জন্মদিনে মায়ের খোলাচিঠি
আমার প্রাণের বাপি, সোনা বাপি, মনে আছে, তুই একদিন বলেছিলি, ‘মা, তুমি আমাকে চিঠি দিয়ো। মোবাইলে কথা বললে মন ভরে না।’ মানিক আমার, এখন আমার অফুরন্ত সময়। কোনো কাজ করতে ভালো লাগে না। তোর কোনো খবরও নেওয়া লাগে না। তাই ভাবলাম, তোকে চিঠি লিখি।
কেমন আছিস বাবা? জানিস তো, আজ (১৮ জুলাই) তোর জন্মদিন। বাড়িতে কত লোক। পোলাও-মুরগির রোস্ট-পুডিংসহ তোর পছন্দের অনেক আয়োজন করেছি। প্রদীপ জ্বালিয়েছি। তোকে নিয়ে বাইরে বড় অনুষ্ঠান হচ্ছে। তোর দেওয়া শাড়ি-গয়না পরেছি। কিন্তু তুই কোথায়? তোকে তো এত লোকের ভিড়ে খুঁজে পাচ্ছি না। লক্ষ্মীসোনা, সবাই তোর জন্য অপেক্ষা করছে। কেক কাটতে হবে তো! বাঁধন তোর জন্য সুন্দর একটা কেক বানিয়েছে। আমি জামা-প্যান্ট, পুতুল ও চকলেট কিনেছি—আরও কত কি!
তুই তো আমাকে ছাড়া এক মুহূর্তও থাকতে পারিস না, তাহলে এখন কোথায় লুকিয়ে আছিস? লক্ষ্মী, আজ এক বছর হলো তোকে আমি রাস্তায়, অলিতে-গলিতে, আকাশে-বাতাসে—সব জায়গায় খুঁজছি। কিন্তু তুই কই?
আমার বুকটা জ্বলে-পুড়ে যাচ্ছে, বাবা। তোকে ছাড়া আমার যে আর জীবন চলে না। তুই যে বাঁধনের বড় ভালোবাসার আশ্রয়। তোর বাপিন (বাবা) সারারাত তোরই গান শুনতে শুনতে সত্যি ‘কান পেতে’ আছে—কখন তুই ছুটে এসে জড়িয়ে ধরবি।
বাবা, আমাকে কাঁদনোর জন্য এই কষ্টের পৃথিবীতে ফেলে তুই যে আকাশের কোন তারাটি হয়ে আছিস, বল না আমায়? ১৯৮৬ সালের ১৮ জুলাই জন্মানো তারকাটি আজ ওই আদিম আকাশে!
ক্লোজআপ থেকে দুবার আমেরিকা গেলি, কানাডা গেলি। যাওয়ার সময় বললি, ‘এরপর যেখানেই যাই না কেন, তোমাকে ছাড়া যাব না, মা, তুমি কেঁদো না।’ কই, এবারও আমাকে নিলি না। তুই নিশ্চয়ই আমার থেকেও ভালো কোনো মা পেয়ে গেছিস, তাই না রে বাবা? নতুন মাকে পেয়ে এত তাড়াতাড়ি আমাকে ভুলে গেলি?
তবে হ্যাঁ, সারা দেশ ও দেশের বাইরে তোর যে কত ভক্ত, কত ভালোবাসার মানুষ আছে, তারা প্রতিনিয়ত ফোন করে খোঁজ নেয়। তুই আমাকে অনেক দিয়ে গেছিস বাবা, কিন্তু আমি তোকে কিছুই দিতে পারলাম না। শুধু একমুঠো মাটি ছাড়া।
বাবা, বলেছিলি, ‘মা, তুমি আর আমি মিলে খুব তাড়াতাড়ি একটা সুন্দর বাড়ি বানাব।’ আমি সুন্দর করে শ্বেতপাথর বসিয়ে তোর জন্য বাড়ি বানিয়েছি। লাইট, ফুলগাছও লাগিয়েছি। প্রতি শুক্রবার আগরবাতি-গোলাপপানি আর কিছু তাজা গোলাপ ফুল নিয়ে তোর পাশে বসে আদর করি। কিন্তু তুই আমার গলাটা জড়িয়ে আদর করিস না।
সোনা বাবা,
এ বছরই তোর বিয়ের দিন ঠিক করছিল তোর বাপিন। এই তো সামনে সেই দিন ১২-১২-১২।
তোর জন্ম দেওয়া ‘এত ভালোবাসা’, ‘ভালোবাসার প্রহর’ ও সদ্যভূমিষ্ঠ হওয়া সন্তান ‘নব আনন্দে জাগো’ আমি বুক দিয়ে আগলে রেখেছি। তবে নব আনন্দে জাগোর জন্মদিনে শাকিলা জাফর বলেছিলেন ‘আবিদের সন্তানের জন্ম আপনার হাত থেকেই হচ্ছে, এখন কাঁদতে নেই,’ বলেই সামিনা আপা, পার্থ বড়ুয়াসহ উপস্থিত সবাই কেঁদেছিল।
আমি জানি, পরম করুণাময় তোকে ভালো জায়গায় রেখেছেন। সাবধানে থাকিস বাবা। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করিস। গান করতে ভুলিস না কিন্তু। আমার বিশ্বাস, তুই ফিরে আসবি আমার বুকে। সোনা, ফিরে এসে এই পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে তুই গান কর...। ‘ও তোতা পাখি রে শিকল খুলে উড়িয়ে দেব মা’কে যদি এনে দাও’....।
চিঠি পড়ে নিশ্চয় খুশি হয়েছিস। আমাকে ফোন নয়, চিঠি লিখিস। আমি তোর চিঠির অপেক্ষায় থাকব। আর প্রতি সন্ধ্যায় আকাশের সবচেয়ে যে উজ্জ্বল তারাটি জ্বলবে, ঠিক তার মধ্যেই খুঁজে নেব তোকে।
ইতি
তোর অভাগী মা রমা রহমান
তুই তো আমাকে ছাড়া এক মুহূর্তও থাকতে পারিস না, তাহলে এখন কোথায় লুকিয়ে আছিস? লক্ষ্মী, আজ এক বছর হলো তোকে আমি রাস্তায়, অলিতে-গলিতে, আকাশে-বাতাসে—সব জায়গায় খুঁজছি। কিন্তু তুই কই?
