বিশেষ সাক্ষাৎকার : বদরুদ্দীন উমর-দুর্নীতিতে ভরে গেছে সব জায়গা
সমকালীন রাজনীতি ও প্রাসঙ্গিক বিষয়ে কালের কণ্ঠের সঙ্গে কথা বলেছেন বিশিষ্ট লেখক ও রাজনীতিবিদ বদরুদ্দীন উমর। সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন মোস্তফা হোসেইন কালের কণ্ঠ : সরকারি দল ও বিরোধী দল এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যু নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচনকালীন কোন পদ্ধতির সরকার প্রয়োজন বলে আপনি মনে করেন?
বদরুদ্দীন উমর : এ বিষয়ে আমি একটি পত্রিকায় লিখেছি। বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হলো। তার আগে এমন পদ্ধতির সরকার আর কোথাও হয়নি। সব দেশেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় নির্বাচিত সরকারের অধীনেই। তবে সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন কমিশন সেই নির্বাচন পরিচালনা করে থাকে। সাধারণ কথা হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন সেখানে নির্দলীয় সংস্থা হিসেবে তাদের দায়িত্ব পালন করে। আশির দশকে আমাদের দেশে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় শাসন কাঠামোর মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। যার ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি আসে। সেখানে ১৫ দলীয় জোটে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যেমন সিপিবি ছিল, তেমনি বিএনপির নেতৃত্বাধীন সাতদলীয় জোটের মধ্যেও কমিউনিস্ট লীগ ছিল। সবার মূল লক্ষ্য ছিল এরশাদকে হটানো। ওই সময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ১৫ দলীয় জোট কিংবা বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন সাতদলীয় জোট যেমন এরশাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছে, তেমনি জোটগতভাবেও তাদের মধ্যে বিরোধিতা ছিল। যার দ্বারা প্রমাণ হলো, দুই জোটের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়। তখন এরশাদবিরোধী আন্দোলন এক দফার আন্দোলনে পরিণত হয়। একপর্যায়ে নির্বাচন কার অধীনে হবে, তা নিয়ে সংকট তৈরি হলো। এই সংকট কঠিনতর হতো যদি জনগণের অভ্যুত্থান না হতো। ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-আন্দোলন কিংবা একাত্তরের মার্চের আন্দোলনের মতো ওই আন্দোলন কিন্তু শহর-গ্রাম সর্বত্র হয়নি। এটা ছিল নাগরিক আন্দোলন। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এর সমাধান হলো। সমঝোতা হলো জোট দুটির মধ্যে। সেখানে সামরিক বাহিনীরও একটি ভূমিকা ছিল। জেনারেল নুরউদ্দিনের সঙ্গে দুই জোটেরই কথা হতো। ঐক্য হলো প্রধান বিচারপতিকে নেতৃত্ব দিয়ে সরকার গঠিত হবে নির্বাচনের জন্য। ১৯৯৬ সালে এসেও সংকট থেকে গেল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে- এটা তো কোনো আইন হয়নি। এই সুযোগ নিল বিএনপি। প্রতিষ্ঠিত সরকার হিসেবে তারা নির্বাচন করে নিল। আওয়ামী লীগের দাবি ছিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে হবে। কিন্তু বিএনপি নির্বাচন করে নিল। আওয়ামী লীগ বয়কট করল। বিএনপির বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হলো। বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন করল। এটা বাংলাদেশের রাজনীতির সংকটের প্রতিফলন। বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভেদ থাকলেও এমন সংকট নেই। নির্বাচন কমিশন যেভাবে নির্বাচন পরিচালনা করে, তারা সেটা মেনে নেয়।
