অবশেষে মেয়েটি পুলিশ হেফাজতে-ওসি এখনো ক্যাডারের ভূমিকায় by এস এম আজাদ ও শরীফ আহমেদ শামীম
কাজল মোল্লা ও তাঁর স্ত্রীর গৃহপরিচারিকা নির্যাতনের ঘটনায় প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ে টনক নড়েছে। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার গতকাল রবিবার কাপাসিয়ায় সশরীরে হাজির হয়ে ওই মেয়ের মুখেই শুনেছেন তাকে নির্যাতনের মর্মন্তুদ ঘটনা। সব শুনে তাঁরা ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।
আশ্বাস দিয়েছেন সুষ্ঠু বিচারের। স্থানীয় থানা পুলিশও নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়ে মেয়েটির জবানবন্দি রেকর্ড করেছে। একই সঙ্গে তাকে নেওয়া হয়েছে পুলিশ হেফাজতে। তবে গতকালও কাপাসিয়া থানার ওসির ভূমিকা ছিল সরকারদলীয় ক্যাডারের মতো।
কালের কণ্ঠের প্রতিবেদকরা গতকাল কাপাসিয়া থানায় গিয়ে কাজল মোল্লা ও তাঁর স্ত্রীর হাতে নির্যাতিত মেয়েটির নিরাপত্তাহীনতা এবং অভিযোগের বিষয়টি জানালেও ব্যবস্থা নেননি ওসি। থানা যুব মহিলা লীগের নেত্রী কানিজ ফাতেমা রুহিতা এদিনও মেয়েটিকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। অব্যাহত ছিল কাজলের ক্যাডারদের ওই বাড়ি পাহারা। তবে বিকেল গড়াতেই বদলে যায় দৃশ্যপট। উচ্চ আদালত দিকনির্দেশনা দেওয়ার পর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার যান মেয়েটির বাড়ি। পুলিশ প্রশাসনের কাছে মেয়েটি কাজল মোল্লার বর্বরতার লোমহর্ষক বর্ণনা দেয়। গতকাল বিকেল থেকেই মেয়েটি পুলিশ হেফাজতে।
প্রশাসনের কর্তারা এখন বলছেন, কালের কণ্ঠের সংবাদই সঠিক। ঘৃণিত অপরাধের জন্য মেয়েটির ওপর নির্যাতনকারী কাজল মোল্লা ও তাঁর স্ত্রীসহ অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। তবে গতকাল রাত পর্যন্ত কিশোরী ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। বদলায়নি ওসির বক্তব্য।
এদিকে গতকালও কাপাসিয়ার একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা কালের কণ্ঠকে বলেন, এমন ঘটনায় তাঁরা বিব্রত। তবে কাজলের বিরুদ্ধে তাঁরা ব্যবস্থা নিতে পারছেন না তাঁর প্রবল প্রতাপের কারণে।
পুলিশের টালবাহানা : গতকাল দুপুরে কালের কণ্ঠের প্রতিবেদকসহ কয়েকজন সাংবাদিক কাপাসিয়া থানায় গিয়ে ওসি দেলওয়ার হোসেনকে জানান, মেয়েটি এখন নিরাপত্তাহীনতায় আছে এবং সে অভিযোগ করছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কি না জানতে চাইলে ওসি বলেন, 'আমাদের কাছে কিছু বলে নাই। আর অভিযোগ করলে মামলা হবে ঘটনাস্থল যে থানার আওতায় সেই থানায়।' এক পর্যায়ে নিরাপত্তাহীনতার প্রশ্ন তুললে ওসি মেয়েটির বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে তা পর্যবেক্ষণের আশ্বাস দেন। বিকেল ৩টার দিকে থানার অপারেশন অফিসার এসআই রাহাত খানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ মেয়েটির বাড়িতে যায়। সেখানে সাংবাদিকদের সামনে মেয়েটি তার ওপর পাশবিক নির্যাতনের বর্ণনা দেয়। মেয়েটির বাবাও বিচার দাবি করেন। তবে এসআই রাহাত বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া অভিযোগ গ্রহণ করা যাবে না। ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে মেয়েটির দেওয়া লোমহর্ষক বর্ণনা শুনে হতবাক হন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি দাবি করেন, এমন অভিযোগ আগে পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হতো। মেয়েটি পুলিশের সামনে জানায়, ভয়ভীতি দেখানোর কারণে সে আগে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছে। এ সময় স্থানীয় লোকজনও মেয়েটিকে সাহস জোগায়। বাধ্য হয়ে পুলিশ তার জবানবন্দি মোবাইলে রেকর্ড করে এবং বিষয়টি সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন মহলকে অবহিত করে। এ সময় মেয়েটি বলে, 'এ নির্যাতনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আমি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। আর কত জায়গায় লজ্জাজনক এ ঘটনার বিচার দেব। এর চেয়ে আমার আত্মহত্যা করাও ভালো ছিল।'
গতকাল রাতে কাপাসিয়া থানার ওসি দেলওয়ার হোসেন আবারও ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহের উদ্দেশ্যে ধর্ষণের বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান। কালের কণ্ঠের পক্ষ থেকে সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'মেয়েটি কাজলের স্ত্রীর নির্যাতনের কথা বলেছে। ধর্ষণের কথা বলেনি!'
এদিকে মেয়েটিকে হেফাজতে নেওয়ার পরও কাজল মোল্লাকে বাঁচাতে ওসি দেলওয়ার হোসেনের তৎপরতা অব্যাহত ছিল। গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত মেয়েটিকে অর্থের প্রলোভন ও ভয় দেখিয়ে আদালত ও সাংবাদিকদের সামনে মিথ্যা বলতে প্ররোচিত করা হয় বলে একটি সূত্র জানায়।
যেভাবে বদলায় দৃশ্যপট : গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মেয়েটির বাড়িতে উপস্থিত এসআই রাহাত খান সাংবাদিকদের জানান, উচ্চ আদালতের একটি নির্দেশনা পুলিশ পেয়েছে। তারা এখন মেয়েটির নিরাপত্তা দেবে। মেয়েটিকে থানায় নেওয়া হবে। এরপর পুলিশ মেয়েটির বাড়ি ঘিরে ফেলে এবং তাকে অভয় দেয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নূরুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার আবদুল বাতেন মেয়েটির বাড়িতে উপস্থিত হন। তাঁরা তার সঙ্গে কথা বলেন। পরে মেয়েটিকে কাপাসিয়া থানায় নেওয়া হয়। আজ সকালে তাকে আদালতে হাজির করা হবে বলে জানা গেছে।
জেলা প্রশাসক নূরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ঘটনাটি শুনে আমরা মেয়েটির বাড়িতে গিয়েছি এবং ধর্ষণ সম্পর্কে সে লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং নির্যাতিতাকে আশ্বস্ত করে বলতে চাই, এ ঘটনার নায়ক কাজলসহ অন্যদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে।'
পুলিশ সুপার আবদুল বাতেন বলেন, 'এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের একটি নির্দেশনা পেয়েছি। আমি ও জেলা প্রশাসক সশরীরে গিয়ে মেয়েটির ওপর যে নির্যাতন চালানো হয়েছে তা শুনেছি। সে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে এখন আর কোনো সমস্যা নেই।'
