ভোগান্তির নতুন নাম কালুরঘাট ফেরি by মিঠুন চৌধুরী
‘জোয়ার এলেই কোমরপানি ডিঙিয়ে রাস্তায় উঠতে হয়। ছোট কোনো গাড়ি জোয়ারের সময় ফেরিতে উঠতেও চায় না। আগে শুধু রাস্তাই খারাপ ছিল, এখন সেতুও বন্ধ। নগরের সবচেয়ে কাছের উপজেলায় পৌঁছাতেই এখন সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয়।’
কালুরঘাট সেতু বন্ধ থাকায় কর্ণফুলী নদী পেরোনোর দুর্ভোগের কথা এভাবেই বর্ণনা করেন এই পথের নিয়মিত যাত্রী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আশফাক আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘জোয়ারের সময় নদীর দুই পারে শত শত যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকে। চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। সেতু বন্ধ থাকায় দুই দিকে গণপরিবহনের সংখ্যাও কমে গেছে।’
প্রায় ৮২ বছরের পুরোনো কালুরঘাট রেলসেতুটি সংস্কারকাজের জন্য গত শনিবার থেকে বন্ধ করে দেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। যাত্রী ও যানবাহন পারাপারের জন্য সেতুর নিচে কর্ণফুলী নদীতে তিনটি ফেরি চালু করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। কিন্তু জোয়ার এলেই ডুবে যায় দুই পারের জেটিঘাট ও বেইলি সেতু। যাত্রী পারাপারের জন্য স্থানীয় উদ্যোগে চালু হয়েছে নৌকা। কিন্তু নৌকাগুলোও অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সেতুটি মেরামতে তিন মাসের মতো সময় লাগবে। কিন্তু সওজ কর্মকর্তারা বলছেন, এত দীর্ঘ সময় সেতু বন্ধ থাকলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তিই শুধু বাড়বে।
গত শনিবারে সেতুটি বন্ধের পর থেকে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রতিদিনই দুপুরে জোয়ারে ডুবেছে কর্ণফুলীর দুই পারের জেটিঘাট ও বেইলি সেতু। গত মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জোয়ারের পানিতে ফেরিতে ওঠার সংযোগ সড়কও তলিয়ে গেছে। সাধারণ যাত্রীরা হাঁটুপানি পেরিয়ে বেইলি সেতু পার হচ্ছেন। জোয়ারের কারণে দীর্ঘক্ষণ ফেরি চলাচল না করায় অপেক্ষমাণ বিভিন্ন ধরনের শ খানেক যানবাহন।
ফেরিতে নদী পেরিয়ে আসা মোটরসাইকেলগুলো প্রায় পুরোটাই ডুবে গেছে জোয়ারের পানিতে। সিএনজিচালিত অটোরিকশাগুলো অর্ধেক ডুবন্ত অবস্থায় অনেক কষ্টে মূল সড়কে উঠলেও এরপর আর চালু করা যাচ্ছিল না। শহরমুখী গণপরিবহন কমে যাওয়ায় মালপত্র নিয়ে যাত্রীরা হেঁটে যাচ্ছেন কাপ্তাই রাস্তার মাথা পর্যন্ত। দুয়েকটি টেম্পো ও হিউম্যান হলার চলাচল করলেও তা যাত্রী সংখ্যার তুলনায় অপ্রতুল।
বোয়ালখালীর পূর্ব গোমদণ্ডীর বাসিন্দা মধুসূদন ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, ‘কালুরঘাট সেতুটি এমনিতেই মেয়াদোত্তীর্ণ। এত বছরেও একটি নতুন সেতু নির্মাণ হলো না। এখন মেরামতের কারণে আমরা চরম দুর্ভোগে পড়েছি। কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে হেঁটে যেতে হয় সেতু পর্যন্ত। ওই পারে গিয়ে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হয় দীর্ঘক্ষণ। বোয়ালখালীবাসীর দুঃখ দেখার যেন কেউ নেই।’
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের কর্ণফুলী নদীর ওপর ১৯৩০ সালে কালুরঘাট সেতুটি স্থাপন করা হয়। এর আগে ১৯৮৬, ১৯৯৭ ও সর্বশেষ ২০০৪ সালে তিন দফায় কালুরঘাট সেতুর সংস্কারকাজ করা হয়েছিল। এরপর আর মেরামত না হওয়ায় সেতুটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ জন্য রেলওয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি, ১৫ মার্চ ও ২ মে তিনবার সেতুটি মেরামতের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু বিভাগ। কিন্তু ফেরি চালু করতে না পারায় তখন সংস্কারকাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু বিভাগের প্রকৌশলী আবদুল জলিল প্রথম আলোকে বলেন, ‘মোট ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম-দোহাজারি লাইনে কালুরঘাট সেতুর কয়েকটি স্প্যানের অ্যালাইনমেন্ট, গেজ ও লেভেল মেরামতসহ আনুষঙ্গিক কাজ করা হবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে পুরো সংস্কারকাজ শেষ করতে তিন মাসের মতো সময় লাগতে পারে। আমরা চেষ্টা করছি যত দ্রুত সংস্কারকাজ শেষ করা যায়।’ সড়ক ও জনপথ বিভাগ চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী রানা প্রিয় বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেতুর বিকল্প কখনোই ফেরি হতে পারে না। জোয়ার থেকে রেহাই পেতে জেটিঘাট ও সংযোগ সড়ক বেশি উঁচু করলে ভাটার সময় ছোট গাড়ি সেতুতে উঠতে পারবে না। তাই সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার বিষয়টি মাথায় রেখে জেটিঘাট করা হয়েছে। ভারী যানবাহন তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু ব্যবহার করলে যানবাহনের চাপ কমবে। যাত্রীরাও সহজে পারাপার হতে পারবেন। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে মেরামতকাজ শেষ করার অনুরোধ করেছি। তিন মাস সেতু বন্ধ থাকলে জনগণের ভোগান্তিই শুধু বাড়বে।’