কালের কণ্ঠ : পরেও তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়েছে।
বদরুদ্দীন উমর : ২০০১ সালেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করে। কিন্তু তারাও একপর্যায়ে জনপ্রিয়তা হারায়। জনগণ আবার বিক্ষুব্ধ হলো। দেখা গেল বিচারকদের মধ্যে যিনি বিএনপির পক্ষের হবেন, তাঁকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করার চেষ্টা করা হলো। সেই চেষ্টায় তারা বিচারকের চাকরির বয়সসীমাই বাড়িয়ে দেয়। আওয়ামী লীগ মেনে নেয়নি সেই চেষ্টা। তারা আবার আন্দোলন শুরু করে। ব্যাপক সংঘর্ষ হলো তখন। সামরিক বাহিনী তখন ক্ষমতা দখল করল।
কালের কণ্ঠ : ওই সময় তো বেসামরিক সরকারই ক্ষমতায় ছিল।
বদরুদ্দীন উমর : এটা ছিল অন্যভাবে। বাংলাদেশে জিয়া আর এরশাদও ক্ষমতা দখল করেছিলেন। এটা ছিল ভিন্ন রকম। সামরিক বাহিনীর অধিনায়করা দেখলেন, আগের মতো ক্ষমতা গ্রহণ করলে অসুবিধা হবে। কায়েমি স্বার্থ এখানে জড়িত আছে। জাতিসংঘ শান্তিবাহিনীতে বাংলাদেশের অনেক সৈন্য কাজ করছে। সেখানে আবার যেসব দেশে সামরিক বাহিনী ক্ষমতায় থাকে, সেসব দেশ থেকে সৈন্য নিয়োগ দেওয়া হয় না। এমন পরিস্থিতিতে বেসামরিক ব্যক্তিকে শিখণ্ডি হিসেবে দাঁড় করিয়ে দেয়। ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দিন সরকার প্রতিষ্ঠা হয়। দীর্ঘ দুই বছর তারা ক্ষমতায় থাকে। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়। ক্ষমতায় এলো আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট।
কালের কণ্ঠ : সংকট তো কাটেনি তার পরও।
বদরুদ্দীন উমর : সংকট কাটেনি। আওয়ামী লীগ বলছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজন নেই। নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশনই যথেষ্ট। বললেই তো হয় না। এটা মেনে নিচ্ছে না বিএনপি। আসলে যে সংকটের গর্ভে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্ম, সেই সংকট যত দিন না কাটবে, তত দিন তাকে বাদ দেওয়ায় মুশকিল আছে। কারণ একদলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হবে- এমনটা দেখা যাচ্ছে না। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে যে বিরোধ আছে, তাতে উভয় দল একমত পোষণ করবে না। ১৯৯৬ সালে বিএনপি যা বলেছে, আওয়ামী লীগ এখন তা-ই বলছে।
কালের কণ্ঠ : আওয়ামী লীগ চাইছে না কেন?
বদরুদ্দীন উমর : সরকারি দলের বাইরের কাউকে আওয়ামী লীগ মিটিং-মিছিল করতে দিচ্ছে না। এই যে মুক্তাঙ্গন ছিল সেখানে এখন মিটিং করা যায় না। বন্ধ করে দিয়েছে। মিটিং-মিছিল করতে গেলে লাঠিপেটা করা হয়। এটা করছে ক্ষমতা হারানোর ভয়ে। প্রশ্ন হচ্ছে, ক্ষমতা হারানোর এত ভয় যাদের, তারা কি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে দেবে? তাদের জনপ্রিয়তা এখন হ্রাস পেয়েছে। তারা বুঝতে পারছে, স্বাভাবিক নির্বাচন হলে, অর্থাৎ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাদের পক্ষে ক্ষমতায় আসা সম্ভব হবে না। মনে রাখা দরকার, যে দ্বন্দ্বের কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্ম, সেই দ্বন্দ্ব শেষ না হওয়া পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তা থাকবে।
কালের কণ্ঠ : প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাব দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে বিএনপিকেও থাকার জন্য। এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কী?
