ঘরে-বাইরে সমালোচনা, বিব্রত সরকারি দল by পার্থ প্রতীম ভট্টাচার্য্য
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে বিশ্বব্যাংক এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেওয়ায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে সরকার ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। সরকারের পক্ষ থেকে দুর্নীতি হয়নি বলে বারবার দাবি করা হলেও শেষ পর্যন্ত দুর্নীতির অভিযোগে প্রকল্প থেকে দুই সংস্থা সরে যাওয়ায় ঘরে-বাইরে সমালোচনার মুখে ক্ষমতাসীনরা।
বিভিন্ন মামলায় কোণঠাসা হয়ে থাকা প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও এখন এ ইস্যুতে রাজপথ গরম করছে। তারা সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছে। বিরোধী দলের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন ও সুধী সমাজের প্রতিনিধিরাও ঋণচুক্তি বাতিলের ঘটনায় সরকারের সমালোচনায় মুখর।
ক্ষমতাসীন দলের মধ্য থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সরকার থেকে বাদ দেওয়ার দাবিও উঠেছে। আওয়ামী লীগের অনেক নেতা এটাকে কূটনৈতিক বিপর্যয় বলেও মনে করেন। তাঁদের মতে, এটা শুধু পদ্মা সেতু প্রকল্পে সীমাবদ্ধ নয়, বর্তমান সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাবের বহির্প্রকাশ। পাশাপাশি এ ইস্যুতে ক্ষমতাসীন মহাজোট শরিকদের সমর্থনও পাচ্ছে না আওয়ামী লীগ। শরিক দলগুলো এ ইস্যুতে আওয়ামী লীগের প্রতি বৈঠকের আহ্বানও জানিয়েছে।
মহাজোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম শরিক দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ মঙ্গলবার গভীর রাতে এক বিবৃতিতে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বিতর্ক এবং অনভিপ্রেত ঘটনাকে দুঃখজনক ও দুর্ভাগ্যজনক বলে অভিহিত করেছেন। এরশাদ বলেন, এ ইস্যুতে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের পদত্যাগ করা উচিত। দলীয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্বব্যাংক চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই সাধারণ মানুষের মতো আওয়ামী লীগের নেতারাও এ ব্যাপারে আলাপ-আলোচনায় ব্যস্ত। তবে দলীয় নেতারা নিজেদের মধ্যে এ ব্যাপারে আলোচনা করলেও দায়িত্ব নিয়ে মন্তব্য করতে কেউ রাজি নন। বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্তের পর সরকারের পক্ষ থেকে নানা রকম আশার বাণী শোনানো হলেও দলীয় নেতারা মনে করেন, সরকারের বর্তমান মেয়াদে পদ্মা সেতু নির্মাণের আশা নেই। আর নির্বাচনী ইশতেহারের এই বড় অঙ্গীকার পূরণে সরকার ব্যর্থ হলে ভোটে এর প্রভাব পড়বে বলেও মনে করেন তাঁরা।
গতকাল বুধবার এক আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম পদ্মা সেতু প্রকল্পে যাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তাঁদের স্বেচ্ছায় সরকার থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি সরকারের উদ্দেশে দুর্নীতির সঙ্গে আপস না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, 'কারো একার জন্য জনগুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্প বাধাগ্রস্ত হতে পারে না।'
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি পদ্মা সেতু ইস্যুতে এরই মধ্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী বর্তমানের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের পদত্যাগ দাবি করেছে।
আওয়ামী লীগের অনেক নেতা আলাপকালে এ প্রকল্পে দুর্নীতি হয়নি বলে দাবি করে বিশ্বব্যাংকের বর্তমান অবস্থার কারণ হিসেবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান এবং সৈয়দ আবুল হোসেনের ব্যর্থতাকে দায়ী করেন। সেই সঙ্গে 'বিশ্বব্যাংক ধোয়া তুলসী পাতা নয়, এটি বিশ্ব রাজনীতি ও বিশ্ব ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত', 'বিশ্বব্যাংকের বিবৃতি বিশ্বব্যাংকের নয়, এটি বিশ্বব্যাংকের বিদায়ী সভাপতি রবার্ট জোয়েলিকের ব্যক্তিগত মন্তব্য'- এমন সব মন্তব্য করার পর আবার বিশ্বব্যাংককে তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানানোর মতো দ্বৈত অবস্থানেরও সমালোচনা করেন ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতা। তবে তাঁরা মনে করেন, যেভাবেই হোক পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রয়োজন। পরবর্তী নির্বাচনে জনমত প্রভাবিত করতে সরকারকে যেকোনো উপায়ে হোক এটা বাস্তবায়ন করতেই হবে।
পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে না পারলে ভোটে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে স্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। আওয়ামী লীগের এই নেতা অবশ্য বলেন, বিকল্প ফান্ডিংয়ের মাধ্যমে সরকার কাজ শুরু করতে পারলে এটা ঠিক হয়ে যাবে। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের এই সিদ্ধান্তের কারণে আন্তজার্তিকভাবে বাংলাদেশের ওপর রেখাপাত হয়েছে এবং এটি বেদনাদায়ক। তবে তিনি মনে করেন, বিশ্বব্যাংকের এ সিদ্ধান্তের পেছনে এমন কিছু শক্তি কাজ করেছে, যারা রাজনীতির উর্ধ্বে নয়।
পদ্মা সেতু ইস্যুতে একেক মন্ত্রীর একেক রকম কথাবার্তার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উইসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, এটা স্পর্শকাতর বিষয় এবং এ ব্যাপারে সবারই সচেতনভাবে মন্তব্য করা উচিত ছিল। এ ব্যাপারে মহাজোটের অন্যতম শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, বিশ্বব্যাংক সুশাসনের নামে বড় ও প্রভাবশালী দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত। তিনি মনে করেন, যেহেতু জোটের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পদ্মা সেতু, তাই এটা না করতে পারলে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া ভোটের রাজনীতিতে পড়বে। আর বিশ্বব্যাংক সেটাই চায় বলেও মন্তব্য করেন মেনন।
এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, পদ্মা সেতু না হওয়ায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের তিন কোটি মানুষের এক কোটি ভোট হারিয়েছে মহাজোট। তিনি এটাকে সরকারের বড় ব্যর্থতা বলে উল্লেখ করে বলেন, 'কয়েকজনের জন্য একটা বড় সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে গেছে।'
ফিরোজ রশীদ অভিযোগ করে বলেন, সরকারের কয়েকজনের অপরিণামদর্শী ও দায়িত্বজ্ঞানহীন কথাবার্তার জন্য পদ্মা সেতুর সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, কয়েকজন লোককে আড়াল করার জন্য এত বড় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে সরকার।
ক্ষমতাসীন দলের মধ্য থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সরকার থেকে বাদ দেওয়ার দাবিও উঠেছে। আওয়ামী লীগের অনেক নেতা এটাকে কূটনৈতিক বিপর্যয় বলেও মনে করেন। তাঁদের মতে, এটা শুধু পদ্মা সেতু প্রকল্পে সীমাবদ্ধ নয়, বর্তমান সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাবের বহির্প্রকাশ। পাশাপাশি এ ইস্যুতে ক্ষমতাসীন মহাজোট শরিকদের সমর্থনও পাচ্ছে না আওয়ামী লীগ। শরিক দলগুলো এ ইস্যুতে আওয়ামী লীগের প্রতি বৈঠকের আহ্বানও জানিয়েছে।
মহাজোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম শরিক দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ মঙ্গলবার গভীর রাতে এক বিবৃতিতে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বিতর্ক এবং অনভিপ্রেত ঘটনাকে দুঃখজনক ও দুর্ভাগ্যজনক বলে অভিহিত করেছেন। এরশাদ বলেন, এ ইস্যুতে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের পদত্যাগ করা উচিত। দলীয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্বব্যাংক চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই সাধারণ মানুষের মতো আওয়ামী লীগের নেতারাও এ ব্যাপারে আলাপ-আলোচনায় ব্যস্ত। তবে দলীয় নেতারা নিজেদের মধ্যে এ ব্যাপারে আলোচনা করলেও দায়িত্ব নিয়ে মন্তব্য করতে কেউ রাজি নন। বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্তের পর সরকারের পক্ষ থেকে নানা রকম আশার বাণী শোনানো হলেও দলীয় নেতারা মনে করেন, সরকারের বর্তমান মেয়াদে পদ্মা সেতু নির্মাণের আশা নেই। আর নির্বাচনী ইশতেহারের এই বড় অঙ্গীকার পূরণে সরকার ব্যর্থ হলে ভোটে এর প্রভাব পড়বে বলেও মনে করেন তাঁরা।