আমার বুকটা জ্বলে-পুড়ে যাচ্ছে, বাবা। তোকে ছাড়া আমার যে আর জীবন চলে না। তুই যে বাঁধনের বড় ভালোবাসার আশ্রয়। তোর বাপিন (বাবা) সারারাত তোরই গান শুনতে শুনতে সত্যি ‘কান পেতে’ আছে—কখন তুই ছুটে এসে জড়িয়ে ধরবি।
বাবা, আমাকে কাঁদনোর জন্য এই কষ্টের পৃথিবীতে ফেলে তুই যে আকাশের কোন তারাটি হয়ে আছিস, বল না আমায়? ১৯৮৬ সালের ১৮ জুলাই জন্মানো তারকাটি আজ ওই আদিম আকাশে!
ক্লোজআপ থেকে দুবার আমেরিকা গেলি, কানাডা গেলি। যাওয়ার সময় বললি, ‘এরপর যেখানেই যাই না কেন, তোমাকে ছাড়া যাব না, মা, তুমি কেঁদো না।’ কই, এবারও আমাকে নিলি না। তুই নিশ্চয়ই আমার থেকেও ভালো কোনো মা পেয়ে গেছিস, তাই না রে বাবা? নতুন মাকে পেয়ে এত তাড়াতাড়ি আমাকে ভুলে গেলি?
তবে হ্যাঁ, সারা দেশ ও দেশের বাইরে তোর যে কত ভক্ত, কত ভালোবাসার মানুষ আছে, তারা প্রতিনিয়ত ফোন করে খোঁজ নেয়। তুই আমাকে অনেক দিয়ে গেছিস বাবা, কিন্তু আমি তোকে কিছুই দিতে পারলাম না। শুধু একমুঠো মাটি ছাড়া।
বাবা, বলেছিলি, ‘মা, তুমি আর আমি মিলে খুব তাড়াতাড়ি একটা সুন্দর বাড়ি বানাব।’ আমি সুন্দর করে শ্বেতপাথর বসিয়ে তোর জন্য বাড়ি বানিয়েছি। লাইট, ফুলগাছও লাগিয়েছি। প্রতি শুক্রবার আগরবাতি-গোলাপপানি আর কিছু তাজা গোলাপ ফুল নিয়ে তোর পাশে বসে আদর করি। কিন্তু তুই আমার গলাটা জড়িয়ে আদর করিস না।
সোনা বাবা,
এ বছরই তোর বিয়ের দিন ঠিক করছিল তোর বাপিন। এই তো সামনে সেই দিন ১২-১২-১২।
তোর জন্ম দেওয়া ‘এত ভালোবাসা’, ‘ভালোবাসার প্রহর’ ও সদ্যভূমিষ্ঠ হওয়া সন্তান ‘নব আনন্দে জাগো’ আমি বুক দিয়ে আগলে রেখেছি। তবে নব আনন্দে জাগোর জন্মদিনে শাকিলা জাফর বলেছিলেন ‘আবিদের সন্তানের জন্ম আপনার হাত থেকেই হচ্ছে, এখন কাঁদতে নেই,’ বলেই সামিনা আপা, পার্থ বড়ুয়াসহ উপস্থিত সবাই কেঁদেছিল।
আমি জানি, পরম করুণাময় তোকে ভালো জায়গায় রেখেছেন। সাবধানে থাকিস বাবা। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করিস। গান করতে ভুলিস না কিন্তু। আমার বিশ্বাস, তুই ফিরে আসবি আমার বুকে। সোনা, ফিরে এসে এই পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে তুই গান কর...। ‘ও তোতা পাখি রে শিকল খুলে উড়িয়ে দেব মা’কে যদি এনে দাও’....।
চিঠি পড়ে নিশ্চয় খুশি হয়েছিস। আমাকে ফোন নয়, চিঠি লিখিস। আমি তোর চিঠির অপেক্ষায় থাকব। আর প্রতি সন্ধ্যায় আকাশের সবচেয়ে যে উজ্জ্বল তারাটি জ্বলবে, ঠিক তার মধ্যেই খুঁজে নেব তোকে।
ইতি
তোর অভাগী মা রমা রহমান
No comments