বদরুদ্দীন উমর : এটা হয় না। প্রশাসনকে এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যা আওয়ামী লীগের প্রশাসন হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের প্রধান সরকারপ্রধান এবং বিএনপি থেকে মন্ত্রী থাকলেও তা সম্ভব হবে না। কোয়ালিশন সরকার থাকলেও সেখানে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব হবে না।
কালের কণ্ঠ : বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ। এটা কি অপরিহার্য ছিল?
বদরুদ্দীন উমর : শুধু বিদ্যুৎ কেন, সব জিনিসের দামই তো বাড়ছে। বলা হয় আন্তর্জাতিক বাজারের কথা। প্রশ্ন হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বাড়লে এর প্রভাব পড়তে পারে। কিন্তু দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পেছনে যে দুর্নীতি কাজ করে, দুর্নীতি যে কিভাবে হচ্ছে, তা তো দৈনিক পত্রিকায় প্রতিনিয়ত প্রকাশিত হচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির ব্যাপারে সরকারের সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা নেই। এখন পর্যন্ত তারা কয়লানীতি করতে পারল না। কয়লা ব্যবহারের ক্ষেত্রেও কোনো নীতিমালা নেই। জ্বালানি উপদেষ্টা, জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এলোপাতাড়ি কথাবার্তা বলছেন। এই সরকারের আমলে অনেকবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। রেন্টাল করে বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়। দুর্নীতি তো বিদ্যুৎ বিভাগের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করছে। বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধান করতে হলে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে হবে।
কালের কণ্ঠ : দুর্নীতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। বিশ্বব্যাংক তো আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে কিছু ব্যক্তিকে। পেছনের শক্তিটা কোথায় টিকে থাকা অভিযুক্তদের?
বদরুদ্দীন উমর : দুর্নীতিবাজরা টিকে থাকে। দুর্নীতিবাজদের সৃষ্টি তো সমাজব্যবস্থার কারণে। দুর্নীতি করে না এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। দুর্নীতির হাত থেকে বাঁচা কঠিন। পুলিশের কথা ভাবুন না। আজকে যে ক্ষমতায় আছে, তার কথা সে শোনে, এটা ঠিক আছে। কিন্তু যখন ক্ষমতা হারাল, অমনি সে ক্ষমতা হারানোদের ধরে পেটাচ্ছে। সরকার পুলিশের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আর দুর্নীতি কে করবে, কে করবে না- তা বোঝা মুশকিল। দুর্নীতি তো সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে। যে সুযোগ পায়, সেই দুর্নীতি করে চলছে। সোনালী ব্যাংক থেকে কোটি কোটি টাকা সরিয়ে ফেলা হলো। অসংখ্য দুর্নীতি হচ্ছে। এগুলো কিন্তু সরকারের একার পক্ষে সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। তবে সবখানে যেমন দুর্নীতিবাজ আছে, তেমনি সবখানেই কিছু ভালো মানুষও আছেন। আওয়ামী লীগেও কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা দুর্নীতি করতে চান না।
কালের কণ্ঠ : এটা থেকে মুক্তির পথ কী?
বদরুদ্দীন উমর : দুর্নীতি থেকে রেহাই পেতে হলে সামাজিক পরিবর্তন প্রয়োজন। মনে রাখতে হবে, দুর্নীতি কিন্তু হঠাৎ করে শুরু হয়নি। ১৯৭২ সাল থেকেই শুরু দুর্নীতির। যেভাবে শাসন চলে আসছে, তাতে লুটপাটের মাধ্যমে ধনিক শ্রেণীর জন্ম হচ্ছে। সামাজিক বিপ্লব ছাড়া দুর্নীতি দূর করা সম্ভব নয়।
কালের কণ্ঠ : পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অশান্ত পরিবেশের পেছনে কী কারণ কাজ করছে বলে আপনি মনে করেন?