বন্ধ হয়নি অপতৎপরতা : নির্যাতিতা ও তার প্রতিবেশীরা জানায়, গতকাল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মহিলা মেম্বার ও থানা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক কানিজ ফাতেমা রুহিতা বড়টেক গ্রামে মেয়েটির বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের কাছে সত্য প্রকাশ করে দেওয়ায় মেয়েটিকে ধমকাতে থাকেন। এক পর্যায়ে তিনি তাকে জোর করে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে এলাকাবাসীর বাধার মুখে সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়। দুপুর ২টার দিকে রুহিতা এলাকা ছাড়েন। এ সময় তিনি উচ্চৈঃস্বরে নানা ভাষায় গালমন্দ করেন এবং ভবিষ্যতে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। ঘটনাস্থলে থাকা সংবাদকর্মীদেরও মোবাইল ফোনে ছাত্রলীগকর্মী পরিচয়ে একের পর এক হুমকি দেওয়া হয়।
ওই সময় কাজলের সহযোগী যুবলীগ নেতা আসাদুজ্জামান আসাদের ভাই ফারুক মেয়েটির বাড়িতে যান। বড়টেক গ্রামের প্রবেশপথ থেকেই তাঁদের নিজস্ব বাহিনীর লোকজন নানামুখী হুমকি অব্যাহত রাখে। মোটরসাইকেল দিয়ে রাস্তার মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়ে তারা হুমকি দিতে থাকে। এ অবস্থায় সাংবাদিকরা কাপাসিয়া থানা পুলিশের সহায়তায় সংবাদ সংগ্রহের জন্য নির্যাতিতার বাড়িতে যান। এ সময় আসাদের বড় ভাই ফারুক পুলিশ ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতেই নানা প্রশ্নে জর্জরিত করতে থাকেন মেয়েটির স্বজনদের। পরে আসাদের ভাইকে সরিয়ে দেয় পুলিশ।
কালের কণ্ঠ বিক্রিতে বাধা : কাপাসিয়ায় কালের কণ্ঠ বিক্রিতে কাজল মোল্লার হয়ে বাধা দিয়েছে কিছু ছাত্রলীগ ক্যাডার। গত শনি ও রবিবার কাপাসিয়ার আমরাইদ ও টোক বাজারে পত্রিকা নিয়ে গেলে স্থানীয় ছাত্রলীগ ক্যাডাররা কালের কণ্ঠ বিক্রি করতে বাধা দেয়। স্থানীয় এজেন্ট মোকসোদ আলী জানান, রবিবার সকালে ওই দুই বাজারে পত্রিকা নিয়ে গেলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা কালের কণ্ঠ বিক্রি করতে নিষেধ করে। গ্রাহকরা পত্রিকা নিতে চাইলে নেতারা পত্রিকা কেড়ে নিতে আসেন। এ কারণে ওই এলাকার গ্রাহকরা কালের কণ্ঠ পাননি। এ ব্যাপারে কাপাসিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আমিনুল ইসলাম দর্জি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমি এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে দেখব। ছাত্রলীগের কেউ এ ঘটনায় জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
কালের কণ্ঠের প্রতিবেদকরা গতকাল কাপাসিয়া থানায় গিয়ে কাজল মোল্লা ও তাঁর স্ত্রীর হাতে নির্যাতিত মেয়েটির নিরাপত্তাহীনতা এবং অভিযোগের বিষয়টি জানালেও ব্যবস্থা নেননি ওসি। থানা যুব মহিলা লীগের নেত্রী কানিজ ফাতেমা রুহিতা এদিনও মেয়েটিকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। অব্যাহত ছিল কাজলের ক্যাডারদের ওই বাড়ি পাহারা। তবে বিকেল গড়াতেই বদলে যায় দৃশ্যপট। উচ্চ আদালত দিকনির্দেশনা দেওয়ার পর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার যান মেয়েটির বাড়ি। পুলিশ প্রশাসনের কাছে মেয়েটি কাজল মোল্লার বর্বরতার লোমহর্ষক বর্ণনা দেয়। গতকাল বিকেল থেকেই মেয়েটি পুলিশ হেফাজতে।