প্রায় ৮২ বছরের পুরোনো কালুরঘাট রেলসেতুটি সংস্কারকাজের জন্য গত শনিবার থেকে বন্ধ করে দেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। যাত্রী ও যানবাহন পারাপারের জন্য সেতুর নিচে কর্ণফুলী নদীতে তিনটি ফেরি চালু করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। কিন্তু জোয়ার এলেই ডুবে যায় দুই পারের জেটিঘাট ও বেইলি সেতু। যাত্রী পারাপারের জন্য স্থানীয় উদ্যোগে চালু হয়েছে নৌকা। কিন্তু নৌকাগুলোও অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সেতুটি মেরামতে তিন মাসের মতো সময় লাগবে। কিন্তু সওজ কর্মকর্তারা বলছেন, এত দীর্ঘ সময় সেতু বন্ধ থাকলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তিই শুধু বাড়বে।
গত শনিবারে সেতুটি বন্ধের পর থেকে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রতিদিনই দুপুরে জোয়ারে ডুবেছে কর্ণফুলীর দুই পারের জেটিঘাট ও বেইলি সেতু। গত মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জোয়ারের পানিতে ফেরিতে ওঠার সংযোগ সড়কও তলিয়ে গেছে। সাধারণ যাত্রীরা হাঁটুপানি পেরিয়ে বেইলি সেতু পার হচ্ছেন। জোয়ারের কারণে দীর্ঘক্ষণ ফেরি চলাচল না করায় অপেক্ষমাণ বিভিন্ন ধরনের শ খানেক যানবাহন।
ফেরিতে নদী পেরিয়ে আসা মোটরসাইকেলগুলো প্রায় পুরোটাই ডুবে গেছে জোয়ারের পানিতে। সিএনজিচালিত অটোরিকশাগুলো অর্ধেক ডুবন্ত অবস্থায় অনেক কষ্টে মূল সড়কে উঠলেও এরপর আর চালু করা যাচ্ছিল না। শহরমুখী গণপরিবহন কমে যাওয়ায় মালপত্র নিয়ে যাত্রীরা হেঁটে যাচ্ছেন কাপ্তাই রাস্তার মাথা পর্যন্ত। দুয়েকটি টেম্পো ও হিউম্যান হলার চলাচল করলেও তা যাত্রী সংখ্যার তুলনায় অপ্রতুল।
বোয়ালখালীর পূর্ব গোমদণ্ডীর বাসিন্দা মধুসূদন ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, ‘কালুরঘাট সেতুটি এমনিতেই মেয়াদোত্তীর্ণ। এত বছরেও একটি নতুন সেতু নির্মাণ হলো না। এখন মেরামতের কারণে আমরা চরম দুর্ভোগে পড়েছি। কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে হেঁটে যেতে হয় সেতু পর্যন্ত। ওই পারে গিয়ে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হয় দীর্ঘক্ষণ। বোয়ালখালীবাসীর দুঃখ দেখার যেন কেউ নেই।’
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের কর্ণফুলী নদীর ওপর ১৯৩০ সালে কালুরঘাট সেতুটি স্থাপন করা হয়। এর আগে ১৯৮৬, ১৯৯৭ ও সর্বশেষ ২০০৪ সালে তিন দফায় কালুরঘাট সেতুর সংস্কারকাজ করা হয়েছিল। এরপর আর মেরামত না হওয়ায় সেতুটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ জন্য রেলওয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি, ১৫ মার্চ ও ২ মে তিনবার সেতুটি মেরামতের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু বিভাগ। কিন্তু ফেরি চালু করতে না পারায় তখন সংস্কারকাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু বিভাগের প্রকৌশলী আবদুল জলিল প্রথম আলোকে বলেন, ‘মোট ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম-দোহাজারি লাইনে কালুরঘাট সেতুর কয়েকটি স্প্যানের অ্যালাইনমেন্ট, গেজ ও লেভেল মেরামতসহ আনুষঙ্গিক কাজ করা হবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে পুরো সংস্কারকাজ শেষ করতে তিন মাসের মতো সময় লাগতে পারে। আমরা চেষ্টা করছি যত দ্রুত সংস্কারকাজ শেষ করা যায়।’ সড়ক ও জনপথ বিভাগ চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী রানা প্রিয় বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেতুর বিকল্প কখনোই ফেরি হতে পারে না। জোয়ার থেকে রেহাই পেতে জেটিঘাট ও সংযোগ সড়ক বেশি উঁচু করলে ভাটার সময় ছোট গাড়ি সেতুতে উঠতে পারবে না। তাই সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার বিষয়টি মাথায় রেখে জেটিঘাট করা হয়েছে। ভারী যানবাহন তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু ব্যবহার করলে যানবাহনের চাপ কমবে। যাত্রীরাও সহজে পারাপার হতে পারবেন। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে মেরামতকাজ শেষ করার অনুরোধ করেছি। তিন মাস সেতু বন্ধ থাকলে জনগণের ভোগান্তিই শুধু বাড়বে।’
No comments