বদরুদ্দীন উমর : এর পেছনেও কাজ করছে দুর্নীতি। মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির জন্য পরীক্ষা দিতে হতো। উঠিয়ে দেওয়া হলো। উদ্দেশ্য কী? ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে সেখানে কিছু করাই উদ্দেশ্য। ভিকারুননিসা স্কুলে ভর্তির ব্যাপারটা ভাবুন। এমন সব লোক সেখানে দুর্নীতি করছে, যা ভাবা যায় না। বুয়েটের উপাচার্যের বিরুদ্ধে ছাত্র-শিক্ষক সব এক হয়ে গেছেন। বুয়েট দুর্নীতিমুক্ত ছিল। সে করেছে। বসে আছে। প্রধানমন্ত্রী-শিক্ষামন্ত্রী খুঁটি হিসেবে কাজ করছেন তার পক্ষে। বুর্জোয়া শাসন থাকার পরও এত দুর্নীতি পৃথিবীর অন্য দেশে নেই। ইংল্যান্ড, ভারত বুর্জোয়া সরকারের অধীনে চলে। এমনকি পাকিস্তানেও সরকার আছে। ওসব স্থানে কিন্তু এত দুর্নীতি হচ্ছে না। এখানে বেগম খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকে এক সোফায় বসাতে পারবেন না। দুর্নীতিতে ভরে গেছে সব জায়গা। একে সভ্য সমাজ বলা যাবে না।
কালের কণ্ঠ : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো। কিভাবে মূল্যায়ন করবেন তাঁর বক্তব্য?
বদরুদ্দীন উমর : বলার ক্ষেত্রে তো তিনি রেকর্ড স্থাপন করেছেন। তাঁর বক্তব্যকে সিরিয়াসলি নেওয়াটা নরমাল নয়। তিনি এক রকম বলছেন, তাঁর দলের আরেকজন আরেক রকম বলছেন। কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই।
কালের কণ্ঠ : রাজনীতিতে তৃতীয় শক্তির প্রয়োজনীয়তার কথা দীর্ঘদিন ধরে বলা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে সেই দুই দলই!
বদরুদ্দীন উমর : তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তির কথা বামপন্থীরা বলছেন। তাঁদের অনেকের সঙ্গেই আমার কথা হয়েছে। তৃতীয় শক্তি বলতে কিছুই নেই। তাঁরা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মতো জোট করতে চান। আওয়ামী লীগ আর বিএনপি হচ্ছে শাসকশ্রেণীর প্রতিভূ। যাঁরা তৃতীয় শক্তির কথা বলছেন, তাঁরা অবশ্যম্ভাবী বর্তমান শাসকশ্রেণীর অংশ। বামদের ঐক্য প্রচেষ্টা নতুন নয়। তাঁরা আগেও চেষ্টা করেছেন। এটা আসলে নির্বাচন সামনে রেখেই হয়। তবে তাঁদের কিছু করতে হলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ঘাড়ে দাঁড়িয়ে করতে হবে। তাদের জোট কী হবে। শূন্য প্লাস শূন্য প্লাস শূন্য তো শূন্যই হয়। এই জোট তো এরশাদকেও ডিঙাতে পারবে না।
কালের কণ্ঠ : বলা হয়ে থাকে বাংলাদেশে বাম ধারার রাজনৈতিক দলগুলো ক্রমেই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। আপনি কী মনে করেন?
বদরুদ্দীন উমর : বামরা সবাই বাম নন। তাঁরা শাসক শ্রেণীর বাম অংশ। প্রান্তিক অংশ। তাঁরা কি নিজেদের দলকে বিলুপ্ত করে ১৯৭৪ সালে বাকশালে যোগদান করেননি? যখন শেখ মুজিবকে হত্যা করা হলো জিয়াউর রহমান পার্টি গঠন করলেন। সিপিবি নামে আবার রাজনীতি শুরু করলেন। তাঁরা শাসক শ্রেণীরই অংশ। বাম রাজনীতিবিদরা নির্বাচনে দাঁড়ালে তাঁদের জামানত হারাতে হয়। এটাই প্রমাণ। পাকিস্তান আমলে যা ছিল, এখন তাও নেই। জনগণের কাছে যাওয়ার ক্ষমতা তাঁদের নেই। জনগণের কাছে যাওয়ার সঠিক নীতি নির্ধারণ করতে পারেননি তাঁরা।
কালের কণ্ঠ : তৃতীয় কোনো অরাজনৈতিক শক্তির উদ্ভব হওয়ার আশঙ্কা আছে কি?