গতকাল বুধবার এক আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম পদ্মা সেতু প্রকল্পে যাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তাঁদের স্বেচ্ছায় সরকার থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি সরকারের উদ্দেশে দুর্নীতির সঙ্গে আপস না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, 'কারো একার জন্য জনগুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্প বাধাগ্রস্ত হতে পারে না।'
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি পদ্মা সেতু ইস্যুতে এরই মধ্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী বর্তমানের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের পদত্যাগ দাবি করেছে।
আওয়ামী লীগের অনেক নেতা আলাপকালে এ প্রকল্পে দুর্নীতি হয়নি বলে দাবি করে বিশ্বব্যাংকের বর্তমান অবস্থার কারণ হিসেবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান এবং সৈয়দ আবুল হোসেনের ব্যর্থতাকে দায়ী করেন। সেই সঙ্গে 'বিশ্বব্যাংক ধোয়া তুলসী পাতা নয়, এটি বিশ্ব রাজনীতি ও বিশ্ব ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত', 'বিশ্বব্যাংকের বিবৃতি বিশ্বব্যাংকের নয়, এটি বিশ্বব্যাংকের বিদায়ী সভাপতি রবার্ট জোয়েলিকের ব্যক্তিগত মন্তব্য'- এমন সব মন্তব্য করার পর আবার বিশ্বব্যাংককে তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানানোর মতো দ্বৈত অবস্থানেরও সমালোচনা করেন ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতা। তবে তাঁরা মনে করেন, যেভাবেই হোক পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রয়োজন। পরবর্তী নির্বাচনে জনমত প্রভাবিত করতে সরকারকে যেকোনো উপায়ে হোক এটা বাস্তবায়ন করতেই হবে।
পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে না পারলে ভোটে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে স্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। আওয়ামী লীগের এই নেতা অবশ্য বলেন, বিকল্প ফান্ডিংয়ের মাধ্যমে সরকার কাজ শুরু করতে পারলে এটা ঠিক হয়ে যাবে। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের এই সিদ্ধান্তের কারণে আন্তজার্তিকভাবে বাংলাদেশের ওপর রেখাপাত হয়েছে এবং এটি বেদনাদায়ক। তবে তিনি মনে করেন, বিশ্বব্যাংকের এ সিদ্ধান্তের পেছনে এমন কিছু শক্তি কাজ করেছে, যারা রাজনীতির উর্ধ্বে নয়।
পদ্মা সেতু ইস্যুতে একেক মন্ত্রীর একেক রকম কথাবার্তার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উইসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, এটা স্পর্শকাতর বিষয় এবং এ ব্যাপারে সবারই সচেতনভাবে মন্তব্য করা উচিত ছিল। এ ব্যাপারে মহাজোটের অন্যতম শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, বিশ্বব্যাংক সুশাসনের নামে বড় ও প্রভাবশালী দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত। তিনি মনে করেন, যেহেতু জোটের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পদ্মা সেতু, তাই এটা না করতে পারলে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া ভোটের রাজনীতিতে পড়বে। আর বিশ্বব্যাংক সেটাই চায় বলেও মন্তব্য করেন মেনন।
এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, পদ্মা সেতু না হওয়ায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের তিন কোটি মানুষের এক কোটি ভোট হারিয়েছে মহাজোট। তিনি এটাকে সরকারের বড় ব্যর্থতা বলে উল্লেখ করে বলেন, 'কয়েকজনের জন্য একটা বড় সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে গেছে।'
ফিরোজ রশীদ অভিযোগ করে বলেন, সরকারের কয়েকজনের অপরিণামদর্শী ও দায়িত্বজ্ঞানহীন কথাবার্তার জন্য পদ্মা সেতুর সম্ভাবনা নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, কয়েকজন লোককে আড়াল করার জন্য এত বড় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে সরকার।
No comments