে সুপ্ত থাকা জিঘাংসা থেকে। ক্ষমতাও মানুষের এ প্রবৃত্তিতে ইন্ধন জোগাতে পারে। মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, বেড়ে ওঠার কালে যখন বাচ্চাকে তার ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি দায়িত্ব অর্পণ করা হয় তখন তার মধ্যে এক ধরনের মানসিকতা তৈরি হয়, যা পরবর্তী সময়ে বিকৃত মানসিকতারও জন্ম দিতে পারে। কাজল মোল্লার শৈশব কেমন কেটেছে তা আমরা জানি না। তবে সাধারণ বিষয় এটা। পরিবারের শান্তি-শৃঙ্খলার বিষয়টিও মানুষের চরিত্র গঠনে সহযোগিতা করে থাকে। মা-বাবার সম্পর্ক যদি শুধু অপ্রিয় হয়, এর প্রতিফলন দেখা দিতে পারে সন্তানের ওপর। শৈশবে তার বহিঃপ্রকাশ না ঘটলেও পরিণত বয়সে এর প্রয়োগ হতে পারে।
হতাশা-বঞ্চনা থেকে মানসিক দুর্বৃত্তপনা তৈরি হতে পারে। হতাশা-বঞ্চনার বিষয়টি শুধু অর্থনৈতিক ক্ষেত্রকে ঘিরেই তৈরি হয়, তাও নয়। যেমন পশ্চিমা দুনিয়ায় যে হতাশা তৈরি হয়, সেখানে কিন্তু অর্থনৈতিক দীনতা বড় নয়। আবার আমাদের এখানে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে মানুষের মধ্যে এক ধরনের মমত্ববোধ তৈরি হয়। দেখা যায়, একই জায়গায় নারী-পুরুষ থাকছে কিন্তু এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা খুবই কম হচ্ছে। এতে বোঝা যায়, বিত্ত কোনো বিষয় নয়। বড় হলো তার মানসিকতা। রাষ্ট্রকে আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে কঠোর হতে হবে, যাতে অপরাধী মনে করতে না পারে, আইন তার কাছে কোনো বিষয় নয়। সে যা চাইবে, তা-ই করতে পারবে।
সবশেষে আমি প্রত্যাশা করব, 'পশু দম্পতি' শিরোনামে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, এটাই যেন এ ধরনের শেষ সংবাদ হয়। আর যেন এমন ঘটনা না ঘটে।
যে কাজল মোল্লার প্রসঙ্গ এখানে সংবাদ হচ্ছে, সেই কাজল মোল্লার ব্যাপারটিও আমরা এভাবেই বিশ্লেষণ করতে পারি। সেখানে বিত্ত কিন্তু বড় কথা নয়। বিত্ত যদি প্রধান কারণ হতো তাহলে বিত্তবান মহিলারা অন্তত নিরাপদ থাকত। এটা হচ্ছে মানুষের মনের মধ্যে সুপ্ত থাকা জিঘাংসা থেকে। ক্ষমতাও মানুষের এ প্রবৃত্তিতে ইন্ধন জোগাতে পারে। মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, বেড়ে ওঠার কালে যখন বাচ্চাকে তার ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি দায়িত্ব অর্পণ করা হয় তখন তার মধ্যে এক ধরনের মানসিকতা তৈরি হয়, যা পরবর্তী সময়ে বিকৃত মানসিকতারও জন্ম দিতে পারে। কাজল মোল্লার শৈশব কেমন কেটেছে তা আমরা জানি না। তবে সাধারণ বিষয় এটা। পরিবারের শান্তি-শৃঙ্খলার বিষয়টিও মানুষের চরিত্র গঠনে সহযোগিতা করে থাকে। মা-বাবার সম্পর্ক যদি শুধু অপ্রিয় হয়, এর প্রতিফলন দেখা দিতে পারে সন্তানের ওপর। শৈশবে তার বহিঃপ্রকাশ না ঘটলেও পরিণত বয়সে এর প্রয়োগ হতে পারে।
হতাশা-বঞ্চনা থেকে মানসিক দুর্বৃত্তপনা তৈরি হতে পারে। হতাশা-বঞ্চনার বিষয়টি শুধু অর্থনৈতিক ক্ষেত্রকে ঘিরেই তৈরি হয়, তাও নয়। যেমন পশ্চিমা দুনিয়ায় যে হতাশা তৈরি হয়, সেখানে কিন্তু অর্থনৈতিক দীনতা বড় নয়। আবার আমাদের এখানে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে মানুষের মধ্যে এক ধরনের মমত্ববোধ তৈরি হয়। দেখা যায়, একই জায়গায় নারী-পুরুষ থাকছে কিন্তু এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা খুবই কম হচ্ছে। এতে বোঝা যায়, বিত্ত কোনো বিষয় নয়। বড় হলো তার মানসিকতা। রাষ্ট্রকে আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে কঠোর হতে হবে, যাতে অপরাধী মনে করতে না পারে, আইন তার কাছে কোনো বিষয় নয়। সে যা চাইবে, তা-ই করতে পারবে।
সবশেষে আমি প্রত্যাশা করব, 'পশু দম্পতি' শিরোনামে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, এটাই যেন এ ধরনের শেষ সংবাদ হয়। আর যেন এমন ঘটনা না ঘটে।
No comments