বদরুদ্দীন উমর : ভাশুরের নাম নিতে চায় না। এখানে সামরিক শক্তির কথা আসে। আগেই বলেছি, সামরিক শক্তি সরাসরি ক্ষমতায় আসার আশঙ্কা নেই। ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দিনের মতো হয়তো আসতেও পারে। অনেকের ধারণা, ইউনূসকে আনা হবে। এ জন্যই হাসিনা তাঁর পেছনে লেগেছেন। তাঁরা মনে করছেন, ইউনূস ফ্রন্টলাইনে থাকবেন। এমন হলে কিন্তু মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দীনের সরকারের চেয়ে ওরা বেশিদিন স্থায়ী হবে।
কালের কণ্ঠ : বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের জন্য কোন রাজনৈতিক শক্তি অধিক ভূমিকা রাখতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
বদরুদ্দীন উমর : প্রথম কথা হচ্ছে, যাদের মুক্তির কথা বলা হচ্ছে, তাদের ক্ষমতায় যেতে হবে। কৃষক-শ্রমিকের মুক্তি পেতে হলে তাদের ক্ষমতায় যেতে হবে। এই প্রক্রিয়া যত দিন শুরু না হবে, তত দিন সেই সম্ভাবনা থাকবে না।
কালের কণ্ঠ : আপনাকে ধন্যবাদ।
বদরুদ্দীন উমর : আপনাকেও ধন্যবাদ।
কালের কণ্ঠ : পরেও তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়েছে।
বদরুদ্দীন উমর : ২০০১ সালেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করে। কিন্তু তারাও একপর্যায়ে জনপ্রিয়তা হারায়। জনগণ আবার বিক্ষুব্ধ হলো। দেখা গেল বিচারকদের মধ্যে যিনি বিএনপির পক্ষের হবেন, তাঁকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করার চেষ্টা করা হলো। সেই চেষ্টায় তারা বিচারকের চাকরির বয়সসীমাই বাড়িয়ে দেয়। আওয়ামী লীগ মেনে নেয়নি সেই চেষ্টা। তারা আবার আন্দোলন শুরু করে। ব্যাপক সংঘর্ষ হলো তখন। সামরিক বাহিনী তখন ক্ষমতা দখল করল।
কালের কণ্ঠ : ওই সময় তো বেসামরিক সরকারই ক্ষমতায় ছিল।
বদরুদ্দীন উমর : এটা ছিল অন্যভাবে। বাংলাদেশে জিয়া আর এরশাদও ক্ষমতা দখল করেছিলেন। এটা ছিল ভিন্ন রকম। সামরিক বাহিনীর অধিনায়করা দেখলেন, আগের মতো ক্ষমতা গ্রহণ করলে অসুবিধা হবে। কায়েমি স্বার্থ এখানে জড়িত আছে। জাতিসংঘ শান্তিবাহিনীতে বাংলাদেশের অনেক সৈন্য কাজ করছে। সেখানে আবার যেসব দেশে সামরিক বাহিনী ক্ষমতায় থাকে, সেসব দেশ থেকে সৈন্য নিয়োগ দেওয়া হয় না। এমন পরিস্থিতিতে বেসামরিক ব্যক্তিকে শিখণ্ডি হিসেবে দাঁড় করিয়ে দেয়। ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দিন সরকার প্রতিষ্ঠা হয়। দীর্ঘ দুই বছর তারা ক্ষমতায় থাকে। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়। ক্ষমতায় এলো আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট।
কালের কণ্ঠ : সংকট তো কাটেনি তার পরও।
বদরুদ্দীন উমর : সংকট কাটেনি। আওয়ামী লীগ বলছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজন নেই। নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশনই যথেষ্ট। বললেই তো হয় না। এটা মেনে নিচ্ছে না বিএনপি। আসলে যে সংকটের গর্ভে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্ম, সেই সংকট যত দিন না কাটবে, তত দিন তাকে বাদ দেওয়ায় মুশকিল আছে। কারণ একদলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হবে- এমনটা দেখা যাচ্ছে না। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে যে বিরোধ আছে, তাতে উভয় দল একমত পোষণ করবে না। ১৯৯৬ সালে বিএনপি যা বলেছে, আওয়ামী লীগ এখন তা-ই বলছে।
কালের কণ্ঠ : আওয়ামী লীগ চাইছে না কেন?
