আমার দেখা লিবিয়া by মোঃ সাহিদ হোসেন
১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৮০। ত্রিপোলি বিমানবন্দর থেকে যখন বেরিয়ে এলাম, বাইরে তখন ঝলমলে বিকেল। বিদেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা কম। এত সুন্দর আর আধুনিক বিমানবন্দর আগে দেখিনি। বাংলাদেশ থেকে আমরা শিক্ষকের একটি দল এখানে এসেছি লিবীয় ছাত্রদের ইংরেজি শেখানোর ব্রত আর ডলার উপার্জনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুুটি বাস আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল। বিমানবন্দর থেকে ত্রিপোলি শহর ২০ কিলোমিটার পথ যেতে শরীরী অবসাদের মাঝেও মুগ্ধ হয়ে দেখছি চমৎকার রাস্তাঘাট, ফ্লাইওভার, ঝকঝকে গাড়ি। রাস্তার পাশে একটু দূরে দূরে বিলবোর্ডে শোভা পাচ্ছে কর্নেল গাদ্দাফির ছবি।
ত্রিপোলিতে দু'রাত অবস্থানের পর আমাদের পোস্টিং দিয়ে পাঠিয়ে দিল বাইরে। দু'জন সহকর্মীসহ আমার পোস্টিং হলো ৪০ কিলোমিটার দূরে আজিজিয়ায়। তবে লোকসংখ্যার দিক থেকে তো বটেই, আয়তনের দিক থেকেও আমাদের যে কোনো উপজেলা শহরের চেয়ে ছোট।
পেশাগত প্রয়োজনে ছয় বছরের বেশি সময় লিবিয়ায় কাটিয়েছি। কয়েকটি স্কুল ও টিচার্স ট্রেনিং কলেজে শিক্ষকতা করেছি। দেখেছি মানুষের জীবন, সমাজ-সংস্কৃতি, প্রশাসন, রাষ্ট্রব্যবস্থা, শিক্ষাব্যবস্থা। অচেনা এক দূরদেশে অবস্থানের সময়টুকুতে ঘটে যাওয়া অনেক কিছুই বিস্মৃত হয়েছি। আবার অনেক কিছুই উজ্জ্বল হয়ে আছে স্মৃতিতে।
রাজনীতি বিষয়ে মানুষের মাঝে কোনো আগ্রহ দেখা যায় না। তবে গাদ্দাফি বক্তৃতা-বিবৃতির মাধ্যমে দেশব্যাপী মার্কিন ও ইসরায়েলবিরোধী বিদ্বেষ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। তার সুদীর্ঘ বক্তৃতায় সবচেয়ে বেশিবার উচ্চারিত হয় 'আমরিকিয়া শেতানকাবিরা', অর্থাৎ আমেরিকা হচ্ছে সবচেয়ে বড় শয়তান। এছাড়া ইসরায়েল, মিসর, ব্রিটেন_ এসব 'শয়তান'-এর নামও বলা হয়। লিবিয়াতে কোনো রাজনৈতিক দল নেই। রাজনৈতিক ভিন্নমত পোষণ বা প্রকাশের কোনো সুযোগও নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ায় মন নেই। এর মাঝেও যারা একটু মনোযোগী তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পায়। তাদের মাঝে চাপা অসন্তোষ যে নেই তা বলা যাবে না। তবে যে কোনো ভিন্নমত পোষণকারীর বিরুদ্ধে নিষ্ঠুরতম শাস্তির বিধান রয়েছে। আল ফাতাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু তরুণকে একবার ভিন্নমত প্রকাশের দায়ে আটক করা হলো। তখন ছিল রমজান মাস, সম্ভবত ১৯৮৪ সাল। দেশদ্রোহের দায়ে প্রকাশ্যে আদালতে তরুণদের বিচার করা হলো। সংক্ষিপ্ততম সময়ে অভিযোগ গঠন, বিচারের রায় মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা এবং সঙ্গে সঙ্গে তা কার্যকর করা হলো। এ দৃশ্য টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হলো। পরপর দু'তিন রাত এ রকম ঘটনার পর সৌদি আরবসহ কয়েকটি আরব দেশের প্রতিবাদের মুখে টেলিভিশনে সম্প্রচার বন্ধ করা হয়।
