মিশ্র বাগানে সাফল্য
নওগাঁর মহাদেবপুরে ফসলী জমিতে থাইকুল ও আপেলকুলের সঙ্গে আম ও লিচুর মিশ্র বাগান করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন কৃষক ময়েন উদ্দিন। তাঁর এই সাফল্য দেখে চাকরির পেছনে হন্যে হয়ে না ঘুরে বাগান তৈরির মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি করছেন এলাকার শিতি বেকার যুবকরা।
জানা গেছে, উপজেলার বেড়াই পার্বতীপুর গ্রামের মৃত রহিম উদ্দিনের পুত্র ময়েন উদ্দিন ৩ বছর আগে তাঁর ৬ বিঘা জমিতে থাইকুল ও আপেলকুলের সঙ্গে আম ও লিচুর মিশ্র বাগান গড়ে তোলেন। এক বছর পরেই এ বাগানের আপেলকুল ও থাইকুলের গাছগুলোতে কুল ধরা শুরম্ন করে। কুল ধরার প্রথম বছরেই প্রায় ৬০ হাজার টাকার কুল বিক্রি করেন ময়েন উদ্দিন। দ্বিতীয় বছরে কুল বিক্রি করেন প্রায় ১ লাখ টাকার। চলতি বছর আগাম এ বাগানের কুল ১ লাখ ৬০ হাজার টাকায় পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন ওই চাষী। মিশ্র বাগানে এ বছর আম ও লিচুর গাছেও মুকুল আসা শুরম্ন করেছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে এ বাগান থেকে এবার কয়েক লাখ টাকার আম ও লিচু বিক্রি হবে বলে আশা করছেন কৃষক ময়েন উদ্দিন।ময়েন উদ্দিন জানান, বাগান শুরম্নর পরেও এই ৬ বিঘা জমিতে সাথী ফসল হিসেবে তিনি বেগুন, মুলা, কচুসহ বিভিন্ন শাকসবজি চাষ করে আসছেন। এসব সাথী ফসল থেকে অন্যান্য জমির মতোই আয় করার পরও মিশ্র বাগান থেকে বছরে মোটা অঙ্কের আয় হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
এদিকে ময়েন উদ্দিনের এ সাফল্য দেখে এলাকার বেকার যুবকরা চাকরি নামের সোনার হরিণের পিছে না ঘুরে বাগান তৈরির মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠছে। ময়েন উদ্দিনের কাছে অনুপ্রেরণা নিয়ে এলাকার বেকার যুবকরা একের পর এক নতুন নতুন বাগান গড়ে তুলছেন বলে স্থানীয় লোকজন জানান। এ কারণে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নতুন নতুন মিশ্র বাগান গড়ে উঠছে। ইটালী গ্রামের যুবক ছাইদুর রহমান জানান, মিশ্র বাগানে ময়েন উদ্দিনের সাফল্য দেখে তিনি নিজেও ৩ বিঘা জমিতে মিশ্র বাগান গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সোয়াইব আহমেদ জানান, ফসলী জমিতে মিশ্র বাগান খুবই লাভজনক। এ কারণে এ এলাকার কৃষকদের মাঝে মিশ্র বাগান গড়ার আগ্রহ বাড়ছে। তিনি আরও জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আগামীতে এ এলাকায় ধান-পাটসহ অন্যান্য শস্যেেত সেচ সঙ্কট দেখা দিতে পারে। এ বাগানগুলোর মাধ্যমে একদিকে যেমন এ সঙ্কট মোকাবেলা করা সম্ভব তেমনি অন্যদিকে এ বাগানগুলো থেকে উৎপাদিত ফল আমাদের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
_বিশ্বজিৎ মনি, নঁওগা
No comments