বদরুদ্দীন উমর : সরকারি দলের বাইরের কাউকে আওয়ামী লীগ মিটিং-মিছিল করতে দিচ্ছে না। এই যে মুক্তাঙ্গন ছিল সেখানে এখন মিটিং করা যায় না। বন্ধ করে দিয়েছে। মিটিং-মিছিল করতে গেলে লাঠিপেটা করা হয়। এটা করছে ক্ষমতা হারানোর ভয়ে। প্রশ্ন হচ্ছে, ক্ষমতা হারানোর এত ভয় যাদের, তারা কি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে দেবে? তাদের জনপ্রিয়তা এখন হ্রাস পেয়েছে। তারা বুঝতে পারছে, স্বাভাবিক নির্বাচন হলে, অর্থাৎ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাদের পক্ষে ক্ষমতায় আসা সম্ভব হবে না। মনে রাখা দরকার, যে দ্বন্দ্বের কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্ম, সেই দ্বন্দ্ব শেষ না হওয়া পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তা থাকবে।
কালের কণ্ঠ : প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাব দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে বিএনপিকেও থাকার জন্য। এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কী?
বদরুদ্দীন উমর : এটা হয় না। প্রশাসনকে এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যা আওয়ামী লীগের প্রশাসন হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের প্রধান সরকারপ্রধান এবং বিএনপি থেকে মন্ত্রী থাকলেও তা সম্ভব হবে না। কোয়ালিশন সরকার থাকলেও সেখানে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব হবে না।
কালের কণ্ঠ : বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ। এটা কি অপরিহার্য ছিল?
বদরুদ্দীন উমর : শুধু বিদ্যুৎ কেন, সব জিনিসের দামই তো বাড়ছে। বলা হয় আন্তর্জাতিক বাজারের কথা। প্রশ্ন হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বাড়লে এর প্রভাব পড়তে পারে। কিন্তু দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পেছনে যে দুর্নীতি কাজ করে, দুর্নীতি যে কিভাবে হচ্ছে, তা তো দৈনিক পত্রিকায় প্রতিনিয়ত প্রকাশিত হচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির ব্যাপারে সরকারের সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা নেই। এখন পর্যন্ত তারা কয়লানীতি করতে পারল না। কয়লা ব্যবহারের ক্ষেত্রেও কোনো নীতিমালা নেই। জ্বালানি উপদেষ্টা, জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এলোপাতাড়ি কথাবার্তা বলছেন। এই সরকারের আমলে অনেকবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। রেন্টাল করে বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়। দুর্নীতি তো বিদ্যুৎ বিভাগের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করছে। বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধান করতে হলে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াতে হবে।
কালের কণ্ঠ : দুর্নীতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। বিশ্বব্যাংক তো আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে কিছু ব্যক্তিকে। পেছনের শক্তিটা কোথায় টিকে থাকা অভিযুক্তদের?