প্রশাসনের কর্তারা এখন বলছেন, কালের কণ্ঠের সংবাদই সঠিক। ঘৃণিত অপরাধের জন্য মেয়েটির ওপর নির্যাতনকারী কাজল মোল্লা ও তাঁর স্ত্রীসহ অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। তবে গতকাল রাত পর্যন্ত কিশোরী ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। বদলায়নি ওসির বক্তব্য।
এদিকে গতকালও কাপাসিয়ার একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা কালের কণ্ঠকে বলেন, এমন ঘটনায় তাঁরা বিব্রত। তবে কাজলের বিরুদ্ধে তাঁরা ব্যবস্থা নিতে পারছেন না তাঁর প্রবল প্রতাপের কারণে।
পুলিশের টালবাহানা : গতকাল দুপুরে কালের কণ্ঠের প্রতিবেদকসহ কয়েকজন সাংবাদিক কাপাসিয়া থানায় গিয়ে ওসি দেলওয়ার হোসেনকে জানান, মেয়েটি এখন নিরাপত্তাহীনতায় আছে এবং সে অভিযোগ করছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কি না জানতে চাইলে ওসি বলেন, 'আমাদের কাছে কিছু বলে নাই। আর অভিযোগ করলে মামলা হবে ঘটনাস্থল যে থানার আওতায় সেই থানায়।' এক পর্যায়ে নিরাপত্তাহীনতার প্রশ্ন তুললে ওসি মেয়েটির বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে তা পর্যবেক্ষণের আশ্বাস দেন। বিকেল ৩টার দিকে থানার অপারেশন অফিসার এসআই রাহাত খানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ মেয়েটির বাড়িতে যায়। সেখানে সাংবাদিকদের সামনে মেয়েটি তার ওপর পাশবিক নির্যাতনের বর্ণনা দেয়। মেয়েটির বাবাও বিচার দাবি করেন। তবে এসআই রাহাত বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া অভিযোগ গ্রহণ করা যাবে না। ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে মেয়েটির দেওয়া লোমহর্ষক বর্ণনা শুনে হতবাক হন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি দাবি করেন, এমন অভিযোগ আগে পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হতো। মেয়েটি পুলিশের সামনে জানায়, ভয়ভীতি দেখানোর কারণে সে আগে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছে। এ সময় স্থানীয় লোকজনও মেয়েটিকে সাহস জোগায়। বাধ্য হয়ে পুলিশ তার জবানবন্দি মোবাইলে রেকর্ড করে এবং বিষয়টি সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন মহলকে অবহিত করে। এ সময় মেয়েটি বলে, 'এ নির্যাতনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আমি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। আর কত জায়গায় লজ্জাজনক এ ঘটনার বিচার দেব। এর চেয়ে আমার আত্মহত্যা করাও ভালো ছিল।'
গতকাল রাতে কাপাসিয়া থানার ওসি দেলওয়ার হোসেন আবারও ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহের উদ্দেশ্যে ধর্ষণের বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান। কালের কণ্ঠের পক্ষ থেকে সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'মেয়েটি কাজলের স্ত্রীর নির্যাতনের কথা বলেছে। ধর্ষণের কথা বলেনি!'