ফিলিস্তিন বিষয়ে মতানৈক্যের কারণে মিসরসহ বেশিরভাগ আরব দেশের সঙ্গে গাদ্দাফির সম্পর্ক খুবই খারাপ। এরকম বৈরিতার মাঝেও এদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন দফতরে মিসরীয়দের উপস্থিতি অনেক বেশি। লিবীয়দের অযোগ্যতার সুযোগ নিয়ে স্বল্প যোগ্যতাসম্পন্ন মিসরীয়রা গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদ দখল করে বসে আছে। একটি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে আততায়ীর গুলিতে নিহত হলেন মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত। উল্লাসে ফেটে পড়ল ত্রিপোলি শহর। আনন্দ মিছিল বের হলো। টেলিভিশনে বারবার নিহত হওয়ার দৃশ্য দেখানো হলো। কারও মৃত্যুতে এমন উল্লাস কখনও দেখিনি।
একবার ডিমের সংকট দেখা দিল। সুপার মার্কেট, কাঁচাবাজার কোথাও ডিম নেই। আমি আর সলিমুল্লাহ ভাই (দুই পরিবার তখন এক বাসায় থাকতাম) কাঁচাবাজারে ঘোরাঘুরি করছি। এক সবজিওয়ালা আমাদের ডেকে জিজ্ঞেস করল, কী চাই? আমরা বললাম, ডিম খুঁজছি। কিছুটা রেগে গিয়ে সবজিওয়ালা বলল, কেন? টমেটো আছে, পেঁয়াজ আছে, মরিচ আছে_ এসব নিয়ে যাও। ডিম খেতেই হবে কেন? বিভিন্ন সময় মাংস, চাল, চিনি, গুঁড়া দুধ, সাবান, ভোজ্যতেলের সংকট দেখেছি। বাচ্চার দুধের জন্য গাড়ি চালিয়ে দেড়শ' কিলোমিটার দূরে যেতে দেখেছি। পরপর আটদিন লাইনে দাঁড়িয়ে গরুর মাংস কিনেছি। চালের অভাবে ম্যাকারনি খেয়ে দিন কাটিয়েছি।
কর্মবিমুখ লিবীয়রা কথা বলতে আর আড্ডা দিতে অনেক পছন্দ করে। লিবীয়দের, সম্ভবত সব আরবদেরই কুশলবিনিময় একটি দেখার মতো ব্যাপার। সবার সঙ্গে হ্যান্ডশেক আর দীর্ঘক্ষণ কুশল-জিজ্ঞাসা। কেমন আছ, ভালো তো? শরীর ভালো আছে, মন ভালো আছে, তোমার স্ত্রী ভালো আছেন? ছেলেমেয়রা ভালো? ওদের লেখাপড়া ভালো চলছে? একটু ঘনিষ্ঠতা থাকলে ঘরবাড়ি, ছাগল-ভেড়ার কথাও জানতে চায়। বাকপ্রিয় লিবীয়দের নেতা গাদ্দাফি বক্তৃতা দিতে শুরু করলে তিন-চার ঘণ্টার আগে থামতেন না। একবার টেলিভিশনে তার বাজেট বক্তৃতা শুনলাম। আমরা ততদিনে কিছু আরবি বুঝতে শুরু করেছি। গাদ্দাফির সামনে পরবর্তী অর্থবছরের খসড়া বাজেট রাখা। তিনি রুক্ষ মেজাজে কর্কশ কণ্ঠে একটি একটি করে কাগজ উঠিয়ে পড়ছেন আর মন্তব্য করছেন। যেগুলো অপছন্দ সেগুলো ছিঁড়ে ফেলে দিচ্ছেন। একটি কাগজ তুলে নিয়ে পড়লেন, চা। কালো চা, লাল চা, সবুজ চা_ এত জাতের চা কেন? সারাদিন তো কেবল চা খাও। কাজকর্ম তো কিছু করো না। শুধু একরকম চা আমদানি করা হবে বলে কাগজটা ছুড়ে ফেলে দিলেন। আরেকটি কাগজ তুলে নিলেন টু-ইন-ওয়ান, টেলিভিশন। লিবিয়ার যতগুলো পরিবার আছে তার চেয়ে অনেক বেশি টেলিভিশন আমদানি করা হয়ে গেছে। বিদেশিরা সব টেলিভিশন কিনে নিজেদের দেশে নিয়ে যাচ্ছে। আর কোনো টেলিভিশন আমদানি করা হবে না বলে কাগজটি ছুড়ে ফেললেন। এবারে আরেকটি কাগজ_ গাড়ি। ক'দিন আগেও তোমরা গাধার পিঠে চড়েছ। আর এখন বড়লোক হয়ে পড়েছ। পায়খানা করার জন্যও গাড়ি নিয়ে যাও। আর কোনো গাড়ি আমদানি করা হবে না। বলে এটিও ছুড়ে ফেললেন। বদমেজাজী গাদ্দাফি এভাবেই বক্তৃতা দিতেন, এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেন।