বদরুদ্দীন উমর : দুর্নীতিবাজরা টিকে থাকে। দুর্নীতিবাজদের সৃষ্টি তো সমাজব্যবস্থার কারণে। দুর্নীতি করে না এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। দুর্নীতির হাত থেকে বাঁচা কঠিন। পুলিশের কথা ভাবুন না। আজকে যে ক্ষমতায় আছে, তার কথা সে শোনে, এটা ঠিক আছে। কিন্তু যখন ক্ষমতা হারাল, অমনি সে ক্ষমতা হারানোদের ধরে পেটাচ্ছে। সরকার পুলিশের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আর দুর্নীতি কে করবে, কে করবে না- তা বোঝা মুশকিল। দুর্নীতি তো সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে। যে সুযোগ পায়, সেই দুর্নীতি করে চলছে। সোনালী ব্যাংক থেকে কোটি কোটি টাকা সরিয়ে ফেলা হলো। অসংখ্য দুর্নীতি হচ্ছে। এগুলো কিন্তু সরকারের একার পক্ষে সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। তবে সবখানে যেমন দুর্নীতিবাজ আছে, তেমনি সবখানেই কিছু ভালো মানুষও আছেন। আওয়ামী লীগেও কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা দুর্নীতি করতে চান না।
কালের কণ্ঠ : এটা থেকে মুক্তির পথ কী?
বদরুদ্দীন উমর : দুর্নীতি থেকে রেহাই পেতে হলে সামাজিক পরিবর্তন প্রয়োজন। মনে রাখতে হবে, দুর্নীতি কিন্তু হঠাৎ করে শুরু হয়নি। ১৯৭২ সাল থেকেই শুরু দুর্নীতির। যেভাবে শাসন চলে আসছে, তাতে লুটপাটের মাধ্যমে ধনিক শ্রেণীর জন্ম হচ্ছে। সামাজিক বিপ্লব ছাড়া দুর্নীতি দূর করা সম্ভব নয়।
কালের কণ্ঠ : পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অশান্ত পরিবেশের পেছনে কী কারণ কাজ করছে বলে আপনি মনে করেন?
বদরুদ্দীন উমর : এর পেছনেও কাজ করছে দুর্নীতি। মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির জন্য পরীক্ষা দিতে হতো। উঠিয়ে দেওয়া হলো। উদ্দেশ্য কী? ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে সেখানে কিছু করাই উদ্দেশ্য। ভিকারুননিসা স্কুলে ভর্তির ব্যাপারটা ভাবুন। এমন সব লোক সেখানে দুর্নীতি করছে, যা ভাবা যায় না। বুয়েটের উপাচার্যের বিরুদ্ধে ছাত্র-শিক্ষক সব এক হয়ে গেছেন। বুয়েট দুর্নীতিমুক্ত ছিল। সে করেছে। বসে আছে। প্রধানমন্ত্রী-শিক্ষামন্ত্রী খুঁটি হিসেবে কাজ করছেন তার পক্ষে। বুর্জোয়া শাসন থাকার পরও এত দুর্নীতি পৃথিবীর অন্য দেশে নেই। ইংল্যান্ড, ভারত বুর্জোয়া সরকারের অধীনে চলে। এমনকি পাকিস্তানেও সরকার আছে। ওসব স্থানে কিন্তু এত দুর্নীতি হচ্ছে না। এখানে বেগম খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকে এক সোফায় বসাতে পারবেন না। দুর্নীতিতে ভরে গেছে সব জায়গা। একে সভ্য সমাজ বলা যাবে না।
কালের কণ্ঠ : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো। কিভাবে মূল্যায়ন করবেন তাঁর বক্তব্য?
বদরুদ্দীন উমর : বলার ক্ষেত্রে তো তিনি রেকর্ড স্থাপন করেছেন। তাঁর বক্তব্যকে সিরিয়াসলি নেওয়াটা নরমাল নয়। তিনি এক রকম বলছেন, তাঁর দলের আরেকজন আরেক রকম বলছেন। কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই।
কালের কণ্ঠ : রাজনীতিতে তৃতীয় শক্তির প্রয়োজনীয়তার কথা দীর্ঘদিন ধরে বলা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে সেই দুই দলই!