এদিকে মেয়েটিকে হেফাজতে নেওয়ার পরও কাজল মোল্লাকে বাঁচাতে ওসি দেলওয়ার হোসেনের তৎপরতা অব্যাহত ছিল। গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত মেয়েটিকে অর্থের প্রলোভন ও ভয় দেখিয়ে আদালত ও সাংবাদিকদের সামনে মিথ্যা বলতে প্ররোচিত করা হয় বলে একটি সূত্র জানায়।
যেভাবে বদলায় দৃশ্যপট : গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মেয়েটির বাড়িতে উপস্থিত এসআই রাহাত খান সাংবাদিকদের জানান, উচ্চ আদালতের একটি নির্দেশনা পুলিশ পেয়েছে। তারা এখন মেয়েটির নিরাপত্তা দেবে। মেয়েটিকে থানায় নেওয়া হবে। এরপর পুলিশ মেয়েটির বাড়ি ঘিরে ফেলে এবং তাকে অভয় দেয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নূরুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার আবদুল বাতেন মেয়েটির বাড়িতে উপস্থিত হন। তাঁরা তার সঙ্গে কথা বলেন। পরে মেয়েটিকে কাপাসিয়া থানায় নেওয়া হয়। আজ সকালে তাকে আদালতে হাজির করা হবে বলে জানা গেছে।
জেলা প্রশাসক নূরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ঘটনাটি শুনে আমরা মেয়েটির বাড়িতে গিয়েছি এবং ধর্ষণ সম্পর্কে সে লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং নির্যাতিতাকে আশ্বস্ত করে বলতে চাই, এ ঘটনার নায়ক কাজলসহ অন্যদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে।'
পুলিশ সুপার আবদুল বাতেন বলেন, 'এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের একটি নির্দেশনা পেয়েছি। আমি ও জেলা প্রশাসক সশরীরে গিয়ে মেয়েটির ওপর যে নির্যাতন চালানো হয়েছে তা শুনেছি। সে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে এখন আর কোনো সমস্যা নেই।'
বন্ধ হয়নি অপতৎপরতা : নির্যাতিতা ও তার প্রতিবেশীরা জানায়, গতকাল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মহিলা মেম্বার ও থানা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক কানিজ ফাতেমা রুহিতা বড়টেক গ্রামে মেয়েটির বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের কাছে সত্য প্রকাশ করে দেওয়ায় মেয়েটিকে ধমকাতে থাকেন। এক পর্যায়ে তিনি তাকে জোর করে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে এলাকাবাসীর বাধার মুখে সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়। দুপুর ২টার দিকে রুহিতা এলাকা ছাড়েন। এ সময় তিনি উচ্চৈঃস্বরে নানা ভাষায় গালমন্দ করেন এবং ভবিষ্যতে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। ঘটনাস্থলে থাকা সংবাদকর্মীদেরও মোবাইল ফোনে ছাত্রলীগকর্মী পরিচয়ে একের পর এক হুমকি দেওয়া হয়।
ওই সময় কাজলের সহযোগী যুবলীগ নেতা আসাদুজ্জামান আসাদের ভাই ফারুক মেয়েটির বাড়িতে যান। বড়টেক গ্রামের প্রবেশপথ থেকেই তাঁদের নিজস্ব বাহিনীর লোকজন নানামুখী হুমকি অব্যাহত রাখে। মোটরসাইকেল দিয়ে রাস্তার মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়ে তারা হুমকি দিতে থাকে। এ অবস্থায় সাংবাদিকরা কাপাসিয়া থানা পুলিশের সহায়তায় সংবাদ সংগ্রহের জন্য নির্যাতিতার বাড়িতে যান। এ সময় আসাদের বড় ভাই ফারুক পুলিশ ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতেই নানা প্রশ্নে জর্জরিত করতে থাকেন মেয়েটির স্বজনদের। পরে আসাদের ভাইকে সরিয়ে দেয় পুলিশ।
কালের কণ্ঠ বিক্রিতে বাধা : কাপাসিয়ায় কালের কণ্ঠ বিক্রিতে কাজল মোল্লার হয়ে বাধা দিয়েছে কিছু ছাত্রলীগ ক্যাডার। গত শনি ও রবিবার কাপাসিয়ার আমরাইদ ও টোক বাজারে পত্রিকা নিয়ে গেলে স্থানীয় ছাত্রলীগ ক্যাডাররা কালের কণ্ঠ বিক্রি করতে বাধা দেয়। স্থানীয় এজেন্ট মোকসোদ আলী জানান, রবিবার সকালে ওই দুই বাজারে পত্রিকা নিয়ে গেলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা কালের কণ্ঠ বিক্রি করতে নিষেধ করে। গ্রাহকরা পত্রিকা নিতে চাইলে নেতারা পত্রিকা কেড়ে নিতে আসেন। এ কারণে ওই এলাকার গ্রাহকরা কালের কণ্ঠ পাননি। এ ব্যাপারে কাপাসিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আমিনুল ইসলাম দর্জি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমি এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে দেখব। ছাত্রলীগের কেউ এ ঘটনায় জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
No comments