মোঃ সাহিদ হোসেন : লেখক ও উন্নয়নকর্মী
ত্রিপোলিতে দু'রাত অবস্থানের পর আমাদের পোস্টিং দিয়ে পাঠিয়ে দিল বাইরে। দু'জন সহকর্মীসহ আমার পোস্টিং হলো ৪০ কিলোমিটার দূরে আজিজিয়ায়। তবে লোকসংখ্যার দিক থেকে তো বটেই, আয়তনের দিক থেকেও আমাদের যে কোনো উপজেলা শহরের চেয়ে ছোট।
পেশাগত প্রয়োজনে ছয় বছরের বেশি সময় লিবিয়ায় কাটিয়েছি। কয়েকটি স্কুল ও টিচার্স ট্রেনিং কলেজে শিক্ষকতা করেছি। দেখেছি মানুষের জীবন, সমাজ-সংস্কৃতি, প্রশাসন, রাষ্ট্রব্যবস্থা, শিক্ষাব্যবস্থা। অচেনা এক দূরদেশে অবস্থানের সময়টুকুতে ঘটে যাওয়া অনেক কিছুই বিস্মৃত হয়েছি। আবার অনেক কিছুই উজ্জ্বল হয়ে আছে স্মৃতিতে।
রাজনীতি বিষয়ে মানুষের মাঝে কোনো আগ্রহ দেখা যায় না। তবে গাদ্দাফি বক্তৃতা-বিবৃতির মাধ্যমে দেশব্যাপী মার্কিন ও ইসরায়েলবিরোধী বিদ্বেষ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। তার সুদীর্ঘ বক্তৃতায় সবচেয়ে বেশিবার উচ্চারিত হয় 'আমরিকিয়া শেতানকাবিরা', অর্থাৎ আমেরিকা হচ্ছে সবচেয়ে বড় শয়তান। এছাড়া ইসরায়েল, মিসর, ব্রিটেন_ এসব 'শয়তান'-এর নামও বলা হয়। লিবিয়াতে কোনো রাজনৈতিক দল নেই। রাজনৈতিক ভিন্নমত পোষণ বা প্রকাশের কোনো সুযোগও নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ায় মন নেই। এর মাঝেও যারা একটু মনোযোগী তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পায়। তাদের মাঝে চাপা অসন্তোষ যে নেই তা বলা যাবে না। তবে যে কোনো ভিন্নমত পোষণকারীর বিরুদ্ধে নিষ্ঠুরতম শাস্তির বিধান রয়েছে। আল ফাতাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু তরুণকে একবার ভিন্নমত প্রকাশের দায়ে আটক করা হলো। তখন ছিল রমজান মাস, সম্ভবত ১৯৮৪ সাল। দেশদ্রোহের দায়ে প্রকাশ্যে আদালতে তরুণদের বিচার করা হলো। সংক্ষিপ্ততম সময়ে অভিযোগ গঠন, বিচারের রায় মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা এবং সঙ্গে সঙ্গে তা কার্যকর করা হলো। এ দৃশ্য টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হলো। পরপর দু'তিন রাত এ রকম ঘটনার পর সৌদি আরবসহ কয়েকটি আরব দেশের প্রতিবাদের মুখে টেলিভিশনে সম্প্রচার বন্ধ করা হয়।