বদরুদ্দীন উমর : তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তির কথা বামপন্থীরা বলছেন। তাঁদের অনেকের সঙ্গেই আমার কথা হয়েছে। তৃতীয় শক্তি বলতে কিছুই নেই। তাঁরা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মতো জোট করতে চান। আওয়ামী লীগ আর বিএনপি হচ্ছে শাসকশ্রেণীর প্রতিভূ। যাঁরা তৃতীয় শক্তির কথা বলছেন, তাঁরা অবশ্যম্ভাবী বর্তমান শাসকশ্রেণীর অংশ। বামদের ঐক্য প্রচেষ্টা নতুন নয়। তাঁরা আগেও চেষ্টা করেছেন। এটা আসলে নির্বাচন সামনে রেখেই হয়। তবে তাঁদের কিছু করতে হলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ঘাড়ে দাঁড়িয়ে করতে হবে। তাদের জোট কী হবে। শূন্য প্লাস শূন্য প্লাস শূন্য তো শূন্যই হয়। এই জোট তো এরশাদকেও ডিঙাতে পারবে না।
কালের কণ্ঠ : বলা হয়ে থাকে বাংলাদেশে বাম ধারার রাজনৈতিক দলগুলো ক্রমেই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। আপনি কী মনে করেন?
বদরুদ্দীন উমর : বামরা সবাই বাম নন। তাঁরা শাসক শ্রেণীর বাম অংশ। প্রান্তিক অংশ। তাঁরা কি নিজেদের দলকে বিলুপ্ত করে ১৯৭৪ সালে বাকশালে যোগদান করেননি? যখন শেখ মুজিবকে হত্যা করা হলো জিয়াউর রহমান পার্টি গঠন করলেন। সিপিবি নামে আবার রাজনীতি শুরু করলেন। তাঁরা শাসক শ্রেণীরই অংশ। বাম রাজনীতিবিদরা নির্বাচনে দাঁড়ালে তাঁদের জামানত হারাতে হয়। এটাই প্রমাণ। পাকিস্তান আমলে যা ছিল, এখন তাও নেই। জনগণের কাছে যাওয়ার ক্ষমতা তাঁদের নেই। জনগণের কাছে যাওয়ার সঠিক নীতি নির্ধারণ করতে পারেননি তাঁরা।
কালের কণ্ঠ : তৃতীয় কোনো অরাজনৈতিক শক্তির উদ্ভব হওয়ার আশঙ্কা আছে কি?
বদরুদ্দীন উমর : ভাশুরের নাম নিতে চায় না। এখানে সামরিক শক্তির কথা আসে। আগেই বলেছি, সামরিক শক্তি সরাসরি ক্ষমতায় আসার আশঙ্কা নেই। ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দিনের মতো হয়তো আসতেও পারে। অনেকের ধারণা, ইউনূসকে আনা হবে। এ জন্যই হাসিনা তাঁর পেছনে লেগেছেন। তাঁরা মনে করছেন, ইউনূস ফ্রন্টলাইনে থাকবেন। এমন হলে কিন্তু মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দীনের সরকারের চেয়ে ওরা বেশিদিন স্থায়ী হবে।
কালের কণ্ঠ : বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের জন্য কোন রাজনৈতিক শক্তি অধিক ভূমিকা রাখতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
বদরুদ্দীন উমর : প্রথম কথা হচ্ছে, যাদের মুক্তির কথা বলা হচ্ছে, তাদের ক্ষমতায় যেতে হবে। কৃষক-শ্রমিকের মুক্তি পেতে হলে তাদের ক্ষমতায় যেতে হবে। এই প্রক্রিয়া যত দিন শুরু না হবে, তত দিন সেই সম্ভাবনা থাকবে না।
কালের কণ্ঠ : আপনাকে ধন্যবাদ।
বদরুদ্দীন উমর : আপনাকেও ধন্যবাদ।
No comments