ফিলিস্তিন বিষয়ে মতানৈক্যের কারণে মিসরসহ বেশিরভাগ আরব দেশের সঙ্গে গাদ্দাফির সম্পর্ক খুবই খারাপ। এরকম বৈরিতার মাঝেও এদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন দফতরে মিসরীয়দের উপস্থিতি অনেক বেশি। লিবীয়দের অযোগ্যতার সুযোগ নিয়ে স্বল্প যোগ্যতাসম্পন্ন মিসরীয়রা গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদ দখল করে বসে আছে। একটি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে আততায়ীর গুলিতে নিহত হলেন মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত। উল্লাসে ফেটে পড়ল ত্রিপোলি শহর। আনন্দ মিছিল বের হলো। টেলিভিশনে বারবার নিহত হওয়ার দৃশ্য দেখানো হলো। কারও মৃত্যুতে এমন উল্লাস কখনও দেখিনি।
একবার ডিমের সংকট দেখা দিল। সুপার মার্কেট, কাঁচাবাজার কোথাও ডিম নেই। আমি আর সলিমুল্লাহ ভাই (দুই পরিবার তখন এক বাসায় থাকতাম) কাঁচাবাজারে ঘোরাঘুরি করছি। এক সবজিওয়ালা আমাদের ডেকে জিজ্ঞেস করল, কী চাই? আমরা বললাম, ডিম খুঁজছি। কিছুটা রেগে গিয়ে সবজিওয়ালা বলল, কেন? টমেটো আছে, পেঁয়াজ আছে, মরিচ আছে_ এসব নিয়ে যাও। ডিম খেতেই হবে কেন? বিভিন্ন সময় মাংস, চাল, চিনি, গুঁড়া দুধ, সাবান, ভোজ্যতেলের সংকট দেখেছি। বাচ্চার দুধের জন্য গাড়ি চালিয়ে দেড়শ' কিলোমিটার দূরে যেতে দেখেছি। পরপর আটদিন লাইনে দাঁড়িয়ে গরুর মাংস কিনেছি। চালের অভাবে ম্যাকারনি খেয়ে দিন কাটিয়েছি।
কর্মবিমুখ লিবীয়রা কথা বলতে আর আড্ডা দিতে অনেক পছন্দ করে। লিবীয়দের, সম্ভবত সব আরবদেরই কুশলবিনিময় একটি দেখার মতো ব্যাপার। সবার সঙ্গে হ্যান্ডশেক আর দীর্ঘক্ষণ কুশল-জিজ্ঞাসা। কেমন আছ, ভালো তো? শরীর ভালো আছে, মন ভালো আছে, তোমার স্ত্রী ভালো আছেন? ছেলেমেয়রা ভালো? ওদের লেখাপড়া ভালো চলছে? একটু ঘনিষ্ঠতা থাকলে ঘরবাড়ি, ছাগল-ভেড়ার কথাও জানতে চায়। বাকপ্রিয় লিবীয়দের নেতা গাদ্দাফি বক্তৃতা দিতে শুরু করলে তিন-চার ঘণ্টার আগে থামতেন না। একবার টেলিভিশনে তার বাজেট বক্তৃতা শুনলাম। আমরা ততদিনে কিছু আরবি বুঝতে শুরু করেছি। গাদ্দাফির সামনে পরবর্তী অর্থবছরের খসড়া বাজেট রাখা। তিনি রুক্ষ মেজাজে কর্কশ কণ্ঠে একটি একটি করে কাগজ উঠিয়ে পড়ছেন আর মন্তব্য করছেন। যেগুলো অপছন্দ সেগুলো ছিঁড়ে ফেলে দিচ্ছেন। একটি কাগজ তুলে নিয়ে পড়লেন, চা। কালো চা, লাল চা, সবুজ চা_ এত জাতের চা কেন? সারাদিন তো কেবল চা খাও। কাজকর্ম তো কিছু করো না। শুধু একরকম চা আমদানি করা হবে বলে কাগজটা ছুড়ে ফেলে দিলেন। আরেকটি কাগজ তুলে নিলেন টু-ইন-ওয়ান, টেলিভিশন। লিবিয়ার যতগুলো পরিবার আছে তার চেয়ে অনেক বেশি টেলিভিশন আমদানি করা হয়ে গেছে। বিদেশিরা সব টেলিভিশন কিনে নিজেদের দেশে নিয়ে যাচ্ছে। আর কোনো টেলিভিশন আমদানি করা হবে না বলে কাগজটি ছুড়ে ফেললেন। এবারে আরেকটি কাগজ_ গাড়ি। ক'দিন আগেও তোমরা গাধার পিঠে চড়েছ। আর এখন বড়লোক হয়ে পড়েছ। পায়খানা করার জন্যও গাড়ি নিয়ে যাও। আর কোনো গাড়ি আমদানি করা হবে না। বলে এটিও ছুড়ে ফেললেন। বদমেজাজী গাদ্দাফি এভাবেই বক্তৃতা দিতেন, এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেন।
মোঃ সাহিদ হোসেন : লেখক ও উন্নয়নকর্মী
No comments